ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা প্রশ্ন উত্তর || ইতিহাস অষ্টম শ্রেনী
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা প্রশ্ন উত্তর ||
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এই অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন , ছোট প্রশ্ন , ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা MCQ , অনুশীলনী প্রশ্ন উওর আলোচনা করা হয়েছে।
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা: TOPIC A | ওয়ারেন হেস্টিংস ও লর্ড কর্নওয়ালিশের সংস্কার
ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি: ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা
marks 5
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা বড় প্রশ্ন উত্তর:
ওয়ারেন হেস্টিংস এবং কর্নওয়ালিশের বিচারব্যবস্থার সংস্কারের তুলনামূলক আলোচনা করো। এই সংস্কারগুলির প্রভাব ভারতীয়দের ওপর কীভাবে পড়েছিল ?
ওয়ারেন হেস্টিংস ও লর্ড কর্নওয়ালিশের বিচারব্যবস্থার সংস্কারের তুলনা :
বিষয় 1. স্বতন্ত্রীকরণ ওয়ারেন হেস্টিংসের বিচারব্যবস্থা |
হেস্টিংস প্রতিটি জেলায় পৃথকভাবে দেওয়ানি ও ফৌজদারি | আদালত গঠন করেন।
2. ভ্রাম্যমাণ আদালত : ওয়ারেন হেস্টিংস ভ্রাম্যমাণ আদালত স্থাপনের কথা ভাবেননি। তবে তিনি চেয়েছিলেন দেশীয় অভিজাতদের হাত থেকে বিচারব্যবস্থাকে আলাদা করার প্রভাব কার্যকরী করতে।
|3. বিভক্তিকরণ. বিচার ও শাসনব্যবস্থার উন্নতির জন্য তিনি বাংলাকে ৩৫টি ভাগে ভাগ করেন।
4. আপিল ও ফৌজদারি আদালত
আপিল শুনানির জন্য দুটি সর্বোচ্চ আপিল আদালত, যথা— সদর দেওয়ানি ও সদর নিজামতি আদালত যথাক্রমে | কলকাতা ও মুরশিদাবাদে স্থাপন করেন।
5. আইনসংহিতা ও আইনের ব্যাখ্যা
আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে একই ধরনের মামলার বিভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া হত। এই সমস্যা নিরসনের জন্য হেস্টিংসের | নির্দেশমতো আলাদা আলাদাভাবে হিন্দু ও মুসলিম আইনগুলির | সারসংক্ষেপ সংকলিত ও ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়।
কর্নওয়ালিশের বিচারব্যবস্থা:
কর্নওয়ালিশের বিচারব্যবস্থা রাজস্ব আদায়ে যুক্ত কর্মচারীরা যাতে আদালতের ক্ষমতা-বলে ব্যক্তির সম্পত্তির অধিকার অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ করতে না পারে তার জন্য |
কর্নওয়ালিশ রাজস্ব ও বিচারবিভাগকে পৃথক করেন। কর্নওয়ালিশ চারটি ‘ভ্রাম্যমাণ’ আদালত স্থাপন করেন। প্রত্যেক ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুজন ইংরেজ বিচারক নিযুক্ত হন। |
প্রতিটি জেলায় একজন ইংরেজ বিচারকের অধীনে জেলা আদালত স্থাপন করা হয়। জেলা বিচারালয়গুলিতে কেবলমাত্র রাজস্ব সংক্রান্ত | মামলা বিচারের ব্যবস্থা করা হয়।
জেলা ফৌজদারি আদালতগুলির পরিবর্তে কলকাতা, পাটনা, ঢাকা, মুরশিদাবাদে চারটি প্রাদেশিক আদালত স্থাপিত হয় ৷ এই আদালতগুলিতে ইংরেজ জজ নিযুক্ত হন। |
১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে বিখ্যাত কর্নওয়ালিশ কোড প্রণীত হয়। কর্নওয়ালিশ সরকারি কর্মচারীদের সততা, কর্মদক্ষতা ও নিয়মানুবর্তিতা বৃদ্ধির জন্য কয়েকটি আচরণবিধি তৈরি করেন। এই আচরণবিধি মান্য করা, সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়।
ভারতীয়দের ওপর প্রভাব:
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তরফে ঔপনিবেশিক বিচারব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়। বিচারব্যবস্থাকে নতুন রূপে সাজানোর নামে ব্রিটিশরা আসলে সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থকেই চরিতার্থ করে। বিচারব্যবস্থায় বৈষম্য তৈরি হয়। ভারতীয়রা এই বিচারব্যবস্থায় অবহেলিত হয় এবং ন্যায়বিচার লাভ থেকে বঞ্চিত হয় ।
| প্রশ্ন 2 ওয়ারেন হেস্টিংসের শাসন সংস্কারগুলির বিবরণ দাও ।
• সূচনা : ক্লাইভ বাংলা তথা ভারতে কোম্পানির রাজত্বের যে সূচনা করেছিলেন, দক্ষ প্রশাসন দ্বারা ওয়ারেন হেস্টিংস তাকে দৃঢ় ভিত্তি দেন।
হেস্টিংসের শাসন সংস্কার
[1] দ্বৈতশাসনের অবসান: ভারতে এসেই হেস্টিংস এক আদেশ বলে দ্বৈতশাসনের অবসান ঘটান এবং রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব সরাসরি কোম্পানির হাতে নেন।
[3] নবাবের ভাতার পরিমাণ হ্রাস : তিনি নবাবের বাৎসরিক ভাতা ৩২ লক্ষ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ লক্ষ টাকা করেন।
[4] রেভেনিউ বোর্ড গঠন: একটি রেভেনিউ বোর্ড গঠন করে রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্যানুসন্ধানের নির্দেশ দেন।
[2] নায়েব সুবা পদের বিলুপ্তি; দ্বৈতশাসকের দুই অত্যাচারী নায়ক রেজা খাঁ ও সীতাব রায়কে অভিযুক্ত করে পদচ্যুত করা হয় এবং নায়েব সুবা পদ দুটি বিলুপ্ত করা হয় ।
[5] আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পরিবর্তন: পূর্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব ছিল স্থানীয় ফৌজদারদের ওপর। এই ব্যবস্থায় স্বজন পোষণ ঘটত। তাই ফৌজদারদের পরিবর্তে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের আধিকারিকের ওপর অর্পণ করেন।
[6] সদর দপ্তর স্থানান্তর: সরকারি কোশাগার মুরশিদাবাদ থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। কোম্পানির সদর দপ্তর হয় কলকাতা । ফলে এ সময় থেকেই কলকাতার রাজনৈতিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
প্রশ্ন 3 কর্নওয়ালিশের সংস্কারগুলি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে কতটা মজবুত করেছিল ?
• সূচনা: ভারতের গভর্নর-জেনারেলরূপে কর্নওয়ালিশ পুলিশি ব্যবস্থা এবং সেনাবাহিনীর বেশকিছু সংস্কার সাধন করেন।
কর্নওয়ালিশের সংস্কার:
[1] পুলিশি ব্যবস্থা: ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে গভর্নর-জেনারেল কর্নওয়ালিশ জেলাগুলির দেখভাল করার জন্য পুলিশ থানা ব্যবস্থার প্রচলন করেন। প্রতিটি থানা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় দারোগার ওপর। দারোগাদের নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয় ম্যাজিস্ট্রেটদের হাতে।
কিন্তু দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় দারোগা পদের বিলুপ্তি ঘটে এবং গ্রামের দেখভালের দায়িত্ব পায় কালেক্টর। ব্রিটিশ কোম্পানির পক্ষ থেকে কর্নওয়ালিশ পুলিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে ‘আইনের শাসন’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন ।
[2] সেনাবাহিনী: তাদের শাসনের সূচনাকাল থেকেই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিজেদের সেনাবাহিনী তৈরির উদ্যোগ নেয়। কর্নওয়ালিশ এই উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিয়ে যান। উত্তর ভারতে কৃষকদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা শুরু হয়।
কোম্পানি নিজের ভারতীয় সেনা বা সিপাহি তৈরি করে। সিপাহিদের কাজ ঠিক করে দেওয়া হয়। বলা হয়, এলাকা দখল করার পাশাপাশি বিভিন্ন বিদ্রোহের মোকাবিলা করাও সিপাহিদের কাজ।
প্রশ্ন 4 লর্ড হেস্টিংসের বিচার সংস্কার পদ্ধতির বিবরণ দাও ।
• সূচনা: বাংলার গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস বিচারব্যবস্থার আমূল সংস্কারসাধন করেন। হেস্টিংস বিচারব্যবস্থার যেসব সংস্কারসাধন করেন। সেগুলি হল—
[1] দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত স্থাপন:
তিনি প্রতিটি জেলায় একটি করে দেওয়ানি আদালত ও ফৌজদারি আদালত স্থাপন করেন। দেওয়ানি বিচারের ভার থাকে কালেক্টরদের হাতে। ফৌজদারি বিচারের ভার থাকে দেশীয় বিচারকদের ওপর।
[2] সদর দেওয়ানি ও নিজামত আদালত স্থাপন :
জেলা আদালতের আপিল বিচারের জন্য কলকাতায় সদর দেওয়ানি আদালত ও সদর নিজামত আদালত স্থাপিত হয়। সদর দেওয়ানি আদালতে মামলার বিচার করতেন গভর্নর জেনারেল ও তাঁর পরিষদদের দুজন সদস্য। সদর নিজামত আদালতের প্রধান বিচারপতি বাংলার নবাব দ্বারা মনোনীত হতেন।
[3] বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা :
ওয়ারেন হেস্টিংস বিচারকদের উপঢৌকন ও ঘুষ গ্রহণ বাতিল করেন এবং ন্যায়বিচারের জন্য তাদের নিয়মিত বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
[4] সুপ্রিমকোর্ট প্রতিষ্ঠা:
হেস্টিংসের আমলে রেগুলেটিং অ্যাক্ট অনুযায়ী ১৭৭৪ খ্রি. কলকাতা সুপ্রিমকোর্ট প্রতিষ্ঠা হয়।
[5] অন্যান্য সংস্কার :
বিচারকার্যের উন্নয়নের জন্য হেস্টিংস — (i) আদালতের কার্যাদির বিবরণ লিপিবদ্ধ করার ব্যবস্থা করেন। (ii) আদালতে অভিযোগ উত্থাপনের সময় নির্দিষ্ট করেন। (iii) চৌথ ও গুরু অর্থদণ্ড বাতিল করেন। (iv) তাঁর নির্দেশে দশজন হিন্দু পণ্ডিতের সাহায্যে হিন্দু আইন বিধি সংকলন করা হয়।
প্রশ্ন 5 তা লেখো। ভারতে কোম্পানি আমলে ‘পুলিশব্যবস্থা’ সম্পর্কে কী জান
সূচনা: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ানি লাভকালে মুঘল আমলের পুলিশব্যবস্থায় ফৌজদার, কোতওয়াল, চৌকিদারদের অস্তিত্ব ছিল।
পুলিশব্যবস্থা:
[1] নতুন রূপে গঠনের উদ্যোগ : ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় মন্বন্তরের ফলে সামাজিক আইন-শৃঙ্খলার অবনতি দেখা দেয়। মুঘল আমলের পুরোনো পুলিশি ব্যবস্থাকে নতুনরূপে ঢেলে সাজানোর দরকার হয়।
[2] ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়োগ : পুলিশব্যবস্থার আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে প্রথমেই ফৌজদারদের জায়গায় ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেটদের বসানো হয়।
[3] থানা ব্যবস্থার প্রবর্তন; কর্নওয়ালিশ জেলাগুলির আইন-শৃঙ্খলা দেখভালের জন্য পুলিশ থানা ব্যবস্থা চালু করেন। ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি থানায় দারোগাদের দায়িত্ব দেওয়া হয় ।
[4] দারোগা ব্যবস্থা বিলোপ : দারোগারা স্থানীয় জমিদারদের সঙ্গে মিলিত হয়ে সাধারণের ওপর অত্যাচার চালাত বলে পাকাপাকিভাবে দারোগা ব্যবস্থার বিলোপ ঘটানো হয় ।
[5] কালেক্টরদের দায়িত্ব: গ্রামের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় কালেক্টরকে।
[6] আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা: পুলিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্রিটিশ কোম্পানি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। এই লক্ষ্যে ব্রিটিশ কোম্পানি পুলিশব্যবস্থায় নানারকম সংস্কার শুরু করেন। সিন্ধুপ্রদেশ অঞ্চলে কোম্পানি এক নতুন ধাঁচের পুলিশি ব্যবস্থা চালু করে (১৮৪৩ খ্রি.)। ধীরে ধীরে সমগ্র ভারতে আলাদা পুলিশি আইন তৈরি করা হয়।
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা: প্রশ্ন 6 টীকা লেখো : কোম্পানির সেনাবাহিনী
সূচনা: প্রাথমিকভাবে ঔপনিবেশিক শাসনকালে যে-কোনো বিরোধিতার মোকাবিলা করত পুলিশবাহিনী। তবে পরিস্থিতি ঘোরতর হয়ে উঠলে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হত।
সেনাবাহিনীর অবস্থা
[1] স্থায়ী সেনাবাহিনী তৈরির উদ্যোগ : ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গোড়া থেকেই স্থায়ী সেনাবাহিনী তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল। এক্ষেত্রে কোম্পানি মুঘল সেনা নিয়োগের রীতিকে অনুসরণ করেছিল।
[2] সিপাহিবাহিনী গঠন : উত্তর ভারতে কৃষকদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হত। সাধারণ মানুষের থেকে তাদেরকে আলাদা করে রাখা হত । এই প্রথা মেনেই কোম্পানি তৈরি করেছিল নিজের ভারতীয় সেনাবাহিনী বা সিপাহিবাহিনী।
[3] সিপাহিদের কাজ: ইংরেজ কোম্পানির হয়ে এলাকা দখলের পাশাপাশি বিভিন্ন বিদ্রোহের মোকাবিলা করাও সিপাহিদের কাজ ছিল।
[4] সিপাহিবাহিনীর কাঠামো: ঔপনিবেশিক শাসনের গোড়ার দিকে সিপাহিবাহিনীতে উচ্চবর্ণের ব্রাক্ষ্মণ ও রাজপুত কৃষকরা জায়গা পেত। পরে সিপাহি বাহিনীতে মারাঠা, মহীশূর অঞ্চলের পাহাড়ি উপজাতি ও নেপালি গোরখাদের নিয়োগ করা শুরু হয়।
প্রশ্ন 7 ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কর্তৃক ভারতে সিভিল সার্ভিস প্রবর্তনের ইতিহাস লেখো । অথবা, কর্নওয়ালিশ কেন সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা চালু
সদস্যদের ভারতের সূচনা: ইংল্যান্ডের অভিজাত পরিবারের ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার উচ্চপদে নিয়োগ করা হত। এই নিয়োগ করত কোম্পানির লন্ডনস্থিত ‘বোর্ড অব ডিরেক্টরস’।
কিন্তু অল্প বেতনের কারণে এইসমস্ত কর্মচারীরা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ সনদ আইন (১৮৫৩ খ্রি.) অনুসারে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে সিভিলিয়ান নিয়োগের প্রথা চালু করে।
সিভিল সার্ভিস প্ৰচেষ্টা:
[1] লর্ড কর্নওয়ালিশের প্রচেষ্টা :
ভারতে সিভিল সার্ভিসের প্রকৃত প্রবর্তক ছিলেন কর্নওয়ালিশ। তিনি—
(i) রাজস্ব বিভাগের কর্মচারীদেরও প্রশাসনিক কাজে দক্ষ করে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন।
(ii) কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধে ব্যক্তিগত ব্যাবসা, উপঢৌকন, উৎকোচ গ্রহণ নিষিদ্ধ করেন। (iii) প্রশিক্ষণের উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন চালাতে পারে তার জন্য বেতনের হার বাড়ানো হয়। ইউরোপীয়দের বেতন গড়ে ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
(iv) ভারতীয়দের উচ্চ সরকারি পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় ।
[2] ওয়েলেসলির ভূমিকা:
ওয়েলেসলি মনে করতেন ইংল্যান্ড থেকে যেসব যুবক ভারতে সিভিল সার্ভিসের চাকরি করবে তাদের এদেশের ভাষা, সামাজিক রীতিনীতি, আবেগ ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়া দরকার। তাই তিনি তরুণ সিভিলিয়ানদের প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে কলকাতায় গড়ে তোলেন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ (১৮০০ খ্রি.)।
[3] প্রশিক্ষণ কেন্দ্র: ইউরোপীয় প্রশাসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে গড়ে ওঠা ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ বেশিদিন চলেনি। কারণ কোম্পানির নির্দেশকরা ভেবেছিলেন নবনিযুক্ত প্রশাসকরা লন্ডনের পরিবর্তে কলকাতার প্রতি অধিক অনুগত হয়ে উঠবে।
তাই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ বন্ধ (১৮০২ খ্রি.) করে দিয়ে লন্ডনের কাছে হার্টফোর্ডে ইন্ডিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয় (১৮০৫ খ্রি.), যা পরে হেইলবেরি অঞ্চলে স্থানান্তরিত (১৮০৯ খ্রি.) হয়।
ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস
১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে লন্ডনে প্রথম সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষার নাম হয় ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস বা আই সি এস। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট, ডেপুটি কালেক্টর, সাব জজ প্রভৃতি সরকারি পদগুলিতে ভারতীয়দের নিয়োগ শুরু হয়।
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা
প্রশ্ন ৪ *ভারতে কোম্পানি শাসনের বিস্তার ও সেনাবাহিনীর বৃদ্ধির মধ্যে কি সরাসরি সম্পর্ক ছিল বলে মনে হয়? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
সূচনা: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে এসেছিল বাণিজ্য করতে। পলাশি ও বক্সারের যুদ্ধে জেতার পর কোম্পানি রাজশক্তিরূপে আত্মপ্রকাশ করেছিল।
[1] সেনাবাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা: ভারতে ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য প্রসারিত হলে পুলিশবাহিনীর পরিবর্তে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তাই ইংরেজ কোম্পানি স্থায়ী সেনাবাহিনী তৈরির উদ্যোগ নেয়। এক্ষেত্রে তারা মুঘল সেনা নিয়োগ পদ্ধতি অনুসরণ করে।
[2] শাসন বিস্তার ও সেনাবাহিনীর বৃদ্ধি: প্রাথমিকভাবে ভারতে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে যে-কোনো ধরনের বিরোধিতার মোকাবিলা করত পুলিশ বাহিনী। কিন্তু জটিল পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীকে হস্তক্ষেপ করতে হত।
এ ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের প্রসার ঘটলে সমানুপাতিক হারে কোম্পানির সেনা সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন পড়ে। এভাবেই কোম্পানির শাসন বিস্তারের সঙ্গে তার সেনাবাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধির সম্পর্ক যুক্ত হয়ে পড়ে।
[3] সেনা বৃদ্ধি সম্পর্কে অগ্রগতি : ইংরেজ কোম্পানির শাসন বিস্তার ও সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি সম্পর্কে অগ্রগতির ফলশ্রুতি হিসেবে কোম্পানির স্থায়ী সেনাবাহিনী গড়ে ওঠে। ভারতের সেনা নিয়োগ পরম্পরা অনুসরণ করে কোম্পানির তরফে স্থায়ী সেনাবাহিনী গঠন করা হয়।
কোম্পানির সেনাবাহিনীতে কৃষক এমনকি সাধারণ ভারতীয়দেরও নিয়োগ করা শুরু হয়। ভারতীয়দের নিয়ে এক আলাদা সেনাবাহিনী তৈরি করে ইংরেজ কোম্পানি। পরবর্তীকালে সেনাবাহিনীতে উচ্চ বর্ণের রাজপুত কৃষক,
ব্রাক্ষ্মণ ছাড়াও মারাঠা, মহিশূর এলাকার উপজাতি গোষ্ঠী এবং নেপালি গোর্খাদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা শুরু হয়। এভাবেই ঔপনিবেশিক ভারতে কোম্পানির শাসন এলাকার বিস্তারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোম্পানির সেনা সংখ্যাও বাড়তে থাকে।
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা : বিশ্লেষণধর্মী উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
marks 3
প্রশ্ন 1 বোম্বাই প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলগুলি কী কী ?
আঠারো শতকে ঔপনিবেশিক ভারতে বোম্বাই, মাদ্রাজ ও বাংলায় প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল: বোম্বাই প্রেসিডেন্সি প্রথমদিকে পশ্চিম প্রেসিডেন্সি নামে পরিচিত ছিল। পরে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশও এই প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত হয়। বর্তমান ভারতের গুজরাট, মহারাষ্ট্রের পশ্চিম অঞ্চলের ২/৩ অংশ, কর্ণাটকের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল এই প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ছিল ।
প্রশ্ন 2 রেগুলেটিং অ্যাক্ট কোন্ উদ্দেশ্যে প্রবর্তিত হয় এবং তার ফলাফল কী ছিল?
১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে রেগুলেটিং অ্যাক্ট পাস হয় ।
উদ্দেশ্য: ভারতে ব্রিটিশ কোম্পানির বণিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ওপর ব্রিটেনের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার লক্ষ্যে ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রেগুলেটিং অ্যাক্ট পাস করা হয়।
রেগুলেটিং অ্যাক্ট অনুসারে মাদ্রাজ, বোম্বাই ও বাংলা প্রেসিডেন্সির কার্যকলাপের ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্ৰণ কায়েম করে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। গভর্নর-জেনারেল নামে নতুন এক পদ তৈরি করা হয়। ঠিক করা হয়, বাংলার গভর্নরই হবেন গভর্নর-জেনারেল, যাঁর মেয়াদ হবে পাঁচ বছর।
চারজন সদস্য নিয়ে গভর্নর-জেনারেলের একটি কাউন্সিল গঠিত হয়। এই আইনের ফলে কলকাতা ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনের রাজধানীতে পরিণত হয় ।
প্রশ্ন 3। পিটের ভারত শাসন আইনের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
> ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী উইলিয়ম পিট ভারত শাসন আইন তৈরি করেন (১৭৮৪ খ্রি.)।
বৈশিষ্ট্য : এই আইনের মাধ্যমে —
(i) ভারতে ব্রিটিশ কোম্পানির কার্যকলাপের ওপর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নজরদারি নিশ্চিত হয়েছিল।
(ii) একটি বোর্ড অব কন্ট্রোল তৈরি করে সেটিকে কোম্পানির সামরিক ও অসামরিক শাসন ও রাজস্ব ব্যবস্থা পরিচালনার সকল দায়িত্ব দেওয়া হয় ।
(iii) কোম্পানির প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে গভর্নর-জেনারেল পদটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
প্রশ্ন 4 ওয়ারেন হেস্টিংস এবং লর্ড কর্নওয়ালিশের বিচারব্যবস্থার সংস্কারের তুলনামূলক আলোচনা করো ।
ওয়ারেন হেস্টিংসের বিচার সংস্কার :
হেস্টিংসের আমলে—
(i) প্রতি জেলাতে একটি দেওয়ানি ও একটি ফৌজদারি আদালত তৈরি করা হয়।
(ii) বিচার বিভাগের সমস্ত আদেশ লিখে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
(iii) সমস্ত দেওয়ানি আদালতগুলিকে একই নিয়মের অধীনে আনার চেষ্টা করা হয়।
(iv) দেশীয় বিচারব্যবস্থা দেখভালের চূড়ান্ত দায়িত্ব ইউরোপীদের হাতে দেওয়া হয়।
(v) বিচারব্যবস্থার প্রতিটি পদেই ইউরোপীয়দের নিয়োগ করা হয়।
কর্নওয়ালিশের বিচার সংস্কার: কর্নওয়ালিশ আইনগুলিকে সংহত করে ‘কোড’ বা বিধিবদ্ধ আইন চালু করেন। তাঁর আমলে—
(i) দেওয়ানি বিচার ও রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব আলাদা করা হয়।
(ii) নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদনের অধিকার স্বীকার করা হয়।
(iii) সমস্ত আদালতেই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করা হয় ইউরোপীয়দের।
প্রশ্ন 5 ঔপনিবেশিক বিচারব্যবস্থা কেন্দ্রীভূত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে উঠেছিল কীভাবে?
ওয়ারেন হেস্টিংস ঔপনিবেশিক ভারতের গভর্নর-জেনারেল হওয়ার পর বাংলার বিচারব্যবস্থার সংস্কারের কাজ শুরু করেন। তিনি সমস্ত দেওয়ানি আদালতগুলিকে একই নিয়মের অধীনে আনার চেষ্টা করেছিলেন।
বিচারে সমতা আনার জন্য দরকার ছিল প্রচলিত আইনগুলির অভিন্ন ব্যাখ্যা। সেই উদ্দেশ্যে ওয়ারেন হেস্টিংসের উদ্যোগে ১১ জন পণ্ডিত হিন্দু আইনগুলির একটি সারসংকলন তৈরি করে তা ইংরেজিতে অনুবাদ করে।
তার ফলে দেশীয় আইনের ব্যাখ্যার জন্য ইউরোপীয় বিচারকদের ভারতীয় সহকারীদের ওপরে বিশেষ নির্ভর করতে হত না। মুসলমান আইনগুলিরও একটি সংকলন বানানো হয়। এসবের মধ্যে দিয়ে ঔপনিবেশিক বিচারব্যবস্থা কেন্দ্রীভূত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে উঠেছিল।
প্রশ্ন 6 *বিচারব্যবস্থায় কোম্পানি কেন চূড়ান্ত কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিল বলে তোমার মনে হয় ?
ভারতের গভর্নর-জেনারেল হেস্টিংস-এর আমল থেকে দেশীয় অভিজাতদের হাত থেকে বিচারব্যবস্থাকে আলাদা করার প্রস্তাব ওঠে।
কোম্পানি নিজেদের স্বার্থেই বিচারব্যবস্থায় তাদের একচেটিয়া কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়।
কোম্পানি চেয়েছিল ইংরেজ অপরাধীদের আড়ালে রেখে শাসিত ভারতীয়দের বিচারবিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে। তাই বিচারব্যবস্থাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সমস্ত আদালতে প্রধান বিচারপতির পদে ইউরোপীয়দের বসানো হয়।
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা:প্রশ্ন 7 টীকা লেখো: সুপ্রিমকোর্ট।
প্রতিষ্ঠাকাল : রেগুলেটিং অ্যাক্ট অনুসারে ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় তৈরি হয় ইম্পিরিয়াল কোর্ট বা সুপ্রিমকোর্ট। পরে ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজে এবং ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইতে একটি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয়।
বিচারপতি: প্রতিষ্ঠাকালে কলকাতার সুপ্রিমকোর্টে একজন প্রধান বিচারপতি ও তিনজন বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছিল। পরে সুপ্রিমকোর্টের বিচারকসংখ্যা চার জনের বদলে তিন জন করা হয় (১৭৯৭ খ্রি.)।
ক্ষমতা ও কাজ : প্রতিষ্ঠাকালে ঠিক হয়েছিল ভারতে থাকা ব্রিটিশ নাগরিকদেরই বিচার করবে সুপ্রিমকোর্ট। কিন্তু পরে আইন করে বলা হয়, রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত কোনো মামলা সুপ্রিমকোর্টের এক্তিয়ারে পড়বে না । এ ছাড়াও কোম্পানির গভর্নর ও গভর্নরের কাউন্সিলদের কাজকর্মে সুপ্রিমকোর্ট হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
প্রশ্ন ৪ কোম্পানি পরিচালিত আইন ব্যবস্থাকে সংহত করার ক্ষেত্রে কর্নওয়ালিশ কী ভূমিকা নিয়েছিলেন?
> কর্নওয়ালিশ ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজনৈতিক অধিকার সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ভারতের আইন ব্যবস্থাকে সংহত করা ছিল তাঁর এক উল্লেখযোগ্য প্রয়াস।
কর্নওয়ালিশের ভূমিকা: কোম্পানি পরিচালিত আইন ব্যবস্থাকে প্রথম সুসংহত রূপদানের চেষ্টা করেন কর্নওয়ালিশ। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে কর্নওয়ালিশ সরকারি কর্মচারীদের সততা, কর্মদক্ষতা ও নিয়মানুবর্তিতা বৃদ্ধির জন্য কয়েকটি আচরণবিধি তৈরি করেন। এই আচরণবিধি মান্য করা সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়, যা কর্নওয়ালিশ কোড নামে খ্যাত ।
প্রশ্ন 9 টীকা লেখো: উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের সংস্কার।
• ভারতে গভর্নর-জেনারেলদের মধ্যে উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক বেশকিছু সংস্কার সাধন করেছিলেন। তিনি—
মহলওয়ারি বন্দোবস্ত প্রবর্তন : তিনি এলাহাবাদ ও বারাণসী অঞ্চলে মহলওয়ারি বন্দোবস্ত চালু করেছিলেন। বিচারক পদে ভারতীয়দের নিয়োগ : তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, ডেপুটি কালেক্টর প্রভৃতি পদে আবার ভারতীয়দের নিয়োগ করার প্রথা শুরু করেন।
যোগ্যতার ওপর গুরুত্ব : তাঁর প্রবর্তিত এক আইনে বলা হয়, কোম্পানি কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম ও উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক বর্ণের মাপকাঠির বদলে কেবল যোগ্যতা বিচারে নিয়োগ করবে। ঠগি দস্যু দমন: কর্নেল স্লিম্যানের নেতৃত্বে এক বিশেষ বিভাগ তৈরি করে ঠগি দস্যুদের দমন করা হয়।
প্রশ্ন 10 * মুঘল আমলের বিচারব্যবস্থার সঙ্গে কোম্পানি আমলের বিচারব্যবস্থার একটি তুলনামূলক ধারণা দাও। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা: ৪০]
মুঘল আমলে প্রতিটি জেলায় দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত ছিল না। কিন্তু কোম্পানির আমলে প্রতিটি জেলাতে একটি করে দেওয়ানি ও একটি করে ফৌজদারি আদালত গড়ে তোলা হয়। মুঘল আমলে বিচার বিভাগের আদেশগুলি লিখে রাখার নিয়ম ছিল না।
কিন্তু কোম্পানির আমলে বিচার বিভাগের সমস্ত আদেশ লিখে রাখার নিয়ম চালু হয় । মুঘল আমলে না হলেও কোম্পানির আমলে সমস্ত দেওয়ানি আদালতগুলিকে একই নিয়মের অধীনে আনার চেষ্টা করা হয় ।
প্রশ্ন 11 কোম্পানির সিপাহিবাহিনী বলতে কী বোঝ? বাংলা
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মুঘল সেনানিয়োগ পদ্ধতি অনুসরণে স্থায়ী সেনাবাহিনী তৈরির উদ্যোগ নেয়। উত্তর ভারতের কৃষকদের কোম্পানির সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হত। এমনকি তাদের সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা করে রাখা হত। সেনা নিয়োগের ক্ষেত্রে কোম্পানি পূর্ব প্রচলিত জাতভিত্তিক ধারণাগুলির বিরোধিতা করেনি। এইসব প্রথা মেনেই গড়ে ওঠে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সিপাহিবাহিনী ।
প্রশ্ন 12 কীভাবে পুলিশি ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ঔপনিবেশিক কৰ্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার অন্যতম হাতিয়ার হয়ে ওঠে ?
• ব্রিটিশ কোম্পানির মূল লক্ষ্য ছিল পুলিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে ভারতে ‘আইনের শাসন’ প্রতিষ্ঠা করা। সেই উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ শাসনের অধীনস্ত পুলিশি ব্যবস্থায় নানা রকম সংস্কার করা হতে থাকে। সেইরকম একটি উদ্যোগ ছিল ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে সিন্ধু প্রদেশ অঞ্চলে নতুন ধাঁচের পুলিশি ব্যবস্থার প্রবর্তন।
ক্রমে আলাদা পুলিশ আইন বানানো হয়। এইভাবে ধীরে ধীরে ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও প্রদর্শনের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে ওঠে পুলিশি ব্যবস্থা ।
প্রশ্ন 13 কোম্পানি আমলের পুলিশি ব্যবস্থা সম্পর্কে কী জান? অথবা, ভারতে কোম্পানির শাসন কাঠামোয় ব্রিটিশ পুলিশবাহিনীর ভূমিকা কী ছিল ?
● ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পর পুলিশি ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় ৷
থানা ব্যবস্থার প্রবর্তন: কর্নওয়ালিশ জেলাগুলির দেখভাল করার জন্য পুলিশ থানা ব্যবস্থা চালু করেন (১৭৯৩ খ্রি.)।
ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ : পুরোনো ফৌজদারের জায়গায় ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়োগ করা হয়।
দারোগা ব্যবস্থা : প্রথমে প্রতিটি থানায় দারোগাদের দায়িত্ব দেওয়া হলেও পরে পাকাপাকিভাবে দারোগা ব্যবস্থার বিলোপ করা হয় (১৮১২ খ্রি.)।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা: ব্রিটিশ কোম্পানি পুলিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়।
প্রশ্ন 14 ঔপনিবেশিক শাসনকালে সিপাহি বাহিনীতে জাতভিত্তিক মনোভাব আরও বেশি করে কেন দেখা দিতে লাগল ?
• ঔপনিবেশিক শাসনের গোড়ার দিকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুঘল আমল থেকে প্রচলিত জাতভিত্তিক ধারণার বিরোধিতা করেনি কোম্পানি। ফলে সিপাহি বাহিনীতে উচ্চবর্ণের ব্রাক্ষ্মণ ও রাজপুত কৃষকরা সহজেই জায়গা করে নিত।
এরা সিপাহি বাহিনীতে যোগ দিয়ে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও নিয়মিত বেতন পেতে থাকে। ফলে সিপাহি বাহিনীতে জাতিভিত্তিক মনোভাব দেখা দিতে লাগে।
প্রশ্ন 15 ঔপনিবেশিক কর্তত্ব প্রতিষ্ঠাকালে কোম্পানির শাসনব্যবস্থায় আমলাতন্ত্র কীরূপ ছিল? অথবা, ব্রিটিশ কোম্পানির প্রশাসন ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্রের ভূমিকা কী ছিল? কীভাবে আমলারা একটি সংকীর্ণ গোষ্ঠী হিসাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল ?
> অসামরিক শাসন ব্যবস্থায় ইংরেজ শাসকদের প্রধান হাতিয়ার ছিল আমলাতন্ত্র ।
কোম্পানি প্রশাসনে আমলাতন্ত্রের ভূমিকা : শাসনপরিচালনার নীতিগুলি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমলাদের স্বাধীনতা ছিল না। আমলাদের কাজ ছিল সরকারের গৃহীত নীতিগুলি প্রয়োগ করা।
আমলাদের ঐক্যবদ্ধকরণ : কর্নওয়ালিশ ইউরোপীয় প্রশাসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন (১৮০০ খ্রি.)। সিভিল সার্ভেন্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়। এই কলেজে পড়ার ফলে সিভিল সার্ভেন্টদের মধ্যে এক ঐক্যবোধ তৈরি হয়।
সিভিল সার্ভেন্ট বা আমলারা নিজেদের এক আলাদা গোষ্ঠী হিসেবে ভাবতে শুরু করেন। তাদের মধ্যেকার এই ঐক্যবোধ ও সংকীর্ণ গোষ্ঠীভাবনা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন পরিচালনার পক্ষে সহায়ক হয়েছিল।
প্রশ্ন 16 টীকা লেখো: সামরিক জাতি।
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মহাবিদ্রোহ বা সিপাহি বিদ্রোহের পর ঔপনিবেশিক সিপাহি বাহিনীকে ঢেলে সাজানো হয়েছিল। ব্রিটিশ শাসকের ধারণা ছিল ভাতের বদলে রুটি খাওয়া ভারতীয়রা শারীরিকভাবে বেশি সক্ষম।
এই ধারণা থেকে মহাবিদ্রোহের পর পাঞ্জাবের জাঠ অধিবাসীদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা শুরু হয়। পাশাপাশি সেনাবাহিনীতে পাঠান, রাজপুত ও নেপালি গোরখাদের সংখ্যা বাড়ানো হয়। ঔপনিবেশিক শাসকের যুদ্ধে দক্ষ এইসব সেনাদের সামরিক জাতি বলে প্রচার করত।
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা : সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
প্রশ্ন 1 *ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা কাকে বলে ?
marks
O ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিল একটি বণিক সংস্থা। ভারতীয় উপমহাদেশে সুষ্ঠুভাবে বাণিজ্য পরিচালনার লক্ষ্যে তাঁরা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বাণিজ্যিক ঘাঁটি তৈরি করে। এই ঘাঁটিগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল মাদ্রাজ, বোম্বাই ও কলকাতা। পরবর্তী সময়ে এই তিনটি বাণিজ্য ঘাঁটিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা।
প্রশ্ন 2 মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কীভাবে গড়ে উঠেছিল ?
১৬১১ ও ১৬১২ খ্রিস্টাব্দে যথাক্রমে মসুলিপটনম ও সুরাটকে ঘাঁটি করে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক কার্যকলাপ চলতে থাকে। ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মাদ্রাজে একটি ঘাঁটি বানায়। এর এক বছর পরে কোম্পানি সেখানে সেন্ট জর্জ দুর্গ বানায়। এই সেন্ট জর্জ দুর্গ ও মাদ্রাজকে কেন্দ্ৰ করে ক্রমে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি বা সেন্ট জর্জ দুর্গ প্রেসিডেন্সি গড়ে ওঠে।
প্রশ্ন 3 কোন্ কোন্ অঞ্চল মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ছিল ?
দক্ষিণ ভারতের বিরাট অংশ মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ছিল। এখনকার তামিলনাড়ু, উত্তর কেরালার মালাবার অঞ্চল ও অন্ধ্রপ্রদেশের বেশ কিছু অঞ্চলের পাশাপাশি দক্ষিণ উড়িষ্যার বেশ কিছু অঞ্চল ও কর্ণাটক মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই প্রেসিডেন্সির গ্রীষ্মকালে প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল ওটাকামুন্দ ও শীতকালে প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল মাদ্রাজ।
নিজামতের অধিকারও পায় ব্রিটিশ কোম্পানি। এইভাবে দেওয়ানি ও নিজামত—দুটি অধিকার পাওয়ার ফলে বাংলায় ব্রিটিশ কোম্পানির অধিকার চূড়ান্ত হয়। তাই বাংলা তথা পূর্ব ভারতে তাদের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যপূরণ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলাকে প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করে।
প্রশ্ন 4 বাংলা প্রেসিডেন্সি কীভাবে গড়ে উঠেছিল?
১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যখন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানির অধিকার পায়, তখন থেকেই বাংলার ওপর কোম্পানির কর্তৃত্ব গড়ে উঠতে থাকে। এরপর ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে এইসব অঞ্চলের
প্রশ্ন 5 বোম্বাই প্রেসিডেন্সি কীভাবে গড়ে ওঠে? অথবা, বোম্বাইকে কেন প্রেসিডেন্সি করা হয় ?
• মুঘল আমলে বাণিজ্যিক দিক থেকে সুরাট ছিল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তবে ক্রমে ভারতের পশ্চিমাংশে অবস্থিত বোম্বাই শহর বাণিজ্যিক দিক থেকে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। তাই সপ্তদশ শতকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাণিজ্যিক ঘাঁটি তৈরি করার লক্ষ্যে বোম্বাই প্রেসিডেন্সি গড়ে তোলে। ধীরে ধীরে পশ্চিম ও মধ্য ভারত এবং আরব সাগরের তীরবর্তী অঞ্চলগুলি বোম্বাই প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত হয়।
প্রশ্ন 6 ভারতে ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা কীভাবে গড়ে উঠেছিল ?
> ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্যের স্বার্থে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কতকগুলি ঘাঁটি তৈরি করেছিল। সেই ঘাঁটিগুলির মধ্যে ছিল মাদ্রাজ, বোম্বাই ও কলকাতা। প্রশাসনিক কার্যকলাপের সুবাদে এই তিনটি বাণিজ্যঘাঁটিকে কেন্দ্র করেই ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল।
প্রশ্ন 7 কোন্ কোন্ অঞ্চল মিলে বাংলা প্রেসিডেন্সি গড়ে উঠেছিল ?
বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, ত্রিপুরা ও আসাম অঞ্চল মিলে গড়ে উঠেছিল বাংলা প্রেসিডেন্সি। পাঞ্জাব, উত্তর ও মধ্য ভারতের অঞ্চলগুলি এবং গঙ্গাব্রক্ষ্মপুত্র অববাহিকার অঞ্চলও বাংলা প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ছিল।
প্রশ্ন ৪ পিটের ভারত শাসন আইনের লক্ষ্য উল্লেখ করো ।
১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে প্রবর্তিত রেগুলেটিং অ্যাক্টের ত্রুটিগুলি দূর করা ও ভারতে কোম্পানির শাসনকে আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম পিট ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এই আইনটি পাস করেন। ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি ওই আইনটি বলবৎ হয়। এই আইনের ফলে ভারতে ব্রিটিশ কোম্পানির কার্যকলাপের ওপর ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নজরদারি সুনিশ্চিত হয় ।
প্রশ্ন 9 ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল কেন?
● ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থার দ্বারা ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কার্যকলাপের প্রসার ঘটাতে চেয়েছিল। তা ছাড়া প্রেসিডেন্সির কাউন্সিলগুলি লন্ডনে ব্রিটিশ কোম্পানির পরিচালক গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখে চলত।
প্রশ্ন 10 কত সালে, কোন্ আইনের দ্বারা কলকাতা ভারতের রাজধানীতে পরিণত হয় ? [
১৭৭৩ খ্রি. কলকাতা ভারতের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাজধানী হয়।
• রেগুলেটিং অ্যাক্ট নামে আইনের দ্বারা কলকাতা ভারতের রাজধানীতে পরিণত হয় ।
প্রশ্ন 11 রেগুলেটিং অ্যাক্ট কী ?
লক্ষ্য: ভারতের ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের ওপর ব্রিটেনের পার্লামেন্টের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ স্থাপনের লক্ষ্যে প্রবর্তিত হয় রেগুলেটিং অ্যাক্ট (১৭৭৩ খ্রি.)
শর্তাবলী : [1] এই অ্যাক্ট বা আইন অনুসারে মাদ্রাজ, বোম্বাই ও বাংলা প্রেসিডেন্সিগুলির স্বতন্ত্র কার্যকলাপের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়।
[2] গভর্নর জেনারেল বলে নতুন একটি পদ তৈরি করা হয়।
[3] ঠিক হয়, পাঁচ বছরের জন্য বাংলার গভর্নরই হবেন গভর্নর জেনারেল এবং তাঁর অধীনেই মাদ্রাজ ও বোম্বাইয়ের বাণিজ্যিক ঘাঁটিগুলির গভর্নরেরা থাকবেন ।
প্রশ্ন 12 পিটের আইনে কী বলা হয়েছিল ?
পিটের আইনে বলা হয় ভারতে কোম্পানির সমস্ত প্রশাসনিক কর্তাই গভর্নর জেনারেলের কর্তৃত্ব মেনে চলতে বাধ্য। পাশাপাশি এই আইন বলবৎ করে ব্রিটিশ কোম্পানির কার্যকলাপের ওপর ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নজরদারি নিশ্চিত করা হয়।
প্রশ্ন 13 কোম্পানির শাসনকালে বিচারে সমতা আনার জন্য ওয়ারেন হেস্টিংস কী ভূমিকা নিয়েছিলেন ?
কোম্পানির শাসনকালে বিচারে সমতা আনার জন্য ওয়ারেন হেস্টিংস একটি দেওয়ানি ও একটি ফৌজদারি আদালত তৈরি করেন। পাশাপাশি তিনি দেওয়ানিগুলিতে প্রধান বিচারক হিসেবে ইউরোপীয়দের নিয়োগ করলেও ফৌজদারিগুলিতে একজন করে দেশীয় কাজি ও মুফতি নিয়োগ করেন। তিনি সমস্ত দেওয়ানি আদালতগুলিকে একই নিয়মের অধীনে আনার চেষ্টা চালান ৷
প্রশ্ন 14 রেগুলেটিং অ অ্যাক্ট অনুযায়ী কোথায় এবং কত খ্রিস্টাব্দে ইম্পিরিয়াল কোর্ট তৈরি হয় ?
• রেগুলেটিং অ্যাক্ট অনুযায়ী ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ইম্পিরিয়াল কোর্ট তৈরি হয়।
প্রশ্ন 15 ভারতের সুপ্রিমকোর্ট কত খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত হয় ? সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি কে হন?
ভারতের সুপ্রিমকোর্ট ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত হয় সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি হন এলিজা ইম্পে।
প্রশ্ন 16 ভারতের সর্বোচ্চ আদালত কোটি? এর প্রধান বিচারপতিকে কে নিয়োগ করেন ?
ভারতের সর্বোচ্চ আদালত হল সুপ্রিমকোর্ট।
এর প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেন।
প্রশ্ন 17 কর্নওয়ালিশ পুলিশ প্রশাসনের কী কী সংস্কার সাধন করেন ?
তিনি ইউরোপীয় প্রশাসকদের ভালোমতো প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
কর্নওয়ালিশ জেলাগুলির দেখভাল করার জন্য পুলিশ থানা ব্যবস্থা চালু করেন (১৭৯৩ খ্রি.)। প্রতিটি থানার দায়িত্ব দেওয়া হয় একজন দারোগার ওপর। ম্যাজিস্ট্রেট নামক উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের দ্বারা দারোগাদের নিয়ন্ত্রণ করা হত।
প্রশ্ন 18 ব্রিটিশ প্রশাসন ভারতে ‘আইনের শাসন’ চালু করেছিল—এই ‘আইনের শাসন’-এর মূলকথা কী ?
ঔপনিবেশিক শাসক হিসেবে ব্রিটিশ প্রশাসন ভারতে ‘আইনের শাসন’-এর ধারণা চালু করে। এই ধারণায় বলা হয়, আদর্শগতভাবে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ প্রশাসন আইন মেনে কাজ করবে। আইনে শাসক ও শাসিতের সমস্ত অধিকার স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা থাকবে।
প্রশ্ন 19 কে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং কেন ?
● বড়োলাট কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন (১৮০০ খ্রি.)।
প্রশ্ন 20 ব্রিটিশ ভারতের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ভারতীয়দের খাদ্যাভ্যাসের বিচার করা হত কেন ?
ব্রিটিশ শাসকের ধারণা ছিল যেসব ভারতীয় ভাত খায় তারা শারীরিক দিক দিয়ে দুর্বল। আর রুটি খাওয়া ভারতীয়রা নাকি শারীরিকভাবে বেশি সক্ষম। তাই ব্রিটিশ ভারতের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ভারতীয়দের খাদ্যাভ্যাসের বিচার করা হত।
প্রশ্ন 21 *ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অসলে ছিল একটি বণিক কোম্পানি অসলে সংস্থা—উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
> ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাণিজ্যের লক্ষ্য নিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে আসে। প্রথমে মসুলিপটনম ও সুরাট পরে গোটা ভারতজুড়ে কোম্পানি তার বাণিজ্যিক আধিপত্য স্থাপন করে। পলাশি ও বক্সারের যুদ্ধের পর কোম্পানির বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রূপান্তরিত হয়।
তাই আঠারো শতকের শেষের দিকে কোম্পানি রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন করলেও বাণিজ্যই ছিল এদেশে তাদের আগমনের প্রধান উদ্দেশ্য।
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা : অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
নীচের বাক্যগুলির কোনটি ঠিক কোনটি ভুল লেখ।
উত্তর :-
1. বাংলা প্রেসিডেন্সিকে সেন্ট জর্জ দুর্গ প্রেসিডেন্সি বলা হত ।
উত্তর :- ভুল।
2. সতেরো শতকে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ক্রমে সুরাটের অবনতি, পাশাপাশি বোম্বাইয়ের উন্নতি ঘটে।
উত্তর :- ঠিক।
3. ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দের রেগুলেটিং অ্যাক্ট এবং ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে পিটের ভারত শাসন আইন জারি হয় ।
উত্তর :- ঠিক
4. ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে ভারতশাসন আইনের সময় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন উইলিয়াম পিট।
উত্তর :- ভুল।
5. কোম্পানি দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা তুলে দিয়েছিলেন ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে।
উত্তর :- ঠিক
6. লর্ড কর্নওয়ালিশ ঔপনিবেশিক বিচার কাঠামো থেকে ভারতীয়দের পুরোপুরি বাদ দিয়েছিলেন।
উত্তর :- ঠিক।
7. ওয়ারেন হেস্টিংস আইনগুলি সংহত করে কোড বা আইন চালু করেন।
উত্তর :- ভুল ।
৪. উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ঠগি দস্যুদের দমন করেন।
উত্তর :- ঠিক।
9. লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের আমলে ঠগিদের দমন করা হয়।
উত্তর :- ঠিক।
10. ভারতে পুলিশবিভাগ স্থাপন করেন ওয়ারেন হেস্টিংস। ]
উত্তর :- ঠিক।
প্রশ্ন 11. লর্ড কর্নওয়ালিশ সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা চালু করেন।
উত্তর :-ঠিক
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা অনুশীলনী,
সঠিক তথ্য:
1. বাংলা প্রেসিডেন্সিকে সেন্ট জর্জ দুর্গ প্রেসিডেন্সি বলা হত। 4. ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে ভারতশাসন আইনের সময় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন উইলিয়াম পিট । 7. ওয়ারেন হেস্টিংস আইনগুলি সংহত করে কোড বা আইন চালু করেন।
শূন্যস্থান পূরণ করো
1. ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গকে ____ (বোম্বাই/মাদ্রাজ/বাংলা) প্রেসিডেন্সি বলা হত ।
উত্তর] বাংলা প্রেসিডেন্সি
2. বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, আসাম ও ত্রিপুরা অঞ্চল মিলে ছিল ____।
উওর:- বাংলা প্রেসিডেন্সি
3. মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অপর নাম ছিল। ___
উত্তর :- সেন্ট জর্জ দুর্গ।
4. উইলিয়াম পিট ছিলেন ___ (ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী/বাংলার প্রধানমন্ত্রী/মাদ্রাজের প্রধানমন্ত্রী)।
উত্তর :- ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
5. ____ সালে রেগুলেটিং অ্যাক্ট চালু হয়েছিল।
উত্তর :- 1773
6.শাসনকালে বিচারব্যবস্থাকে ভারতীয় শাসকদের প্রভাবমুক্ত করার দাবি ওঠে এবং সেই দাবি জোরদার হয় ।
উত্তর :- ওয়ারেন হেস্টিংস এর।
7. নিয়মিত পুলিশবাহিনী প্রথম গড়ে তোলেন – (ডালহৌসি/ওয়েলেসলি/কর্নওয়ালিশ)।
উত্তর :- কর্নওয়ালিশ
৪.. ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে দারোগা ব্যবস্থা বিলোপের পর গ্রামের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কালেক্টর/জমিদার)-দের ।
উত্তর :- কালেক্টর
9. ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের জনক ছিলেন –
উত্তর :- কর্ন ওয়ালিসিস।
10. -__ কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
উত্তর :- ওয়েলেসলি
একটি বাক্যে উত্তর দাও :
1. কখন, কীভাবে বাংলার ওপর কোম্পানির কর্তৃত্ব গড়ে ওঠে?
• ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি যখন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানির অধিকার পায়, তখন থেকেই বাংলার ওপর কোম্পানির কর্তৃত্ব গড়ে ওঠো
2. কবে ব্রিটিশ কোম্পানি বাংলার নিজামতের অধিকার পায় ?
● ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ কোম্পানি বাংলার নিজামতের অধিকার পায়।
3. মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিকে সেন্ট জর্জ দুর্গ প্রেসিডেন্সি বলা হয় কেন?
● সেন্ট জর্জ ও মাদ্রাজকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয় বলে এই দুর্গকে সেন্ট জর্জ দুর্গ প্রেসিডেন্সি বা মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি বলা হয় ।
4. মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির শীতকালীন প্রশাসনিক কেন্দ্র কোথায় ছিল?
● মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির শীতকালীন প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল মাদ্রাজ।
5. মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির দুটি প্রশাসনিক কেন্দ্রের নাম করো।
> মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির দুটি প্রশাসনিক কেন্দ্রের নাম গ্রীষ্মকালে ওটাকামুন্দ ও শীতকালে মাদ্রাজ ।
6. রেগুলেটিং অ্যাক্ট-এর উদ্দেশ্য কী ছিল?
রেগুলেটিং অ্যাক্ট-এর উদ্দেশ্য ছিল ভারতে ব্রিটিশ কোম্পানির বণিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ওপর ব্রিটেনের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা ।
7 “পিটের ভারত শাসন আইন কবে বলবৎ হয় ?
পিটের ভারত শাসন আইন ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি বলবৎ হয়।
৪. কত সালে, কোন্ আইনের দ্বারা কলকাতা ভারতের রাজধানীতে পরিণত হয়?
• ১৭৭৩ সালে রেগুলেটিং আইনের দ্বারা কলকাতা ভারতের রাজধানীতে পরিণত হয়
9. কোন্ আইনের মাধ্যমে ভারতে ব্রিটিশ কোম্পানির কার্যকলাপের ওপর ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নজরদারি নিশ্চিত হয়েছিল ?
পিটের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে ভারতে ব্রিটিশ কোম্পানির কার্যকলাপের ওপর ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নজরদারি নিশ্চিত হয়েছিল।
10. উইলিয়াম পিটের ভারত শাসন আইন’-টি কত সালে প্রণীত হয়েছিল?
উইলিয়াম পিটের ভারত শাসন আইনটি ১৭৮৪ সালে প্রণীত হয়েছিল।
11. কোন্ আইনের দ্বারা ব্রিটিশ কোম্পানির ওপর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নজরদারি নিশ্চিত হয় ?
● পিটের ভারত শাসন আইন (১৭৮৪ খ্রি.) দ্বারা ব্রিটিশ কোম্পানির ওপর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নজরদারি নিশ্চিত হয় ।
12. কত খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় সুপ্রিমকোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয় ? অথবা, কলকাতায় কবে সুপ্রিমকোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয় ?
● ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় সুপ্রিমকোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয় ৷
13. সুপ্রিমকোর্টের ক্ষমতা কীভাবে সীমাবদ্ধ করা হয়?
● ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দের আইন করে সুপ্রিমকোর্টের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করা হয় ।
14. এগারোজন হিন্দুপণ্ডিত হিন্দু আইনগুলির সারসংকলন করেন কার উদ্যোগে ?
ওয়ারেন হেস্টিংসের উদ্যোগে এগারোজন হিন্দুপণ্ডিত হিন্দু আইনগুলির সারসংকলন তৈরি করেন।
15. কর্নওয়ালিশ কোড’ কত সালে চালু হয় ?
● ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে কর্নওয়ালিশ কোড চালু হয় ।
16. কর্নওয়ালিশ কোড কাকে বলে?
O কর্নওয়ালিশ আইনগুলিকে সংহত করে যে কোড বা বিধিবদ্ধ আইন চালু করেন, তাকে কর্নওয়ালিশ কোড বলে।
17. ব্রিটিশ আমলে ভারতে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি কে ছিলেন?
• ব্রিটিশ আমলে ভারতে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন এডওয়ার্ড হাইড ইস্ট।
18. প্রথম কোথায় সুপ্রিমকোর্ট তৈরি করা হয়েছিল ?
• প্রথম কলকাতায় সুপ্রিমকোর্ট তৈরি করা হয়েছিল।
19. উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক কার নেতৃত্বে উত্তর ও মধ্য ভারতে ঠগি দস্যুদের দমন করেন ?
• উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক কর্নেল স্লিম্যানের নেতৃত্বে উত্তর ও মধ্য ভারতে ঠগি দস্যুদের দমন করেন ।
20. মুঘল পুলিশ ব্যবস্থায় কাদের ক্ষমতা বেশি ছিল ?
● মুঘল পুলিশ ব্যবস্থায় ফৌজদার, কোতয়াল ও চৌকিদারদের ক্ষমতা বেশি ছিল।
21. কর্নওয়ালিস প্রবর্তিত পুলিশ থানা ব্যবস্থায় প্রতিটি থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কারা হয়েছিলেন?
. কর্নওয়ালিস প্রবর্তিত পুলিশ থানা ব্যবস্থায় প্রতিটি থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত দারোগারা হয়েছিলেন।
22. পুলিশ থানা ব্যবস্থা কে চালু করেন?
● পুলিশ থানা ব্যবস্থা চালু করেন কর্নওয়ালিশ।
23. মুঘল আমলে উত্তর ভারতে কাদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হত ? [
• মুঘল আমলে উত্তর ভারতে কৃষকদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা
24. কাদের সামরিক জাতি বলা হত ?
হত।
● পাঞ্জাবের জাঠ, পাঠান, উত্তর ভারতের রাজপুত ও নেপালি গোরখাদের সামরিক জাতি বলা হত ।
● 25. ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে সনদ আইনের শর্তগুলি লেখো।
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন অনুযায়ী বিচার, পুলিশ, সেনা ও আমলাতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে ঔপনিবেশিক শাসন পরিচালনা শুরু হয়।
ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা mcq
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:-
1. কলকাতা সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা হয়—
১৭৬৫ খ্রি. দেওয়ানি লাভের মাধ্যমে / ১৭৭৩ খ্রি. রেগুলেটিং অ্যাক্ট অনুযায়ী / ১৭৮৪ খ্রি. পিটের ভারত শাসন অনুযায়ী / কোনোটিই নয়।
উত্তর:- ১৭৭৩ খ্রি. রেগুলেটিং অ্যাক্ট অনুযায়ী
2. মাদ্রাজ, বোম্বাই ও কলকাতা এই তিনটি বাণিজ্য ঘাঁটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা /প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা / ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা
উত্তর:- ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা ।
3. অষ্টাদশ শতকে প্রধান তিনটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রকে বলা হয়— ব্রিটিশ কোম্পানি / ব্রিটিশ সাম্রাজ্য )ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি/ নজিমত
উত্তর:- ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি
4. কোম্পানি তার বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলিতে কী বানাত?
দুর্গ /কলেজ / স্কুল / দেওয়ানি
উত্তর:- দুর্গ।
5. ১৬১১ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কোন্ বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি তৈরি করে?
সেরিঙ্গাপতনম /মাদ্রাজ / সুরাট / মসুলি পতনম।
উত্তর:- মসুলি পতনম।
6. অষ্টাদশ শতকের প্রথমাংশে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাণিজ্যের স্বার্থে ভারতে কতগুলি ঘাঁটি তৈরি করেছিল?
দুটি /তিনটি/ চারটি / ছয়টি ।
উত্তর:- তিনটি।
7. ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে—
মাদ্রাজ / বোম্বাই / সুরাট / কলকাতা ।
উত্তর:- মাদ্রাজ।
৪. উত্তর ও মধ্য ভারতের অঞ্চলগুলি কোন্ প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ছিল ?
বোম্বে / দিল্লি ) মাদ্রাজ / কলকাতা ।
উত্তর:- কলকাতা ।
9. গ্রীষ্মকালে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির রাজধানী ছিল—
মাদ্রাজ / ওটাকামুন্দ / মহীশূর / সেন্ট জর্জ ।
উত্তর:- ওটাকামুন্দ।
10. ঔপনিবেশিক শাসনের শুরুর দিকে তিনটি প্রেসিডেন্সি পরিচালিত হত—
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট দ্বারা / রেগুলেটিং অ্যাক্ট দ্বারা / ফৌজদার দ্বারা /কাউন্সিল অব ডিরেক্টর দ্বারা [
উত্তর:- কাউন্সিল অব ডিরেক্টর দ্বারা।
11. ব্রিটিশ কোম্পানির কার্যকলাপের ওপর ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নজরদারি নিশ্চিত হয়েছিল —
A রেগুলেটিং অ্যাক্ট-এর মাধ্যমে /ইলবার্ট বিল আইন দ্বারা / পিট-প্রণীত ভারত শাসন আইন দ্বারা /আরভিন প্যাক্ট-এর মাধ্যমে ।
উওর:- পিট-প্রণীত ভারত শাসন আইন দ্বারা।
12. তিনটি প্রেসিডেন্সির গভর্নর নির্বাচন করত-
কাউন্সিল অব ডিরেক্টর / রেগুলেটিং অ্যাক্ট / ব্রিটিশ পার্লামেন্ট / ফৌজদার
উওর:- কাউন্সিল অব ডিরেক্টর।
13. কোন অ্যাক্টের মাধ্যমে গভর্নর-জেনারেল পদটি তৈরি হয়?
পিট-প্রণীত ভারতশাসন আইন/ আরভিন প্যাক্ট / ইলবার্ট বিল / রেগুলেটিং অ্যাক্ট ।
উওর:- রেগুলেটিং অ্যাক্ট ।
14. গভর্নর-জেনারেল পদের মেয়াদ ছিল—
দুই বছর /পাঁচ বছর / সাত বছর / দশ বছর
উওর:-/পাঁচ বছর।
15. কোম্পানি দ্বৈত শাসনব্যবস্থা তুলে নিয়ে বাংলার শাসনভার সরাসরি গ্রহণ করে— –
১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে / ১৭০১ খ্রিস্টাব্দে / ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে / ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ।
উওর:-১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে।
• 16. ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম গভর্নর-জেনারেল ছিলেন—
লর্ড ওয়েলেসলি / লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস / লর্ড বেন্টিঙ্ক / লর্ড ক্লাইভ ।
উওর:-লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস
17. প্রতিষ্ঠাকালে কলকাতা সুপ্রিমকোর্টে মোট বিচারক ছিলেন— একজন/ দুজন / তিনজন/ চারজন ।
উওর:-চারজন।
18. কার উদ্যোগে ১১ জুন পণ্ডিত হিন্দু আইনগুলির একটি সারসংকলন তৈরি করেন? লর্ড ডালহৌসির / লর্ড কর্নওয়ালিশের / লর্ড ওয়েলেসলির /ওয়ারেন হেস্টিংসের ।
উওর:-ওয়ারেন হেস্টিংসের।
19. . কর্নওয়ালিশ কোড চালু হয়—
১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে / ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে /১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে / ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে
উওর:-১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে।
20. ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে জেলাগুলির দেখাশোনা করার জন্য পুলিশ থানা ব্যবস্থা চালু করেন ।
লর্ড কর্নওয়ালিশ/ লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক /লর্ড হার্ডিঞ্জ / লর্ড ডালহৌসি
উওর:-লর্ড কর্নওয়ালিশ।
21. জেলাগুলি দেখভাল করার জন্য পুলিশ থানা ব্যবস্থা চালু করেন-
ওয়ারেন হেস্টিংস / কর্নওয়ালিস / বেন্টিঙ্ক / ডালহৌসি।
উওর:-কর্নওয়ালিস।
22. ঔপনিবেশিক শাসক সব থেকে বেশি খরচ করত – শিক্ষা ক্ষেত্রে /পরিবহণ ক্ষেত্রে /
সামরিক ক্ষেত্রে / কুটিরশিল্পের ক্ষেত্রে
উওর:- সামরিক ক্ষেত্রে।
23. এদের মধ্যে সামরিক জাতি ছিল না— পাঠানরা / বাঙালিরা / রাজপুত্ররা/ গরখারা।
উওর:- বাঙালিরা।
24. ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে পাকাপাকিভাবে বিলুপ্ত হয়— সিপাহি বাহিনী / দারোগা ব্যবস্থা/ ফৌজদারি ব্যবস্থা / সিভিল সার্ভিস
উওর:- দারোগা ব্যবস্থা
25. ইউরোপীয় প্রশাসকদের প্রাচ্যবিদ্যার প্রশিক্ষণ দেবার জন্য স্থাপিত হয়—A হিন্দু কলেজ / ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ / শ্রীরামপুর কলেজ / বেথুন কলেজ
উওর:-ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ।
_________________________