রাধারাণী উপন্যাস প্ৰশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা Teacj Sanjib

 রাধারাণী উপন্যাস প্ৰশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা Teacj Sanjib

 

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রাধারাণী উপন্যাস

 

রাধারাণী 

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

 

 রাধারানী উপন্যাসের বিষয়বস্তু এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে।

 

রাধারাণী উপন্যাস উৎস

 

বাধারাণী’ সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পারিবারিক উপন্যাস রাধারাণী’ শীর্ষক কাহিনি রাধারাণী’ উপন্যাসের প্রথম অধ্যায়ের সম্পূর্ণ অংশ।

রাধারাণী-উপন্যাস-প্ৰশ্ন-উত্তর-নবম-শ্রেণী-বাংলা-Teacj-Sanjib

 

রাধারাণী উপন্যাস সারাংশ

 

নিঃস্ব হয়ে যাওয়া রাধারাণীদের দুরবস্থা : রাধারাণী এগারাে বছরের বালিকা। তার বাবা নেই। মা অসুস্থ। আগে তাদের অবস্থা ভালাে ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পর এক জ্ঞাতি মামলামােকদ্দমা করার ফলে তাদের সর্বস্ব গিয়ে তারা নিঃস্ব। মা খেটেখুটে সংসার চালাচ্ছিল, সে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার সামান্য পথ্যের পয়সাও তাদের নেই।

 

মালা বিক্রির জন্য ব্রথের মেলায় যাওয়া : রাধারাণী বনফুল সংগ্রহ করে তার মালা গেঁথে মাহেশের রথে গিয়েছিল এই আশায় যে, রথের মেলায় মালা বেচে দুটো পয়সা পেলে মায়ের পথ্যের জোগাড় করবে। কিন্তু রথ অর্ধেক টানা হয়েছে। এমন সময় প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় মেলায় আসা সব লােক পালায়। সন্ধ্যা হয়ে রাত্রি বাড়তে থাকলেও বৃষ্টি আর থামে না, মেলাও আর জমে না। অন্ধকারে কাঁদতে কাঁদতে রাধারাণী বাড়ি ফিরতে থাকে। বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও মালাগুলি বুকে আগলে রাখে।

 

হঠাৎ এক ঘটনা : এমন সময় কে একজন হঠাৎ রাধারাণীর ঘাড়ের ওপর এসে পড়ে। রাধারাণী চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। সে লােকটি তখন ‘কে গা তুমি’ বলে পরিচয় জানতে চায়। তার গলার স্বর শুনে রাধারাণী বুঝতে পারে যে পুরুষ লােক। রাধারাণী দুঃখীলােকের মেয়ে বলে পরিচয় দেয়।

 

মালা বিক্রি : পুরুষ লােকটি রাধারাণীকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারে বালিকার বাড়ি শ্রীরামপুরে। রাধারাণীর হাত ধরে লােকটি শ্রীরামপুরের পথে হাঁটতে থাকে। লােকটির বাড়িও :

 

শ্রীরামপুরে। পথে যাওয়ার সময় লােকটি রাধারাণীর বয়স, তার বনফুলের মালা, সব বৃত্তান্ত জেনে নেয় এবং চার পয়সার বিনিময়ে মালাগুলি কিনে নেয়।

 

পয়সা নয় টাকা : বাড়িতে হাজির হয়ে রাধারাণী লােকটিকে ঘরে এসে দাঁড়াতে বলে। রাধারাণী প্রদীপ জ্বেলে পয়সা না টাকা যাচাই করে দেখবে। টাকা হলে লােকটিকে ফেরত দেবে। লােকটি রাধারাণীকে আগে ভিজে কাপড় ছাড়ার পরামর্শ দেয়। রাধারাণী বলে যে, তার আর কাপড় নেই। ভিজে কাপড়ে থাকার অভ্যাস তার আছে।

 

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রাধারাণী উপন্যাস

 

দানের টাকা : আলাে জ্বেলে রাধারাণী দেখে লােকটি টাকা দিয়েছে, পয়সা নয়। রাধারাণী বাইরে এসে দেখে লােকটি চলে গেছে। সে তখন বিষন্ন মনে মাকে সব কথা বলে। মা বলেন যে, সে জেনেই তাদের টাকা দান করেছে।

 

শাড়ি ও টাকার নােট বৃত্তান্ত : কিছুক্ষণের মধ্যে রাধারাণীদের বাড়ির পাশের কাপড় দোকানি একজোড়া নতুন কুদার শান্তিপুরে শাড়ি এনে রাধারাণীর হাতে দেয়। বলে যে, এক বাবু কাপড় কিনে রাধারাণীর হাতে দিয়ে আসার হুকুম করেছেন, সেজন্য তার আসা। পদ্মলােচন লােকটিকে চেনে না ! সে দোকানে ফিরে যায়। রাধারাণী বাজারে গিয়ে টাকা ভাঙিয়ে। মায়ের পথ্যের ব্যবস্থা করে। ঘরে ঝাঁট দেওয়ার সময় একখানা নােট পায়। তাতে রুক্মিণীকুমার রায় নাম লেখা আছে। ইনিই সেই পুরুষ লােক। নােটের দাতা। শ্রীরামপুর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ওই লােকের খোঁজ পাওয়া যায় না। নােটটি না ভাঙিয়ে রাধারাণীরা রেখে দেয়।

 

রাধারাণী গল্পের উত্তর

 

প্রশ্নঃ  সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রাধারাণী’ কাহিনি অবলম্বনে রুক্মিণীকুমার রায় ও বাধাৱানীৱ মায়ের চরিত্র আলােচনা করাে।

 

উত্তর : সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ রাধারাণী’ কাহিনিতে রাধারাণী বাদে আর দুটি চরিত্র উল্লেখযােগ্য স্থান করে নিয়ে অবস্থান করছে। প্রথমটি রুক্মিণীকুমার রায়, দ্বিতীয়টি রাধারাণীর বিধবা মা।

 

প্রস্তাবনা : রুক্কিাণীকুমার রায়  এই অপরিচিত মানুষটির সাহায্য-সহযােগিতা, মমত্ব, দয়া, দানশীলতা ইত্যাদি গুণের পরিচয় ছাড়া আর কোনাে পরিচয় কাহিনির মধ্যে নেই। এমনকি তার নামটিও কাহিনির একেবারে শেষে প্রকাশিত হয়েছে।

 

দয়ালু : অন্ধকারে পথ হাঁটতে গিয়ে অনিচ্ছায় ও ভুলক্রমে বালিকা রাধারাণীর ঘাড়ের ওপর পড়েন। রাধারাণীর কান্না শুনে তাঁর চমক ভাঙে। তিনি জানতে চান, ‘কে গা তুমি কাঁদ? তাঁর কথা ও গলার স্বর শুনে বালিকা রাধারাণী তার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতেও অনুভব করে যে মানুষটি বড়াে দয়ালু’। প্রকৃতপক্ষে তাই। একটি অসহায় বালিকাকে তার বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেওয়া, শুধু তাই নয়, কাদা রাস্তায় বালিকা যাতে পা পিছলে আছাড় না খায় সেজন্য বালিকাকে তাঁর হাত ধরতে বলেছেন। বালিকার বয়স, তার নিবাস, অন্যান্য পরিচয়ও মানুষটি জেনে নিয়েছেন। কিন্তু নিজের পরিচয় আদৌ প্রকাশ করেননি। বালিকার অবিক্রিত মালা চার পয়সার বিনিময়ে কিনে নিলেও দিয়েছেন টাকা। রাধারাণীর মা বলেছেন, “সে দাতা, আমাদের দুঃখ শুনিয়া দান করিয়াছে। সত্যি তিনি দাতা, দানশীলতা তাঁর চারিত্রিক গুণ। দানে তাঁর দরাজ হাত। এই গুণের আরও পরিচয় হলাে রাধারাণীর জন্য শাড়ি কিনে পাঠানাে, নিজের নাম স্বাক্ষরিত নােট ফেলে যাওয়া।

 

তেজস্বিনী ও সংগ্রামী মহিলা :  রাধারাণীর বিধবা মা তেজস্বিনী ও সংগ্রামী মহিলা। জ্ঞাতি লােকটির সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়ে মােকদ্দমা লড়েছেন। হেরে গেছেন, সর্বস্ব গিয়ে নিঃস্ব হয়ে কুটিরবাসী হয়েছেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি। নিজের গহনা বিক্রি করে প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করেছেন। আহার সংগ্রহের জন্য তাঁকে কঠোর শ্রম করতে হচ্ছে। তাতেও তিনি মনের দিক থেকে ভেঙে পড়েননি। ।

 

আলাে জ্বেলে রাধারাণী দেখেছে লোকটি তাকে পয়সা না দিয়ে টাকা দিয়েছে। সে তখন টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বাইরে গিয়ে দেখে লােকটি চলে গেছেন। রাধারাণী বিষন্ন বদনে বলেছে, ‘মা এখন কী হবে ? মা তখন মেয়েকে সৎ পরামর্শই দিয়েছেন, সে দাতা, আমাদের দুঃখ শুনিয়া দান করিয়াছে—আমরাও ভিখারি হইয়াছি, দান গ্রহণ করিয়া খরচ করি।

 

মহৎ গুণ : রাধারাণীর মা ঘরে কুড়িয়ে পাওয়া নােটখানিতে দেখলেন রাধারাণীর নাম লেখা আছে, তাকেই দিয়ে গেছেন। রাধারাণী পড়ে দেখল সত্যি লেখা আছে। রাধারাণীর মা বললেন যে, যিনি দিয়েছেন তাঁরও নাম লেখা আছে। তাঁর খোঁজ করতে গিয়ে না পেয়ে তারা নােটখানি না ভাঙিয়ে তুলে রাখল। আসলে তারা গরিব হলেও নির্লোভ। এই মহৎ গুণের অধিকারিণী মা ও মেয়ে উভয়েই।

 

প্রশ্ন ) ‘তাহাৱা দরিদ্র, কিন্তু লােভী নহে। উৎস ও প্রসঙ্গ নির্দেশ কৱাে। উদ্ধৃতিৱ তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও?

 

উত্তর : উৎস ও প্রসঙ্গ : আলােচ্য উদ্ধৃতিটি সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচিত ‘রাধারাণী’ কাহিনি থেকে গৃহীত। মাকে পথ্য দেওয়ার জন্য স্থানটা পরিষ্কার করার উদ্দেশ্যে রাধারাণী ঝাট দিতে গিয়ে একখানি কাগজ পায়। তার মা দেখেন যে সেটি কাগজ নয় একখানা নােট। নােটের ওপর রাধারাণীর নাম লেখা । দাতা রাধারাণীকে নােটখানা দিয়েছেন। নােটের ওপর দাতারও নাম লেখা। দাতার খোঁজ না পেয়ে তারা নােটটি না ভাঙিয়ে তুলে রাখে। এই প্রসঙ্গে লেখকের উধৃত মন্তব্য।

 

তাৎপর্য : রাধারাণীরা এখন প্রকৃতই গরিব। তাদের এক জ্ঞাতি হাইকোর্টের ডিক্রির জোরে রাধারাণীদের সর্বস্ব দখল করেছে। সব হারিয়ে তার বিধবা মা তাকে নিয়ে কুটিরবাসিনী। তার মায়ের কায়িক পরিশ্রমে আহারের সংস্থানটুকু হয়। মা অসুস্থ হওয়ায় ঘরে খাবারের কিছুমাত্র নেই। ফলে মা পথ্যটুকুও পাচ্ছে না। ক্রমশ নিঃস্ব দীন-দুঃখী তারা। ঘরে প্রদীপ জ্বালার তেলটুকু নেই। দেশলাই নেই। চকমকি ঠুকে আলাে জ্বালতে হয়। রাধারাণীর পরবার একটিমাত্র শাড়ি আছে। সেটি ভিজিয়ে ফেললে সেই ভিজে কাপড় শরীরেই শুকায়। এমন গরিব হয়েও টাকার নােট পেয়ে তা ভাঙিয়ে পেটায় নমঃ করে না। টাকার প্রতি তাদের লােভ নেই। নােটের স্বাক্ষরকারীর খোঁজ না পেয়ে তা ভাঙানাে অনুচিত বলে তাদের মনে হয়েছে। গরিব হলেও নােট ভাঙিয়ে লালসা চরিতার্থের মানুষ তারা নয়। তারা এই মহৎ গুণের অধিকারী।

 

প্রশ্ন ) রাধারাণীৱা কীভাবে নিঃস্ব কুটিৱবাসী হলাে লেখাে। রাধারাণী কী উদ্দেশ্যে ব্রথের মেলায় গিয়েছিল এবং কেনই বা ব্যর্থ হয়ে ঘৱমুখাে হলাে আলােচনা করো। 

 

উঃ

কুটিৱবাসী হওয়ার ঘটনা: রাধারাণীরা আগে বেশ ধনী ছিল। তার বাবা মারা যাওয়ার পর তাদের এক জ্ঞাতি রাধারাণীদের সর্বস্ব নিয়ে হাইকোর্টে মােকদ্দমা করে ডিক্রি পায়। ডিক্রি জারি করে জ্ঞাতি লােকটি সর্বস্ব দখল করে। রাধারাণীর বিধবা মা নিঃস্ব অবস্থায় এগারাে বছরের বালিকা মেয়েকে নিয়ে এক কুটিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। তাঁর গহনাদি যা ছিল তা মামলার খরচ মেটাতে আর প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করতে বিক্রি হয়ে যায়।

 

রথের মেলায় যাওয়ার উদ্দেশ্য : রাধারাণী মাহেশের রথের মেলায় গিয়েছিল নিজের হাতে গাঁথা বনফুলের মালা বিক্রি করতে। কুটিরে মা অসুস্থ। তারা কুটিরবাসী হওয়ার পর থেকে রাধারাণীর মা কঠোর কায়িক পরিশ্রম করে কোনাে রকমে খাবার জোগাড় করছিল। তার মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাড়িতে খাবার বলতে কিছুই নেই। অথচ রাধারাণীর মায়ের পথ্য একান্ত দরকার। অগত্যা রাধারাণী কাঁদতে কাঁদতে বনফুল তুলে। মালা গেঁথে একা রথের মেলায় যায় মালা বিক্রি করতে। দু-একটা পয়সা হাতে এলে তা দিয়ে মায়ের পথ্যের ব্যবস্থা করবে।

 

ব্যর্থ হয়ে ঘরমুখাে : কিন্তু যে উদ্দেশ্যে মালা নিয়ে রাধারাণীর রথের মেলায় আসা তা ব্যর্থ হয় হঠাৎ বর্ষণে । তখন রথ-টানা মাত্র অর্ধেক হয়েছে। আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে মুশলধারে। রথের মেলা যায় ভেঙে। রাধারাণীর আশা বৃষ্টি থামলে ফের মেলায় লােকের ভিড় জমবে। তার মালা বিক্রি হবে। কিন্তু তা হয় না। রাত্রি অবধি বৃষ্টি থামে না। মেলায় লােক ফিরে না আসায় রাধারাণীর মালা বিক্রি হয় না। ব্যর্থ হয়ে সে ঘরমুখাে হয়।

 

রাধারানী গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

 

প্রশ্ন ) ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের ‘রাধারাণী’ কাহিনিতে ব্রুক্মিণীকুমার রায় কী কী ভাবে রাধারাণীদের সাহায্য করেছেন—আলােচনা করাে। 

 

উপস্থাপনা : ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘রাধারাণী’ কাহিনির প্রধান চরিত্র এগারাে বছরের বালিকা রাধারাণী। রাধারাণীর ঘাড়ে-পড়া লােকটির কথা শুনেই এগারাে বছরের বালিকা ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে এটুকু বুঝেছিল যে, লােকটি দয়ালু, ভালাে মানুষ। সত্যি তাই। লােকটি রাধারাণীদের কাছে একেবারে অপরিচিত। কিন্তু তাঁর দানের হাত দরাজ। তিনি দানশীল মানুষ।

 

প্রথম দান : রাধারাণীদের দুস্থ অবস্থা, পয়সার অভাবে রাধারাণীর অসুস্থ মায়ের পথ্যের ব্যবস্থা হয়নি। রাধারাণী বনফুলের মালা গেঁথে রথের মেলায় বেচতে পারেনি। তা ফিরিয়ে নিয়ে শূন্য হাতে ঘরে যাচ্ছে। এসব বৃত্তান্ত জানার পরে দয়ালু ও দানশীল মানুষটি কী হাত গুটিয়ে চলে যেতে পারেন ? ঠাকুরকে  ফুলের মালা পরানাের ছুতােয় লােকটি চার পয়সার বিনিময়ে মালা কিনে নেন ও রাধারাণীর হাতে টাকা তুলে দেন। তিনি জানেন 1 রাধারাণীর মতাে সৎ মেয়ে প্রদীপের আলােয় পয়সার পরিবর্তে টাকা দেখলে নিশ্চিত ফেরত দেবে। তাই তার আলাে জ্বালার আগেই তিনি চলে যান।

 

দ্বিতীয় দান যাওয়ার আগে তিনি শুনে ফেলেছেন রাধারাণীর একটিমাত্র শাড়ি সম্বল। এমনি দীন অবস্থা রাধারাণীদের। তিনি রাধারাণীদের বাড়ির পাশে পদ্মলােচন সাহার কাপড়ের দোকানে নগদ টাকায় দু-খানা শাড়ি কিনে পদ্মলোচনকে দিয়েই রাধারাণীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

 

তৃতীয় দান : তাতেও তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেন না। রাধারাণ কুটিরে টাকার একখানা নােট ফেলে যান। যাতে তাঁর নাম স্বাক্ষরিত ছিল রুক্মিণীকুমার রায়। এরকম তাঁর দানের মন। তিনি এভা দানের দৃষ্টান্ত রেখেছেন।

 

প্রশ্ন ) সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা রাধারাণী’ কাহিনি অবলম্বনে রাধারাণী চরিত্র আলােচনা করাে।

 

বুদ্ধিমতী, সাহসিনী ও মায়ের প্রতি মমত্বপরায়ণা : সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘রাধারাণী’ কাহিনির প্রধান চরিত্র রাধারাণী। রাধারাণী এগারাে বছ বয়সের বালিকা। তার বিধবা মায়ের একমাত্র কন্যাসন্তান। সে নিজমুখে রুক্মিণীকুমারকে পরিচয় দিয়েছে ‘আমি দুঃখীলােকের মেয়ে বলে। প্রকৃতপক্ষে সে ধনী ও সুখী পরিবারের মেয়ে ছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে তারা সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব কুটিরবাসী হয়েছে। সে জানে তার মাকে কঠোর পরিশ্রম করে আহার সংগ্রহ করতে হয়। সেই মা তার অসুস্থ, তার সামান্য পথ্যের সংস্থানও তাদের নেই। মাকে তাে পথ্য দিতেই হবে। বুদ্ধিমতী বালিকা রাধারাণী বনফুল তুলে মালা গেঁথে একা রথের মেলায় গেছে মালা বিক্রি করে সেই পয়সায় মায়ের পথ্যের ব্যবস্থা করতে। বালিকার এই উপস্থিত বুদ্ধি, সাহস ও মায়ের প্রতি মমত্বের তুলনা হয় না।

 

সত্যবাদিতা, সাৱল্য ও সততা : রাধারাণী অপরিচিত মানুষটির কাছে কোনাে কথা গােপন করেনি। তার সত্যবাদিতা ও সারল্য প্রশংসনীয়। সে সৎ মনােভাবের বালিকা। ফুলের মালার ন্যায্য মূল্যই সে চায়। সেজন্য পয়সা না টাকা তা নিয়ে তার সংশয় মেটানাের জন্য লােকটিকে নানাভাবে প্রশ্ন করেছে। এমনকি বলেছে, ‘তুমি ঘরে আসিয়া দাঁড়াও, আমরা আলাে জ্বালিয়া দেখি, টাকা কী পয়সা। আলাে জ্বেলে টাকা দেখার পরে টাকা ফেরত দিতে গিয়ে দেখে লােকটি চলে গেছে। টাকা ফেরত দিতে না পারায় তার মন বিষন্ন । 

 

 লড়াকু, মিথ্যাচার ও উবৃত্তির মনােজ্ঞমুক্ত স্বভাব : ওই বয়সে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের রাধারাণী তৈরি। কোনােরকম মিথ্যাচার ও উবৃত্তির মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের প্রবৃত্তি তার নেই। মালা বিক্রি করে সেই মূল্যে বাবদ দানের টাকা খরচ করেছে, কিন্তু ঘরে পড়ে থাকা নােটে মালিকের নাম লেখা, তা স্বেচ্ছায় ফেলেছে, না পড়ে , তা নিশ্চিত করে না জানা পর্যন্ত সে তা তাে খরচ করতে পারে না। টাকা তুলে রেখেছে। তারা গরিব হলেও লাে নয়। তার মায়ের এসব শিক্ষা ও পরামর্শ রাধারাণীর জীবনে পরম সম্পদ।

 

রাধারাণী গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

 

প্রশ্ন ) রাধারাণীৱ বনফুলের মালা লােকটির কাছে কীভাবে বিক্রি হলাে? 

 

উত্তর : পথ হাঁটতে হাঁটতে রাধারাণীর বনফুলের মালাবৃত্তান্ত লােকটি জেনে ফেলে। বালিকা অসুস্থ মায়ের পথ্য জোগাড়ের উদ্দেশ্যে বনফুলের মালা গাঁথে। তা নিয়ে রথের হাটে গিয়েছিল। বৃষ্টির জন্য তার মালা বিক্রি না হওয়ায় তার কাছে থেকে গেছে। লােকটি তখন বালিকাকে সাহায্য করার জন্য বাড়ির ২ ঠাকুরকে পরাবার অজুহাতে মালা কিনে নেয় চার পয়সার বিনিময়ে। রাধারাণী কিন্তু হাতে পয়সা পেয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে পয়সা না টাকা। ঘরে গিয়ে আলােতে যদি দেখে টাকা তাহলে সে তা লােকটিকে ফেরত দেবে।

 

প্রশ্ন ) রাধারাণীর ঘরে পৌঁছে আলাে জ্বালাবার পর কী ঘটনা ঘটে? 

 

উত্তর:  ঘরে পৌঁছে রাধারাণীর আলাে জ্বালতে দেরি হয়। প্রদীপ জ্বালাবার তেল না থাকায় চকমকি ঠুকে আলাে জ্বালতে দেরি হয়। আলােতে দেখে লােকটির দেওয়া পয়সা পয়সা নয়, টাকা। রাধারাণী তখন টাকা নিয়ে ফেরত দিতে গিয়ে দেখে লােকটির বাইরে অপেক্ষা করার কথা। কিন্তু সে চলে গেছে। রাধারাণী তখন বিষন্ন বদনে মাকে শুধায়, এখন কী হবে ? মা বলে যে, তাদের দুঃখ শুনে লােকটি দান করেছে। তারা এখন দানের টাকা খরচ করবে।

 

প্রশ্নঃ ওমা সেই গাে। । তিনিই কি কাপড় পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি কে? তিনি কীভাবে কাপড় টি পাঠিয়েছেন?

 

উত্তর : তিনি হলেন সেই মানুষটি, যিনি রাধারাণীকে তার বা পৌঁছিয়ে দিয়েছেন।

 

লােকটি বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে রাধারাণীকে বলেছি আলাে জ্বালাবার আগে ভিজে কাপড় বদলে নিতে। রাধারণ বলেছিল, তার একখানা মাত্র কাপড়। রাধারাণী আলাে জ্বালয় জন্য ব্যস্ত। লােকটি তখন চলে যান রাধারাণীদের বাড়ির অনতিয়ে পদ্মলােচন সাহার দোকানে। নগদ টাকায় দু-খানা কুঞ্জন শান্তিপুরে শাড়ি কিনে পদ্মলােচনের হাতেই রাধারাণীকে দেওয়ার জন্য পাঠিয়ে দেন।

 

প্রশ্ন ) রাধারাণী প্রাপ্ত টাকা ভাঙিয়ে কীভাবে মায়ের পথ্যেৱ আয়ােজন কৱল? কীভাবে একখানা টাকার নােটই বা পেল?

 

উত্তর: রাধারাণী লােকটির কাছ থেকে পাওয়া টাকা নিয়ে বাজারে গেল। উদ্দেশ্য মায়ের পথ্যের আয়ােজন করা। টাকা ভাঙিয়ে বার করল। তেল কিনে এনে প্রদীপ জ্বালাল। মায়ের জন্য যৎসাম | রান্না করল।

 

ঘর পরিষ্কার করে মাকে পথ্য খেতে দেবে বলে ঘর ঝাঁটতে লাগল। তখন একখানা কাগজ কুড়িয়ে পেল। কাগজখানা এক টাকার নােট। তাতে যে নাম লেখা আছে তা রুক্মিণীকুমার রায়।

 

প্রয় ) ‘আৱ আহাৱেৱ সংস্থান বহিল না। –আহাৱেৱ সংস্থান না থাকার কারণ কী?

 

উত্তর : রাধারাণীর বাবা মারা যাওয়ার পরে তাদের এক জ্ঞাতি রাধারাণীর বিধবা মায়ের সঙ্গে সর্বস্ব নিয়ে মােকদ্দমা করে। সে-মামলায় রাধারাণীর মা হাইকোর্টে হেরে যায়। জ্ঞাতি লােকটি মামলায় ডিক্রি পেয়ে সেই ডিক্রি জারি করে রাধারাণীদের বাসস্থানসহ সর্বস্ব কেড়ে নেয়। প্রায় দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি লােকটি হস্তগত করে। তা ছাড়া খরচা ও ওয়াশিলাত দিতে রাধারাণীর মায়ের অবশিষ্ট যা ছিল তাও যায়। প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করতে অলংকারাদি খােয়াতে হয়। তারপর তাদের আর আহারের সংস্থান থাকে না।

 

প্রশ্ন ) ‘পথ্যের প্রয়ােজন হইল, কিন্তু পথ্য কোথা? কী দিবে?’–এ ভাবনা কার? কী জন্য? 

 

উত্তর : উদ্ধৃতিটির ভাবনা রাধারাণীর।

 

তার ভাবনা তার অসুস্থ বিধবা মাকে নিয়ে। সব কিছু হারিয়ে মেয়ে রাধারাণীকে নিয়ে বিধবা কুটিরে বাস করতে থাকে। কঠিন কায়িক পরিশ্রম করে কোনাে রকমে দিন কাটায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রথের আগে বিধবা গুরুতর অসুখে পড়ে। কাজেই খাবার জোগাড় হয় না। রুণ মা উপােসে কাটায়। মেয়েও উপােসে কাটায়। রথের দিন রাধারাণীর মা একটু সুস্থ বােধ করে। এখন তার দরকার পথ্য। সে পথ্য কোথায় ? পথ্যের জোগাড় কী হবে রাধারাণী সেই চিন্তায় অস্থির। এই হলাে তার ভাবনার কারণ।

 

প্রশ্ন ) মায়ের পথ্য জোগাড়ের জন্য রাধারাণী কি কৱল?

 

উত্তর : মায়ের পথ্য জোগাড় করার জন্য রাধারাণী কাঁদতে কাঁদতে কতকগুলি বনফুল তুলে আনে। ফুলের মালা গাঁথে। ভাবে ওই কুলের মালা মাহেশের রথের হাটে বিক্রি করে দু-একটা পয়সা পেলে তা দিয়ে মায়ের পথ্যের ব্যবস্থা করবে। সেই মতাে রথের টে যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য, রথের টান অর্ধেক হতে না হতেই তুমুল বৃষ্টি না জন পালায়। রাধারাণী ভাবে বৃষ্টি থামলে

লােক আসবে। বৃষ্টি থামে না। সন্ধ্যা পার হয়ে রাত্রি নামে। রাধারাণীর মালা বিক্রি হয় না।

 

প্রশ্ন ) রাধারাণী অন্ধকাৱে কাদা রাস্তায় কীভাবে বাড়ি ফিরছিল? তার ওপর হঠাৎ কী ঘটল? 

 

উত্তর : রাধারাণীর মালা বিক্রি হলাে না। অগত্যা বাড়ির পথে রওনা হলাে। অন্ধকার। কাদা রাস্তা। কিছু দেখা যাচ্ছে না। কাঁদতে কাঁদতে একা হাঁটছে। আছাড় খাচ্ছে। বৃষ্টির বিরাম নেই। মাথা ভিজে দু-গণ্ড বেয়ে জলের ধারা নামছে। তা সত্ত্বেও রাধারাণী কিন্তু বনফুলের মালাগুলি বুকে করে চলেছে।

 

এমন সময় অন্ধকারে হঠাৎ কে এসে তার ঘাড়ের ওপর পড়ল। আঘাত পেয়ে রাধারাণী গলা ছেড়ে কাঁদতে লাগল।

 

রাধারানী উপন্যাস সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

 

প্রশ্ন ) রাধারাণীৱ ঘাড়ে-পড়া লােকটি কে? সে কীভাবে রাধারাণীকে নিয়ে পথ চলতে লাগল? 

 

উত্তর : রাধারাণীর ঘাড়ে-পড়া লােকটি রাধারাণীর অপরিচিত একটি পুরুষ মানুষ।

 

লােকটি রাধারাণীর কাছে জেনে নেয় তার বাড়ি কোথায়। শ্রীরামপুর শুনে সে রাধারাণীকে সঙ্গে নিয়ে চলতে থাকে। কাদা রাস্তা পিছল। অন্ধকারে রাধারাণীর কষ্ট হচ্ছিল। তা বুঝতে পেরে রাধারাণীকে তার হাত ধরতে বলে। নইলে রাধারাণী পড়ে যেতে পারে। রাধারাণীর গলা শুনে লােকটি বুঝেছিল সে বড়াে বালিকা। হাতের স্পর্শে তার সে-অনুমান সত্য বলে মনে হলাে।

 

প্রশ্নঃ ‘আমি বলি তােমাদেৱ কুটুম্ব।বক্তার এরকম মনে হওয়ার কারণ কী? 

 

উত্তর : কাপড়ের দোকানদার পদ্মলােচনকে নগদ দাম দিয়ে একজোড়া কাপড় কিনে রাধারাণীদের বাড়িতে পাঠিয়েছে যে, সে অবশ্যই রাধারাণীদের খুব ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, এ ধারণা পদ্মলােচনের হওয়া স্বাভাবিক। সেই ধারণাবশত সে কাপড়জোড়া নিয়ে রাধারাণীদের বাড়িতে হাজির হয়। কিন্তু তার ধারণা হোঁচট খায় প্রথমত রাধারাণীর বিস্ময় প্রকাশে, দ্বিতীয়ত রাধারাণীর মায়ের কথায় ও রাধারাণী লােকটাকে চেনে না এই উত্তরে।

 

রাধারাণী গল্পের ছোট প্রশ্ন উত্তর

 

প্রশ্ন ) রাধারাণী কুটিৱে হাজির হয়ে লােকটিকে কী বলল?

 

উত্তর : লােকটিকে বলল যে, সে যেন ঘরে এসে দাঁড়ায়, রাধারাণী আলাে জ্বেলে দেখবে টাকা না পয়সা।

 

প্রশ্ন ) আলাে জ্বেলে রাধারাণী কী দেখেছিল?

 

উত্তর : আলাে জ্বেলে রাধারাণী দেখেছিল, অজানা লােকটি বনফুলের মালার যে দাম দিয়ে গেছেন তা অনেক বেশি। লােকটি তাকে পয়সা নয় টাকা দিয়ে গেছেন।

 

প্রশ্ন ) অজানা পথিকেৱ কণ্ঠস্বর শুনে রাধারাণীৱ কী মনে হয়েছিল?

 

উত্তর : অজানা পথিকের কণ্ঠস্বর শুনে রাধারাণীর মনে হয়েছিল তিনি দয়ালু ব্যক্তি।

 

প্রশ্ন ) রাধাৱাণীৱ সঙ্গী তাকে কী বলল?

 

উত্তর : সঙ্গী বলল যে, সে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, রাধারাণী যেন আগে ভিজে কাপড় ছাড়ে, তারপর প্রদীপ জ্বালবে।

 

প্রশ্ন- রাধারাণী কীভাবে আলাে জ্বালল?

 

উত্তর : ঘরে তেল নেই, কাজেই চালের খড় পেড়ে চকমকি ঠুকে আগুন জ্বালল রাধারাণী।

 

প্রশ্ন ) অলোতে পয়সা নয়, টাকা দেখে রাধারাণী, টাকা ফেৱত দিতে বাইরে গিয়ে কী দেখল?

 

উত্তর : আলােতে পয়সা নয়, টাকা দেখে রাধারাণী তা ফেরত দেওয়ার জন্য বাইরে গিয়ে দেখল লােকটি চলে গেছে।

 

প্রশ্ন ) রাধারাণী লােকটিকে দেখতে না পেয়ে মাকে কী হবে জিজ্ঞেস করতে মা কী বললে?

 

উত্তর: মা বললে যে, তাদের দুঃখের কথা শুনে দাতা দান করেছে, তারা ভিখিরিতুল্য, কাজেই টাকা খরচ করবে।

 

প্রশ্ন) ব্রাধৱাণী গল্পে কাৱ সঙ্গে কাৱ মােকদ্দমাৱ কথা বলা হয়েছে?

 

উত্তর : রাধারাণীর মায়ের এক জ্ঞাতির সঙ্গে তাদের মােকদ্দমার : কথা বলা হয়েছে।

 

প্রশ্নঃ রাধারানীর কথা শুনে পদ্মলোচন সাহার কি হলো?

 

ব্রধাৱাণীৱ কথা শুনে পদ্মলােচন সাহাৱ। হলাে? উত্তর: রাধারাণীর কথা শুনে পদ্মলােচন সাহা বিস্মিত। হলাে।

 

প্রশ্নঃ রাধারাণী কীসেৱ কাপড় জিজ্ঞেস করতে পদ্মলােচন সাহা কী বলল?

 

উত্তর : পদ্মলােচন সাহা বলল যে, এক বাবু নগদ দাম দিয়ে বলে গেল কাপড় রাধারাণীর কাছে পৌঁছিয়ে দিতে।

 

প্রশ্ন ) নােটে নাম লেখার কারণ কী?

 

উত্তর; কারণ হলাে, পাছে কেউ চোর বলে সন্দেহ প্রকাশ করে তাই নাম লিখেছে লােকটি।

 

প্রশ্ন ) বাধৱাণী কী কারণে রথের মেলায় গিয়েছিল?

 

উত্তর : রাধারাণী অসুস্থ মায়ের পথ্য জোগাড়ের জন্য প্রয়ােজনীয় অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রথের মেলায় বনফুলের মালা বেচতে গিয়েছিল।

 

প্রশ্ন ) ‘বাধাৱাণীৱ কথা শুনিয়া কিছু বিস্মিত হইল ;’—কেন বিস্মিত হলাে?

 

উত্তর : কাপড় পেয়ে রাধারাণী সবিস্ময়ে বলে যে, কীসের কাপড় ! এই কথা শুনে পদ্মলােচন বিস্মিত হয়, কারণ সে বুঝেছিল কাপড় কিনে দেওয়া লােকটি রাধারাণীদের কেউই নয়।

 

প্রশ্ন ) ‘আমি ভিজা কাপড়ে সর্বদা থাকি, ভিজে কাপড়ে বক্তা সর্বদা থাকে কেন?

 

উত্তর : বক্তা রাধারাণীরা এতই গরিব যে ভিজে কাপড় বদলানাের জন্য দ্বিতীয় কাপড় নেই।

 

প্রশ্ন ) ‘আগুন জ্বালিতে কাজে কাজেই একটু বিলম্ব হইল।—বিলম্ব হওয়ার কারণ কী?

 

উত্তর : ঘরের চাল থেকে টানা খড়ের আঁটিতে চকমকি ঠুকে আগুন জ্বালাতে সময় লাগায় বিলম্ব হলাে।

 

প্রশ্নঃ কখন ঝড়বৃষ্টি আরম্ভ হলাে?

 

প্রশ্ন ) পুরুষ মানুষটির ‘কে গা তুমি কঁাদ? প্রশ্নের উত্তরে রাধারাণী কী বলল?

 

উত্তর : তার নির্দিষ্ট যাত্রাপথের অর্ধেকও যখন রথ অতিক্রম করেনি তখন ঝড়বৃষ্টি আরম্ভ হলাে।

 

প্রশ্ন ) ‘রাধারাণী মনে করিল।’-রাধারাণী কী মনে করল?

 

উঃ : ঝড়বৃষ্টি থামলে লােকের ভিড় বাড়লেই মালার চাহিদা হবে ও তার মালা বিক্রি হবে।

 

প্রশ্নঃ রাধারাণীদেৱ আহাৱ চলে না কেন?

 

উত্তর : কারণ রাধারাণীর মা ঘােরতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় কায়িক পরিশ্রম করে আহার জোগাড়ের পথ বন্ধ হয়েছে।

 

প্রশ্ন ) রাধারাণী মায়ের পথ্য জোগাড়ের জন্য কী কৱল ?

 

উত্তর: রাধারাণী মায়ের পথ্য জোগাড়ের জন্য বনফুলের মালা গেঁথে রথের হাটে বিক্রি করতে গেল।

 

প্রশ্ন ) রথেৱ হাটে বাধাৱাণীৱ মালা বিক্রিতে বাধা হলাে কীভাবে?

 

উত্তর : মালা বিক্রিতে বাধা হলাে এইভাবে যে, রথের টান অর্ধেক হয়েছে, এমন সময় মুশলধারে বৃষ্টি নামায় লােক পালিয়ে গেল।

 

প্রশ্নঃ রাধারাণী ত্রিতে ৱথেৱ হাট থেকে বাড়ির পথে কীভাবে চলতে লাগল? 

 

উত্তর : সন্ধ্যার পরে রাত্রি হয়েছে, রাধারাণী অন্ধকারে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ও কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির পথে চলতে লাগল। 

 

প্রশ্ন ) এমন সময় অন্ধকাৱে ব্রধাৱাণীৱ ওপৱ কী ঘটল?

 

উত্তর : অন্ধকারে যখন ঘর ফিরছিল সেই সময় রাধারাণীর ঘাড়ের ওপর হঠাৎ কে এসে পড়ল।

 

প্রঃ) রাধাৱাণী কান্না থামিয়ে কী বলল?

 

উত্তর : রাধারাণী কান্না থামিয়ে বলল সে গরিবের মেয়ে, মা ছাড়া তার আর কেউ নেই।

 

 রাধারাণী নবম শ্রেণী ছোট প্রশ্ন উত্তর 

 

প্রশ্ন ) রাধারাণী ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে কী বুঝতে পারল?

 

উঃ রাধারাণী ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে বুঝতে পারল যে, ঘাড়ে পড়া মানুবটি খুব দয়ালু ভালাে লোক।

 

প্রশ্ন ) পুরুষ মানুষটির ‘কে গা তুমি কঁাদ? প্রশ্নের উত্তরে রাধারাণী কী বলল?

 

উত্তরঃ পুরুষ মানুষটির প্রশ্নের উত্তরে রাধারাণী বলল যে, সে দুঃখীলােকের মেয়ে এবং তার একমাত্র মা-ই আছে।

 

প্রশ্ন ) রাধারাণীৱ উচ্চস্বরে কান্নার কারণ কী?

 

উত্তর; অন্ধকার রাস্তার মধ্যে কোনাে একজন আচমকা তার ঘাড়ে এসে পড়েছে। এই আতঙ্কে ও ভয়ে রাধারাণীর উচ্চস্বরে কান্না।

 

প্রশ্ন ) রাধারাণী সকাতরে তার মাকে কী বলল?

 

: উত্তর; রাধারাণী সকাতরে তার মাকে বলল, ‘মা ! এখন কি হবে ?

 

প্রশ্ন ) বাধাৱাণীৱ বাড়ি শ্রীরামপুৱে শুনে লােকটি কী বলল?

 

উত্তর : লােকটি বলল যে, সেও শ্রীরামপুরে যাবে, মেয়েটির বাড়ি কোন পাড়ায় জানালে তাকে তার বাড়ি পৌঁছিয়ে দেবে।

 

প্রশ্নঃ লােকটি কীভাবে বুঝল যে রাধারাণী বড়াে বালিকা? 

 

: উত্তর : লােকটি রাধারাণীর কণ্ঠস্বর শুনে ও তার হাত স্পর্শ করে বুঝতে পারল যে, রাধারাণী বড়াে বালিকা।

 

প্রশ্ন ) লােকটি মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে রাধারাণীৱ কাছ থেকে কী কথা জেনেছিল?

 

উত্তর : লােকটি জেনে নিল যে, রাধারাণী মায়ের পথ্যের জন্য বনফুলের মালা গেঁথে রথের হাটে বেচতে গিয়েছিল, কিন্তু মালা বেচা হয়নি।

 

প্রশ্ন ) লােকটি কী যুক্তি দেখিয়ে মালা কিনতে চাইল?

 

উত্তর : লােকটি যুক্তি দেখাল যে, সে বাড়ির ঠাকুরের জন্য মালার খোঁজ করছিল, বৃষ্টির জন্য কেনা হয়নি।

 

প্রশ্ন ) লােকটিকে মালা দিতে গিয়ে রাধারাণী দ্বিধায় পড়ল কেন?

 

উত্তর : লােকটি অন্ধকারে যেভাবে হাত ধরে রাধারাণীকে নিয়ে চলেছে, তাতে রাধারাণী মালার দাম নিতে পারবে তাে। সেইজন্য রাধারাণী দ্বিধায় পড়ল।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *