সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভার গঠন, কার্যাবলী ও ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা
■ সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভার গঠন, কার্যাবলী ও ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভার গঠন:
উত্তর।
বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ নাগরিক জনসভা হল সাধারণ সভা। পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষ দীর্ঘদিন ধরে যে বিশ্ব-আইনসভার (Parliament of the Universc) কথা কল্পনা করে আসছেন, তারই এক প্রকার বাস্তব রূপ হল সাধারণ সভা। এই সাধারণ সভাকে গেটেল বিশ্বের নাগরিক সভা’ (Town meeting of the World) আখ্যা দিয়েছে। বস্তুত সাধারণ সভা হল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কেন্দ্রীয় আলােচনা ও বিতর্কসভা গঠন ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সকল সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে সাধারণ সভা গঠিত। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা হল ১৮৫। প্রতিটি সদস্য সাধারণ সভায় অনধিক পাঁচজন প্রতিনিধি প্রেরণ করতে পারে। তবে প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের ভােট সংখ্যা একটি। নিরাপত্তা পরিষদের তনুমােদন ক্রমে সাধারণ সভার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থনে যে কোন আবেদনকারী সার্বভৌম রাষ্ট্রকে সাধারণসভার সদস্যপদ দেওয়া যায়।
অধিবেশন ও সাধারণ সভার তাধিবেশন বছরে একবার বসে এবং তা বসে সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবারে। সাধারণত তিন মাস ধরে এই অধিবেশন চলে। তবে নিরাপত্তা পরিন বা অধিকাংশ সদস্যরাষ্ট্রের অনুরােধক্রমে মহাসচিব সাধারণ সভার বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করতে পারেন (২০ নং ধারা)। এ ছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের ৯ জন সস্য বা জাতিপুঞ্জের সংখ্যগরিষ্ঠের অনুরােধে মহাসচিব ২৪ ঘন্টার বিজ্ঞপ্তি মারফত ‘বরণ সভার বিশেষ জরুরি অধিবেশন আহ্বান করতে পারেন। অতীতে বহুবার এধরনের ধবেশন আহ্বান করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ১৯৫৬ ও ১৯৫৮ সালে যথাক্রমে স্যুয়েজ ও ছেনি সংকটে, বিশেষ জরুরি অধিবেশন আহ্বান করা হয়। প্রতি বৎসর অধিবেশন : ? তাতে সাধারণ সভা একজন সভাপতি এবং ১৭ জন সহ সভাপতি নির্বাচন
- আরো পড়ুন সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলােচনা কর।
- সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের মহাসচিবের নির্বাচন, কার্যাবলী ও ভূমিকা আলােচনা কর।
- সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সাফল্য ও ব্যর্থতা। মানবাধিকার রক্ষায় জাতিপুঞ্জের ভূমিকা।
ভােটদান পদ্ধতি ও জাতিপুঞ্জের সনদের ১৮(১) নং ধারা অনুসারে সাধারণ সভায় প্রত্যেক সদস্যের একটি করে ভোটদানের অধিকার আছে। সনদের ১৮(১) নং ধারা অনুসারে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সাধারণ সভার উপস্থিতি ও ভােটদানকারী সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন প্রয়ােজন। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা, জাতিপুঞ্জে নতুন সদস্যরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তি, সদস্যপদ বাতিল, নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যদের নির্বাচন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের এবং অছি পরিষদের সদস্যদের নির্বাচন, বাজেট সংক্রান্ত বিষয় প্রভৃতি সাধারণ সভার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলির অন্তর্ভুক্ত। সনদের ১৮(৩) নং ধারা অনুসারে অন্যান্য বিষয়ে সাধারণ সভায় উপস্থিত এবং ভােটদানকারী সদস্যদের অধিকাংশের ভােটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।
সাধারণ সভার ক্ষমতা ও কার্যাবলী :
জাতিপুঞ্জের সনদের ১০ থেকে ১৭ নং ধারাগুলিতে সাধারণ সভার ক্ষমতা ও কার্যাবলী বর্ণিত হয়েছে। সাধারণ সভার কার্যাবলীকে নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করে আলােচনা করা হল।
(১) আলােচনা ও সুপারিশমূলক কাজ ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদে যেসব বিষয়ের উল্লেখ আছে, সাধারণ সভা সেগুলির যে-কোনটি সম্পর্কে আলোচনা করতে পারে। ইভান লুয়ার্ডের (Evan Luard) ভাষায়, বিশ্বে প্রােটিনের অভাব থেকে শুরু করে আগ্রাসনের সংজ্ঞা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ যে-কোন বিষয় এর আলােচনার অন্তর্ভুক্ত। ‘ঘরােয়া ব্যাপারে’ (domestic matter) আলােচনা করার অধিকার সাধারণ সভার নেই। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে-কোন প্রশ্নই সাধারণ সভা আলোচনা করতে পারে। এসব প্রশ্ন আলোচনার পর সাধারণ সভা যে-কোন সদস্য রাষ্ট্র বা নিরাপত্তা পরিষদকে এসব বিষয়ে যে-কোন কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করতে পারে। তবে কোন বিষয় যদি নিরাপত্তা পরিষদের বিচারাধীন থাকে, সেই বিষয় সম্পর্কে নিরাপত্তা পরিষদের অনুরােধ ব্যতীত সাধারণ সভা কোন আলােচনা করতে পারে না।
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভার গঠন, কার্যাবলী ও ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা
(২) আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজ ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা।
রক্ষার মুখ্য দায়িত্ব নিরাপত্তা পরিষদের ওপর ন্যস্ত হলেও, শান্তি ও নিরাপত্তার বিষয়ে আলােচনা ও সুপারিশ করার ক্ষমতা সাধারণ সভার আছে। সনদের ১১(২) ধারা অনুসারে জাতিপুঞ্জের কোন সদস্য, অথবা সদস্য নয় এমন রাষ্ট্র অথবা নিরাপত্তা পরিষদ শাস্তি ও নিরাপত্তা সংরক্ষণের প্রশ্ন সাধারণ সভার আলোচনার জন্য উপস্থিত করতে পারে। এছাড়া ১১(৩) নং ধারায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এরকম পরিস্থিতিতে সাধারণ সভা নিরাপত্তা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখযোগ্য শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বটি প্রধানত নিরাপত্তা পরে হস্তে ন্যস্ত থাকলেও, ১৯৫০ সালে শান্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রস্তাব’ (Uniting for peace Revolution. 1950) গৃহীত হবার পর থেকে সাধারণ সভা এ ব্যাপারে কিছু : এধিকারী হয়ে ওঠে। এই প্রস্তাব অনুয়ায়ী শান্তিভঙ্গ বা আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিন এবং ভেটো প্রয়ােগে অচল নিরাপত্তা পরিষদ শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যর্থ হলে সাধারণ সভা জাতিপুঞ্জের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুরােধক্রমে জরুরি সভা আহ্বান করে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করবে। এই ক্ষমতাবলে সাধারণ সভা ১৯৫৬ সালের সুয়েজ সংকটে এবং ১৯৬০ সালের কঙ্গো সংকটে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
(৩) নিরস্ত্রীকরণ সম্পর্কিত কাজ ও শান্তির সাথে নিরস্ত্রীকরণ ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি কাজ। সাধারণ সভাকে এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সনদের ১১(১) নং ধারায়। এ সম্পর্কে সাধারণ সভা তার সুপারিশ সদস্যবৃন্দকে অথবা নিরাপত্তা পরিষদকে জানাতে পারে।
(s) অর্থনৈতিক কাজ :
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কোষাগারের দায়িত্ব সাধারণ সভার ওপর ন্যস্ত হয়েছে। জাতিপুঞ্জের আয়-ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা করা, জাতিপুঞ্জের বাজেটের বিচার-বিবেচনা ও অনুমােদন করা, সদস্যদের দেয় চাদার পরিমাণ নির্ধারণ করা এবং চাদা বাকি পড়লে সংশ্লিষ্ট সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া—এসবই সাধারণ সভার অর্থনৈতিক কাজের অন্তর্ভুক্ত। যথাসময়ে দেয় অর্থ প্রদান না করলে সাধারণ সভা সংশ্লিষ্ট সদস্যের ভােটাধিকার বাতিল করতে পারে।
(৫) তত্ত্বাবধান সংক্রান্ত কাজ ও নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ, অছি পরিষদ ও কর্মদপ্তরের প্রতিবেদন সাধারণ সভার নিকট পেশ করতে হয়। বর্তমানে প্রতিবেদন পেশ করার বিষয়টি একটি আনুষ্ঠানিক ব্যাপারে পর্যবসিত হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিবেদনের ওপর কোন বিতর্ক হয় না বললেই চলে।
(৬) আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত কাজ ও জাতিপুঞ্জের সনদের ১৩নং ধারায় আন্তর্জাতিক আইনের সংকলন, উন্নতি ও প্রসারে উৎসাহ দান করা সাধারণ সভার কার্য বলে স্বীকৃত হয়েছে। প্রতি বৎসর এখানে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রশ্নে যেসকল প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, সেগুলির অধিকাংশই আন্তর্জাতিক আইনের গুরুত্ব বহন করে। আক্ষরিক অর্থে আইন প্রণয়ন না বলা গেলেও এইসব সিদ্ধান্তের পিছনে এক বিরাট সংখ্যক রাষ্ট্রের সমর্থন থাকায় লটার প্যাক্ট (Lauter Pacht) প্রমুখ বিশেষজ্ঞরা এই ক্ষমতাকে প্রায় আইন-প্রণয়নমূলক (Quasi-Legislative) বলে মনে করেন।
(৭) নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ : সাধারণ সভা কিছু নির্বাচন ও নিয়ােগ সংক্রান্ত কাজও সম্পাদন করে। নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশক্রমে সাধারণ সভা জাতিপুঞ্জের নতুন সদস্য রােগ করে, মহাসচিবকে এবং আন্তর্জাতিক বিচারালয়ের সদস্যদের নির্বাচন করে। এছাড়া হনতিক ও সামাজিক পরিষদের সদস্যদের, নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যদের, আছি পরিদের কয়েকজন সদস্যকে সাধারণ সভা এককভাবে নির্বাচন করে।
(৮) সনদ সংশােধন সংক্রান্ত কাজ ও সাধারণ সভার সনদ সংশােধন সংক্রান্ত কাজটিও সনদ সংশােধনের প্রস্তাব কার্যকরী হতে গেলে নিরাপত্তা পরিষদের fল : স্যের সমর্থন এবং সাধারণ সভার উপস্থিত ও ভােটদানকারী সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ কর্তিক অনুমােদন প্রয়ােজন।
(৯) বিবিধ কার্যাবলী : উপরােক্ত কার্যাবলী ছাড়াও আন্তর্জাতিক সহযােগিতা বৃদ্ধি, উপনিবেশিকতা নিরসন, বর্ণবৈষম্য দূরীকরণ, আন্তর্জাতিক আইনের বিধিবদ্ধকরণ, মানবিক অধিকারের প্রসারণ এবং বাস্তবায়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে সুস্থ আন্তর্জাতিক পরিবেশ সৃষ্টি—ইত্যাদি ব্যাপারে সাধারণ সভা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
● সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভার ভূমিকার মূল্যায়ন :
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বৃহত্তম সংস্থা হিসাবে সাধারণ সভার গুরুত্ব অপরিসীম। ডঃ রাধারমণ চক্রবর্তীর মতে, “সাধারণ সভার মধ্যেই সংগঠনের বিশ্বজনীন চরিত্রটি প্রতিফলিত হয়। সাধারণ সভাই একমাত্র মঞ্চ যেখানে জাতিপুঞ্জের সমস্ত সদস্যের পক্ষে সমমর্যাদার ভিত্তিতে স্বাধীন মতবিনিময়ের সুযোগ পাওয়া সম্ভব।
আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকায় সাধারণ সভার কার্যাবলীর কোন আইনগত মূল্য নেই সত্য, কিন্তু বাস্তবে এর প্রস্তাবগুলিকে উপেক্ষা করা সহজ নয়, কারণ এর প্রতিটি প্রস্তাব বিশ্বের সর্বাধিক রাষ্ট্রের বিপুল সমর্থন নিয়ে গৃহীত হয়। এছাড়া, বৃহৎ শক্তিগুলির মাতব্বরি এড়িয়ে সকল দেশের অভিমত যেহেতু এখানে সমানভাবে ব্যক্ত হতে পারে, সেহেতু সাধারণ সভায় বিশ্ববিবেকের (conscience of the world) কার্যকরী প্রকাশ ঘটে। বাস্তবিকপক্ষে এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার উন্নতিকামী দেশগুলি এখানে তৎপরতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে বলে জাতিপুঞ্জ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া প্রভাব থেকে কিছুটা বেড়িয়ে আসতে সমর্থ হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে মতবিরােধ এবং বৃহৎ পঞ্চশক্তি কর্তৃক ভেটো প্রয়ােগের ফলে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়, সাধারণ সভার মাধ্যমেই সেই অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়। এচিসন পরিকল্পনার (Acheson Plan) ওপর ভিত্তি করে সাধারণ সভা কর্তৃক ১৯৫০ সালের ৩রা নভেম্বর শান্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রস্তাব’ (Uniting for Peace Resolution) গৃহীত হলে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব অনেকাংশে সাধারণ সভার ওপর বর্তায়। বস্তুতপক্ষে কোরিয়া, কঙ্গো, প্যালেস্তিন ইত্যাদি সমস্যা মােকাবিলায় সাধারণ সভা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এতদসত্ত্বেও সাধারণ সভার বাস্তবে কোন কার্যকর ভূমিকা নেই, কারণ নিজ সিদ্ধান্তকে কার্যকর করার কোন ক্ষমতা সাধারণ সভার নেই। এর ক্ষমতা সুপারিশমূলক (Recommendatory)। নিকোলাস (Nicholas) যথার্থই মন্তব্য করেছেন, প্রচারের জন্যই সাধারণ সভার সৃষ্টি। ব্যক্তিগত মধ্যস্থতা ও আলাপ-আলােচনার মধ্যেই এর ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। গুডরিচ (Goodrich) বলেছে, বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা অবলম্বনের পরিবর্তে বর্তমানে বিতর্ক ও আলােচনার ক্ষেত্র হিসাবেই সাধারণ সভার ভূমিকা স্বীকৃতি পেয়েছে।
তবে সাধারণ সভাকে কেবলমাত্র বিতর্কসভা (debating society) বা প্রচার মাধ্যম। হিসাবে গণ্য করলে এর গুরুত্বকে খাটো করা হবে। বিশ্বজনমত গঠন, আন্তর্জাতিকতার প্রসার, আন্তর্জাতিক উত্তেজনা প্রশমন ও আন্তর্জাতিক সহযােগিতা বৃদ্ধিতে সাধারণ সভার ভূমিকাকে কোন মতেই অস্বীকার করা যায় না। এই সংস্থার কণ্ঠস্বর হল বিশ্ব-বিবেকের কণ্ঠস্বর।