গণ সাধারণতন্ত্রী চীনের সংবিধানে উল্লিখিত চীনা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও কর্তব্যসমূহের বর্ণনা
গণ-সাধারণতন্ত্রী চীনের সংবিধানে উল্লিখিত চীনা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও কর্তব্যসমূহের বর্ণনা দাও।
গণ সাধারণতন্ত্রী চীনের সংবিধানে
[Descirbe the rights and duties of citizens under the Constitution of the People’s Republic of China.]
গণসাধারণতন্ত্রী চীনের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য :
উত্তর। রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত ও সংরক্ষিত মানুষের ব্যক্তিত্ব বিকাশের উপযোগী সুযোগ-সুবিধাকে অধিকার বলে। বর্তমানে প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলিকে সংবিধানের মাধ্যমে স্বীকৃত ও সংরক্ষিত হতে দেখা যায়। তবে সব দেশে নাগরিক অধিকারগুলির প্রকৃতি সমান হয় না। কোন্ দেশে কোন্ কোন্ অধিকারগুলি রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত ও সংরক্ষিত হবে তা নির্ভর করে সমাজ ও তথা রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রকৃতির ওপর। শ্রেণী-বিভক্ত বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেসব অধিকারগুলির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়, সমাজতান্ত্রিক
সমাজব্যবস্থায় সেগুলির পরিবর্তে অন্য প্রকৃতির অধিকাগুলির গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে শ্রেণীশোষণ ও শাসনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকারের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়; পরিবর্তে চীনের ন্যায় সমাজতান্ত্রিক দেশে অর্থনৈতিক অধিকারের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
গণসাধারণতন্ত্রী চীনের ১৯৮২ সালের সংবিধানের দ্বিতীয় অধ্যায়ে ৩৩ থেকে ৫৬নং ধারাগুলিতে চীনা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। অধিকারগুলি হল নিম্নরূপঃ
গণ সাধারণতন্ত্রী চীনের সংবিধানে (১) সাম্যের অধিকার :
সংবিধানের ৩৩নং ধারায় বলা হয়েছে, গণ-সাধারণতন্ত্রী চীনের সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান”। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, স্ত্রী-পুরুষ, শিক্ষা, সম্পত্তিগত মর্যাদা ইত্যাদি নির্বিশেষে চীনা নাগরিকরা এই অধিকারটি ভোগ করে।
(২) নির্বাচন করার ও নির্বাচিত হওয়ার অধিকার : সংবিধানের ৩৪নং ধারায় বলা হয়েছে, আইন অনুসারে বঞ্চিত ব্যক্তিগণ ছাড়া জাতি, বর্ণ, স্ত্রী-পুরুষ, পেশা, পারিবারিক ঐতিহ্য, ধর্ম-বিশ্বাস, শিক্ষা, সম্পত্তিগত মর্যাদা ও বসবাসের মেয়াদ নির্বিশেষে ১৮ বছর বয়স্ক সকল নাগরিকই ভোট দেওয়ার এবং নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার ভোগ করে।
(৩) বাক্ ও মতামত প্রকাশের অধিকার :
সংবিধানের ৩৫নং ধারায় বলা হয়েছে, গণ-সাধারণতন্ত্রী চীনের নাগরিকরা বাস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, জনসমাবেশ ও সংঘ গঠনের স্বাধীনতা, মিছিল করার ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের স্বাধীনতা ভোগ করে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, ধর্মঘট করার অধিকার ১৮৭৫ এবং ১৯৭৮ সালের সংবিধানগুলিতে স্বীকার করা হলেও ১৯৮২ সালের সংবিধানে স্বীকার করা হয়নি।
(৪) ধর্মের অধিকার : সংবিধানের ৩৬নং ধারায় নাগরিকদের ধর্মের অধিকার স্বীকৃতি লাভ করেছে। বলা হয়েছে, কোন রাষ্ট্রীয় সংস্থা, গণ-সংগঠন বা কোন ব্যক্তি নাগরিকদের কোন ধর্মে বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী হতে বাধ্য করতে পারে না। তাছাড়া রাষ্ট্রধর্মের ভিত্তিতে কোনরূপ বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারে না। তবে ধর্মীয় স্বাধীনতার নামে কোন ব্যক্তি জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্য নষ্ট করতে পারে না বা রাষ্ট্রের শিক্ষা-ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
(৫) দৈহিক স্বাধীনতার অধিকার :
সংবিধানের ৩৭নং ধারায় বলা হয়েছে, বে-আইনীভাবে আটক করে বা অন্য কোন প্রকারে নাগরিকদের দৈহিক স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করা যাবে না। ঐ ধারায় আরও বলা হয়েছে, অবৈধভাবে নাগরিকদের দেহ তল্লাশী করা নিষিদ্ধ।
(৬) ব্যক্তিগত মর্যাদার অধিকার :
সংবিধানের ৩৮নং ধারায় বলা হয়েছে, নাগরিকদের ব্যক্তিগত মর্যাদাকে (the personal dignity of citizens ) কেউ লঙ্ঘন করতে পারবে না। কোনও নাগরিককে অপমান করা, তার বিরুদ্ধে কুৎসা প্রচার করা, মিথ্যা অভিযোগ আনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
(৭) বাসস্থানের অধিকার :
সংবিধানের ৩৯নং ধারা অনুসারে নাগরিকদের বাসস্থানের অধিকার অলঙ্ঘনীয় (inviolable)। নাগরিকদের বাসস্থানে বে-আইনী তল্লাশী বা অনধিকার প্রবেশ নিষিদ্ধ।
(৮) চিঠিপত্র আদান-প্রদান ও গোপনীয়তার অধিকার : সংবিধানের ৪০ নং ধারায় নাগরিকদের চিঠিপত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ ও গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার সুরক্ষিত করা হয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা অথবা ফৌজদারী অপরাধে তদন্তের স্বার্থে গণ-নিরাপত্তা বিভাগ বা প্রকিউরেটর দপ্তর চিঠিপত্র পরীক্ষা করতে পারে।
(৯) সমালোচনা ও অভিযোগের অধিকার :
সংবিধানের ৪১নং ধারায় বলা হয়েছে, নাগরিকরা সরকারী কাজকর্মের সমালোচনা ও বেআইনী কাজকর্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারে। কিন্তু কারও পক্ষে সাজানো বা বিকৃত তথ্যের সাহায্যে ইচ্ছামতো অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা নালিশ করা দণ্ডনীয়।
(১০) কর্মের অধিকার : সংবিধানের ৪২নং ধারায় নাগরিকদের কর্মের অধিকারের উল্লেখ করা হয়েছে। এই অধিকারকে ফলপ্রসু করার জন্য রাষ্ট্র বিভিন্ন উপায়ে কর্ম-সংস্থানের ব্যবস্থা করবে, শ্রমে উৎসাহ দান করবে, শ্রমিকদের কাজের পরিবেশের উন্নতিবিধান করবে, পেশাগত শিক্ষা প্রসারের ব্যবস্থা করবে।
(১১) বিশ্রামের অধিকার : সংবিধানের ৪৩নং ধারায় শ্রমজীবী জনগণের বিশ্রামের অধিকারটি স্বীকার করা হয়েছে এবং সেই সঙ্গে তারা যাতে এই অধিকারটি সুনিশ্চিত ভাবে ভোগ করতে পারে সেজন্য রাষ্ট্র শ্রমের সময় নির্ধারণ, ছুটির ব্যবস্থা ইত্যাদি করে দেয়।
(১২) অবসর যাপনের অধিকার : সংবিধানের ৪৪নং ধারায় চীনের সকল শ্রেণীর কর্মীদের অবসর যাপনের অধিকারের কথা বলা হয়েছে এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের জীবনযাত্রা নির্বাহের দায়িত্ব রাষ্ট্র ও সমাজকে গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
(১৩) বৃদ্ধ, অসুস্থ ও পঙ্গু অবস্থায় সাহায্য পাবার অধিকার : সংবিধানের ৪৫নং ধারায় বলা হয়েছে, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও পঙ্গু ব্যক্তিরা রাষ্ট্র ও সমাজের কাছ থেকে বৈষয়িক সাহায্যলাভের অধিকারী। রাষ্ট্র সামাজিক বীমা, সামাজিক সাহায্য, চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার দ্বারা এই অধিকারকে সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করে।
(১৪) শিক্ষার অধিকার :
চীনের সংবিধান প্রণেতৃবর্গ সমাজতান্ত্রিক সমাজগঠনে শিক্ষার অসীম গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে শিক্ষাকে একইসঙ্গে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার এবং মৌলিক কর্তব্য হিসাবে সংবিধানে স্থান দিয়েছেন (৪৬নং ধারা)।
(১৫) সাংস্কৃতিক অধিকার : সংবিধানের ৪৭নং ধারায় নাগরিকদের বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সাহিত্য ও শিল্প সৃষ্টির কার্য ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক কার্যকলাপে নিয়োজিত হবার স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। সংবিধানে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বিদ্যা প্রভৃতি কাজে যাঁরা আত্মনিয়োগ করবেন, রাষ্ট্র তাঁদেরকে উৎসাহ ও সাহায্য দেবে।
(১৬) অন্যান্য অধিকার : উপরোক্ত অধিকারগুলি ছাড়াও সংবিধানের ৪৮, ৪৯ এবং ৫০নং ধারাগুলিতে যথাক্রমে জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমানাধিকার, বিবাহ ও পরিবার গঠনের অধিকার, প্রবাসী চীনা ও তাদের পাববারবর্গের আইনগত অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার কথা বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখযোগ্য, অন্যান্য ধনতান্ত্রিক দেশগুলির ন্যায় চীনে ব্যক্তিগত সম্পত্তির
অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি না দেওয়া হলেও সংবিধানের ৮নং ধারায় নাগরিকদের সীমিত পরিমাণে ব্যক্তিগত সম্পত্তি অধিকার প্রদান করা হয়েছে। রাষ্ট্র নাগরিকদের আইনসঙ্গত উপায়ে অর্জিত আয়, সঞ্চয়, বাসগৃহ এবং অন্যান্য সম্পত্তির ওপর অধিকার সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করে। এছাড়া, ১৩নং ধারায় নাগরিকদের আইনসঙ্গত উপায়ে উত্তরাধিকারসূত্রে ব্যক্তিগত সম্পত্তি অর্জন করার অধিকার স্বীকার করা হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত অর্থনীতিকে (individual economy) অতি অবশ্যই সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির (the socialist public economy) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
মূল্যায়ন :
গণ-সাধারণতান্ত্রিক চীনের সংবিধানে নাগরিক অধিকারগুলি ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি হলেও পশ্চিমী গণতন্ত্রের সমর্থকগণ এগুলিকে নিছকই তাত্ত্বিক ঘোষণা বলে মন্তব্য করেন। প্রথমতঃ, সংবিধানে ঘোষিত রাজনৈতিক অধিকারগুলি বাস্তবের বিচারে অর্থহীন, কারণ চীনে শুধুমাত্র কমিউনিস্ট দল এবং কমিউনিস্ট মতাদর্শ ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক আদর্শ প্রচারের বা প্রয়োগের সুযোগ নেই। দ্বিতীয়তঃ, সংবিধানে স্বীকৃত নাগরিক অধিকারগুলি কেবলমাত্র কমিউনিস্টরাই ভোগ করতে পারে, কারণ কমিউনিস্ট মতাদর্শের বিরোধী ব্যক্তিদের সবরকম অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়।
চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় অসংখ্য নরনারীকে নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, এমনকি হত্যা পর্যন্ত করা হয়। সাম্প্রতিককালে (১৯৮৯) চীনের তিয়েন-আন-মেন স্কোয়ারে কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত অসংখ্য ছাত্রছাত্রীর ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনা চীনা নাগরিকদের ব্যক্তিস্বাধীনতার দৈন্যতাকেই প্রকাশ করে। তৃতীয়তঃ, মৌলিক অধিকারের রক্ষাকর্তা হিসাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারবিভাগের অস্তিত্ব না থাকায় চীনে ন্যায়বিচার সম্ভব হয় না এবং অধিকার ভোগ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
উপরোক্ত সমালোচনার উত্তরে বলা হয় যে, চীনে সর্বত্রই কমিউনিস্ট পার্টির প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সত্য, কিন্তু তাতে নাগরিক অধিকার মোটেই সংকুচিত হয়নি, কারণ চীনের কমিউনিস্ট পার্টি হল মেহনতী মানুষের স্বার্থ রক্ষার প্রধান হাতিয়ার স্বরূপ। এই দলের নেতৃত্বেই চীনে শোষণের অবসান ঘটেছে, সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বলাবাহুল্য এই দলের প্রচেষ্টাতেই চীনের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে। বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে রাষ্ট্রযন্ত্রটি মুষ্টিমেয় শোষকশ্রেণীর করায়ত্ত থাকার ফলে মুষ্টিমেয় লোকই কার্যত সমস্ত রকম অধিকারগুলি ভোগ করে। চীনে রাষ্ট্রীয় স্বার্থের সঙ্গে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের স্বার্থের কোন বিরোধ নেই এবং সেই কারণে সেখানকার নাগরিকগণ যথার্থভাবেই অধিকার ভোগের সুযোগ পায়।
দ্বিতীয়তঃ, চীনে নাগরিকগণ যে স্বাধীনভাবে এবং খোলাখুলিভাবে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতে পারে এবং সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করতে পারে তার প্রমাণ হিসাবে মাও জেদঙ-এর ভুলভ্রান্তির বিরুদ্ধে সমালোচনার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। আর তিয়েন ইয়ানে ছাত্র আন্দোলনের পশ্চাতে ছিল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত, তাই সেটিকে দমিয়ে দেওয়া হয়।
অবশেষে বলা যায়, চীনের সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাই হল নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সমূহের সর্বশ্রেষ্ঠ রক্ষাকবচ। এখানে নাগরিক অধিকারগুলি শুধু বিধিবদ্ধই করা হয়নি, এগুলি কার্যকর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গৃহীত হয়েছে। এরই মধ্যে নিহিত রয়েছে চীনের নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত সাংবিধানিক ব্যবস্থার অভিনবত্ব এবং সাফল্য।
চীনের নাগরিকদের কর্তব্যসমূহ :
অধিকার এবং কর্তব্য পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কর্তব্যপালন না করে অধিকারভোগ করা যায় না। চীনের সংবিধানের দ্বিতীয় অধ্যায়ে মৌলিক অধিকারগুলি আলোচনার সঙ্গে কোথাও যুক্তভাবে এবং কোথাও পৃথকভাবে কর্তব্য পালনের কথা বলা হয়েছে এবং কর্তব্য পালন বাধ্যতামূলক বলে উল্লেখ করা হয়েছে (“Every citizen enjoys the rights and at the same time must perform the duties. prescribed by the constitution and the law.” – Article 33 )। কর্তব্যগুলি হল নিম্নরূপ : (১) নাগরিকদের অবশ্যই কাজ করতে হবে (৪২নং ধারা)।
(২) নাগরিকদের অবশ্যই শিক্ষা লাভ করতে হবে (৪৬নং ধারা)।
(৩) বিবাহিত নারী ও পুরুষের পরিবার পরিকল্পনা করা কর্তব্য।
(৪) পিতামাতার কর্তব্য অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদের লালন-পালন করা এবং একইভাবে প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান-সন্ততিদের কর্তব্য হল বৃদ্ধ পিতা মাতাকে রক্ষণাবেক্ষণ করা (৪৯নং ধারা)। (৫) রাষ্ট্র, সমাজ, সমবায়গুলির স্বার্থ ও অন্যান্য নাগরিকদের আইনসঙ্গত অধিকার ও স্বার্থগুলি লঙ্ঘন না করে নিজস্ব স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করা প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য (৫১নং ধারা)।
(৬) দেশের ঐক্য এবং দেশের সকল জাতির মধ্যে ঐক্য রক্ষা করা প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য (৫২নং ধারা)।
(৭) সংবিধান ও আইন মান্য করা, রাষ্ট্রের গোপনীয়তা রক্ষা করা, জনসম্পত্তির যত্ন নেওয়া, শ্রম-শৃঙ্খলা মান্য করা, জনশৃঙ্খলা পালন করা এবং সামাজিক নীতিবোধগুলিকে সম্মান জানানো প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য (৫৩নং ধারা)।
(৮) মাতৃভূমির নিরাপত্তা, সম্মান ও স্বার্থরক্ষা করা প্রতিটি নাগরিকের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য (৫৪নং ধারা)।
(৯) মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, আগ্রাসন প্রতিরোধ করা, সামরিক দায়দায়িত্ব পালন করা প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য (৫৫নং ধারা)।
(১০) আইন অনুসারে কর প্রদান করা প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য (৫৬নং ধারা)।
গণ সাধারণতন্ত্রী চীনের সংবিধানে