বাংলা class 4

মালগাড়ি কবিতার প্রশ্ন উত্তর class 4 Teacj Sanjib

মালগাড়ি কবিতার প্রশ্ন উত্তর class 4 Teacj Sanjib

কবিতা :
মালগাড়ি
কবিঃ প্রেমেন্দ্র মিত্র

মালগাড়ি কবিতার বিষয়বস্তু :

সারমর্ম :

মালগাড়ি কবিতার, কবি কোনো তুফান বা মেল ট্রেন হতে চান না। তাঁর এই কবিতায় তিনি নিজে একটি মালগাড়ি হতে চেয়েছেন। শুধু একটি মালগাড়ি হয়ে দিনরাত্তির ঘটর ঘটর শব্দ তুলে আপন ছন্দে তিনি এগিয়ে চলতে চান। তাঁর কোনো তাড়া থাকবে না, ভাটার নদীর মতো ধীরগতিতে তিনি বয়ে যাবেন। যদি তাঁর জন্মদিনে একটি মিষ্টি পরি ভুল করে তাঁর বাড়িতে এসে পড়ে, কবি তার থেকে শুধু একটি বর চেয়ে নিয়ে বলবেন যে, ‘আমায় মালগাড়ি করে দাও।’

মালগাড়ি কবিতার সারাংশ :

কবির মতে প্যাসেঞ্জার বা মেল ট্রেনগুলি শুধু কাজের ধান্দা নিয়ে থাকে। স্টেশন এলে যাত্রী ওঠায় নামায়। শুধু তাদের এই ভাবনা যে এই বুঝি লেট হয়ে যায়। কবি এই দ্রুতগতির ছুটে চলা জীবন চান না। নিজের খুশি মতন চিন্তাবিহীন জীবন তাঁর পছন্দ। যেখানে কোনো সময় বা টাইমটেবিল মেনে চলার দায় তাঁর থাকবে না। যত দূরে যাওয়া হোক না কোন। সব লাইন বা পথ হবে শুধু কবির একার। ট্রেনগুলো সব এক লাইনে ছোটে, বাঁধা পথে যাওয়া আসা করে।
কবি চান তাঁর জন্য সব রাস্তাই খোলা থাকুক, কোথাও যেতে বা থামতে মান থাকবে না। ট্রেনগুলি যখন ছোটার তাগিদে হাঁসফাঁস করে মরে, তখন কবির মনে কোনো তাড়া নেই, মালগাড়ি মতোই যাচ্ছি যাব করে তাঁর পথ চলার সাধ। অন্য ট্রেনগুলো শুধু ছুটে চলতে চায় কিন্তু অসীম অনুস্থ, যে পা শেষ নেই, সেই পথে এগিয়ে চলতেই কবির সুখ।

হাতে কলমে : মালগাড়ি কবিতার অনুশীলনী প্রশ্ন ও উত্তর

১. প্রেমেন্দ্র মিত্র কোন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন? উঃ। প্রেমেন্দ্র মিত্র ‘কালিকলম’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।

২. তাঁর সৃষ্ট একটি বিখ্যাত চরিত্রের নাম লেখো। উঃ। তাঁর সৃষ্ট একটি বিখ্যাত চরিত্রের নাম ঘনাদা।

৩. একটি বাক্যে উত্তর দাও :

৩.১ ‘মালগাড়ি’-র চলাকে কবিতায় কার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে? উঃ। ‘মালগাড়ি’-র চলাকে কবিতায় নদীর ভাটার সাথে তুলনা করা হয়েছে।

৩.২ কথকের জীবনে কোন বিশেষ দিনটিতে পরির সঙ্গে তার দেখা হতে পারে? উঃ। কথকের জন্মদিনে পরির সঙ্গে তার দেখা হতে পারে।

৩.৩ প্যাসেঞ্জার ট্রেন কোন কাজের ধান্দা নিয়ে থাকে? উঃ। প্যাসেঞ্ঝার ট্রেন শুধু যাত্রী ওঠানোর আর নামানোর কাজের ধান্দা নিয়ে থাকে।

৩.৪ মালগাড়ি কোন্ কাজে ব্যবহৃত হয়? উঃ। মালগাড়ি মাল বহনের কাজে ব্যবহৃত হয়।

৩.৫ সত্যিই কি মালগাড়ির টাইমটেবিল অনুযায়ী চলার প্রয়োজন নেই ? উঃ। না। মালগাড়ির টাইমটেবিল অনুযায়ী চলার প্রয়োজন নেই কারণ মালগাড়ি যাত্রী ওঠানো করে না শুধু মাল বহন করে তাছাড়া তার নির্দিষ্ট কোনো স্টেশনও নেই।

৩.৬ প্যাসেঞ্জার বা মেল ট্রেনের তুলনায় মালগাড়ির ধীরগামী হওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?
উঃ। প্যাসেঞ্জার বা মেল ট্রেনের তুলনায় মালগাড়ির ধীরগামী হওয়ার কারণ হল তার কোনো নির্দিষ্ট টাইমটেবিল নেই ও স্টেশন নেই তাই সে নিজের খুশিতেই চলে। অনেক সময় যাত্রীবাহী ট্রেনগুলিকে আগে ছেড়ে দিতে হয় তাই তার চলাও ধীরগতিতে হয়ে থাকে।

৩.৭ আপ ট্রেন আর ডাউন ট্রেন বলতে কী বোঝায়?

উঃ। কোনো বড়ো জংশন স্টেশন থেকে ছাড়া গাড়ি একটি জায়গার নাম নিয়ে যখন সেই জায়গার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে তখন সেই ট্রেনকে আপ ট্রেন বলে। আর সেই জায়গা থেকে পুনরায় নির্দিষ্ট জংশন স্টেশনে ফিরে আসার গাড়িকে বলে ডাউন ট্রেন।

৩.৮ তোমার জানা এমন কয়েকটি যানবাহনের নাম লেখো যেগুলি যাত্রী পরিবহন করে না।
উঃ। লরি, ট্রাক, টেম্পো, জলের গাড়ি, তেলের ট্যাঙ্কার, পোস্ট অফিসের মেল ভ্যান, জেনরেটর ভ্যান, ঠেলাগাড়ি।

মালগাড়ি কবিতার প্রশ্ন উত্তর :

৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

৪.১ জোয়ার আর ভাটায় নদীর চেহারা কেমন হয়?

উঃ। জোয়ারের সময় নদীতে প্রচুর জল বেড়ে যায়। নদীতে স্রোত বেড়ে যায়। কূল ছাপিয়ে নদীর জল তীরে উঠে আসে। আর ভাটার সময় নদী যেন শান্ত, ধীরগতিতে সে বয়ে চলে তখন তার জলও কমে যায়।

৪.২ এই কবিতায় পরিদের প্রসঙ্গ কীভাবে এসেছে? পরির প্রসঙ্গ তুমি এর আগে কোন্ কোন্ গদ্য, কবিতায় পচ্ছে?

উঃ। এই কবিতায় কথকের মুখেই পরিদের প্রসঙ্গ এসেছে। তিনি জানেন পরিদের দেওয়া যে-কোনো বর-ই সফল হয় তাই তিনি ভেবেছেন জন্মদিনে তাঁর বাড়িতে ভুল করে যদি কোনো পরি চলে আসে তাহলে উপহার স্বরূপ পরিদের কাছ থেকে মালগাড়ি হওয়ার বর চেয়ে নেবেন।

আমি পরির প্রসঙ্গ ‘ফুল’ কবিতায় এবং ‘একা একা থাকতে নেই’ গল্পে পড়েছি।

৪.৩ মালগাড়ি হয়ে কবিতার কথক কোন সুখ অনুভব করতে চায় ?

উঃ। মালগাড়ি হয়ে কবিতার কথক স্বাধীনভাবে কোনো টাইমটেবিল, কোনো নির্দিষ্ট লাইন ছাড়া অশেষ চলতে পারার সুখ অনুভব করতে চায়।

৪.৪ কবিতায় ‘ঘটর ঘটর’ শব্দটি মালগাড়ির শব্দ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। তুমি এমন কিছু শব্দ লেখো যা দিয়ে যন্ত্র বা যানবাহনের শব্দকেই বোঝানো হয়ে থাকে।

উঃ। রেলগাড়ি-ঝিক ঝিক। গোরুর গাড়ি ক্যাঁচ ক্যাঁচর। সাইকেলের শব্দ—টিং টিং। ঘড়ি-ঢং ঢং। টেলিফোন–ব্রিং ব্রিং।

৫. গদ্যরূপ লেখ

৫.১ মালগাড়ি হই একটি শুধু যদি ঘটর ঘটর দিনরাত্রির চলি। উঃ। যদি শুধু একটি মালগাড়ি হয়ে দিনরাত্রির ঘাটর ঘাঁটার চাল

৫.২ চেয়ে নেব একটি শুধু বর। উঃ। শুধু একটি বর চেয়ে নেব। উঃ। শুধু ভাবনা পাছে লেট হয়ে যায়।

৫.৩ ভাবনা শুধু লেট হয়ে যায় পাছে।

৫.৪ যত দূরেই যেখানে যাই নাকো সারা লাইন শুধু আমার একার। উঃ। যেখানে যত দূরেই যাই নাকো সারা লাইন শুধু আমার একার।

৫.৫ যাচ্ছি যাব করেই আমার যাওয়া। উঃ। আমার যাওয়া যাচ্ছি যাব করেই।

মালগাড়ি কবিতার

৬. প্রতিটি শব্দের সমার্থক শব্দ লেখো ও সেগুলি বাক্যে ব্যবহার করো ঃ

বাড়ি, নদী, ভাবনা, বুশি, ধান্দা, তৃষ্ণান, রাস্তা।

উঃ। বাড়ি–বাসা = আমার বাসা জেলার এক গ্রামে। নদী – তটিনী = পাহাড়ের নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে এক তটিনী নাম তার মালিনী। ভাবনা – চিন্তা = অকারণে চিন্তা করা উচিত নয়। খুশি – আনন্দ = বেড়াতে গিয়ে আমি খুব আনন্দ পেয়েছি। ধান্দা – মতলব = লোকটির কোনো বদ মতলব রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তুফান—ঝড় = আকাশ কালো করে ঝড় এল। রাস্তা—পথ = অন্ধকারে পথ খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

৭. ‘ভালো মন্দ’-এর মতো বিপরীত অর্থের শব্দ পাশাপাশি আছে এমন তিনজোড়া শব্দ কবিতা থেকে বের করে লেখো। উঃ। ‘ওঠায়-নামায়’, ‘দিন রাত্তির’, ‘যাওয়া-আসা।

৮. ছক করে নীচের শব্দগুলি থেকে ঘোষ বর্ণ ও অঘোষ বর্ণ আলাদা করে বসাও ঃ তুফান, দেখা, ছুটে, কাজ,

মিষ্টি, যাত্রী।

উঃ। অঘোষ বর্ণ তুফান ছুটে অঘোষ বর্ণ ত, ফ X ছ, ট মিষ্টি ম ট X ঘোষ বর্ণ ন শব্দ ঘোষ বর্ণ দ কাজ याबी X

৯. কবিতাটিতে যে-কটি ইংরেজি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলি হল—মেলট্রেন, প্যাসেঞ্জার, স্টেশন, লেট, লাইন, টাইমটেবিল। শব্দগুলি প্রতিটিই রেলগাড়ি সংক্রান্ত। এবার তুমি বাস ও সেই সংক্রান্ত ইংরেজি শব্দগুলির

একটি তালিকা তৈরি করো। উঃ। বাস-স্টপ, রুট, ড্রাইভার, কনডাক্টর, টিকিট, সীট্, হেল্পার, টায়ার।

১০. তুমি একটি মালগাড়ি দেখতে পেলে। মালগাড়ি সম্বন্ধে তোমার মনে কী কী প্রশ্ন জেগেছে? তার অন্তত পাঁচটি প্রশ্ন খাতায় লেখো।

উঃ। ১। একটি মালগাড়িতে কী কী মাল যায়? ১। মালগাড়িটি কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে? ৩। মালগাড়িটি কতদিনে তার নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছোবে? ৪। মালগাড়ি এত বড়ো হয় কেন? ৫। টিকিট কেটে কি মালগাড়িতে চাপা যায়?

মালগাড়ি কবিতার অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

১. কবি কোন্ কোন্ ট্রেন হতে চান না? উঃ। কবি তুফান বা মেল ট্রেন হতে চান না।

২. মালগাড়ি কীভাবে চলে? উঃ। মালগাড়ি ঘটর ঘটর শব্দে চলে।

৩. জন্মদিনে কবি কার থেকে বর চাইবেন? উঃ। জন্মদিনে কবি পরির থেকে বর চাইবেন।

৪. কবি পরির কাছে কী বর চাইবেন? উঃ। কবি পরির কাছে নিজেকে মালগাড়ি করে দেওয়ার বর চাইবেন।

৫. প্যাসেঞ্জার বা মেল ট্রেন স্টেশন পেলেই কী করে? উঃ। প্যাসেঞ্জার বা মেল ট্রেন স্টেশন পেলেই যাত্রী ওঠায়নামায়।

৬. ট্রেনগুলো কীভাবে ছোটে? উঃ। ট্রেনগুলো সব এক লাইনেই ছোটে।

৭. কবির সুখ কীসে? উঃ। অশেষ পথ চলতে পারাতেই কবির সুখ।

৮. একটি মেল ট্রেনে সাধারণত কোন্ কোন্ রেলকর্মী দেখতে পাও ? উঃ। ড্রাইভার, গার্ড, টিকিটচেকার

বাংলা সাহিত্য

৯. তোমার জানা আছে এমন কয়েকটি যাত্রীবাহী মেল ট্রেনের নাম লেখো। উঃ। রাজধানী এক্সপ্রেস, শতাব্দী এক্সপ্রেস, দুরন্ত এক্সপ্রেস, মুম্বই মেল, কালকা মেল, চেন্নাই মেল।

১০. কী কী ধরনের ট্রেনের নাম তুমি জানো তা লেখো। উঃ। এক্সপ্রেস ট্রেন, সুপারফাস্ট ট্রেন, প্যাসেঞ্জার ট্রেন, লোকাল ট্রেন, মেট্রো ট্রেন।

১১. কোন্ ট্রেনের টাইম টেবিল অনুযায়ী চলার প্রয়োজন হয় না? উঃ। মালগাড়ির টাইম টেবিল অনুযায়ী চলার প্রয়োজন হয় না।

মালগাড়ি কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

১. ‘আমার সুখতো…’ এখানে কার সুখের কথা বলা হয়েছে? তার কীসে সুখ ?

উঃ। এখানে কবির সুখের কথা বলা হয়েছে।

ওরা অর্থাৎ মেল ট্রেনগুলি বাঁধা পথে নিয়ম মেনে চলতে গিয়ে হাঁসফাঁস করে মরে। সে তুলনায় কবি চান তাঁর যাওয়ায় থাকবে একটা ধীর গতি, যাচ্ছি যাব অর্থাৎ গড়িমসি ভাব। ট্রেনগুলি ছুটে চলে নির্দিষ্ট পথে পৌঁছোতে চায়। কিন্তু কবি সুখ পান শুধু শেষ নেই এমন পথে চলতে পাওয়ায়।

২. ট্রেনের চলা আর কবির চলার মধ্যে কী পার্থক্য থাকবে? সেই

উঃ। ট্রেনগুলি সব এক লাইনেই টাইমটেবিল মেনে ছুটে চলে। তাদের যাওয়া আসার পথ বাঁধা রয়েছে। পথেই তারা যাত্রা করে। কিন্তু কবির চলা হবে খেয়াল খুশি মতো। সেখানে টাইমটেবিল মেনে চলার কোনো দায় কবির থাকবে না। যতই দূরে বা যেখানে হোক না কেন সমস্ত লাইন হবে কবির একার। সব রাস্তাই তাঁর জন্য খোলা থাকবে। কোথাও যাওয়া বা থামার কোনো নিষেধ কবির থাকবে না।

৩. ভাবনা শুধু লেট হয়ে যায় পাছে’— এটি কাদের ভাবনা? তারা কী করে? উঃ। এটি প্যাসেঞ্জার আর মেল ট্রেনের ভাবনা।

প্যাসেঞ্জার আর মেল ট্রেনগুলি সারাদিন ছুটে চলে। তারা শুধু নিজেদের কাজের ধান্দা নিয়েই ব্যস্ত রয়েছে। স্টেশন এলেই তারা যাত্রী ওঠায় নামায় আর টাইমটেবিল মেনে চলে। তারা সবসময় ভাবতে থাকে এই বুঝি তাদের চলাফেরায় লেট হয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *