কর্ভাস গল্পের প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা Teacj Sanjib
কর্ভাস গল্পের প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা Teacj Sanjib
কর্ভাস
সত্যজিৎ রায়
এখানে কর্ভাস গল্পে বিষয়বস্তু এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে।
কর্ভাস গল্পের উৎস
সত্যজিৎ রায় রচিত প্রােফেসর শঙ্কু কাহিনিগুচ্ছের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাহিনি কর্ভাস। গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলায় ১৩৭৯ (ইং ১৯৭২) বঙ্গাব্দে। কর্ভাস’ কাহিনিটি ‘শঙ্কু সমগ্র গ্রন্থ থেকে সংকলিত।
কর্ভাস গল্পের সারাংশ
‘কর্ভাস’ প্রােফেসর শঙ্কুর ডায়রিভুক্ত কাহিনি। ১৫ আগস্ট থেকে শুরু করে শেষ হয়েছে ১৬ নভেম্বর। ধারাবাহিক প্রতিদিন নয়, মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্ন দিন নিয়ে মােট দশ দিনের ডায়রির পাতায় লেখা হয়েছে সমগ্র কাহিনিটি।
১৫ আগস্ট :
ছেলেবেলা থেকে পাখি সম্পর্কে প্রােফেসর শঙ্কুর প্রচণ্ড কৌতূহল ছিল বাড়ির পােষা ময়নাকে একশাের বেশি বাংলা শব্দ শিখিয়েছিলেন তাঁর ধারণা ছিল পাখি কথা বলে কথার অর্থ না বুঝে। কিন্তু তাঁর ধারণা পালটে যায় একটা ঘটনা থেকে। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে শঙ্কু মায়ের দেওয়া মােহনভােগ খাচ্ছিলেন, ময়না হঠাৎ বলে ওঠে ভূমিকম্প। সেদিন ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত না হলেও পরের দিন খবরের কাগজে বেরােয় যে, সিসমােগ্রাফ যন্ত্রে মৃদু কম্পন ধরা পড়েছে। এই ঘটনা কিশাের শঙ্কুকে পাখির বুদ্ধির দৌড় সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসু করে। কিন্তু বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য পক্ষীবিষয়ক ভবন ও চর্চা থেকে তিনি দূরে থাকেন। পরবর্তীকালে পােষা বেড়াল নিউটনের পাখি সম্পর্কে ঔদাসীন্য তাঁর ল্যাবরেটরিতে পাখির আনাগােনার সুযোগ করে দেয়। আসা-যাওয়া করতে থাকে কাক, চড়ুই, শালিক প্রভৃতি পাখি। প্রােফেসরের দেওয়া খাবারের লোভে তারা আরও বেশি করে আনাগােনা করতে থাকে।
পাখির সহজাত ক্ষমতা অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় বেশি বলে তিনি মনে করেন। বাবুই পাখির বাসা বানানো, ম্যালি-ফাউলের মাটিতে ঘর তৈরি করা, গ্রিব পাখির শত্রুর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার চেষ্টা, এমন সব ঘটনা তাঁর পক্ষী সম্পর্কে অনুসন্ধানের সুপ্ত বাসনাকে জাগিয়ে দেয়। এই ভাবনা থেকে তাঁর মনে নানা প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি দিতে থাকে। পাখির সহজাত বুদ্ধির বাইরে তাকে কতদূর পর্যন্ত নতুন জিনিস শেখানাে যায় ? মানুষের জ্ঞানবুদ্ধি তার মধ্যে সঞ্চার করা যায় কিনা, এমন যন্ত্র বানানাে সম্ভব কিনা ? এমন নানা প্রশ্ন।
কর্ভাস গল্প
২০ সেপ্টেম্বর :
ওই ধরনের নানা প্রশ্নের ভাবনা থেকে প্রােফেসর শঙ্কু তৈরি করে ফেলেন এক আশ্চর্য পাখিপড়ানাে যন্ত্র। যন্ত্রটির দুটি ভাগ। একটি ভাগ পাখি থাকার খাঁচা। খাঁচার সঙ্গে বৈদ্যুতিক যােগ থাকে দ্বিতীয় ভাগের। ওই ভাগ থেকে পাখির মস্তিষ্কে জ্ঞান ও বুদ্ধি চালিত হওয়ার ব্যবস্থা থাকে।
কর্ভাস নামকৱণ : প্রােফেসর শঙ্কুর ল্যাবরেটরিতে যত পাখি আসে তাদের মধ্যে একটি কাককে তাঁর বিশেষ পছন্দ হয়ে যায়। কাকটির ডান চোখের নীচে একটি সাদা বিন্দু আছে। এই চিহ্নের জন্য তাকে অন্য কাকেদের থেকে সহজে চিনে ফেলাও যায়। কাকটি প্রােফেসর শঙ্কুর ছাত্র হয়ে ওঠে। তিনি কাকটির নাম রাখেন কর্ভাস। |
২৭ সেপ্টেম্বর :
পাখিপড়ানাে যন্ত্রটির ১ নাম অরনিথন। কর্ভাস স্বেচ্ছায় লাফাতে লাফাতে এসে খাঁচায় ঢুকে পড়ে। কাকটির শেখার ইচ্ছা প্রবল। প্রথমে প্রােফেসর তাকে বাংলা শেখানাে শুরু করেন। শেখানাে বিষয় আগে থেকে রেকর্ড করা। কর্ভাস অল্প দিনের মধ্যেই শিখে ফেলে বাংলা, ইংরেজি ভাষাসহ ভূগােল, ইতিহাস, অঙ্ক, জ্যামিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞানের প্রাথমিক পাঠ ইত্যাদি। :
৪ অক্টোবর :
কর্ভাসকে পড়ানাে চলে সকাল আটটা থেকে ন’টা পর্যন্ত। দিনের বাকি সময় প্রােফেসর শঙ্কুর বাড়ির আশপাশে কর্ভাস ঘুরে বেড়ায়। সন্ধ্যায় নিজের বাসায় চলে যায়। নিউটনের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। তার প্রমাণ হলাে একদিন মাছের একটি টুকরাে এনে কর্ভাস নিউটনের মুখের সামনে ফেলে। .
প্রােফেসর শঙ্কুর চিঠির উত্তর দিয়েছেন পক্ষীবিজ্ঞানী গ্রেনফেল। পক্ষীবিজ্ঞানীদের সম্মেলনে প্রােফেসর শঙ্কুকে নিমন্ত্রণ পাঠানাের ব্যবস্থা হচ্ছে। তিনি যেন কর্ভাসকে নিয়ে চিলির রাজধানী সানতিয়াগােতে গিয়ে যথাসময়ে হাজির হন।
২০ অক্টোবর :
প্রশিক্ষণে কর্ভাসের অভাবনীয় প্রােগ্রেস হয়েছে। সে এখন ইংরেজিতে নিজের নাম, সহজ যােগ-বিয়ােগ, ইংল্যান্ডের রাজধানীর নাম, প্রােফেসরের পদবি, দিন, মাস, তারিখ লিখতে পারে। খাওয়ার ব্যাপারে আলাদা আলাদা পাত্রে রুটির টুকরাে ও পেয়ারার জেলি দিলে প্রতিটা রুটির টুকরাে পেয়ারার জেলিতে ডুবিয়ে খায়।
২২ অক্টোবর :
কর্ভাস এখন সাধারণ কাকের থেকে নিজেকে আলাদা রাখতে চায়। একটা মৃত কাকের জন্য আর সব কাক যখন চেল্লাচেল্লি করছে কর্ভাস তখন প্রােফেসরের ঘর থেকে বেরােবার কোনাে আগ্রহ দেখায় না। সে তখন কলম মুখে নিয়ে ইংরেজি সংখ্যা লিখতে থাকে।
৭ নভেম্বর :
কৰ্ভাসের মতাে শিক্ষিত পাখি পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। সে এখন বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষিত। তার মধ্যে মানবসুলভ বুদ্ধি নিজের থেকে জেগে উঠেছে। যেটার সঙ্গে পাখির কোনাে সম্পর্ক নেই। সানতিয়াগাে যাওয়ার জন্য সুটকেস গুছিয়ে ঢাকনা দিয়ে প্রােফেসর শঙ্কু দেখেন কর্ভাস সুটকেসের চাবি ঠোটে নিয়ে চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। গ্রেনফেলের আর-একটি চিঠিতে প্রােফেসর জানতে পেরেছেন তিনি সানতিয়াগাে পৌছে গেছেন। গত দু-মাসের গবেষণার ফলে পাখির মস্তিষ্ক সম্পর্কে যা জানতে পেরেছেন তা নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখেছেন। সেটাই সম্মেলনের জন্য তাঁর পেপার। আর জীবন্ত দৃষ্টান্তের জন্য সঙ্গে থাকছে কর্ভাস।
১০ নভেম্বর :
প্রােফেসর পাসপাের্ট নিতে ভুলে গিয়েছিলেন কর্ভাস তা স্মরণ করিয়ে দেয়। কর্ভাসের জন্য নতুন খাঁচা তৈরি করেছেন শঙ্কু, যা ওখানকার আবহাওয়ার উপযুক্ত। কর্ভাসের খাদ্যের জন্য বানিয়েছেন ভিটামিনযুক্ত মুখরােচক বড়ি। প্লেনে কর্ভাসকে নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে প্রবল কৌতূহল থাকলেও প্রােফেসর কাউকে কিছু বলেননি। কর্ভাসও সাধারণ কাকের মতাে ব্যবহার করছে।
১৪ নভেম্বর :
সানতিয়াগাে পক্ষী সম্মেলনে প্রােফেসর শঙ্কুর যশের মুকুটে নতুন পালক সংযােজিত হয়েছে। তাঁর পেপার পড়তে সময় লেগেছিল আধঘণ্টা। তারপর কভাসকে নিয়ে ডেমনস্ট্রেশন চলে এক ঘণ্টার ওপর। প্রােফেসরের পেপার পড়া শেষ হলে শ্রোতাদের করতালির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্ভাস টেবিলে ঠোট ঠুকে সবার সঙ্গে বাহবা জানায়। ডেমনস্ট্রেশনে কর্ভাস সকলকে তাক লাগিয়ে দেয় দু-মাসে যা যা শিখেছে তা দেখিয়ে। দু-মাসে পাখির মস্তিস্কে যে মানুষের জ্ঞান ও বুদ্ধির সঞ্চার ঘটানাে হয়েছে তা কল্পনাতীত। সম্মেলনের অতিথিদের আমােদ-প্রমােদের ব্যবস্থা অনুসারে দেখানাে হয় এক চিলিয়ান জাদুকর আর্গাসের জাদু প্রদর্শন।
কর্ভাস গল্পের বিষয়বস্তু
তিনি ম্যাজিকে নানারকম পাখি ব্যবহার করেন। তার ম্যাজি, ব্যবহার করা পাখিদের শেখানাের কাজ দেখানাে হলেও। কভাসের কৃতিত্বের ধারে কাছে আসে না। রাত ন-ট হােটেলে আহারাদি সেরে আলাে নিভিয়ে প্রােফেসর শ পড়েছেন, এমন সময় হােটেলের রিসেপশন থেকে ফোন , চিলিয়ান জাদুকর আর্গাস প্রােফেসর শঙ্কুর সঙ্গে সাক্ষ, করতে চান। প্রােফেসর প্রথমে রাজি না হলেও চাপাচাপিতে সক্ষণ জানান।
‘ অর্গাস লম্বায় প্রায় সাড়ে ছ-ফুট। চোখে মাইনাস কুড়ি পাওয়ারের চশমা। তাঁর চোখ চলে যায় কর্ভাসের খাঁচাটার দিকে। আর্গাস উ কর্ভাসকে দেখেন। বলেন যে, সান্ধ্য কাগজে কৰ্ভাসে ছবিসহ বিস্তৃত খবর বেরিয়েছে। তাই আলাপ করতে এসেছেন প্রােফেসর শঙ্কু ও কর্ভাস উভয়ে ক্লান্ত। তবু আর্গাসের অনুরোধে প্রােফেসর খাঁচার দরজা খুলে দেন। অবাক কাণ্ড! কর্ভাস । থেকে বেরিয়ে এসে আলাের সুইচ অফ করে ঘর অন্ধকার করে দেয়। আগ্লাস পাখিটিকে চেয়ে বসেন। সম্মােহনবিদ্যার সাহায্যে কর্ভাসকে পেতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় টাকার লােভ দেখিয়ে, বিফল হওয়ায় হােটেল ত্যাগ করেন। শেষমেষ কর্ভাসকে চুরি করমতলব আঁটেন।
১৬ নভেম্বর :
দুপুরে হােটেলে সম্মেলনের কয়েকজন ডেলিগেটের সঙ্গে প্রােফের শঙ্কুর লাঞ্চ ছিল। রুমে কর্ভাসকে রেখে প্রােফেসর শঙ্কু গেছেন লাঞ্চে, ওই সুযােগে আর্গাস কর্ভাসকে চুরি করে তাঁর রুপেনি ক্যাডিলাক গাড়িতে চড়ে পালিয়ে যায়। পক্ষী সম্মেলনে চেয়ারম্যান ছিলেন সিনিয়র কোভারুবিয়াস। তার পরামর্শে সাহা। নেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশের। প্রােফেসর শঙ্কু, গ্রেনফেল । পুলিশ গাড়িতে চড়ে রওনা হয়ে যান আর্গাসকে ধরতে। অনেকখানি। পাড়ি দেওয়ার পর তাঁদের নজরে আসে রুপােলি ক্যাডিলাক। গাছে। গুঁড়িতে ধাক্কা খেয়ে গাড়িখানা রাস্তার ধারে পড়ে রয়েছে। ওঁরা গতি থামিয়ে নেমে এসে দেখেন গাড়ির মালিক আর্গাস ও কর্ভাস নে। গাড়ির সামনের দিক ক্ষতবিক্ষত। ওঁরা শুনতে পান কর্ভাসে। বিরুদ্ধে ক্রুদ্ধ আর্গাসের অশ্রাব্য গালিগালাজ। আর্গাস প্রােফেসর শঙ্কুদের দেখতে পেয়ে এলােপাথাড়ি গুলি চালাতে লাগযেন। পুলিশের প্রচণ্ড ধমকে আর্গাস অস্ত্র ছাড়লেন। দেখা আর্গাসের চোখে মাইনাস কুড়ি পাওয়ারের চশমা নেই। দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়ায় সম্মােহন শক্তি হারিয়েছেন। প্রােফেসর শকুকে দেখতে পেয়ে পাশের ন্যাড়া অ্যাকেসিয়া গাছ থেকে কর্ভাস এর এসে পুলিশের গাড়ির ছাদে আগাসের মাইনাস কুড়ি পাওয়া চশমাটি নামিয়ে রাখে।
কর্ভাস বড় প্রশ্ন
প্রশ্ন ) সত্যজিৎ রায় রচিত ‘কর্ভাস’ কাহিনিতে কর্ভাস কীভাবে হােটেল থেকে চুরি হয়ে গেল, সে ঘটনা সংক্ষেপে লেখাে।
কর্ভাস চুৱি :সত্যজিৎ রায়ের লেখা প্রােফেসর শঙ্কু কাহিনিগুচ্ছের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযােগ্য কাহিনি হলাে ‘কর্ভাস’। কর্ভাস’ কাহিনির চমকপ্রদ ঘটনা হলাে হােটেল থেকে কর্ভাসের অপহরণ। হােটেলের একাত্তর নম্বর রুমে কর্ভাসকে তার খাঁচায় খাবারসহ রেখে প্রােফেসর শঙ্কু গিয়েছিলেন ওই হােটেলেরই কয়েকজন ডেলিগেটের সঙ্গে লাঞ করতে। লাঞ্চ সেরে বেলা আড়াইটার দিকে রুমে ফিরে দেখেন রুমের চাবি খােলা এবং খাঁচাসহ কর্ভাস চুরি হয়ে গেছে। তা দেখে প্রােফেসর শঙ্কু সঙ্গে সঙ্গে রুম ছেড়ে চলে যান রুমবয়দের ঘরে। তাদের দেখেই বুঝে ফেলেন তারা সম্মােহিত হয়ে পাথরের মতাে দাঁড়িয়ে। শঙ্কু সেখান থেকে যান একশাে সাত নম্বর ঘরে গ্রেনফেলের কাছে। প্রােফেসর তাঁকে সমস্ত ব্যাপারটা বলেন। তারপর দুজনে হাজির হন একতলার রিসেপশনে। রিসেপশন ক্লার্ক বলেন যে, তাদের কাছে কেউ তাঁর রুমের চাবি চাইতে আসেনি। ডুপ্লিকেট চাবি রুমবয়দের কাছে থাকে তারা যদি দিয়ে থাকে। প্রােফেসর শঙ্কুর কাছে তখন ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যায়। আর্গাস জাদুবলে রুমবয়দের অকেজো করে কাজ হাসিল করেছে। তারা তখন যান দ্বাররক্ষকের কাছে। সে বলে যে, আগ্লাস সেলােফোনের ব্যাগ হাতে মিনিট কুড়ি আগে হােটেল থেকে বেরিয়ে গেছেন।
কর্ভাস গল্পের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ) সত্যজিৎ রায়ের লেখা ‘কভাস’ কাহিনির অপহৃত কর্ভাস কীভাবে উদ্ধার হলাে লেখাে।
উত্তর: : অপহৃত কর্ভাস উদ্ধৱ : সত্যজিৎ ‘কর্ভাস’ কাহিনির অপহৃত কর্ভাস উদ্ধার যেন রহস্য কাহিনির শেষ পর্বের এক রােমাঞ্চকর অধ্যায়। প্রায় চারশাে গজ দূর থেকে দেখা যাচ্ছে একটা গাড়ি রােদে ঝলমল করছে। রাস্তার এক পাশে বেঁকে দাঁড়িয়ে আছে। পিছনে একটা গাছের গুঁড়ি। প্রােফেসর শঙ্কুদের গাড়ি ওই গাড়িটার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। গাড়িটা কেন দাঁড়িয়ে আছে তার কারণ এবার বােঝা গেল। গাড়িটা রাস্তা থেকে ছিটকে গিয়ে গাছের গুঁড়িতে ধাক্কা মেরেছে। গাড়ির সামনের অংশ থেঁতলে গেছে। কিন্তু অপহৃত কর্ভাস আর অপহারক আর্গাসই বা কোথায় ? ড্রাইভারের সিটের পাশে কর্ভাসের ফাঁকা খাঁচা। প্রােফেসর শঙ্কুর জামার পকেটে খাঁচার চাবিকাঠি। খাঁচায় তালা দেওয়া হয়নি। তালা খােলা থাকলে কর্ভাস নিজে বন্ধ খাঁচা খুলতে পারে। হঠাৎ দূর থেকে মানুষের গলা ভেসে আসে। পুলিশ বন্দুক উঁচিয়ে তৈরি। শঙ্কুদের গাড়ির ড্রাইভার ভীতু লােক। সে মাটিতে বসে মেরি মাতার নাম জপ করছে। গ্রেনফেল পুলিশের গাড়িতে গিয়ে বসলেন। লােকটার চঁাচানাে গলা এগিয়ে আসছে। তিনি উচু গলায় কর্ভাসকে
গালিগালাজ করছেন। তিনি যেমন পুলিশকে দেখতে পাচ্ছেন, পুলিশও তেমনি তাঁকে দেখতে পাচ্ছে। তাঁর দু-হাতে দুটো রিভলবার। তিনি এলােপাথাড়ি গুলি ছুড়ছেন। আসলে তাঁর চশমা খােওয়া যাওয়ায় এবং দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হওয়ায় তাঁর গাড়ি ছিটকে গাছে ধাক্কা মেরেছে, তাই তিনি এলােপাথাড়ি গুলি ছুড়ছেন। গ্রেন্ফেল রাস্তার উলটো দিকে ন্যাড়া অ্যাকাসিয়া গাছটার মাথার দিকে আঙুল তুলে দেখান কর্ভাস বসে আছে নিশ্চিন্তে। সে ঘাড় নীচু করে দেখছে। হাতছানি দিয়ে ডাকতেই নেমে এসে বসল। ছাদে। ঠোট থেকে নামিয়ে রাখল আর্গাসের মাইনাস কুড়ি পাওয়ারের চশমাটা।
প্রশ্ন ) এক কথায় বলা যায়, কর্ভাসসহ আমার বক্তৃতাটা হয়েছে—অ্যানাদাৱ ফেদাৱ ইন মাই ক্যাপ। প্রােফেসর শঙ্কুৱ এত বড়াে সাফল্য প্রাপ্তির বিষয়টি আলােচনা করাে।
সাফল্য প্রাপ্তি : সত্যজিৎ রায় লিখিত ‘কর্ভাস’ কাহিনিতে প্রােফেসর শঙ্কু সানতিয়াগাে পক্ষী সম্মেলনে তাঁর কুতা ও কর্ভাসের ডেমস্ট্রেশনের সাফল্যের কথা সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। তাঁর এই সাফল্য তাঁর প্রতিভা ও যশের কুটে নতুন পালকের সংযােজন ঘটিয়েছে। প্রােফেসর শঙ্কুর তৈরি করা প্রবন্ধ বা পেপার পড়তে সময় লাগে আধঘণ্টা। তারপর সেকে নিয়ে ডেমনস্ট্রেশন চলে এক ঘণ্টার বেশি সময়। এসের শক্ত মঞ্চে উঠেই খাঁচা থেকে কর্ভাসকে বার করে টেবিলের ওপর ছেড়ে দেন। মেহগনি কাঠের বিশাল লম্বা টেবিলের পিছনে সম্মেলনের কর্তৃপক্ষ বসেছেন লাইন করে। টেবিলের এক পাশে দাঁড়িয়ে প্রােফেসর শঙ্কু প্রবন্ধ পাঠ করেন। তরুণ প্রবন্ধ পাঠ চলে কর্ভাস এক পাও নড়েনি। তার ঘাড় নাড়ার ভঙ্গি বুঝিয়ে দিচ্ছিল, সে গভীর মনােযোগ দিয়ে প্রোফেসরের কথা শুনছে ও তা বুঝতেও পারছে। বক্তৃতার শেযে করতালির সঙ্গে তাল মিলিয়ে টেবিলের ওপর ঠোট ঠুকে শব্দ করতে থাকে ভসি কভাস তার ডেমনস্ট্রেশনের সময় দু-মাস ধরে যা যা এখছে তা দেখিয়ে উপস্থিত সকলকে তাক লাগিয়ে দেয়। পাখির মস্তিস্কে মানুষের জ্ঞান ও বুদ্ধির প্রবেশ ঘটতে পারে। তা দেখলে বিশ্বাস করা যেত না। সকলে একবাক্যে স্বীকার করে। আনন্দের কথা, সেখানকার কাগজের সান্ধ্য সংস্করণে কর্ভাসের খবরটা প্রধান খবর হিসেবে প্রকাশিত হয়। পেনসিল মুখে কৰ্ভাসের ছবিও ছাপা হয়। এই হলো প্রােফেসর শঙ্কুর বড়াে সাফল্য প্রাপ্তি।
প্রশ্ন ) ‘প্লাজা থিয়েটাৱে আর্গাসের ম্যাজিক দেখতে গিয়েছিলাম।”—আর্গাসেৱ দেখানাে ম্যাজিক, তার চেহাৱা ও তাৱ হাবভাবের পরিচয় দাও ।
উত্তর ; পক্ষী সম্মেলনে উপস্থিত অতিথিদের আমােদম্যাজিক দেখানাের আয়ােজন করেন সম্মেলন কর্তৃপক্ষ। প্রমােদের জন্য প্লাজা থিয়েটারে চিলিয়ান জাদুকর আর্গাসের ম্যাজিক দেখতে। আর্গাস ম্যাজিকে নানা রকম পাখি ব্যবহার করেন। গ্রেনফেলের সঙ্গে প্রােফেসর শঙ্কু গিয়েছিলেন আর্গাসের হাঁস, কাকাতুয়া, পায়রা, মােরগ, লম্বা সারস, এক ঝাঁক হামিং বার্ড ইত্যাদি পাখি তাঁর ম্যাজিকের কাজে লাগে। তিনি বেশ দক্ষতার সঙ্গে পাখিগুলিকে কাজ শিখিয়েছেন। তবে পাখিদের কাজের কোনােটাই কভাসের কৃতিত্বের ধারে কাছে পৌছাতে পারে । যাই হােক, পাখির চেয়ে প্রােফেসর শঙ্কুর কাছে বেশি ইন্টারেস্টিং মনে হলাে আর্গাসের চেহারা ও তার হাবভাব। তাঁর নাক টিয়াপাখির মতাে। মাথার চুলের মাঝখানে সিঁথি করা, টান করে পিছনে আঁচড়ানাে চুল চকচক করছে। চোখে মাইনাস কুড়ি পাওয়ারের চশমা। পুরু কাচের মধ্যে তাঁর চোখের মণি দুটো তীক্ষ বিন্দুর মতাে দেখায়। লােকটা লম্বায় প্রায় ছ-ফুট। কালাে কোটের আস্তিনের ভিতর দিয়ে তাঁর শীর্ণ ফ্যাকাসে হাত দুটো বেরিয়ে আছে। হাতের বিভিন্ন ভঙ্গি দর্শকদের সম্মােহিত রাখে। যাই হােক, জাদুকরের চেহারা ও তাঁর হাবভাব দেখে পয়সা উঠে যায়।
দরকার। | প্রােফেসরের লক্ষ্য। কর্ভাস বাংলার পরে ইংরেজি শিখছে।। বাইরে গিয়ে ডেমনস্ট্রেশন দিতে গেলে ইংরেজি ভাষা জানা
প্রশ্ন ) ‘আমাৱ পাখিপড়ানাের যন্ত্র নিয়ে কাজ চলেছে।—পাখিপড়ানাে যন্ত্রটির নাম কী? যন্ত্রটির গঠন প্রণালী আলােচনা করাে। যন্ত্রটির কীভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা চলতে লাগল?
উত্তর : প্রােফেসর শঙ্কুর পাখিপড়ানাে যন্ত্রটির নাম হলাে ‘অরনিথন।
‘অৱনিথন’ যন্ত্রের গঠন : প্রােফেসর শঙ্কুর তৈরি যন্ত্রের মধ্যে জটিলতা থাকে না। কারণ তিনি সহজ পথে বিশ্বাসী। তাঁর পাখিপড়ানাে যন্ত্রের দুটি ভাগ। একটি ভাগ পাখির খাঁচার মতাে। মতাে কেন খাঁচাই। ওতে পাখি থাকে। দ্বিতীয় ভাগটি হলাে প্রথম ভাগের সঙ্গে বৈদ্যুতিক সংযােগ রক্ষা বা এই ভাগটি থেকে জ্ঞান ও বুদ্ধি প্রথম ভাগে থাকা পাখির মস্তিষ্কে পাঠানাে হয়।
শিক্ষা শুরু : প্রােফেসর শঙ্কুর তৈরি পাখিপড়ানাে যন্ত্রের পরীক্ষানিরীক্ষার ক্ষেত্রে দেখা গেল, কাকটি টেবিলে রাখা যন্ত্রের প্রথম ভাগ বা খাঁচা অংশে নিজের থেকে ঢুকে পড়ল। তা থেকে অনুমান করা যায়, কাকটার শেখার প্রবল আগ্রহ। প্রােফেসর শঙ্কু বাংলা দিয়ে তার পড়া শুরু করেছেন। বােতাম টেপা ছাড়া প্রশিক্ষককে আর কোনাে কাজ করতে হয় না। শেখাবার বিষয় আগে থেকে রেকর্ড করা হয়। বােতাম টিপলেই কাকটির চোখ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসে। আর সঙ্গে সঙ্গে তার নড়াচড়াও বন্ধ হয়ে যায়। কাকের মতাে ছটফটে পাখির পক্ষে অস্বাভাবিক। কিন্তু তাও স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।
প্রশ্ন) ‘আমাৱ ছাত্রটিকে আমি ওই নামেই ডাকছি।—বক্তা ছাত্রটিকে কী নামে ডাকেন? তাৱ শিক্ষা কীভাবে চলছে? নিউটনের সঙ্গে ছাত্রটি বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠার দৃষ্টান্ত দাও।
উত্তর : বক্তা প্রােফেসর শঙ্কু তাঁর কাক ছাত্রটিকে ‘কর্ভাস’ নামে ডাকেন।
শিক্ষা কীভাবে চলছে : নাম ধরে ডাকলে কাকটি প্রথম দিকে প্রােফেসরের দিকে ফিরে ফিরে তাকাত। এখন ডাকলে গলা দিয়ে শব্দ করে উত্তর দেয়। কর্ভাস ‘কা’ না বলে ‘কি’ দিয়ে উত্তর দেয়। অবশ্য কর্ভাসকে কথা বলানাের অভিপ্রায় প্রােফেসর শঙ্কুর নেই। তার কাজের মধ্যে তার বুদ্ধি প্রকাশ পাক এটাই প্রফেসর এর লক্ষ্য। কর্ভাস বাংলার পরে ইংরেজি শিখেছে ।বাইরে গিয়ে ডেমনস্ট্রেশন দিতে গেলে ইংরেজি ভাষা জানা দরকার।
নিউটনেৱ সঙ্গে বন্ধুত্ব : প্রােফেসর শঙ্কু লক্ষ করেছেন নিউটনের সঙ্গে কর্ভাসের বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে চলেছে। সেদিনই দুপুরে ব্যাপারটা ঘটল। নিউটন প্রােফেসরের চেয়ারের পাশে কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়েছিল। কর্ভাস বাইরে কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। কর্ভাস হঠাৎ জানালায় ডানার ঝাপটা তুলে ঘরে এল। তার ঠোঁটে একটা সদ্য কাটা মাছের টুকরাে। সে সেটাকে খপ করে নিউটনের সামনে ফেলে দিয়ে জানালায় গিয়ে বসে ঘাড় বেঁকিয়ে এদিক ওদিক দেখতে লাগল।
কর্ভাস গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ) সত্যজিৎ রায়ের লেখা ‘কর্ভাস’ কাহিনির প্রধান চরিত্র কর্ভাসের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার বিবরণ দাও।
উত্তর। বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা : সত্যজিৎ রায়ের লেখা “কর্ভাস’ কাহিনিতে প্রােফেসর শঙ্কু ‘অরনিথন যন্ত্রের সাহায্যে কর্ভাসকে বিভিন্ন বিষয় শেখাতে লাগলেন। মাত্র দু-সপ্তাহেই কর্ভাসের শিক্ষার অভাবনীয় প্রােগ্রেস দেখা গেল। ঠোটে পেনসিল নিয়ে ইংরেজি আর তার সংখ্যা লিখতে লাগল। ঠোটে পেনসিল ধরে কর্ভাস লিখতে লাগল প্রাইম নাম্বারস্। একে একে শিখছে অঙ্ক, জ্যামিতি, ইতিহাস, ভূগোল, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ইত্যাদি। সব বিষয়েই যেসব প্রশ্নের উত্তর সংখ্যার সাহায্যে বা অল্প কয়েকটি শব্দের সাহায্যে দেওয়া যায়, কর্ভাস তাই শিখে নিয়েছে। সেইসঙ্গে যে জিনিসটা ওর মধ্যে নিজের থেকে জেগে উঠেছে, তা হলাে মানবসুলভ বুদ্ধি। যার সঙ্গে পাখির কোনাে সম্পর্ক নেই। উদাহরণস্বরূপ প্রােফেসর শঙ্কু একটা ঘটনার উল্লেখ করেছেন। প্রােফেসর কর্ভাসকে নিয়ে সানতিয়াগােতে পক্ষী সম্মেলনে যাবেন বলে সুটকেসে প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র গােছাচ্ছিলেন। গােছানাে হলে সুটকেসের ঢাকনা বন্ধ করে পাশে ফিরে দেখেন কর্ভাস সুটকেসের চাবিটা ঠোটে নিয়ে চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রশ্ন ) ‘এই ময়নাটাই এমন এক কাণ্ড করে বসল যে, আমার সে ধারণা প্রায় পালটে গেল। ময়নাটা কে? বক্তাৱ কী ধারণা ছিল? তাঁৱ সে ধারণা কীভাবে ? পালটে যায় এবং সেই থেকে পাখির ব্যাপারে বক্তা কীভাবে অনুসন্ধিৎসু হয়ে ওঠেন?
উত্তর : ‘ময়নাটা হলাে বক্তা প্রােফেসর শঙ্কুর বাড়ির পােষা পাখি।
বক্তা প্রােফেসর শঙ্কুর ধারণা ছিল যে, পাখি কথা বললেও কথার মানে সে বােঝে না।
ধারণা পালটে যাওয়া ও অনুসন্ধিৎসু হয়ে ওঠা : বক্তা প্রােফেসর শঙ্কুর এ ধারণা পালটে যায় একটি ঘটনা থেকে। তখন শঙ্কু ছেলেমানুষ, স্কুলের ছাত্র। দুপুরবেলা। তিনি স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। মা রেকাবিতে মােহনভােগ এনে তাঁকে দিয়েছেন। এমন সময় ময়না হঠাৎ চেঁচিয়ে ওঠে ভূমিকম্প, ভূমিকম্প বলে ভূকম্পনের স্পন্দন শঙ্কুরা অনুভব করতে পারেন না। কিন্তু পরের দিন খবরের কাগজে বেরােয় সিজমােগ্রাফ যন্ত্রে সত্যই নাকি কম্পন ধরা পড়েছে। সেই থেকে প্রােফেসর শঙ্কুর ধারণা শুধু পালটেই যায় না, তিনি পাখির বুদ্ধির দৌড় সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসু হয়ে ওঠেন। বিজ্ঞানের অন্যান্য গবেষণার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পাখির বুদ্ধির ব্যাপারে অনুসন্ধানে সাময়িক ছেদ পড়ে। তা ছাড়া নিউটন পাখি অপছন্দ করত। সেজন্য কোনাে পাখি প্রােফেসর শঙ্কুর গবেষণাগারে আসত না। সম্প্রতি নিউটন পাখির ব্যাপারে উদাসীন হওয়ায় কাক, চড়ুই, শালিক প্রভৃতি পাখি আসতে শুরু করেছে। শঙ্কু সকালে তাদের খেতে দেন। সূর্য ওঠার আগেই তারা জানালার বাইরে জটলা করে।
প্রশ্ন ) ‘অন্য প্রাণীর তুলনায় পাখিৱ ক্ষমতা আরও বেশি ।-পাখিৱ কী ক্ষমতা? পাখির এই ক্ষমতা যে আরও বেশি—কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও ।
উত্তর; ‘পাখির ক্ষমতা বলতে পাখির সহজাত ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে।
: পাখিৱ সহজাত ক্ষমতার দৃষ্টান্ত : পাখির সহজাত ক্ষমতা অন্য প্রাণীর সহজাত ক্ষমতার চেয়ে আরও বেশি, আরও বিস্ময়কর। সে ব্যাপারে প্রােফেসর শঙ্কু কয়েকটি দৃষ্টান্তের উল্লেখ করেছেন।
এক ] বাবুইয়ের বাসার বুনােন কাজ দেখলে বিস্মিত হতে হয়। খড়কুটো দিয়ে ওরকম বাসা বানানাে মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
দুই ] অস্ট্রেলিয়ায় ম্যালি-ফাউল মাটিতে বাসা বানায়। বালি, মাটি আর উদ্ভিজ্জ দিয়ে একটা ঢিপি তৈরি করে। তার ভিতরে ঢােকার জন্য তৈরি করে একটা গর্ত। ওই ঢিপির বাসায় ম্যালি-ফাউল ডিম পাড়ে। ডিম ফোটার জন্য দরকার নির্দিষ্ট আটাত্তর ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপ। বাসার বাইরে ঠান্ডা কিংবা গরম যাই থাক। বাসার ভিতরে আটাত্তর ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপের একান্ত দরকার। তা থাকে বাসা বানানাের অজ্ঞাত কৌশলের ফলে।
তিন কী কারণে গ্রিব পাখি নিজের পালক ছিড়ে নিজে খায় ও শাবকদের খাওয়ায়, তা কারাে জানা নেই। আবার এই পাখিই জলে ভাসমান অবস্থায় শত্রুর আগমনের ইঙ্গিত পেলে দেহ ও পালককে বায়ুহীন করে শরীরের স্পেসিফিক গ্র্যাভিটি বাড়িয়ে গলা অবধি জলে ডুবিয়ে ভাসতে থাকে।
কর্ভাস প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ) ‘সব পাখির মধ্যে একটি বিশেষ পাখি বিশেষভাবে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। একটি বিশেষ পাখি’ বলতে বক্তা কোন্ পাখিৱ কথা বলেছেন? বাৱ দৃষ্টি সে কীভাবে আকর্ষণ করেছে?
উত্তর: ‘একটি বিশেষ পাখি’ বলতে বক্তা প্রােফেসর শঙ্কু একটি কাক, দাঁড়কাক নয়, সাধারণ কাকের কথা ডায়রিতে লিখেছেন।
প্রােফেসর শঙ্কুৱ দৃষ্টি আকর্ষণ : কাকটা প্রােফেসর শঙ্কুর চেনা হয়ে গেছে। তার ডান চোখের নীচে একটা সাদা ফুটকি আছে। তাকে চেনার এটা একটা চিহ্ন। তা ছাড়া তার হাবভাব তাকে অন্য কাকের থেকে আলাদা করেছে। প্রােফেসর শঙ্কু অন্য পাখিকে তার মতাে ঠোটে পেনসিল নিয়ে টেবিলের ওপর আঁচড় কাটতে দেখেননি। গতকাল একটা ব্যাপারে প্রােফেসর রীতিমতাে হকচকিয়ে গেছেন। প্রােফেসর তাঁর যন্ত্র তৈরির কাজ করছেন। এমন সময় খচখচ শব্দ শুনে ঘাড় ফিরিয়ে দেখেন যে, কাকটা একটা আধখােলা দেশলাইয়ের বাক্স থেকে ঠোট দিয়ে একটা কাঠি বার করে বাক্সের পাশে ঘষছে। প্রােফেসর হুস হুস শব্দ করে তাকে নিরস্ত করেন। কাকটা উড়ে গিয়ে জানালায় বসে গলা দিয়ে দ্রুত কয়েকটা শব্দ করল। কাকের ‘কা’ শব্দের সঙ্গে ওই শব্দের কোনােরকম যােগ নেই। শুনে মনে হবে, কাকটা যেন হাসছে। পাখিটা বড়াে চালাক। পরীক্ষার জন্য এরকম ব্যবহারের পাখিই উপযুক্ত।
কর্ভাস গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ) সঙ্গে সঙ্গে ওর মধ্যে যে জিনিসটা প্রায় আপনার থেকে জেগে উঠেছে,—জিনিসটা কী? তা জেগে | ওঠাৱ কী দৃষ্টান্ত পাওয়া গেছে লেখাে।
উত্তর: জিনিসটা হলাে মানবসুলভ বুদ্ধি বা হিউম্যান ইনটেলিজেন্স।
কর্ভাসের মধ্যে মানবসুলভ বুদ্ধি জেগে উঠেছে ঠিকই, কিন্তু ওই জিনিসের সঙ্গে পাখির কোনাে সম্পর্ক নেই। উদাহরণ হিসেবে প্রােফেসর শঙ্কু একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন। সানতিয়াগাে যাওয়ার জন্য প্রােফেসর সেদিন তাঁর সুটকেস গােছাচ্ছিলেন। গােছানাে শেষ হলে বাক্সের ঢাকনা বন্ধ করে দেখেন কর্ভাস সুটকেসের চাবিটা ঠোটে নিয়ে চুপটি করে দাঁড়িয়ে।
প্রশ্ন ) ‘পাখিৱ চেয়ে আমার অনেক বেশি ইন্টাৱেস্টিং মনে হলাে জাদুকৱ ব্যক্তিটিকে।—জাদুকর ব্যক্তিটি কে? কেন ইন্টাৱেস্টিং মনে হলাে?
উত্তর : জাদুকর ব্যক্তিটি হলেন আর্গাস। তিনি তাঁর জাদুতে নানারকম পাখি ব্যবহার করেন।
জাদুকর আর্গাসকে প্রােফেসর শঙ্কুর ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে তার চেহারা ও হাবভাব দেখে। জাদুকরের টিয়াপাখির মতাে নাক। মাথার চুলের মাঝখানে সিঁথি করা ও টান করে পিছনে আঁচড়ানাে। ল গ্রামােফোন রেকর্ডের মতাে চকচকে। চোখে মাইনাস পাওয়ারের চশমা। চশমার কাচ খুব গুরু হওয়ায় চোখের মণি বিন্দুর মতাে দেখায়। লােকটা লম্বা ছ-ফুটের ওপর। দুটি ফর্সা শীর্ণ হাত কালো কোর্টের আস্তিন থেকে বেরিয়ে। সেই হাতের নানা ভঙ্গি দর্শকদের সম্মােহিত করে।
প্রশ্নঃ ‘আর্গাস’এখন একটা শেষ চেষ্টা কৱল শেষ চেষ্টাটা কী?
উত্তর : জাদুকর আর্গাসের প্রচণ্ড ইচ্ছা কর্ভাসকে পাওয়ার। একে
একে প্রতিটি চেষ্টা বিফল হওয়ায় গাড়ি-বাড়ি-টাকার প্রলােভনে জাল বিছায়। তাও ব্যর্থ হওয়ায় শেষ চেষ্টা করে। মানসিক দিক থেকে প্রােফেসরের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। প্রােফেসর তে ভারতীয়। ভারতীয়রা অলৌকিকত্বে বিশ্বাসী। প্রােফেসর কি অলৌকিক যােগাযােগ বিশ্বাস করেন না ? আর্গাস আর কর্ভাস নামের যােগাযােগের ওপর জাদুকর জোর দিল। কর্ভাসের নামকরণ হয়েছে আর্গাসের জন্যই। সেটা প্রােফেসর বুঝতে পারছেন না কেন ?
প্রশ্ন ) ‘আমি আৱ ধৈর্য রাখতে পারলাম না ।”—বত্তা কী কৱলেন ও কী বললেন?
উত্তর : জাদুকর আর্গাসের অন্যায় চাপ প্রােফেসর শঙ্কুর ধৈর্যের বাঁধ দিল ভেঙে। প্রােফেসর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলেন না। চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়লেন। বললেন যে, আর্গাস যেন তাঁর গাড়ি-বাড়ি-অর্থ নিয়ে থাকেন। কর্ভাস প্রােফেসরের কাছেই থাকবে। কর্ভাসের শিক্ষা শেষ হয়নি। তাকে নিয়ে প্রােফেসরের অনেক কাজ বাকি। তিনি ক্লান্ত। আর্গাস পাঁচ মিনিট সময় চেয়ে কুড়ি মিনিট ব্যয় করেছেন। প্রােফেসর ও তাঁর পাখি দুই-ই ঘুমােবে। কাজেই আগাস বিদায় হােন।
প্রশ্ন ) এইবাৱ বুঝলাম তাৱ দশাটা।—কাৱ দশাৱ কথা বলা হয়েছে? তাৱ দশা ও দশাৱ পৱিণাম কী হলাে লেখো।
উত্তর : আর্গাসের দশার কথা বলা হয়েছে।
আর্গাসের দশার কারণ হলাে তার চশমাটি খােয়া গেছে। ফলে আর্গাস অন্ধের সামিল হয়েছে। আর সেজন্যই যত্রতত্র গুলি চালিয়েছে। বাধ্য হয়ে আর্গাস হাতের অস্ত্র ফেলে দিল। হোঁচট খেতে খেতে এগিয়ে এল। কারেকাস ও অন্য পুলিশটি আর্গাসের দিকে এগিয়ে গেল। প্রােফেসর পরিষ্কার বুঝেছেন আর্গাসের আর কোনাে ভেলকিই কাজ করবে না। তার অবস্থা খুবই শােচনীয়।
প্রশ্ন ) হাতছানি দিয়ে ডাকতে কর্ভাস কী কৱল?
উত্তর : কর্ভাসকে হাতছানি দিয়ে ডাকতেই গোঁৎ খাওয়া ঘুড়ির মতাে গাছের মাথা থেকে নেমে এল। বসল প্রােফেসরদের মারসেডিসের মাথার ওপর। তারপর ঠোট থেকে বেশ সন্তর্পণে নামিয়ে রাখল আর্গাসের বহুমূল্যের চশমাটা। যার পাওয়ার মাইনাস কুড়ি।
প্রশ্ন ) ‘আমাৱ সে ধারণা প্রায় পালটে গেল। কী ধারণা? প্রায় পালটে গেল কেন?
উত্তর : বক্তা হলেন প্রােফেসর শঙ্কু। তাঁর ধারণা ছিল যে, পাখি কথা বলেলও কথার মানে বােঝে না।
কিন্তু প্রােফেসর শঙ্কুর ওই ধারণা পালটে গেল একদিনের এক ঘটনা নিয়ে। প্রােফেসর শঙ্কু তখন স্কুল পড়ুয়া। দুপুরে স্কুল থেকে সবে ফিরেছেন। তার মা একটি রেকাবিতে মােহনভােগ খেতে দিয়েছেন। সেই সময় হঠাৎ বাড়ির পােষা ময়নাটা চিৎকার করে উঠল ‘ভূমিকম্প ভূমিকম্প বলে। প্রােফেসর শঙ্কুরা কোনােরকম কম্পন অনুভব করলেন না। অথচ পরের দিন খবরের কাগজে বেরােল সিমােগ্রাফে মৃদু কম্পন ধরা পড়েছে।
প্রশ্ন ) ‘প্রত্যেক প্রাণীৱই কিছু কিছু নির্দিষ্ট সহজাত ক্ষমতা থাকে।—নির্দিষ্ট সহজাত ক্ষমতা’বলতে যা বলা হয়েছে ম্যালি-ফাউল-এৱ দৃষ্টান্ত দিয়ে তা বুঝিয়ে দাও ।
উত্তর : প্রত্যেক প্রাণীরই জন্মসূত্রে কিছু কিছু ক্ষমতা পেয়ে থাকে। একেই বলা হয় সহজাত ক্ষমতা। অন্য প্রাণীর চেয়ে পাখির সহজাত ক্ষমতা অনেক বেশি, অনেক বিস্ময়কর। দৃষ্টান্তস্বরূপ প্রােফেসর শঙ্কু অস্ট্রেলিয়ার ম্যালি-ফাউল-এর কথা উল্লেখ করেছেন। ম্যালি-ফাউল মাটিতে বাসা করে। বালি, মাটি ও উদ্ভিজ্জ দিয়ে ঢিপি বানায়। তার ভিতরে ঢােকবার একটা গর্ত থাকে । বাসার ভিতর ডিম পাড়ে, কিন্তু ডিমে তারা তা দেয় না। ডিম ফোটার জন্য আটাত্তর ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপ দরকার। বাইরে ২ ঠান্ডা বা গরম যা আবহাওয়া থাক বাসায় অজ্ঞাত কৌশলে ডিম ফোটার উপযােগী তাপ বজায় রাখে। এটি তাদের সহজাত ক্ষমতা।
কর্ভাস গল্পের প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ ‘একটি বিশেষ পাখি বিশেষভাবে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিশেষ পাখিটি কী? সে বিশেষভাবে কী কাজ করে প্রােফেসর শঙ্কুৱ দৃষ্টি আকর্ষণ
উত্তর : বিশেষ পাখিটি হলাে একটি কাক। দাঁড় কাক নয়, সাধারণ কাক ।
প্রোফেসর শঙ্কুর দৃষ্টি আকর্ষক কাজটি হলো ঠোটে পেনসিল নিয়ে টেবিলের ওপর আঁচড় কাটে কাকটি। যা অন্য কোনাে পাখিকে ওই ধরনের কাজ করতে দেখা যায় না। তা ছাড়া কাকটা একটি আধখােলা দেশলাইয়ের বাক্স থেকে ঠোট দিয়ে একটা কাঠি বার করে তার মাথাটা বাক্সের পাশটায় ঘষতে থাকে। তাড়া খেয়ে কাকটা উড়ে গিয়ে জানালায় বসে গলা দিয়ে এমন স্বর তুলল, যা কাকের কা কা স্বাভাবিক স্বর নয়, যেন তার হাসির আওয়াজ।
প্রশ্ন ) ‘আমাৱ পাখিপড়ানাে যন্ত্র নিয়ে কাজ চলেছে।’-যন্ত্রটির বর্ণনা দাও।
উত্তর : প্রােফেসর শঙ্কু একটি পাখিপড়ানাে যন্ত্র তৈরি করেন। তাঁর যন্ত্র তৈরির কৌশল জলের মতাে সহজ। যন্ত্রটি দুটি অংশে বিভক্ত। একটি খাঁচার মতাে। পাখি সেই খাঁচার অংশে থাকবে। দ্বিতীয় অংশে খাঁচার সঙ্গে বৈদ্যুতিক লাইনের যােগ থাকবে। দ্বিতীয় অংশটিতে পাখির মস্তিষ্কে জ্ঞান ও বুদ্ধি সঞ্চালিত হবে। প্রােফেসর শঙ্কুর তৈরি পাখিপড়ানাে যন্ত্রটির নাম ‘অরনিথন’।
প্রশ্ন ) ‘আজকে যে ঘটল, তাৱ পৱেৱ সম্পর্কটা বন্ধুত্বে পরিণত হলেও আশ্চর্য হব না। কাদেৱ বন্ধুত্বের সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে? সম্পর্ক গড়ার ঘটনাটি লেখাে।
উত্তর : প্রােফেসর শঙ্কুর পােষা বিড়াল নিউটনের সঙ্গে কর্ভাস নামীয় সাধারণ কাকের বন্ধুত্বের কথা বলা হয়েছে।
নিউটন অন্য পাখিদের তাড়া করলেও কর্ভাসকে দিব্যি মেনে নিয়েছে। ওদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ার ঘটনা ঘটে দুপুরে। নিউটন প্রােফেসর শঙ্কুর আরামচেয়ারের পাশে কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে। কর্ভাস কোথায় যে উধাও হয়েছিল জানা নেই। প্রােফেসর শঙ্কু তখন নােট লিখছেন। জানালায় ডানার ঝটপটানি আওয়াজ। কর্ভাস ঘরে ঢুকেছে। তার ঠোটে সদ্য কাটা মাছের টুকরাে। সে মাছের টুকরােটা নিউটনের মুখের সামনে ফেলে দিয়ে জানালায় বসে ঘাড় বাঁকিয়ে এদিক ওদিক দেখতে লাগল।
কর্ভাস গল্পের ছোট প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ।।আর্গাসের চশমা পরা চোখের বর্ণনা দাও।
উত্তর : আর্গাসের চোখে মাইনাস কুড়ি পাওয়ারের চশমা, কাচ এত পুরু যে, মণি দুটি তীক্ষ বিন্দুর মতাে দেখায়।
প্রশ্ন ।। ম্যাজিক দেখে হল থেকে বেরােনার সময় প্রােফেসর শঙ্কু গ্রেনফেলকে কী বললেন?
উত্তর : প্রােফেসর শঙ্কু বললেন যে, আর্গাসের দেখানাে ম্যাজিকের মতাে কর্ভাসের খেলা দেখালে মন্দ হতাে না।
প্রশ্ন ।। আর্গাসকে প্রােফেসর শঙ্কুৱ কতখানি লম্বা মনে হলাে?
উত্তর : আর্গাসকে প্রােফেসর শঙ্কুর মনে হলাে লম্বায় ছ-ফুট নয় সাড়ে ছ-ফুটেরও বেশি।
প্রশ্ন ।। আর্গাস হ-অবস্থাতেই কী করলেন?
উত্তর : আর্গাস হ-অবস্থাতেই চেয়ার ছেড়ে উঠে কর্ভাসের খাঁচাটার দিকে এগিয়ে চললেন।
প্রশ্ন ।। আর্গাস কভাসেৱ খাঁচাৱ কাছ থেকে ফিরে এসে প্রােফেসর শঙ্কুকে কী অনুরােধ করলেন?
উত্তর : অনুরােধ করলেন যে, পাখিটিকে যদি একবার খাঁচা থেকে বের করে এনে ওর বুদ্ধির একটু নমুনা দেখান।
প্রশ্ন ।। কর্ভাসের খাঁচার দৱজা খুলে দেওয়ার পরে কী হলাে?
উত্তর: কর্ভাস খাঁচা থেকে বেরিয়ে ডানার তিন ঝাপটায় টেবিলটায় এসে ঠোটের এক অব্যর্থ ঠোক্করে ল্যাম্পটা নিবিয়ে দিল
প্রশ্ন ।। আলো নিবিয়ে কর্ভাস মনেৱ কী ভাব বােঝাতে চাইল?
উত্তর : কর্ভাস বােঝাতে চাইল যে, সে আলাে চায় না, অন্ধকারে ঘুমােতে চায়।
প্রশ্ন ।। কভাসের ‘কে’ জানতে চাওয়ার উত্তরে প্রােফেসর শঙ্কু কী বললেন?
উত্তর : বললেন যে, সে এক পাগলা জাদুকর, তার বডড টাকার গরম, কর্ভাসকে কিনতে এসেছিল, কর্ভাস যেন নিশ্চিন্তে ঘুমােয়।
প্রশ্নঃ।।চরম বিপদের আশঙ্কায় প্রােফেসর শঙ্কর। রক্ত জল হয়ে গেল কেন?
> উত্তর : কারণ ঝড়ের বেগে ঘরে ঢুকে দেখলেন যে, , ভেবেছিলেন তাই হয়েছে—খাঁচাসমেত কর্ভাস উধাও ।
প্রশ্ন ।। শেষে কোথায় গিয়ে প্রােফেসর শঙ্কু কৰ্ভস চুৱিৱ খবৱ পেলেন?
উত্তর: শেষে হােটেলের দ্বাররক্ষকের কাছে গিয়ে প্রােফের শঙ্কু কর্ভাস চুরির আসল খবর পেলেন।
প্রশ্ন ।। আর্গাসের আসল নাম কী এবং প্রােফেসর শঙ্কু তা কীভাবে জানলেন?
উত্তর : আর্গাসের আসল নাম হলাে দ্যোমিনগাে বার্তেলেৰে সারমিয়েতাে। হােটেল থেকে ফোন করে প্রােফেসর শঙ্ক জেনে নেন।
প্রশ্ন ।। সিনিয়র অর্গাসেৱ ক্যাডিলাক গাড়ি ভালপাৱাইজোৱেৱ ৱাস্তায়—এ কথা জানবার পর প্রােফেসর শঙ্কুৱা কী করলেন?
উত্তর : প্রােফেসর শঙ্কুদের কালাে মারসেডিস গাতি তিরবেগে রওনা দিল ভালপারাইজোরের দিকে।
প্রশ্ন ।। পুলিশ বন্দুক উঁচিয়ে দাড়াতে গাড়ির ভীড় ড্রাইভাৱ কী কৱল?
উত্তর:ভীতু ড্রাইভার মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে মেরি মাত নাম জপ করতে শুরু করল।
প্রশ্ন ।। আর্গাস যত্রতত্র গুলি চালিয়েছে কেন?
উত্তর : কারণ তার চশমা খখাওয়া যাওয়ায় সে অন্ধের শা হয়ে যত্রতত্র গুলি চালিয়েছে।
প্রশ্ন ।। কর্ভাস গাছ থেকে নেমে এসে মারসেডিসের ছাদের ওপর বসে কী কৱল ?
উত্তর : কর্ভাস তার ঠোট থেকে নামিয়ে রাখল আর্গাসের মাই কুড়ি পাওয়ারের চশমাটা।
প্রয় ।। প্রাফেসর শঙ্কু একটা ব্যাপাৱে ৱীতিমতাে হকচকিয়ে গেছেন, কেন?
উত্তর : কাকটা একটা আধখােলা দিয়াশলাইয়ের বাকা থেকে টের সাহায্যে একটা কাঠি বার করে কাঠিটার মাথা বাক্সের .
প্রশ্ন ) কাকটাকে খাঁচায় ঢুকতে দেখে প্রােফেসর শকুৱ কী মনে হলাে?
উত্তর : কাকটাকে খাঁচার ভিতর ঢুকতে দেখে প্রােফেসর শঙ্কুর মনে হয়েছে কাকটার শেখার আগ্রহ প্রবল।
প্রশ্ন ।। প্রােফেসর শঙ্কু কী আশ্চর্য জিনিস লক্ষ করলেন?
উত্তর : প্রােফেসর শঙ্কু দেখলেন যে, বােতাম টিপলেই কাকটার চোখ ধীরে ধীরে বন্ধ হওয়া মাত্র নড়াচড়াও তার ব হয়।
প্রশ্ন ।। নভেম্বর মাসে চিলিৱ ব্রাজধানী সানতিয়াগাে শহরে কী হবে?
উত্তর: নভেম্বর মাসে চিলির রাজধানী সানতিয়াগাে শহরে সারা বিশ্বের পক্ষীবিজ্ঞানীদের একটা সম্মেলন হবে।
প্রশ্ন ।। পক্ষী সম্মেলনের ব্যাপারে প্রােফেসর শঙ্কুৱ কী ইচ্ছা আছে?
উত্তর : যদি কাকটা মানুষের বুদ্ধি কিছুটা আয়ত্ত করতে পারে, তাহলে সম্মেলনে ডেমনস্ট্রেশনসহ একটা বক্তৃতা দেবেন।
প্রশ্ন ।। নিউটন ও কর্ভাসের সম্পর্ক যে বন্ধুত্বে পরিণত হয়েছে তার দৃষ্টান্ত কী?
উত্তর : দৃষ্টান্ত হলো, এক দুপুরে কর্ভাস ঠোটে করে একটি সদ্য কাটা মাছের টুকরো এনে নিউটনের সামনে ফেলে দিল।
প্রর।। কর্তাস কাগজে কীভাবে নিজের নাম ইছাৱজিতে লেখে?
উত্তর : টেবিলের ওপর লো কাগজের ওপর দাঁড়িয়ে ঠোটে পেনসিল নিয়ে ইংরেজিতে নিজের নাম লেখে-CORVUS।
প্রশ্ন ।। কর্ভাসের মধ্যে যে জিনিসটা নিজের থেকে জেগে ওঠে তা কী?
উত্তর : কভাসের মধ্যে জেগে ওঠা জিনিসটা হলো মানবসুলভ পি, এর সঙ্গে পাখির কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রশ্ন ।। কর্ভাসের মধ্যে জেগে ওঠা মানবসুলভ বুদ্ধির একটি উদাহৱণ দাও ।
উত্তর : সানতিয়াগো যাওয়ার জন্য শঙ্কু গোছানো সুটকেসের ঢাকনা বন্ধ করা মাত্র দেখা গেল কর্ভাস ঠোটে চাবিটা নিয়ে দাঁড়িয়ে।
প্রশ্ন ।। সানতিয়াগােৱ সম্মেলনের জন্য প্রােফেসৱ শঙ্কুৱ পেপাৱ কীভাবে তৈরি হয়েছে ?
. উত্তর: কর্ভাসকে নিয়ে দু-মাসের গবেষণালব্ধ জ্ঞানের ওপর যে একখানা প্রবন্ধ লিখেছেন, প্রােফেসর শঙ্কুর সেটাই পেপার।
প্রশ্ন ।। (প্লন যাত্রায় কর্ভাসেৱ খাওয়ার জন্য কী বানানাে হয়েছে ?
উত্তর: প্লেন যাত্রায় কভাসের খাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে হােমিওপ্যাথিক বড়ির মতাে পুষ্টিকর ভিটামিনের মুখরােচক বড়ি।
প্রশ্ন ।। পক্ষী সম্মেলনে প্রােফেসর শঙ্কুৱ বক্তৃতা শেষ হওয়াৱ পৱ কৰ্ভাসকে কী কৱতে দেখা গেল?
কর্ভাস গল্পের প্রশ্ন উত্তর
উত্তর : দেখা গেল কর্ভাস উপস্থিত ডেলিগেটদের হাততালির সঙ্গে তাল মিলিয়ে টেবিলের ওপর ঠোট ঠুকে চলল।
প্রশ্ন ।। কর্ভাসকে নিয়ে ডেমস্ট্রেশন দেখে সকলে এক বাক্যে কী স্বীকাৱ কৱল?
উত্তর : সকলে স্বীকার করল যে, পাখির মস্তিষ্কে জ্ঞান ও বুদ্ধির এমন প্রবেশ যে ঘটতে পারে তা কল্পনাতীত।
প্রশ্ন ।। সানতিয়াগােৱ সান্ধ্য পত্রিকায় কর্ভাসকে নিয়ে কীভাবে খবর প্রকাশিত হলাে?
উত্তর : পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান খবর হিসেবে বেরিয়েছে কর্ভাসের কথা ও পেনসিল মুখে তার ছবি।
প্রশ্ন ।। পক্ষী সম্মেলনেৱ অতিথিদের আমােদপ্রমােদের জন্য কী আয়ােজন করা হয়েছে ?
উত্তর : আয়ােজন করা হয়েছে, আগাস নামে পরিচিত এক চিলিয়ান জাদুকর দেখাবেন তার তামাশাপূর্ণ জাদুবিদ্যা।
প্রশ্ন ।। চিলিয়ান জাদুকর আর্গাসের জাদুৱ বিশেষত্ব কী?
উঃ : চিলিয়ান জাদুকর আর্গাসের জাদুর বিশেষত্ব হলাে, উনি ম্যাজিকে নানা ধরনের পাখি ব্যবহার করেন।