অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর দশম শ্রেণি বাংলা Teacj Sanjib
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর দশম শ্রেণি বাংলা Teacj Sanjib
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর
অদল বদল
পান্নালাল প্যাটেল
অদল বদল গল্পের বিষয়বস্তু, নামকরণের সার্থকতা এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হয়েছে।
অদল বদল গল্পের উৎস
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
সাহিত্য আকাদেমি থেকে প্রকাশিত পান্নালাল প্যাটেলের নির্বাচিত গল্প সংকলন থেকে গৃহীত।
অদল বদল গল্পের বিষয়বস্তু
একদল ছেলে হােলির দিনের বিকেলে এক নিম গাছের তলে ধুলাে ছােড়াছুড়ি খেলছিল। সেখানে এল অমৃত ও ইসাব হাত ধরাধরি করে। তাদের গায়ে একই রকমের জামা। রং, মাপ, কাপড় সবদিক থেকে নিখুঁত মিল। মিল শুধু পােশাকে নয়, বাড়ি, দুজনের বাপের পেশা, এমনকি জমির পরিমাণ। দুজনে একই ক্লাসে পড়ে। দুজনের পার্থক্য শুধু অমৃতের মা-বাবা ও তিন ভাই আছে। ইসাবের শুধু বাবা সম্বল। অমৃত ও ইসাব এসে শান-বাঁধানাে ফুটপাথে বসল।
জামা গায়ে বেরােনাের সময় অমৃতের মা সতর্ক করেছেন অমৃতকে। জামা যেন ময়লা না হয়, ছিড়ে না যায়। মাঠের ছেলের দলের একজন অমৃত ও ইসাবকে বলল কুস্তি লড়তে। তাদের মধ্যে কে শক্তিমান সে-পরীক্ষা হয়ে যাবে। তখনই অমৃতের মনে পড়ল মায়ের সতর্ক করে দেওয়ার কথা। তা ছাড়া অমৃত জানে কী ঝামেলা করে তবে ইসাবের নতুন জামার মতাে তার নতুন জামা মিলেছে। অমৃত ছেলেদের জানিয়ে দিল তার কুস্তি লড়ার অসম্মতি। কুস্তি লড়েছে জানলে তার মা তাকে ঠ্যাঙাবে।
দলের একটা ছেলে, নাম কালিয়া, এসে অমৃতের গলা জড়িয়ে ধরে মাঠে নিয়ে গেল। অমৃত তার হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করলে কালিয়া তাকে ছুড়ে মাটিতে ফেলে দিল। তা দেখেইসাবের মেজাজ গেল চড়ে। সে কালিয়াকে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দিল। কালিয়ার মা-বাবা এসে পিটোতে পারে এই ভয়ে বাকি ছেলেরা পালিয়ে গেল। অমৃত দেখল কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের জামার পকেট ছ-ইঞ্চি পরিমাণ ছিড়ে গেছে। কার জামা কী পরিমাণ নষ্ট হয়ছে ওরা যখন তা দেখছে তখন ইসাবের বাবার গলা শুনতে পাওয়া গেল।
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
ভয়ে অমৃত ইসাবকে টানতে টানতে নিয়ে। দু-বাড়ির মাঝে চলে এল। অমৃত জানে ইসাবের বাবা ছেলের জামা ছেড়া দেখলে ভয়ংকর রেগে গিয়ে প্রচণ্ড প্রহার করবে। অমৃতের নির্দেশে জামা অদল বদল করার প্রস্তাব উঠল। অবশ্য ইসাব জানতে চাইল এতে তাদের কী সুবিধা হবে। অমৃতের গায়ে ইসাবের ছেড়া জামা দেখলে তার বাবাও তাে তাকে পিটোবে। অমৃতের কথা হলাে তার বাবার হাত থেকে তার মা তাকে রক্ষা করবে। কিন্তু ইসাবের বাবার হাত থেকে ইসাবকে রক্ষা করার তাে কেউ নেই। জামা অদল বদলের ব্যাপারে ইসাবের মনে দ্বিধা ছিল। সামনেই কার কাশির আওয়াজ শুনে ওরা জামা চটপট অদলবদল করল। বুকে ভয় নিয়ে। দুজনে যে যার বাড়িতে চলে গেল নিঃশব্দে।
অমৃতের কপাল ভালাে। দিনটা ছিল হােলির দিন। সেদিন ধস্তাধস্তির ফলে জামা ছিড়ে যেতে পারে। অমৃতের মা সুচসুতাে দিয়ে জামাটা রিফু করে দিলেন। তাতে দু-বন্ধুর ভয় কেটে গেল, তারা যথারীতি হাত ধরাধরি করে হােলির বাজি পােড়ানাে দেখতে গেল। একটা ছেলে ওদের জামা বদলানাে দেখেছিল। সে ওদের অদল বদল নামে ডাকতে থাকল। অমৃত ও ইসাবের বাবারা কথাটা জানতে পারে এই ভয়ে তারা বাড়ির দিকে ছুটতে লাগল। ইসাবের বাবা বাড়ির দাওয়ায় হুঁকো খাচ্ছিলেন। তিনি ওদের আদর করে কাছে ডাকলেন। অমৃতের মাকে ডেকে জানালেন যে, অমৃত এখন থেকে তার ছেলে। অমৃতের মতাে ভালাে ছেলে হয় । অমৃতের মতাে একুশ জন ছেলের ভারও নিতে পারেন। এই বলে দুই ছেলের জামা বদলের গপ্পো শােনান। পাড়া-পড়শি সবাই শােনে। কী আন্তরিক ও গভীর ভালােবাসা থাকলে এটা সম্ভব। সেই থেকে অমৃতের নাম অদল ইসাবের নাম বদল হয়ে যায়। অদল বদল নাম ভালােবাসার প্রতীক হয়ে থাকে।
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
অদল বদল গল্পের নামকরণের সার্থকতা
নামকরণ
ভূমিকা : বিখ্যাত গুজরাতি সাহিত্যিক পান্নালাল প্যাটেলের ছােটোগল্পটির নাম ‘অদল বদল’। গল্পটির নামকরণ যথাযথ কিনা গল্পটি আলােচনা করে দেখা যাক।
নামকরণ যথাযথ ও সার্থক : অমৃত ও ইসাব দু-বন্ধু। তাদের পােশাক, ইস্কুলে একই ক্লাসে পড়া, বাড়ির অভিভাবকদের পেশা, জমির পরিমাণ, বাড়ির অবস্থান সব দিক থেকে খুব মিল। গরমিল হলাে অমৃতদের পরিবার বড়াে, ইসাবের বাড়িতে কেবল তার বাবা। হােলির দিন বিকেলে রাস্তার ধারে খেলার মাঠে যখন এল অমৃত ও ইসাব একইরকম জামা পরে, তখন তাদের দেখে তামাশা করার উদ্দেশ্যে খেলার মাঠের একটা ছেলে তাদের কুস্তি করতে বলল তাদের মধ্যে কে বেশি শক্তিধর তা যাচাইয়ের জন্য। অমৃত ও ইসাব কুস্তি লড়তে রাজি না হওয়ায় কালিয়া নামে ছেলেটি অমৃতকে ধরে মাটিতে ফেলে দেয়। তাতে ক্ষুব্ধ ইসাব ও কালিয়ার মধে লড়াই বাধে এবং ইসাবের জামার পকেট ছিড়ে যায়। ইসাব তার বাবার হাতে ছেড়া জামার জন্য মার খাবে এই ভয়ে অমৃত কিছুটা জোর করে ইসাবের সঙ্গে জামা অদল বদল করে। এই দৃশ্য লুকিয়ে দেখেন
ইসাবের বাবা। অমৃতের অখণ্ড ও অকৃত্রিম বন্ধুপ্রীতি দেখে তিনি মুগ্ধ হন। সে গল্প অমৃতের মাকে শুনিয়ে অমৃতকে নিজের ছেলে করে নিতে চান। ওদিকে জামা বদলের ঘটনাটা একটা ছেলেও দেখেছিল। সেই প্রচার করে অমৃত ও ইসাবের অদল বদল নাম। শেষমেষ অমৃত ও ইসাবের নাম হয়ে যায় অদল বদল। অদল বদল তাদের গভীর ও আন্তরিক বন্ধুপ্রীতির প্রতীক হয়ে যায়। এখানে গল্পের ‘অদল বদল’.নামকরণের যথার্থ সার্থকতা।
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
অদল বদল গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ) “অমৃত তার বাবা মাকে জ্বালিয়ে ছিল কেন? অবশেষে অমৃতের মা কী করেছিলেন?
: উত্তর : গুজরাটি সাহিত্যের স্বনামধন্য লেখক পান্নালাল প্যাটেল রচিত ‘অদল-বদল’ শীর্ষক গল্পের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র অমৃত নতুন জামা কেনার বায়না করে বাবা-মাকে খুব জ্বালাতন করেছিল।
বন্ধু ইসাবের নতুন জামাটির মতাে একটি জামা তৈরির বায়না ধরে তা আদায় করার জন্য অমৃত বাবা-মাকে নানাভাবে জ্বালাতন করেছিল। প্রথমে সে বন্ধু ইসাবের নতুন জামাটির মতাে একটি জামা না পেলে স্কুলে যাবে না বলে ফতােয়া জারি করে। ওর মা যখন বলেন, ইসাবের জামাটি কাজ করতে গিয়ে ছিড়ে গেছে বলেই তাকে নতুন জামা কিনে দেওয়া হয়েছে। তখন সে একথা শুনেই নিজের জামায় আঙুল ঢুকিয়ে ছিড়ে ফেলে। ওর মা নতুন জামা কেনা থেকে নিরস্ত করার জন্য জানান যে, ইসাবকে নতুন জামা দেওয়ার আগে ওর বাবা ওকে খুব মেরেছিলেন। অমৃত এতেও ভয়ে পিছপা না হয়ে নতুন জামার জন্য অবিচল থেকে যায়।
এত কিছুর পরও যখন অমৃত নতুন জামা পেল না, তখন সে সরাসরি অসহযােগিতার পথ নিল। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিল এবং খাওয়াদাওয়াও ছেড়ে দিল। রাতে বাড়ি ফিরতেও রাজি হলাে না। লুকিয়ে ইসাবদের গােয়াল ঘরে বসে থাকল। শেষমেশ অমৃতের মা হাল ছেড়ে দিলেন।
‘অদল-বদল’ গল্পের অন্যতম বালক চরিত্র অমৃত বন্ধু ইসাবের মতােনতুন জামার জন্য বাবা-মাকে খুবজ্বালাতন করেছিল। অমৃতের মাঅবশেষে ছেলের জেদ, পড়াশােনা,শরীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবেতার বাবাকে বলে নতুন জামা কিনে দিতে বাধ্য হন।
প্রশ্নঃ।। ‘ও আমাকে শিখিয়েছে খাটি জিনিস কাকে বলে।’- খাঁটি জিনিস’ বলতে বক্তা কী বােঝাতে চেয়েছেন? কে, তাকে কীভাবে তা শিখিয়েছে?
> উত্তর : পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্প থেকে উদ্ধৃত এই অংশটি ইসাবের বাবার উক্তির অংশবিশেষ। বক্তা খাঁটি জিনিস বলতে সুগভীর হৃদয়বৃত্তির কথা বলেছেন। যে-কোনাে মানবিক সম্পর্কের সংজ্ঞা, পরিচয় যাইহােক, পিতাপুত্র, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু সবক্ষেত্রেই মূল সত্যটি হলাে হৃদয়ের আবেদন, উপলব্ধির গভীরতা। একজন যেখানে আর-এক জনের সমস্যা,মর্মযন্ত্রণাকে উপলব্ধি করতে পারে সেখানেই থাকে সম্পর্কের সত্যতা। এই উপলব্বির কোনাে সীমারেখা নেই। জাতি, বর্ণ, ধর্ম, ধন বৈষম্য প্রকৃত সম্পর্কের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
অমৃত ইসাবের বাবাকে খাঁটি জিনিসের অর্থাৎ, খাঁটি বন্ধুত্বের সম্পর্কের চিত্রটা দেখিয়েছিল। কালিয়া অমৃতকে ওর অনিচ্ছা সত্ত্বেও কুস্তি লড়তে বাধ্য করে খােলা মাঠে নিয়ে গিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। বন্ধুর এই হেনস্তা, অপমানের জবাবে ইসাব কালিয়াকে কুস্তি লড়তে আহ্বান জানিয়ে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। কিন্তু কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের নতুন জামাটির পকেট এবং ছ-ইঞ্চি পরিমাণ কাপড় ছিড়ে যায়। এই অবস্থায় অমৃত ইসাবকে ওর বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচানাের জন্য নিজের নতুন জামাটি ওকে পরতে দিয়ে ওর ছেড়া জামাটি নিজে পরে নেয়। এতে অমৃতের শাস্তি পাওয়ার প্রশ্ন উঠলে সে জানায় যে, তাকে বাবার মারের হাত থেকে বাঁচানাের জন্য তার মা আছে। ইসাবের বাবা আড়ালে দাঁড়িয়ে এই ঘটনা দেখেছেন। নিতান্ত বালক বয়সি দুই বন্ধুর হৃদয়জ সম্পর্কের এই বন্ধন তাঁকে মুগ্ধ করেছে। খাঁটি ভালােবাসা ও মমত্বের বন্ধন কাকে বলে সে উপলব্বিও ঘটে গেছে তার। মাতৃহীন সন্তানইসাবের যে মন্ত্রণা, তাও তিনি উপলব্ধি করেন এবং নতুনভাবে অনুভব করেন। তিনি বুঝতে পারেন জাতি, বর্ণ, ধর্ম নয়, ধন-সম্পদ নয়, হৃদয়ের বন্ধনই মানবিক সম্পর্কের প্রকৃত মাপকাঠি।
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
প্রশ্নঃ।। অমৃত ও ইসাবের পরস্পরের প্রতি ভালােবাসার গল্প শুনে তাদেরও বুকভরে গেল।’—তাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? গল্পটি নিজের ভাষায় লেখাে। অমৃত ও ইসাবের পরস্পরের প্রতি ভালােবাসার গল্পটি নিজের ভাষায় লেখাে।
উত্তর : পান্নালাল প্যাটেলের ‘তাদল বদল’ গল্প থেকে উদ্ধৃত এই অংশে তাদের বলতে তাত ও ইসাবের পাড়া-পড়শি মায়ের দলের কথা বলা হয়েছে।
অমৃত এবং ইসাৰ বালক বয়সি দুই বন্ধু। ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে এদের দুজনের মধ্যে প্রভেদ আছে। একজন হিন্দুর সন্তান নাজন মুসলমানের সন্তান। কিন্তু এদের পারস্পরিক ভালােবাসার বন্ধন ধর্ময় ভেদাভেদের প্রাচীরকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে এক কালজয়ী মানবিক প্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মিল এদের মধ্যে নানান দিক থেকে। দুজনেই একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়ে। দুজনের বাবাই পেশায় চাষি এবং তাদের জমিও প্রায় সমান। রাস্তার মােড়ে দুজনের বাড়িও মুখােমুখি। তফাত শুধু এই যে অমৃতের বাবা-মা এবং আরও তিন ভাই আছে, ইসাবের বাবা ছাড়া কেউ নেই। মন-মানসিকতা ও সাজ-পােশাকের দিক থেকে অমৃত ও ইসাবের চমৎকার মিল রয়েছে। ইসাবের নতুন জামা হলে অমৃতও ওই রকমের নতুন জামার জন্য বায়না ধরেছে এবং নানান কাণ্ড করে আদায় করে নিয়েছে।
হােলির দিন পড়ন্ত বিকেলে নতুন জামা পরে দুই বন্ধু বাড়ি থেকে বেরােলে কালিয়া নামে একটি ছেলে অমৃতের অনিচ্ছা সত্ত্বেও কুস্তি লড়তে তাকে খােলা মাঠে নিয়ে যায় এবং মাটিতে ফেলে দেয়। বন্ধুর এই হেনস্তা ও অপমানে ক্রুদ্ধ ইসাব কালিয়াকে কুস্তি লড়তে আহ্বান জানায় এবং ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের নতুন জামাটির পকেট এবং ছ-ইঞ্চি পরিমাণ কাপড় ছিড়ে যায়। বন্ধুকে বাবার শাস্তির হাত থেকে অমৃত ওর ছেড়া জামাটি পরে নিজের ভালাে জামাটি ওকে পরতে দেয়। এতে তার শাস্তির প্রশ্ন উঠলে সে বলে যে, তাকে বাঁচানাের জন্য তার মা আছে। কিন্তু মাতৃহীন ইসাবকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসবে না।
প্রশ্ন ) ‘পাড়া-পড়শি মায়ের দল পাঠানের গল্প শােনার জন্য ঘিরে দাঁড়াল।’—পাঠানের গল্পটি নিজের ভাষায় লেখাে। গল্পটি শুনে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়েছিল সকলের?
উত্তর : পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পে ইসাবের বাবা দুই বালক বয়সি বন্ধু অমৃত ও ইসাবের পারস্পরিক ভালােবাসার যে অতুলনীয় দৃশ্য দেখেছেন সে গল্প শুনিয়েছেন পাড়া-পড়শি মায়ের দলকে। হােলির দিন পড়ন্ত বিকেলে একই ধরনের নতুন জামা পরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল অমৃত ও ইসাব। এই সময় কালিয়া অমৃতকে কুস্তি লড়ার জন্য জোর করে খােলা মাঠে নিয়ে গিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। বন্ধুর এই হেনস্তা ও অপমানে ক্রুদ্ধ ইসাব কালিয়াকে কুত্তি লড়তে আহ্বান জানায় এবং ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের নতুন জামার পকটে এবং ছ-ইণ্ডি পরিমাণ কাপড় ছিড়ে গেলে ওরা দুজনেই বড়াে ভয় পেয়ে যায়। এই অবস্থায় অমৃত বন্ধুকে ওর বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে নিজের নতুন জামাটি ওকে পরতে দিয়ে ওর ছেড়া জামাটি নিজে পরে নেয়। এতে তার শাস্তি পাওয়ার প্রশ্ন উঠলে সে জানায় যে, তাকে তার বাবার হাত থেকে বাঁচানাের জন্য তার মা আছে।
ইসাবের বাবার মুখে এই গল্প শুনে পাড়া-পড়শি মায়ের দলের বুক ভরে যায়। বালক বয়সি এই দুই বন্ধুর সুগভীর বন্ধুত্বের মাধুর্য একটা মুগ্ধতা সৃষ্টি করে তাদের মনে। মুখে মুখে এই গল্প গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে গ্রাম-প্রধানের কানে চলে যায়। তিনি ঘােষণা করেন যে, তারা অমৃতকে অদল এবং ইসাবকে বদল বলে ডাকবেন। এতে ছেলেরা খুশি হয়। ক্রমশ গ্রাম পেরিয়ে আকাশ-বাতাসও অমৃত ইসাব অদল-বদল, অদল-বদল এই আওয়াজে মুখরিত হয়েওঠে।
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
অদল বদল পান্নালাল প্যাটেল
প্রশ্নঃ।। ‘অমৃতের জবাব আমাকে বদলে দিয়েছে। অমৃতের কোবাবের কথা বলা হয়েছে? তা কীভাবে বক্তাকে বদলে দিয়েছিল?
উঃ। পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পের অমৃত ও ইসাব অভিন্ন হৃদয় বন্ধু। ইসাব বন্ধু অমৃতের অপমানের জবাব দিতে কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়লে তার নতুন জামার পকেট ও ছ-ইঞি পরিমাণ কাপড় ছিড়ে যায়। অমৃত তার মাতৃহীন বন্ধুকে তার বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচানাের জন্য নিজের নতুন জামাটি ওকে দিয়ে ওর ছেড়া জামাটি পরে নেয়। এতে ইসাব ওর শাস্তির প্রশ্ন তুললে অমৃত জবাব দিয়েছিল—‘আমাকে বাঁচানাের জন্য তাে আমার মা আছে। অমৃতের এই জবাবটির কথা বলা হয়েছে এখানে।
বক্তা ইসাবের বাবা আড়ালে দাঁড়িয়ে এই ঘটনাটি দেখেছেন। বালক বয়সি এই দুই বন্ধুর বন্ধুত্বের গভীরতায় তিনি মুগ্ধ হয়ে গেছেন। তিনি উপলব্ধি করেছেন প্রকৃত বন্ধুত্বের কোনাে বয়স, জাতি, বর্ণ, দেশ, কাল নেই, নেই কোনাে ধনি-দরিদ্র ভেদ। বন্ধুর জন্য বন্ধুর মমত্বের গভীরতা কোনাে সীমারেখা মানে না। অমৃতের উপলব্বির গভীরতাতার দীর্ঘদিনের হিসেব-নিকেশকে বদলে দেয়। তিনি বুঝতে পারেন সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ এক আরােপিত সংস্কার মাত্র। বস্তুত ধর্মীয় ভেদাভেদের দ্বারা মানব হৃদয়ের সীমারেখা স্থির হয় না। তাই তাে এই ঘটনাটি জনে জনে জানানাের জন্য তিনি ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। আবেগাপ্লুত হয়ে অমৃতের মাকে বলেন—‘আজ থেকে আপনার ছেলে আমার। এ ছাড়া মাতৃহীন সন্তান ইসাবের মমর্যন্ত্রণাও তাকে ছুঁয়ে যায়। তিনি বােঝেন এবার থেকে ইসাবের বাবা ও মা উভয়ের দায়িত্ব তাঁকে পালন করতে হবে।
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
প্রশ্নঃ।। পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পে প্রকৃত বন্ধুত্বের যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় লেখাে। অথবা ‘অদল বদল’ গল্পে অমৃত ও ইসাবের মধ্যে যে ভালােবাসা ও প্রকৃত বন্ধুত্বের চিত্র ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় লেখাে।
উত্তর : বন্ধুত্বের বন্ধন কতদূর গভীর এবং উপলব্বি-সাপেক্ষ হতে পারে তার একটা চমৎকার দৃষ্টান্ত পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’গল্পটি। বস্তুত অমৃত ও ইসাবের পারস্পরিক ভালােবাসা এবং বন্ধুত্বকে কেন্দ্র করেই গল্পটি আবর্তিত হয়েছে।
বিভিন্ন দিক থেকেই অমৃত ও ইসাবের মধ্যে মিল আছে। এরা দুজনেই একই স্কুলে, একই ক্লাসে পড়ে। দুজনের বাবাই পেশায় চাষি এবং জমিও তাঁদের প্রায় সমান সমান। তাদের বাড়ি দুটিও রাস্তার মােড়ে, মুখােমুখি। ভিন্নধর্মী হলেও মন-মানসিকতায়, রুচি-পােশাকে চমৎকার মিল লক্ষিত হয় দুজনের মধ্যে। ইসাবকে নতুন জানা কিনে দেওয়া হলে অমৃতও ওই ধরনের একটি জামার জন্য বায়না করে, নানান কাণ্ড করে তা আদায় করে নেয়। হােলির দিনের পড়ন্ত বিকেলে দুই বন্ধু নতুন জামা পরে বাড়ি থেকে বেরােলে কালিয়া অমৃতকে কুস্তি লড়তে বাধ্য করে মাটিতে ফেলে দিলেইসাবতার যােগ্য জবাব দেয়। সেল্যাং মেরে কালিয়াকে ব্যাঙের মতাে মাটিতে ফেলে দেয়। আবার কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়ে ইসাবের জামা ছিড়ে গেলে তাকে তার বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে অমৃত। সে উপলব্ধি করে যে, ইসাবের ছেড়া জামা দেখে ওর বাবা ক্রুদ্ধ হয়ে ওর চামড়া তুলে নেবে। ওর মাতৃহীন ছােট্ট বন্ধুটিকে বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচানাের কেউ নেই। তাই নিজের নতুন জামাটি ইসাবকে পরতে দিয়ে অমৃত ওর ছেড়া জামাটি পরে নেয়। কারণ তার ছেড়া জামা দেখে বাবা মারতে এলে মা এগিয়ে আসবে তাকে বাঁচানাের জন্য।
গভীর ভালােবাসা এবং অনুভব সম্পৃক্ত এই বন্ধুত্বের দৃষ্টান্তের তুলনা নেই।
প্রশ্ন ।। ‘নতুন জামা পাবার জন্য তুমি কী কাণ্ডটাই না করেছিলে?-বক্তা কে? নতুন জামা পাবার জন্য কে, কী কাণ্ড করেছিল? –
উত্তর : গুজরাতি লেখক পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্প থেকে উদ্ধৃত এই অংশটির বক্তা হলেন অমৃতের মা।
বন্ধু ইসাবের নতুন জামাটির মতাে একটি জামার বায়না ধরে তা আদায় করার জন্য অমৃত নানান কাণ্ড করেছিল। প্রথমে সে ইসাবের নতুন জামাটির মতাে একটি জামা না পেলে স্কুলে যাবে না বলে ফতােয়া জারি করে। ওর মা যখন বলেন, ইসাবের জামাটি কাজ করতে দিয়ে ছিড়ে গেছে বলে তাকে নতুন জামা দেওয়া হয়েছে তখন সে জামার একটা ছেড়া জায়গায় আঙুল ঢুকিয়ে আরও ছিড়ে ফেলে। ওর মা এও বলেন যে, ইসাবকে নতুন জামা দেওয়ার আগে ওর বাবা ওকে খুব মেরেছিলেন। অমৃত এতেও পিছপা হয় না। নতুন জামার জন্য সে শাস্তি পেতেও রাজি।
এত কিছুর পরেও যখন অমৃত নতুন পেল না। তখন সে সরাসরি অসহযােগিতার পথে গেল। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিল। ছেড়ে দিল খাওয়াদাওয়া। রাতে বাড়িতে ফিরতেও রাজি হলাে না। লুকিয়ে থাকল ইসাবের বাবার গােয়ালঘরে। শেষমেশ অমৃতের মা হাল ছেড়ে দিলেন। অমৃতের বাবাকে ওর জন্য নতুন জামা কিনে দিতে রাজি করালেন।
প্রশ্ন ।। পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পে হিন্দুমুসলিম সম্প্রীতির যে চিত্র লেখক তুলে ধরেছেন তা নিজের ভাষায় লেখাে।
অথবা, ‘অদল বদল’ গল্পে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে চিত্র ফুটে উঠেছে তার বর্ণনা দাও।
অথবা, ‘অদল বদল’ গল্পে দুই ভিন্নধর্মী কিশােরের অকৃত্রিম বন্ধুত্বের চিত্রাঙ্কনের মধ্য দিয়ে লেখক যে বার্তা তুলে ধরতে চেয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখাে।
উত্তর : গুজরাতি লেখক পান্নালাল প্যাটেল তাঁর ‘অদল বদল গল্পে বালক বয়সি দুই বন্ধু অমৃত ও ইসাবের গভীর ভালােবাসার চিত্রাঙ্কনের মধ্য দিয়ে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি তথা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চমৎকার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন।
দুই সমবয়সি বালক অমৃত ও ইসাবের মধ্যে মিল নানান দিক থেকে। যেমন—দুজনেই একই স্কুলে, একই ক্লাসে পড়ে। দুজনের পারিবারিক আর্থিক পরিস্থিতিও প্রায় একই ধরনের, যদিও ইসাব মাতৃহীন। তবে ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে অমৃত হিন্দু আর ইসাব মুসলিম। ধর্মগত এই প্রভেদ দুই বন্ধুর হৃদয়গত ঐক্যের পথে মোটেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি। তাই তাে অমৃতকে কালিয়া কুস্তি লড়তে ডেকে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিলে ইসাব কালিয়াকে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে যােগ্য জবাব দেয়। আবার কুস্তি লড়ে ইসাবের জামা ছিড়ে গেলে ওকে ওর রাগী বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে অমৃত শাস্তির ঝুঁকি স্বস্কন্ধে নিয়ে ওর জামা অদল-বদল করে নেয়। ও উপলব্ধি করে যে, ওকে শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে মা এগিয়ে আসবে কিন্তু মাতৃহীন ইসাবের জন্য এগিয়ে আসবে না কেউ।
এই দুই বালকের অকৃত্রিম বন্ধুত্ব, হৃদয়াবেগ ছুঁয়ে যায় ইসাবের বাবা হাসান পাঠানের হৃদয়। অমৃতকে তিনি বুকে জড়িয়ে ধরেন। ভেঙে যায় তার হৃদয়ের ধর্মগত বিভেদের দেয়াল। তিনি অমৃতের মাকে বলেন—“আজ থেকে আপনার ছেলে আমার।” অমৃতের মা হেসে হেসে এ কথার উত্তর দেন। এভাবে যে সম্প্রীতির চিত্রটি ফুটে ওঠে তা যেন মহামানবের মিলনতীর্থের এক খণ্ডচিত্র।
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
অদল বদল গল্পের সংক্ষিপ্ত প্ৰশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ।। ‘এতে দুজনেরই ভয় কেটে গেল,-কীসে ভয় কেটে গেল?
উত্তর : কুস্তিতে ইসাবের জামা ছিড়ে যাওয়ায়, প্রায় জোর করেই বন্ধু অমৃত গােপনে জামা বদল করিয়েছিল। সেটা বাবার হাত থেকে ইসাবের মার খাওয়া বাঁচানাের জন্য (দুজনের জামা একইরকম ছিল)। এতে ইসাবের ভয় কাটল। কিন্তু ছেড়া জামা নিয়ে অমৃতর বুক ঢিপঢিপ করছিল। কপাল ভালাে, হােলির দিনে এমন এক-আধটু হতে পারে বিবেচনায় মা ভুরু কোঁচকালেন। মাপও করলেন। রিফুও করে দিলেন। এতে দুজনেরই ভয় কেটে গেল।
প্রশ্ন ) তারা ভয়ে বাড়ির দিকেছুটে পালাতে লাগল। কীসের ভয়ে তারা ছুটে পালাতে লাগল?
উওর : বন্ধু অমৃতর মান বাঁচাতে ইসাব কুস্তি খেলেছিল। জামাও ছিড়েছিল। ইসাবের বাবা ইসাবকে শাস্তি দেবেন, তাই একইরকম জামার সুবিধায় জামা অদলবদল করেছিল। ওদের বাড়িতে ব্যাপারটা চাপা ছিল। কিন্তু একটা ছেলের কাছে এটা জেনে অন্য ছেলেরা ওই দুজনের পিছনে সমানে চেঁচিয়ে চলেছিল। বাবারা জানলে প্রচুর শাস্তি দেবে। এই ভয়ে দুই বন্ধু বাড়ির দিকে ছুটে পালাল।
প্রশ্ন ।। ‘কী খাঁটি কথা!’—কীভাবে কথাটা খাটি, পাঠানের দৃষ্টিযােগে আলােচনা করাে। –
উত্তর : অমৃত বন্ধু ইসাবকে বাবার শস্তি থেকে বাঁচাতে ইসাবের ছেড়া জামা পরেছিল। আর নিজের একইরকম ভালাে জামাটা ইসাবকে পরিয়েছিল। নিজের শাস্তি ? উত্তরে বলেছিল, তার মা আছেন না? মা-ই বাবার হাত থেকে বাঁচাবেন। এই কথা নিজে * নেছিলেন ইসাবের বাবা পাঠান। এটাই খাঁটি কথা। এই কথায় তিনি বদলেছেন। শিখেছেন খাটি জিনিস কী রকম। মাতৃস্নেহের প্রতি সম্মান এবং বন্ধুপ্রীতির মতাে খাটি জিনিস দুর্লভ।
প্রশ্ন ) অমৃত ও ইসাবের পরস্পরের প্রতি ভালােবাসার নিদর্শনটি লেখাে।
উওর: দশ বছর বয়েসি তামৃত তার ইসাব দুই এক বিকেলে অনিচ্ছুক অমৃতকে দলের ছেলে কালিয়া খােলা মাঠে
টেনে কুস্তি করে ফেলে দেয়। ইসাব বন্ধুর মান বাঁচাতে মেজাজ হারিয়ে কালিয়াকে ল্যাং মারে। কালিয়া মাটিতে পড়ে কাঁদে। সবাই ছত্রভঙ্গ। ইসাবের জামা ছেঁড়ায় ভালােবেসে এবং মার খাওয়া থেকে বাঁচাতে অমৃত জামা অদলবদল করায়। বাবার পিটুনি থেকে মা তাকে বাঁচাবেন, এ আশ্বাস দেয়। এমনই তাদের ভালােবাসা।
প্রশ্ন ।। ‘ইসাব ও অমৃত অপ্রস্তুত বােধ করল না,’-কেন অপ্রস্তুত বােধ করল না, লেখাে।
উত্তর : বন্ধু অমৃতর মান বাঁচানাের জন্য ইসাব কুত্তি করে T কালিয়াকে ল্যাং মারে। সে কাঁদে। ভয়ে সকলে পালায়। ইসাবের জামা ছিড়েছে, বাবার মার খাবে, তাই অমৃত জামা বদলাবদলি করে। ছেলেরা জানতে পেরে বিদ্রুপ করে। কিছু না জানলেও অমৃতের মা জামা সেলাই (রিফু) করে দেন। ইসাবের বাবা সব জেনে অমৃতকে বুকে তুলে নেন। পাড়ার সবাই দাঁড়িয়ে যায়। এবার ছেলেরা ‘অদল-বদল’ বললেও ওরা অপ্রস্তুত বােধ করল না।
প্রশ্ন । | ‘ছেলেরা খুব খুশি হলাে।’—ছেলেরা কেন খুশি হলাে?
উত্তর : কুত্তিতে ইসাবের জামা ছিড়ে যায়। তাতে মার খাওয়ার ভয় ছিল। বন্ধু অমৃত নিজের ভালাে জামা পালটাপালটি করে। ছেলেরা সেটা চাউর করতে থাকে। অমৃতর মা কিছু দোষ দেখেন না। পরন্তু সব জেনে ইসাবের বাবা অমৃতকে পুত্রবৎ আদর করেন। পাড়ার সবাইদাঁড়িয়ে শােনে। এবার ছেলেদের ‘অদল-বদল’ উচ্চারণ দুই বন্ধুর খারাপ লাগে না। গ্রাম-প্রধানও তাদের এই নামে ডাকবেন, বলে দিলেন। তাই ছেলেরা খুব খুশি হলাে।
প্রশ্ন ) “উনি দশ বছরের অমৃতকে জড়িয়ে ধরলেন।” –‘উনি’ কে? কেন অমৃতকে উনি জড়িয়ে ধরলেন?
উত্তর : প্রখ্যাত গুজরাটি সাহিত্যের লেখক পান্নালাল প্যাটেল রচিত ‘অদল-বদল’ গল্পের বালক ইসাবের বাবা হাসান পাঠানকেই ‘উনি’বলা হয়েছে।
গল্পের অন্যতম বালক চরিত্র ইসাবের নতুন জামাটি ছিড়ে যায় কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে গিয়ে। আর এর জন্য ইসাবকে তার রাগী বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে অমৃত নিজের নতুন জামাটি অদল-বদল করে নেয়। কারণ নতুন জামা ছােড়ার জন্য বাবার কাছে। শাস্তি পেতে হবে কিন্তু তাকে সে শাস্তি থেকে বাঁচানাের তার মা নেই। দশ বছরের সামান্য বালক অমৃতের হৃদয়ের বন্ধুপ্রীতির অনন্য নজির দেখে ইসাবের বাবা হাসান পাঠান সস্নেহে আবেগাপ্লুত হয়ে। অমৃতকে জড়িয়ে ধরলেন।
অদল বদল
প্রশ্নঃ।। ‘বাহােলি বৌদি, আজ থেকে আপনার ছেলে আমার।বক্তা কে? তাঁর এই উক্তির কারণ কী?
উত্তর : পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’গল্প থেকে উদ্ধৃত এই অংশটির বক্তা হলেন ইসাবের বাবা হাসান পাঠান।
কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়ে ইসাবের নতুন জামার পকেট ও কিছুটা অংশ ছিড়ে গেলে ওকে ওর বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে অমৃত নিজের জামাটা ওকে পরতে দিয়ে ওর ছেড়া জামাটা নিজে পরে নেয়। কারণ মাতৃহীন ইসাবকে ওর বাবার শাস্তির হাত । থেকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসবে না। কিন্তু অমৃতকে বাঁচানাের ২ জন্য ওর মা আছেন। বন্ধুর জন্য বন্ধুর এতখানি অনুভব এবং আত্মত্যাগের দৃশ্য দেখে হাসান পাঠান মুগ্ধ হয়ে যান। তাই তিনি এই উক্তি করেন।
প্রশ্ন ) ‘অমৃতের মতাে ছেলে পেলে আমি একুশজনকেও পালন করতে রাজি আছি।’—বক্তার এই উক্তির কারণ কী?
উত্তর: বক্তা হাসান পাঠান আড়াল থেকে দেখেছেন ইসাবকে ২ ওর বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে ওর কুস্তি লড়ে ছিড়ে যাওয়া নতুন জামাটা অমৃত নিজে পরে নিয়ে নিজের ভালাে জামাটা ইসাবকে পরতে দিয়েছে। বলেছে ওকে শাস্তির হাত থেকে বাঁচানাের জন্য ওর মা এগিয়ে আসবে। কিন্তু মাতৃহীন ইসাবকে বাঁচাতে এগিয়ে আসার মতাে কেউ নেই। বয়সে বালক অমৃতের এই হৃদয়বৃত্তিতে, অনুভবের গভীরতায় মুগ্ধ হয়ে যান ইসাবের বাবা হাসান পাঠান। তাই অমৃতের মতাে ছেলে পেলে যত অসুবিধাই হোক একুশজনকে পালন করতে তিনি রাজি।
প্রশ্ন ) অমৃতের জবাব আমাকে বদলে অমৃতের কোন জবাব, বক্তাকে কীভাবে বদলে দিয়েছে?
উঃ: তামৃত তার বন্ধু ইসাবকে ওর বাবার শাস্তির হাত। থেকে বাঁচাতে নিজের নতুন জামাটা ওকে পরতে দিয়ে ওর ছিড়ে। যাওয়া জামাটা নিজে পরে নেয়। এতে ওর শাস্তি পাওয়ার প্রশ্ন। উঠলে সে জবাবে জানায় যে, ওকে বাবার শাস্তির হাত থেকে। বাঁচানাের জন্য মা আছেন, মা এগিয়ে আসবেন। অমৃতের এই জবাব হাসান পাঠানকে একটা জোর ধাক্কা দিয়ে যায়। তিনি মাতৃহীন ইসাবের মর্মযন্ত্রণাটা উপলব্ধি করেন, আর উপলব্ধি করেন বালক অমৃতের বন্ধুপ্রীতি এবং অনুভবের গভীরতাকে। বদলে যায় তার ক্রুর স্বভাব। জামা ছেড়ার প্রশ্নটা আর বড়ো হয়ে ওঠে না।
প্রশ্ন ) গল্প শুনে তাদেরও বুক ভরে গেল।-কোন্ গল্প? তা শুনে কেন বুক ভরে গেল?
উওর : পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্প থেকে উদ্ধৃত এই অংশে অমৃত ও ইসাবের জামা অদল-বদলের গল্পটির কথা বলা হয়েছে।
জামা অদল-বদলের সাধারণ ঘটনাটির নেপথ্যে আছে এক অসাধারণ হৃদয়বৃত্তির স্পর্শ। অমৃত জামা অদল-বদলের মাধ্যমে স্বস্কন্ধে শাস্তির ঝুঁকি নিয়ে মাতৃহীন বন্ধুকে পিতার কঠোর শাস্তির হাত থেকে বাঁচিয়েছে। ছেড়া জামা পরে বাড়িতে ঢুকলে ইসাবের যেমন শাস্তি হতাে তেমনি অমৃতেরও শাস্তি হবে। কিন্তু অমৃতকে বাঁচানাের জন্য তার মা আছে। ইসাবের মা নেই। বন্ধুর জন্য বন্ধুর এতখানি অনুভব এবং আত্মত্যাগের গল্প শুনে পাড়া-প্রতিবেশীদের বুক ভরে যায়।
প্রশ্ন ।। কুস্তি করার প্রস্তাবে অমৃত কেন ‘না’ বলেছিল?
উত্তর : গ্রাম্যজীবনের রূপকার পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্প থেকে প্রশ্নটি করা হয়েছে। দুই বন্ধু অমৃত আর ইসাবকে ছেলের দল হােলির পড়ন্ত বিকেলে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দিলে অমৃত দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে বলেছিল—‘না, তাহলে মা আমাকে ঠ্যাঙ্গাবে। তা ছাড়া সেদিন ওর মা সাবধান করেছিলেন। কারণ নতুন জামা পাওয়ার জন্য সে বহুত কাণ্ড করেছিল। সে যদি নতুন জামা ময়লা করে বা ছিড়ে আসে, তাহলে তার কপালে বিড়ম্বনা আছে।
প্রশ্ন ।। মেজাজ চড়ে যাওয়ায় ইসাব কী করেছিল?
উত্তর : ইসাবের বন্ধু অমৃত কুস্তি লড়তে না চাইলেও কালিয়া জোর করে তাকে খােলা মাঠে নিয়ে এসেছিল। ছেড়ে দে, বলায় কালিয়া তাকে মাটিতে ছুড়ে ফেলেছিল। ছেলের দল মজা করে চেঁচিয়েছিল কালিয়া জিতেছে, অমৃত হেরেছে বলে। মেজাজ চড়ে গেল ইসাবের। কুস্তির স্পর্ধা জানিয়ে কুস্তিতে সে নেমে গেল। ইসাব কালিয়াকে ল্যাং মেরে ফেলে দিল। কালিয়া ব্যাঙের মতাে হাত-পা ছড়িয়ে মাটিতে পড়ে চ্যাচাতে লাগল।
প্রশ্নঃ।।বলতে গেলে ছেলেদুটির সবই একরকম ছেলেদুটির পরিচয় দাও। ওদের মিল-অমিলগুলি উল্লেখ করাে।
অথবা, পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পের অমৃত ও ইসাবের মধ্যে কী কী বিষয়ে মিল ও অমিল ছিল?
উওর : প্রখ্যাত গুজরাতি লেখক পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পের প্রধান চরিত্র অমৃত ও তার বন্ধু ইসাব বয়সে নিতান্তই বালক। ভিন্ন ধর্মের সন্তান হলেও দুজনে নিবিড় বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ।
অমৃত ও ইসাবের মধ্যে মিল প্রায় সমস্ত দিক থেকেই। এরা সমবয়সি, একই স্কুলে একই ক্লাসে পাঠরত। তারা একই রকমের পােশাক পরে। একই রাস্তার মােড়ে এদের বাড়ি দুটিও মুখােমুখি। এদের দুজনের বাবাই পেশায় চাষি এবং জমিও প্রায় সমান সমান। বিপদে-আপদে দুজনের বাবাই সুদে টাকা ধার নিয়ে থাকেন। তফাত শুধু একটা ক্ষেত্রে, অমৃতের বাবা, মা আর তিন ভাই আছে কিন্তু ইসাবের আছে শুধু তার বাবা।
প্রশ্ন ।। ‘নতুন জামা পাবার জন্য তুমি কী কাণ্ডটাই না করেছিলে,-“তুমি’বলতে কার কথা বলা হয়েছে? নতুন জামা পাবার জন্যে সে কী কাণ্ড করেছিল?
অথবা, ‘অমৃত সত্যি তার বাবা-মাকে খুব জ্বালিয়েছিল’ অমৃত কীভাবে তার বাবা-মাকে জ্বালিয়েছিল?
উত্তর : পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’গল্প থেকে উদ্ধৃত এই অংশে গল্পটির প্রধান চরিত্র অমৃতের কথা বলা হয়েছে। সে নতুন জামা পাওয়ার জন্য বাবা-মাকে ভীষণ জ্বালিয়েছিল।
বন্ধু ইসাবের নতুন জামা দেখে অমৃত ওই রকমের একটি জানার জন্য বায়না ধরেছিল। নিজের জামাটির একটা ছেড়া জায়গায় আঙুল ঢুকিয়ে আরও ছিড়ে ফেলেছিল। ইসাব মার খেয়ে জামা পেয়েছে শুনে সে নিজেও মার খেতে রাজি হয়েছে। তাতেও কাজ না হলে অমৃত স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছে। খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি রাতের বেলা বাড়িতে ফিরতেও রাজি হয় নি। ইসাবের বাবার গােয়ালঘরে লুকিয়ে থেকেছে। ছেলের এমন জ্বালাতনের কাছে অমৃতের বাবা-মা শেষপর্যন্ত হেরে যান এবং নতুন জামা কিনে দেন। |
অদল বদল গল্প
প্রশ্ন।। “ঠিক আছে আমাকে বেঁধে রাখাে! মারাে! -বক্তা কে? সে কেন এমন উক্তি করেছিল?
উত্তর : গুজরাতি লেখক পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পের প্রধান চরিত্র অমৃত এই উদ্ধৃত অংশটির বক্তা।
অভিন্ন -হৃদয় বন্ধু ইসাবের নতুন জামা দেখে অমৃত ওইরকমের একটি জামার জন্য মায়ের কাছে বায়না ধরেছিল। ইসাবের জামাটি পুরােনাে এবং কাজ করতে গিয়ে ছিড়ে গেছে তাই তাকে নতুন জামা কিনে দেওয়া হয়েছে। তুলনায় অমৃতের জামাটি প্রায় নতুন। মায়ের এই যুক্তি না মেনে অমৃত তার বায়নায় অটল থাকলে তিনি বলেন যে, নতুন জামা দেওয়ার আগেইসাবের বাবা ওকে খুব মেরেছিলেন। বন্ধুর নতুন জামার মতাে একটি জামা পেতে অমৃত শাস্তি গ্রহণ করতেও সম্মত হয়। তাই সে এই উক্তি করে।
প্রশ্ন ।।‘ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠল’– ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠল কেন?
উত্তর : ‘অদল বদল’ গল্পের অমৃত ও ইসাব হােলির দিনের পড়ন্ত বিকেলে নতুন জামা পরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। এই সময় নিম গাছের নীচে ধুলাে উড়িয়ে খেলতে থাকা ছেলেদের মধ্যে একজন ওদের দুজনকে কুস্তি করতে বলে। ওরা এতে রাজি হলে কালিয়া নামে একটা ছেলে অমৃতের গলা জড়িয়ে ধরে কুস্তি লড়ার আহ্বান জানায় এবং সে জোর করে তাকে খােলা মাঠে নিয়ে যায় এবং অমৃতের প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে ছুড়ে মাটিতে ফেলে দেয়। অমৃতের প্রতি কালিয়ার এই নিষ্ঠুর লাঞ্ছনায় ছেলের দল এক ধরনের উত্তেজক আনন্দ অনুভব করে এবং চেঁচিয়ে ওঠে।
প্রশ্ন ।। ‘ইসাবের মেজাজ চড়ে গেল’-ইসাব কে? তার মেজাজ চড়ে গেল কেন?
উওর : প্রখ্যাত গুজরাতি লেখক পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পের একটি অন্যতম চরিত্র ইসাব। সে অমৃতের অভিন্ন – হৃদয় বন্ধু।
নতুন জামা পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে অমৃত কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে রাজি হয় নি। কালিয়া তার অসম্মতির তােয়াক্কা না করে গলা জড়িয়ে ধরে তাকে খােলা মাঠে নিয়ে যায়। অমৃতের কোনাে আপত্তিতে কান না দিয়ে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়। এতে অদলবদল করেছিল। কিন্তু তার বাবাও তাে পেটাবেন। অমৃত বলল, বাঁচাবার জন্য তার মা আছে। তখন ইসাবের মনে পড়ল, ও দেখেছে যে, অমৃতের বাবা যখনই মারতে গেছেন, অমৃত ওর মায়ের পিছনে লুকিয়েছে। মার হাতেও চড়-থাপ্পড় খেলেও বাবার হাতের মারের কাছে সেটা সামান্য।
অদল বদল গল্পের ছোট প্ৰশ্ন উত্তর
প্রয় । ‘তারা ভয়ে বাড়ির দিকে ছুটে পালাতে লাগল।’—কোন্ ভয়ে তারা ছুটে পালাচ্ছিল?
উত্তর : বাবার শাস্তির হাত থেকে বাঁচতে ইসাব অমৃতের সঙ্গে জামা অদল-বদল করেছিল, যা দেখে ছেলের দল ‘অদল-বদল’ বলে চাচাতে থাকে, এতে ব্যাপারটা ইসাবের বাবা জেনে যাবেন ভেবে তারা ভয় পেয়েছিল।
প্রশ্ন । ‘গল্প শুনে তাদেরও বুক ভরে গেল।’-কোন্ গল্প শুনে তাদের বুক ভরে গিয়েছিল?
উত্তর : বন্ধুকে বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে স্বন্ধে শাস্তির ঝুঁকি নিয়ে অমৃত কীভাবে বন্ধুইসাবের সঙ্গে জামা অদল-বদল করেছিল সেই গল্প শুনে শ্রোতাদের বুক ভরাে গিয়েছিল।
প্রশ্ন ) ‘উনি ঘােষণা করলেন।’—কী ঘােষণা করলেন?
উত্তর : উনিঅর্থাৎ, গ্রাম-প্রধান ঘােষণা করলেন যে তারা অমৃতকে অদল এবং ইসাবকে বদল বলে ডাকবেন।
প্রশ্ন ।। অদল বদল গল্পটি কে বাংলায় তরজমা করেছেন?
উত্তর : গুজরাতি লেখক পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পটিকে বাংলায় তরজমা করেছেন অর্ঘ্য্যকুসুম দত্তগুপ্ত।
প্রশ্ন ) অমৃত ও ইসাব-এর জামার কোন্ কোন্ দিক থেকে মিল ছিল?
উত্তর : তাদের পরনের জামা-রং, মাপ, কাপড় সবদিক থেকে একই রকম ছিল।
প্রশ্ন । অমৃত ও ইসাবের কী কী বিষয়ে মিল ছিল?
উত্তর : দুজনের জামার মিল ছাড়াও তারা একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়ে। দুজনের বাবাই চাষ করে এবং জমিও প্রায় সমান সমান। রাস্তার মােড়ে তাদের বাড়ি দুটিই মুখােমুখি।
প্রশ্ন ) অমৃতের কুস্তি লড়তে অনিচ্ছার কারণ কী ছিল?
উওর : বাড়ি থেকে বেরােনাের সময় অমৃতের মা তাকে বলে দিয়েছিল—সে যাতে নতুন জামা ময়লা করে বা না ছিড়ে আসে।
প্রশ্ন ) বলতে গেলে ছেলে দুটোর সবই একরকম, তফাত শুধু এই যে,’—তফাতটা কী?
উত্তর : দুই বন্ধু অমৃত ও ইসাবের মধ্যে বিপুল সাদৃশ্য থাকলে, তফাত এটাই যে, অমৃতের বাড়িতে যেখানে রয়েছে বাবা-মা ও তিন ভাই, সেখানে ইসাবের বাড়িতে তার শুধু বাবা আছে।
প্রশ্ন ) “এতে দুজনেরই ভয় কেটে গেল।”—তাদের ভয় কীভাবে কেটেছিল?
উত্তর : নতুন জামাটি ছিড়ে বাড়ি গেলেও অমৃত ওর মা বা বাবার কাছে মার খায়নি বলে।
প্রশ্ন । “দেখতে হবে ওরা কী করে?”—কে কী দেখে ছিল?
উত্তর: ইসাবের বাবা গলির মধ্যে অমৃত ও ইসাবকে জামা অদলবদল করতে দেখেছিল।
প্রশ্ন । “এই আওয়াজ মুখরিত হয়ে উঠল।”— আওয়াজটি কী ছিল?
উত্তর : আওয়াজটি ছিল —‘‘অমৃত -ইসাব অদল-বদল, অদল-বদল।”
প্রশ্নঃ।।“এসাে, আমরা কুস্তি লড়ি।”—কে, কাকে বলেছিল?
উত্তর : গুজরাটি সাহিত্যের স্বনামধন্য লেখক পান্নালাল প্যাটেল রচিত ‘অদল-বদল’ গল্পে হােলির দিনে ছেলে-ছােকরার দল থেকে একজন অমৃতের গলা জড়িয়ে কুস্তি লড়ার কথা বলেছিল।
প্রশ্ন । ‘অদল-বদলের গল্প’ গ্রামপ্রধানের কানে গেলে তিনি কী ঘােষণা করেছিলেন?
উওর : ‘অদল-বদলের গল্প’ গ্রামপ্রধানের কানে গেলে তিনি ঘােষণা করেছিলেন যে তারা অমৃতকে অদল এবং ইসাবকে বদল বলে ডাকবেন।
প্রশ্ন ।। জামা চেয়ে বাব-মাকে চাপে ফেলতে অমৃত কী কী করেছিল?
উওর : বাবা- মাকে চাপে ফেলতে অমৃত স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল, খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল এবং রাতে বাড়িতে ফিরতে রাজি হয়নি।
প্রশ্ন ) ‘ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠল,’—কেন ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠল?
উত্তর : অমৃত কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে রাজি না হলে কালিয়া তাকে না ছেড়ে দিয়ে জোরের সঙ্গে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়, এই দৃশ্য দেখে ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে ওঠে।
প্রশ্ন । ‘ইসাবের মেজাজ চড়ে গেল।’—ইসাবের মেজাজ চড়ে গেল কে?
| উত্তর : ইসাবের বন্ধু অমৃতকে কালিয়া জোরের সঙ্গে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল। বিনা অপরাধে বন্ধুর লাঞ্ছনা দেখে ইসাবের মেজাজ চড়ে যায়।
প্রশ্ন ) ‘আমি তাের সঙ্গে লড়ব।’—বক্তা কেন লড়তে চেয়েছিল?
উত্তর : অমৃতকে কুস্তি লড়তে আহ্বান জানিয়ে কালিয়া তাকে জোর করে মাটিতে ছুড়ে ফেলেছিল। বন্ধুর এই লাঞ্ছনা দেখে ক্ষিপ্ত ইসাব কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে চায়।
প্রশ্ন ) সবাই যে যে-দিকে পারে পালিয়ে গেল।’ সবাই পালিয়ে গেল কেন?
উত্তর : ইসাবের ল্যাং খেয়ে কালিয়া ব্যাঙের মতাে মাটিতে পা ছড়িয়ে পড়ে গিয়ে চঁাচাতে শুরু করে। এই অবস্থায় সবাই ওর বাবা-মায়ের ভয়ে পালিয়ে যায়।
প্রশ্ন ) ‘মাটিতে পড়ে গিয়ে চাচাতে লাগল।’—কে, কেন মাটিতে পড়ে চাচাতে লাগল?
উত্তর : পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পে কালিয়া ইসাবের ল্যাং খেয়ে ব্যাঙের মতাে পা ছড়িয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে চাচাতে শুরু করেছিল।
প্রশ্ন ) ‘ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গেল।’—ভয়ের কারণ কী?
উত্তর : কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়ে ইসাবের নতুন জামার পকেট ছিড়ে গেলে ওর রাগী বাবার হাতে শাস্তি পাওয়ার ভয়ে কাঠ হয়ে যায় ইসাব ও তার বন্ধু আমৃত।
প্রশ্ন ।। ওরা জানে — ওরা কি জানে?
উত্তর : ওরা অর্থাৎ, অমৃত ও ইসাব জানে যে ইসাবের বাবা রাগী মানুষ। তিনি সুদখােরের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে শার্টটি বানিয়ে দিয়েছেন। ছেড়া শার্ট দেখামাত্র তিনি ইসাবের চামড়া তুলে নেবেন।
প্রশ্ন ) ‘হঠাৎ অমৃতের মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল, ‘কী বুদ্ধি খেলে গেল?
উওর : ইসাবের জামার পকেট ছিড়ে গেলে ওকে ওর রাগী বাবার হাত থেকে বাঁচানাের জন্য জামা তাদল-বদল করে নেওয়ার বুদ্ধি খেলে যায় অমৃতের মাথায়।
প্রশ্ন । “নিশ্চয় ঠ্যাঙ্গাবে।’—কেন ঠ্যাঙ্গবে?
উওর : নতুন জামা পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তা কোনােভাবে ছিড়ে ফেললে অমৃতের বাবা তা সহজে মেনে নেবেননা, নিশ্চিতভাবে ওকে ঠ্যাঙ্গাবেন।
প্রশ্ন ।। ‘ইসাবের মনে পড়ল।’-কী মনে পড়ল ইসাবের?
উত্তর : ইসাব দেখেছে যে রেগে গিয়ে মৃতের বাবা যখনই ওকে মারতে গেছেন তখনই সে মায়ের পিছনে লুকিয়েছে এবং অল্পস্বল্প শাস্তি পেয়েছে—এই কথাটি তার মনে পড়ল।
প্রশ্ন ।। ‘অদল বদল’ গল্পে অমৃত ও ইসাব জামা অদল বদল করেছিল কেন?
উত্তর : কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়ে ইসাবের জামা ছিড়ে গেলে অমৃত বুঝতে পারে যে ইসাবের রাগী বাবা ওর চামড়া তুলে নেবেন, তাই বন্ধুকে শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে ওরা জামা অদল-বদল করে নেয়।
প্রশ্ন ।। ‘ভয়ে অমৃতের বুক টিপটিপ করছিল।– ভয়ের কারণ কী?
উওর : নতুন জামা পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পকেট ছেড়া জামা পরে বাড়িতে ঢুকছিল অমৃত, তাই মায়ের শাস্তি পাওয়ার ভয়ে তার বুক ঢিপঢিপ করছিল।
প্রশ্ন ।। ‘এতে দুজনের ভয় কেটে গেল।’—কীভাবে দুজনের ভয় কেটে গিয়েছিল?
উ: অমৃতের মা ওর জামার পকেট ছোঁড়া দেখেও রে । গেলেন না, শুধুভুরু কুঁচকোলেন এবং ছেড়া অংশটি রিপু করে দিলেন। এতে দুজনেরই ভয় কেটে গেল।
অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর saq
প্রশ্নঃ। অমৃত ও ইসাবকে লড়তে বলা হয়েছিল কেন?
উত্তর : হােলির দিন বিকেলে অমৃত ও ইসাবকে একই পােশাকে দেখে তারা শক্তিতেও সমান-সমান, না একজন বড়াে পালােয়ান তা দেখতে তাদের লড়তে বলা হয়েছিল।
প্রশ্ন । ‘বেশ মজা হবে।’—কীসে মজা হবে?
উত্তর : একই রকমের পােশাক পরা অমৃত ও ইসাব যদি শক্তি পরীক্ষায় নেমে কুস্তি করে তবে তা দেখতে মজাদার হবে বলে মন্তব্য করে একটি ছেলে।
প্রশ্ন) ‘তাহলে মা আমাকে ঠ্যাঙ্গবে –কেনঠ্যাঙ্গাবে বলে মনে হয়েছে বক্তার?
উত্তর : অনেক জেদ করে বক্তা অমৃত নতুন জামা আদায় করেছিল। ওর মা এই জামাটি ময়লা করতে বা ছিড়ে নিয়ে আসতে নিষেধ করেন, কুস্তি লড়ে সে জামা নষ্ট করলে তিনি ঠ্যাঙ্গাবেন।
প্রশ্ন) ‘ওর মা সাবধান করে দিয়েছিলেন,’—কোন্ ব্যাপারে সাবধান করেছিলেন?
উত্ত: অমৃত অনেক জেদ করে ইসাবের নতুন জামাটির মতাে একটি জামা আদায় করেছিল। তাই ওর মা জামাটিকে ময়লা করা বা ছিড়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে সাবধান করেছিলেন।
প্রশ্নঃ অমৃত তার বাব-মাকে জ্বালিয়েছিল কেন?
উত্তর : অমৃত ও ইসাবের সবই প্রায় একরকম, ইসাবের বাবা ওকে নতুন জামা কিনে দিলে অমৃতও ওরকম একটা জামার জন্য বাবা -মাকে জ্বালিয়েছিল।
প্রশ্নঃ। স্কুলে যাব না।’-বক্তা স্কুলে যাবে না কেন?
উত্তর : ‘অদল বদল’ গল্পের প্রধান চরিত্র অমৃত ফতােয়া জারি করেছিল যে, ঠিক ইসাবের মতাে জামাটি না পেলে ও স্কুলে যাবেন।
প্রশ্ন ) মা ওকে অনেক বুঝিয়েছিল,’—কীভাবে বুঝিয়েছিল?
: উত্তর : অমৃতের নতুন জামার বায়না ছাড়াতে ওর মা বুকিয়ে বলেন যে, খেতে কাজ করতে হয় বলে ইসাবের জামা ছিড়ে গেছে কিন্তু অমৃতের জামাটা নতুনই আছে।
প্রশ্ন । “ ঠিক আছে, আমাকে বেঁধে রাখাে! মারাে!’ বক্তা এ কথা বলেছিল কেন?
উত্তর : অমৃতের নতুন জামার বায়না ছাড়াতে ওর মা বলেন যে, ইসাবকে নতুন জামা দেওয়ার আগে ওর বাবা ওকে খুব মেরেছিলে, এ কথা শুনে জামা পাওয়ার শর্তে বক্তা অমৃত প্রশ্নোবৃত কং বলেছিল।
প্রশ্ন ।। ‘তাের বাবাকে গিয়ে বলগে।’-বাবাকে ক বলতে বলা হয়েছে?
উত্তর : বন্ধুইসাবের নতুন জামাটির মতাে একটি জামা চেয়তা জেদ ধরলে ওর মা জামার কথাটি ওর বাবাকে বলতে বলেন
প্রশ্ন । ও স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছিল।’-কে, সে , যাওয়া বন্ধ করেছিল?
উঃ। : অমৃত ইসাবের নতুন জামাটির মতাে একটি জায় । জেদ ধরলে ওর মা তা ওকে কিনে না দিয়ে বাবাকে বলতে হলে এতে কোনাে লাভ হতাে না। তাই সে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছিল