ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা

 ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা। ইলিয়াস গল্পের বিষয়-সংক্ষেপ।

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর

ইলিয়াস-গল্পের-প্রশ্ন-উত্তর-নবম-শ্রেণী-বাংলা-ইলিয়াস-গল্পের-বিষয়-সংক্ষেপ

 

ইলিয়াস গল্পের বিষয়বস্তু

ধনী হওয়া : ইলিয়াসের বাস উফা প্রদেশে। ইলিয়াসের বিয়ের এক বছর পরে তার বাবা মারা যায়। তখন তার যা বিষয়সম্পত্তি তাতে তাকে ধনী বা গরিব বলা যায় না। তার সম্বল তখন সাতটি ঘােটকী, দুটি গােরু, কুড়িটা ভেড়া মাত্র। তাদের স্বামীস্ত্রীর পরিশ্রমের ফলে প্রতি বছর অবস্থার উন্নতি হতে হতে পঁচিশ বছরে তারা প্রচুর সম্পত্তির মালিক হয়ে যায়। দুশাে ঘােড়া, দেড়শাে গােরু-মােষ, বারােশাে ভেড়া। সেগুলি দেখভালের জন্য মজুর, আর দুধ দোয়া, কুমিস, মাখন, পনির বানানাের জন্য মজুরানি রাখতে হয়। পড়শিরা তাকে ঈর্ষা করে, আবার ভাগ্যবান বলে ইলিয়াসের মনও জোগায়।

সব হারিয়ে হতদরিদ্র : অবস্থা ভালাে হলে যা হয়, ভালাে লােকের সঙ্গে পরিচয় ঘটে, দূর দূর থেকে অতিথিরা আসে। তাদের পরিচর্যায় খানাপিনার ধুম চলে। ইলিয়াসের দু-ছেলে এক মেয়ে। ধনী হওয়ায় তারা আয়েশি হয়ে পড়ে। বড়াে ছেলে মারামারিতে পড়ে মারা যায়। ছােটো ছেলে বাপের আদেশ অমান্য করায় বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়। অবশ্য ইলিয়াস তাকে একটা বাড়ি ও কিছু গােরু-ঘােড়াও দেয়, কিন্তু শেষমেশ সে দূরদেশে চলে যায়। মেয়েটিও মারা যায়। মড়কে- দুর্ভিক্ষে পালিত পশুগুলি মরতে থাকে, ভালাে ঘােড়া চুরি হয়ে যায়। অবশিষ্ট পশু বিক্রি হয়ে যায়। সম্বল বলতে থাকে এক লােমের টুপি, কোট আর জুতাে।

 

ভাড়াটে মজুৱ-মজুৱানি : বুড়াে ইলিয়াস আর বুড়ি শামশে মাগি পড়শি মহম্মদ শার বাড়িতে ভাড়াটে মজুর ও মজুরানি হয়ে কাজ করতে থাকে। প্রথমে কাজ করতে বেশ কষ্ট হতাে, পরে পরে সব সয়ে যায়। এদের রেখে মহম্মদ শার সুবিধেই হয়। এরা কর্মঠ ও অভিজ্ঞ ।

ইলিয়াসদেৱ বর্তমান জীবন সম্পর্কে জ্ঞাতব্য : মহম্মদ শার বাড়িতে একদিন অনেক দূর থেকে আত্মীয়রা এল। তারা খাওয়াদাওয়ার পর কুশনে বসে কুমিস পান করছিলেন, এমন সময় ইলিয়াস কাজ শেষ করে দরজার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, তার পরিচয় দেয় মহম্মদ শা। বলে যে, ওই বুড়াে হলাে এই অঞ্চলের একসময়ের ধনী ও নামকরা মানুষ ইলিয়াস। দুঃখ প্রকাশ করে অতিথি মন্তব্য করেন যে, ভাগ্যচক্রে কার কখন কী ঘটে বলা যায় না। অতিথি ইলিয়াসের সঙ্গে কথা বলতে চান। মহম্মদ শার ডাকে ইলিয়াস ও তার স্ত্রী আসে। অতিথি জানতে চান, ইলিয়াস অতীতের সুখসমৃদ্ধি আর এখনকার দুরবস্থার কথা ভেবে কষ্ট পায় কি না। ইলিয়াস সবিনয়ে বলে যে, তাঁর এ কথার যথার্থ উত্তর দিতে পারবে তার বৃদ্ধা স্ত্রী শাম-শেমাগি।

দুশ্চিন্তামুক্ত সুখী জীবন : বৃদ্ধার উত্তর হলাে তারা পাশ বছর একসঙ্গে বাস করছে। যখন তাদের সমৃদ্ধি ছিল তখন তারা সুখ খুঁজে সুখ পায়নি। এখন ভাড়াটে মজুর-জীবনে পেয়েছে। সুখ। বুড়ি পর্দা সরিয়ে স্বামীর দিকে তাকিয়ে হাসল, তার স্বামীও হাসল। ফের বলল, তারা যথার্থ সুখ পেয়েছে, আর কিছুই চায় না। যখন তারা ধনী ছিল, তখন উদবেগ ছিল, দুশ্চিন্তা ছিল, দিন-রাত্তির খেটে মরতে হতাে, রাতে ঘুম হতাে না, বুড়াের সঙ্গে মতবিরােধ হওয়ায় দ্বন্দ্ব-কলহ হতাে। এক দুর্ভাবনা থেকে আরএক দুর্ভাবনায় দিন কাটত, এক পাপ থেকে আর-এক পাপে জড়িয়ে যাওয়া হতাে। এখনকার সুখী জীবনে সেগুলির স্পর্শমাত্র নেই। এখন তাদের একমাত্র কাজ মালিকের সেবা করা। তাতে বুড়াে-বুড়ির লাভ বই ক্ষতি নেই। তাদের এখন আত্মা-বিষয় ভাববার, ঈশ্বরের প্রার্থনা করার সময় আছে। পঞ্চাশ বছরের চাওয়া সুখ এতদিনে মিলেছে। –

ইলিয়াস প্রশ্ন ও উত্তর

সুখী জীবনের উপলব্ধি : অতিথিরা হেসে উঠতে বুড়াে ইলিয়াস বলল যে, এটা হাসি বা তামাশার কথা নয়। এটাই তাদের জীবন। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী যখন অবুঝ ছিল তখন সম্পত্তি হারিয়ে তারা কেঁদেছিল । ঈশ্বরের কৃপায় তাদের কাছে এখন সত্য উন্মুক্ত অতিথিদের কল্যাণের জন্য তারা তাদের উপলব্ধির কথা বলেছে। তাদের মধ্যে একজন মােল্লা ছিলেন, তিনি সমর্থন করে বললেন  যে, সবই সত্য এবং পবিত্র গ্রন্থে তা মুদ্রিত আছে। এটি অবশ্যই অতিথিদের ভাবার বিষয়।

ইলিয়াস গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

 

প্রশ্ন ) ইলিয়াস’ গল্পের কাহিনি অতিসংক্ষেপে আলােচনা কৱে গল্পের ইলিয়াস’ নামকরণ যথাযথ ও সার্থক হয়েছে কী না লেখাে। [৩+২]

 

উত্তরঃ

 গল্পের নামকরণ নানাভাবে হয় । ‘ইলিয়াস’ গল্পের ইলিয়াস প্রধান চরিত্র। সে নাম-ভূমিকায়। তার নাম অনুসারে গল্পের নাম দেওয়া যথাযথ ও সার্থক হয়েছে কী , তা বিচার্য বিষয়।

 

  উফা প্রদেশের বাসিন্দা ইলিয়াসের বিয়ের এক বছর পরে তার বাবা মারা যায়। তখন সে ধনী বা গরিব ছিল না। ছিল মােটামুটি সম্পত্তির মালিক। তারপর স্বামী-স্ত্রীর কঠোর পরিশ্রমে আর সুব্যবস্থায় তারা ক্রমশ উন্নতি করে ধনী হয়ে যায়। আবার ভাগ্যচক্রে তারা সম্পদ হারাতে হারাতে একসময় সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। প্রতিবেশী মহম্মদ শার কৃপায় তার বাড়িতে ভাড়াটে মজুর ও মজুরানি হয়ে তারা জীবন চালাতে থাকে। মহম্মদ শার আত্মীয় অতিথিদের কাছে তাদের বর্তমান জীবনের ছবিটি তুলে ধরে। প্রকৃতপক্ষে তারা সম্পদহীন ও নিঃস্ব হয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছে। তাদের অবসর আসায় তারা জীবন চালাতে আত্মা নিয়ে ভাববার ফুরসত পেয়েছে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার অবকাশ মিলেছে। তারা এতদিন সুখ খুঁজে পায়নি, এখন সুখ পেয়েছে। ঈশ্বর তাদের কাছে সত্য উন্মুক্ত করেছেন।

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর বড় প্রশ্ন

 নামকরণ : গল্পের কাহিনি পর্যালােচনায় দেখা গেল, গল্পের যা কিছু ঘটনা তা ইলিয়াসকেন্দ্রিক। গল্পের 1 ভাববস্তু ইলিয়াসকে ঘিরে। কাজেই ইলিয়াস গল্পের কেন্দ্রীয় ও | মুখ্য চরিত্র। সুতরাং গল্পের নাম ‘ইলিয়াস’ রাখা যথাযথ ও সার্থক।

 

প্রশ্ন )  ইলিয়াস কীভাবে ধনী হয়েছিল, ধনী হয়েও সে ও তার স্ত্রী প্রকৃতপক্ষে কেন সুখী ছিল না, আলােচনা কর। 

 

উত্তরঃ

 

 ধনী হওয়া : উফা প্রদেশের বাসিন্দা ইলিয়াস ছিল একজন বসকির। তার বিয়ের এক বছর পরে তার বাবা মারা যায়। তখন তার অবস্থা ছিল মােটামুটি, না ধনী না গরিব। 

 

 সেই অবস্থা থেকে ক্রমে উন্নতি করতে করতে পঁয়ত্রিশ বছরের কঠোর পরিশ্রম আর সুব্যবস্থায় ইলিয়াস ধনী হয়ে যায়। তখন । তার সম্পত্তি হয় দুশাে ঘােড়া, দেড়শাে গােরু-মােষ, আর বারােশাে থা ভেড়া। ওদের দেখভাল করে ভাড়াটে মজুর-মজুরানি। ইলিয়াসের তখন খুব নামডাক, বােলবােলাও। লােকজন, অতিথির আসা-যাওয়া শুরু হয়েছে। ইলিয়াস অতিথি সেবাপরায়ণ। তাদের সকলকেই স্বাগত জানিয়ে যত্ন করে অতিথিসেবা করে। এই অতিথি সমাগম, তাদের আপ্যায়ন, এই মন, এই আভিজাত্য—সবই ধনী হয়ে ওঠার অঙ্গ।

 

 সুখী না হওয়ার কারণ : কিন্তু মজার ব্যাপার, অঢেল সম্পদও সুখ দেয় না। ইলিয়াস যখন গরিব ছিল ছেলেমেয়েরা । তখন কাজে সাহায্য করত। গােরু-ভেড়া চরাত। অবস্থাপন্ন । হতেই তারা হলাে আয়েশি। বড়াে ছেলেটা মারামারির মধ্যে মারা গেল। ছােটো ছেলের বউ ঝগড়াটে, তা ছাড়া তারা বাপের কথা অমান্য করে। কাজেই তারা বাড়ি থেকে বিতাড়িত দা হলাে। একে সংসারে এই অশান্তি, তার ওপর পালিত পশুগুলি নিয়ে নানা দুশ্চিন্তা। রাত্রিতে স্বচ্ছন্দে ঘুম হয় না। লােকনিন্দার । ভয়ে অতিথিদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। মজুরদের দিকে ত নজর রাখতে হয়, যাতে তারা কাজে ফাঁকি দিতে না পারে। ঘােড়ার ও গােরুর বাচ্চা যাতে নেকড়েতে না নিয়ে পালায় সেজন্য সতর্ক থাকতে হয়। ঘােড়া যাতে না চুরি হয়ে যায় সেজন্য সজাগ থাকতে  হয়। এরকম হাজারাে দুশ্চিন্তায় সময় কাটে। সেজন্য সুখ তাদের অধরা থেকে যায়। 

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্নঃ) ইলিয়াস বিশাল সম্পদের মালিক থেকে কীভাবে নিঃস্ব হলাে তা আলােচনা করাে। মহম্মদ শাৱ বাড়িতে তাদের স্বামী-স্ত্রীকে কী কৱতে হতাে লেখাে।

 

উত্তর : বিশাল সম্পদের মালিক হয়েও নিঃস্ব Kওয়া : ইলিয়াস ছােটো ছেলেকে তার স্ত্রী-সহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। তবু তাকে একটা বাড়ি ও কিছু গােরু-ঘােড়া দেয়। তাতে তার সম্পত্তিতে কিছুটা টান পড়ে। তারপরে অনেকগুলি ভেড়া মরে যায় মড়কের কবলে পড়ে। পরের বছরই আকাল নেমে আসে। খড়ের অভাবে খাদ্য না পেয়ে অনেক গােরু-মােষ মারা যায়। ভালাে ঘােড়াগুলি চুরি করে পালায় কিরবিজরা। ইলিয়াসের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হয়ে পড়ে। একদিকে তার অবস্থা পড়তে থাকে। আর-এক দিকে তার শারীরিক শক্তিও কমতে থাকে। এইভাবে সত্তর বছর হলে সে বিক্রি পশমের কোট, কল, ঘােড়ার জিন, তাঁবু আর অবশিষ্ট গৃহপালিত পশুগুলি। এইভাবে দুরবস্থার চরম অবস্থা হয় তার। এককথায় সর্বহারা হয়ে পড়ে। থাকে শুধু কাঁধে একটা বোঁচকা। তাতে থাকে শুধু একটা লােমের তৈরি কোট, টুপি, জুতাে আর বুট।

 

 মানবের বাড়িতে কাজ : প্রতিবেশী মহম্মদ শার বুড়ােবুড়ি ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর প্রতি করুণা হয়। দুজনকেই তার বাড়িতে কাজ করার জন্য মহম্মদ শা ডাকেন। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী ভাড়াটে মজুর ও মজুরানি হয়ে মহম্মদ শার বাড়িতে কাজ করতে থাকে। ইলিয়াসকে গ্রীষ্মে তরমুজের খেতে কাজ করতে হয়। শীতে মাঠের কাজ নয়, ঘরের গােরু-ঘােড়াগুলিকে খাওয়াতে হয়।তার স্ত্রী শাম-শেমাগি ঘােটকীগুলিকে দোয় আর কুমিস তৈরি করে।

 

প্রশ্ন ।। ‘দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না।’-কাৱ উক্তি এবং কী প্রশ্নের জবাবে বক্তা এ কথা বলেছে? তাদেৱ দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না কেন? 

 

উত্তর: এই উক্তি ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগির। তাকে অতিথি জিজ্ঞেস করেছিল যে, কী কারণে তাদের এখন সুখ হচ্ছে।

 

তারই জবাব দিতে গিয়ে শাম-শেমাগি তাদের দুশ্চিন্তার কথায় এসে যায়।

 

বহুবিধ দুশ্চিন্তা : যখন তারা ধনী ছিল, তখন তার বা তার স্বামীর এক মুহূর্তের জন্য শান্তি ছিল না। কথা বলবার সময়টুকুও ছিল না। অন্তরের কথা ভাববাব বা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনার সময় ছিল না। কেবল দুশ্চিন্তা তাদের তাড়া করত। দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। দুশ্চিন্তা ছিল নানা কারণে। 1 অতিথি এলে তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা। তাকে খাওয়ানাে, উপহার দেওয়া—এই নিয়ে ভাবনা, কারণ লােকনিন্দার ভয় ছিল। 2  মজুর খাটানাে নিয়ে দুশ্চিন্তা। তারা যেমন কম খেটে বেশি খেতে ব্যস্ত, তেমনি তাদের ওপর কড়া নজর রেখে বেশি খাটিয়ে নেওয়াতে পাপ।  3 গােরু ও ঘােড়ার বাচ্চাগুলিকে নিয়ে দুর্ভাবনা। নেকড়েয় নিয়ে গেল কি না। 4 ঘােড়াগুলিকে চোরে নিয়ে গেল কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তা। 5 রাতে ঘুমােতে গিয়ে দুশ্চিন্তা। ভেড়ি ছানাগুলিকে চেপে মেরে ফেলল কি না। সেই ভাবনায় সারারাত ঘুমই হলাে না। 6 একটা দুশ্চিন্তা থেকে আর-একটা দুশ্চিন্তা। তা হলাে শীতের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ খড় আছে কি না। 7 স্বামী বুড়াে ইলিয়াসের সঙ্গে মতবিরােধ। তার মতের সঙ্গে মতের { মিল না হলেই ঝগড়া। এইজন্যই ইলিয়াস ও শাম-শেমাগির দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না।

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর

ইলিয়াস

প্রশ্নঃ)  লিও তলস্তয়ের লেখা ইলিয়াস’ গল্প অবলম্বনে ইলিয়াস চৱিত্ৰ আলােচনা করাে। 

 

প্রস্তাবনা : ইলিয়াস লিও তলস্তয়ের লেখা একটি বিখ্যাত গল্প। এই গল্পের প্রধান চরিত্র ইলিয়াস। এই নাম অনুসারে লেখক গল্পের নাম দিয়েছেন ইলিয়াস’। ইলিয়াস সাধারণ শ্রেণির একজন বাকির হলেও তার মধ্যে নানা গুণের সমাবেশ হয়েছে। তা তাকে সাধারণের মধ্যে অসাধারণ করেছে।

 

পরিশ্রমী : ইলিয়াস কঠিন পরিশ্রমী। এই কর্মঠ মানুষটি স্ত্রীকে নিজের কাজের সঙ্গী করে সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত কঠিন শ্রম করে। ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি করতে করতে পঁয়ত্রিশ বছরের চেষ্টায় তাদের অঞ্চলের সবচেয়ে ধনী হয়ে যায়। ফলে তার নামডাক ও প্রতিপত্তি হয়। সবই কঠোর শ্রমের ফল।

 

অতিথিপরায়ণ : ইলিয়াস অতিথিপরায়ণ। সকলকেই স্বাগত জানিয়ে সে তাদের ভােজ্য পানীয় দিয়ে সেবা করে।

 

চুপচাপ ও শান্ত প্রকৃতি : ইলিয়াস চুপচাপ শান্ত প্রকৃতির মানুষ। তার গৃহস্বামী মহম্মদ শার কথায় তা পরিষ্কার। খুব চুপচাপ আর শান্ত হয়ে থাকে।

 

স্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস : সে বিশ্বাস করে পুরুষের চেয়ে মেয়েরা পুরাে সত্য বলতে পারে। তার মনেও যা মুখেও তাই। তাদের অতীত জীবনের সুখ-সমৃদ্ধির কথা স্মরণ করে ও বর্তমান দুরবস্থার কথা ভেবে তারা দুঃখকষ্ট পায় কি না, এ প্রশ্নের জবাব তার স্ত্রীর কাছ থেকে জানার পরামর্শ দেয় ইলিয়াস।

 

প্রভুসেবা : ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর বর্তমানে একমাত্র কাজ হলাে প্রভুর সেবা করা। কাজে তাদের ফাঁকি দেওয়ার অভ্যাস নেই। আন্তরিকভাবে কাজ করে। এরকমই কর্তব্যপরায়ণ।

 

সুখ কৱায়ত্ত : সর্বোপরি নিঃস্ব হয়ে সে এবং তার স্ত্রী সত্য উপলব্ধি করেছে। তারা যে সুখ পঞ্চাশ বছর ধরে খুঁজেছে তা এখন পেয়েছে। তাদের চাওয়ার সেই সময় এসেছে। তারা এখন উদবেগহীন। দুশ্চিন্তাশূন্য মনে আত্মাআলােচনা করতে পারছে। ঈশ্বর-উপাসনার সময় পেয়েছে। এর থেকে পরম সুখ তাদের কাছে আর কী হতে পারে। স্বামীস্ত্রীর এই একপ্রাণ, একতা ও একই পথের সহযাত্রী হয়ে চলা, লক্ষণীয় বিশেষত্ব।

 

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন )  ‘অতিথিৱা হেসে উঠল।—অতিথিৱা কাৱ কী কথা শুনে হেসে উঠলেন? ইলিয়াস সেজন্য কী বলল? 

 

: উত্তর : বিশ্বখ্যাত লেখক লিও তলস্তয়ের রচিত ‘ইলিয়াস গল্পের প্রধান চরিত্র ইলিয়াস। তার স্ত্রী শাম-শেমাগি। তার কথা শুনে অতিথিরা হেসে উঠলেন। সে বলল যে, তারা স্বামী-স্ত্রী এখন সকালে একসঙ্গে বিছানা ছেড়ে ওঠে। এখন তাদের অবকাশ অনেক। তারা স্বচ্ছন্দে দুটো সুখ-দুঃখের কথা বলে। তাদের মধ্যে ঝগড়া নেই, দুশ্চিন্তা নেই। তাদের একমাত্র কাজ হলাে মনিবের  সেবা করা। স্বেচ্ছামতাে যতটুকু ক্ষমতায় কুলােয় তা করে। তারা বুঝেছে তাদের লাভ ছাড়া লােকসান নেই। মনিবের বাড়ির কাজেই ‘ এসে খাবার ও কুমিস পায়। ও নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। তা ছাড়া শীতকালে পায় লােমের তৈরি গরম পােশাক, কোট। আগুন জ্বালানাের জ্বালানি। আত্মার কথা আলােচনা ও ঈশ্বরের প্রার্থনা করার জন্য এখন তাদের অঢেল সময়। পঞ্চাশ বছর ধরে খুঁজে পাওয়া সুখ তারা এতদিনে পেয়েছে।

 

অতিথিরা শাম-শেমাগির কথা শুনে হেসে উঠলেন। ইলিয়াস অতিথিদের ‘বন্ধু’ সম্বােধন করে শাম-শেমাগির কথা যে হাস্যকর ও তামাশার বিষয় নয় তা বললেন। এটাই হলাে মানুষের জীবন। তারা যতদিন অবুঝ ছিল সম্পত্তি হারিয়ে চোখের জল ফেলেছে। – তারা সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে ঈশ্বরের কৃপায় তাদের প্রকৃত সত্য  উপলদ্ধি করেছে। এ কথা তামাশার নয়। হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করলে অতিথিদের কল্যাণই হবে।

 

 

প্রশ্ন )  ‘এই সম্পন্ন মানুষ দুটি দুৱবস্থা দেখে মহম্মদ শাৱ দুঃখ হতাে।–সম্পন্ন মানুষ দুটি কে কে? মহম্মদ শাৱ পরিচয় দাও। তার মনের দুঃখ নিরসনের জন্য তিনি কী করলেন? 

 

উত্তর : : সম্পন্ন মানুষ দুটি : এককালে সম্পন্ন মানুষ  দুটি হলেন লিও তলস্তয়ের ‘ইলিয়াস’ গল্পের নায়ক ইলিয়াস ও তাঁর স্ত্রী শাম-শেমাগি।

 

 মহম্মদ শাৱ পরিচয় : মহম্মদ শা ছিলেন ইলিয়াসের  প্রতিবেশী। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী এককালে সম্পন্ন ছিল, বর্তমানে নিঃস্ব ও সহায়-সম্বলহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। মহম্মদ শা তাদের প্রতি করুণাপরায়ণ। সহায়-সম্বলহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে মহম্মদ শা স্বেচ্ছায় তাঁর বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের মতাে কাজের ও তাদের খাওয়াপরার নিশ্চিত ব্যবস্থা করে দেন। অথচ মহম্মদ শা ধনী নন, গরিবও নন। ভালাে মানুষ। দুঃখীর দুঃখং বােঝেন। তাদের প্রতি সমব্যথী। অতিথিবৎসল। উদার  মনের মানুষ।

 

দুঃখ-কষ্ট নিরসনের চেষ্টা : মহম্মদ শা অপরের দুঃখে দুঃখী ও সমব্যথী বলেই ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর দুঃখ-কষ্ট দূর করার জন্য নিজের বাড়িতে কাজের ব্যবস্থা করে দেন। ইলিয়াস গরমের দিনে তরমুজের খেত দেখভাল করবে। শীতের দিনে গােরু-ঘােড়াগুলিকে খাওয়াবে। বুড়ি শাম-শেমাগি ঘােটকীগুলিকে দুইবে আর কুমিস বানাবে। অবশ্য তারা তাদের সাধ্যমতাে কাজকর্ম করবে। কাজের বিনিময়ে তারা খাওয়াপরার খাদ্য ও পােশাক পাবে।

 প্রশ্ন ) শুনে অতিথিৱা ভাবতে বসল । অতিথিৱা কী শুনলেন? তারা ভাবতে বসলেন। কেন?

 

উত্তর : অতিথিদেৱ শ্রবণ : ইলিয়াসের স্ত্রী শাম, শেমাগির মুখে তাদের সম্পদের মােহমুক্ত জীবনে আত্মােপলপি কথা শুনে অতিথিরা হেসে উঠেছিলেন। তাঁদের কাছে এই জীবনকাহিনি ছিল অবাস্তব। তারা ওর সত্যতাকে মেনে নিতে। পারেননি। কিন্তু মােল্লাসাহেব আত্মােপলব্ধির ঘটনাকে স্বীকৃতি দিয়ে তা যে জ্ঞানগর্ভ তা বলেন। আরও বলেন যে সবই সত্য এবং পবিত্র গ্রন্থের রচনাতুল্য। অতিথিরা কথা শুনলেন।

 

ভাবতে বসার কারণ : অতিথিরা ভাবতে বসলেন, কারণ মােল্লাসাহেবের স্বীকৃতি দান ও সত্য বলে মেনে নেওয়া এবং পবিত্র গ্রন্থের রচনাতুল্য—এই মন্তব্য তাঁদের ভাবিয়ে তুলল। তাঁরা জানেন মােল্লা সাহেব জীবন অভিজ্ঞতায় তাঁদের মতাে সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা। তিনি ঈশ্বর চিন্তায় ভাবিত মানুষ। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন সম্পদের বন্ধনে ও মােহগ্রস্ততায় আধ্যাত্মিক ভাবনায় ভাবিত হওয়া যায় না। সম্পদ থেকে নিরাসক্ত হয়ে মােহমুক্ত মনে আত্মােপলদ্ধি সম্ভব। তাতে ঈশ্বর চিন্তায় মগ্ন হওয়ার পথ খুলে যায়। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী কঠিন জীবন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আত্মােপলব্ধির স্তরে পৌছােতে সক্ষম হয়েছে। ওইজন্য পেয়েছে বহুদিনের চাওয়া সুখ ও শান্তির সন্ধান। সত্যের দ্বার গেছে খুলে। ঈশ্বর সাধনার অবকাশ পেয়েছে অঢেল।

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর

ইলিয়াস গল্পের ছোট প্রশ্ন উত্তর

 

 

নীচের প্রশ্নগুলির প্রতিটির উত্তর কমবেশি পনেরােটি শব্দের মধ্যে লেখাে : :

 

প্রশ্ন- ‘ইলিয়াস’ গল্পটির লেখক কে?

 

উত্তর: বাংলায় অনূদিত ‘ইলিয়াস’ গল্পটির মূল লেখক হলেন বিখ্যাত রুশ সাহিত্যিক লিও তলস্তয়।

 

প্রশ্ন – ইলিয়াস’ গল্পটি বাংলায় অনুবাদ কে করেন?

 

উত্তর: রুশ ভাষায় লেখা ‘ইলিয়াস’ গল্পটি বাংলায় সাবলীল ও সুখপাঠ্য ভাষায় অনুবাদ করেছেন মণীন্দ্র দত্ত।

 

প্রশ্ন: উফা প্রদেশে কে বাস কৱত?

 

উত্তর: উফা প্রদেশে বাস করত ইলিয়াস নামে পশুপালক বাকি উপজাতির এক মানুষ।

 

প্রশ্ন) – একজন বাসকিৱ বাস করত। বাসকিৱ’ কী?

 

 বাসকির কৃষিজীবী উপজাতি হলেও পশুপালন তাদের প্রধান জীবিকা।

 

প্রশ্ন  ইলিয়াসের বাবা কখন মারা গিয়েছিল?

 

উত্তর : ইলিয়াসের বিয়ে হওয়ার এক বছর পরে তার বাবা মারা গিয়েছিল।

 

প্রশ্ন-  ইলিয়াসের বাবা যখন মারা গেল তখন তার সম্পত্তি কত ছিল?

 

উত্তর; ইলিয়াসের বাবা যখন মারা গেল তখন তার সম্পত্তি ছিল সাতটা ঘােটকী, দুটি গােরু, কুড়িটা ভেড়া।

 

প্রশ্ন – প্রতি বছৱই ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতি হতে লাগল কেন?

 

উত্তর : প্রথমত, ইলিয়াসের সুব্যবস্থা ; দ্বিতীয়ত, তাদের স্বামী; স্ত্রীর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করা।

 

প্রশ্ন – ইলিয়াস কীভাবে প্রচুৱ সম্পত্তি কৱে ফেলল?

 

উত্তর : সুব্যবস্থার সঙ্গে পঁচিশ বছর ধরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর কঠোর পরিশ্রম।

 

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন – পঁয়ত্রিশ বছর পৱে ইলিয়াসের সম্পত্তি কত হলাে?

 

: উত্তর : পয়ত্রিশ বছর পরে ইলিয়াসের সম্পত্তি হলাে দুশো ঘােড়া, দেড়শাে গােরু-মােষ আর বারােশাে ভেড়া।

 

প্রশ্ন – ভাড়াটে মজুৱ ও মজুৱানিরা কী করে? 

 

উত্তর : ভাড়াটে মজুররা গােরু-ঘােড়ার দেখভাল করে ও মজুরানিরা দুধ দোয়, কুমিস, মাখন আর পনির তৈরি করে।

 

 

প্রশ্ন – আশপাশেৱ সকলে তাকে ঈর্ষা কৱে কেন?

 

উত্তর; কারণ ইলিয়াসের প্রচুর সম্পত্তি আর তখন তার খুব বােলবােলাও, সেজন্য আশপাশের সকলে তাকে ঈর্ষা করে।

 

 প্রশ্ন – যাৱা ইলিয়াসকে ঈর্ষা করে, তাৱা ইলিয়াস সম্পর্কে কী বলে?

 

উত্তর : যারা ইলিয়াসকে ঈর্ষা করে, তারা বলে, ইলিয়াস ভাগ্যবান পুরুষ হওয়ায় কোনাে কিছুরই অভাব নেই।

 

প্রশ্ন- ইলিয়াস অতিথিদের কি ভাবে আপ্যায়িত করে?

 

উত্তর : ইলিয়াস সকল অতিথিকে স্বাগত জানিয়ে ভেড়া ও ঘােটকীর মাংস ভােজ্য ও কুমিস পানীয় দিয়ে সেবা করে ।

 

প্রশ্ন – অতিথি এলেই ইলিয়াস তাদেৱ মাংস ভােজের জন্য কী করে?

 

উত্তর; অতিথি এলেই তাদের মাংসভােজের জন্য ইলিয়াসএকটা বা দুটি ভেড়া মারে ; আবার অতিথির সংখ্যা বেশি হলে ঘােটকীও মারে।

 

প্রশ্ন – ইলিয়াসেৱ পরিবাৱে কাৱা আছে?

 

উত্তর : ইলিয়াসের পরিবারে তারা স্বামী-স্ত্রী ছাড়া দুই ছেলে, এক মেয়ে ; তা ছাড়া দুই ছেলের স্ত্রীরা আছে।

 

২১৭ ইলিয়াস যখন গৱিব ছিল তার ছেলেরা তখন কি করতে?

 

উত্তর : ইলিয়াস যখন গরিব ছিল তার ছেলেরা তার সঙ্গে কাজ করত ও গােরু-ভেড়া চরাত।

 

(উত্তর: ইলিয়াস ধনী হয়ে উঠলে তার ছেলের আয়েশি উঠল এবং বড়াে ছেলে মারামারিতে মারা গেল, ছােটো ছেলে এক ঝগড়াটে বউ এলে শান্তি করল।

 

প্রশ্ন – ইলিয়াসের ছেলেমেয়েদের কী হলাে?

 

উত্তর; ইলিয়াসের বড়াে ছেলে মারামারিতে পড়ে মারা গেল ছােটো ছেলে বাড়ি থেকে বিতাড়িত হলাে ও দূর দেশে চলে গেল মেয়ে মারা গেল।

 

 প্রশ্ন- ইলিয়াসের অনেকগুলি ভেড়া মারা গেল কেন?

 

উত্তর; ইলিয়াসের অনেকগুলি ভেড়া মারা গেল এই কারণে যে, ভেড়ার পালে মড়ক লাগল।

 

প্রশ্ন – সে-বছৱ শীতকালে অনেক গােরু-মােষ মারা গেল কেন?

 

উত্তর : সে-বছর দুর্ভিক্ষ হওয়ায় শীতকালে খড়ের খুব অভাব হওয়ায় খেতে না পেয়ে অনেক গােরু-মােয মারা গেল।

 

 প্রশ্ন:-কিৱবিজৱা কীভাবে ইলিয়াসের ক্ষতিকরল? 

 

(উত্তর : কিরবিজরা ইলিয়াসের সবচাইতে ভালাে ঘােড়াগুলি চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় ইলিয়াসের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হলাে।

 

প্রশ্ন – ইলিয়াসের আর্থিক অবস্থার অবনতির সঙ্গে তার শাৱীৱিক অবস্থার কী যােগ দেখা গেল?

 

(উত্তর; ইলিয়াসের আর্থিক অবস্থা যত খারাপ হতে লাগল তার শারীরিক শক্তিও তত কমতে লাগল।

 

প্রশ্ন – ইলিয়াস সত্তর বছর বয়সে এসে বাধ্য হয়ে কী বিক্রি কৱে দিল?

 

উত্তর : ইলিয়াস বিক্রি করল পশমের কোট, কম্বল, ঘােড়ার জিন, তাবু আর অবশিষ্ট গৃহপালিত পশু।

 

প্রশ্ন – ইলিয়াসের সব গিয়ে সবশেষে কী সম্বল ব্রইল?

 

উত্তর : সবশেষে সম্বল বলতে রইল কাধের একটা বোঁচকা, তাতে লােমের একটা কোট, টুপি, জুতাে আর বুট আর সঙ্গিনী স্ত্রী।

 

 

প্রশ্ন- মহম্মদ শা ইলিয়াসকে কী বলে কাজে

 

উত্তর : ইলিয়াসের ক্ষমতায় যতটুকু কুলােবে তাতে গ্রীষ্মে তরমুজ খেতে কাজ করবে আর শীতে গােরু-ঘােড়াকে খাওয়াবে।

 

প্রশ্ন ২.৩৪) ইলিয়াসের স্ত্রীর নাম কী ছিল, সে মহম্মদ শাৱ বাড়িতে কী করত?

 

উত্তর; ইলিয়াসের স্ত্রীর নাম ছিল শাম-শেমাগি। সে মহম্মদ শার বাড়িতে ঘােটকীগুলিকে দুইত আর কুমিস তৈরি করত।

 

প্রশ্ন – বাড়ি থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হলাে।”-কাদেৱ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হলাে?

 

উত্তর: ইলিয়াসের ছােটো ছেলেকে ইলিয়াসের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হলাে।

 

প্রশ্ন – কখন ইলিয়াসের সম্পত্তিতে টান পড়ল?

 

উত্তর : যখন ছােটো ছেলেকে ইলিয়াস একটি বাড়ি এবং কিছু গােরু-ঘােড়া দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছিল তখন তার সম্পত্তিতে টান পড়ল।

 

প্রশ্ন  ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতি হয়েছিল কীভাবে?

 

উত্তর: সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রমে ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতি হয়েছিল।

 

প্রশ্ন – “সকলেই তাকে ঈর্ষা কৱে।”—কাকে কাৱা ঈর্ষা করে ও কেন?

 

উত্তর: ইলিয়াসকে তার প্রতিবেশীরা সকলেই ঈর্ষা করে, কারণ ইলিয়াসের তখন প্রচুর সম্পত্তি ও খুব বােলবােলাও।

 

প্রশ্ন – ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালাে ঘােড়াগুলি কাৱা চুরি করেছিল, এর ফলে ইলিয়াসের কী হলাে?

 

উত্তর : ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালাে ঘােড়াগুলি কিরবিজরা চুরি করায় ইলিয়াস অনেকটাই গরিব হয়ে পড়ল।

 

প্রশ্ন – ইলিয়াসেৱ শরীৱেৱ শক্তি কখন কমতে শুরু কৱল?

 

উত্তর : যখন সম্পত্তি কমে গিয়ে ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হতে লাগল তখন তার শরীরের শক্তি কমতে লাগল।

 

প্রশ্ন – বৃদ্ধ বয়সে ইলিয়াস ও তার স্ত্রী কোথায় বসবাস করত?

 

উত্তর : মহম্মদ শর বাড়িতে বৃদ্ধ বয়সে ইলিয়াস ও তার স্ত্রী ভাড়াটে মজুরের মতাে কাজকর্ম করত আর বসবাস করত।

 

প্রশ্ন – “তাৱ খুব দুঃখ হলাে।”—কাৱ, কী ব্যাপারে দুঃখ হলাে?

 

উত্তর : মহম্মদ শার খুব দুঃখ হলাে এই কারণে যে, ইলিয়াস খুব যত্ন ও আন্তরিকতার সঙ্গে অতিথি সেবা করত সে কথা মনে করে।

 

প্রশ্ন  “বৃদ্ধ দম্পত্তিকে সাহায্য করবাৱ তখন কেউ নেই।”—কেন এমন উক্তি?

 

উত্তর : ইলিয়াসের ছােটো ছেলে ঝগড়াঝাটি করে বিদেশে থাকত এবং তাদের একমাত্র মেয়েও মারা যাওয়ায় ইলিয়াস ও শাম-শেমাগিকে সাহায্য করার মতাে কেউ ছিল না।

 

প্রশ্ন – “তা ছাড়া তারা অলস নয়।”—কাৱা অলস নয়?

 

উত্তর : ‘ইলিয়াস’ গল্পের উদ্ধৃতাংশে ভাড়াটে মজুর হিসেবে বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী শাম-শেমাগি অলস নয়।

 

প্রশ্ন  মহম্মদ শাৱ বাড়িতে শাম-শেমাগি কী কৱবে?

 

উত্তর : ইলিয়াসের বৃদ্ধা স্ত্রী শাম-শেমাগি মহম্মদ শার বাড়িতে ঘােটকীগুলিকে দোয়া, কুমিস তৈরির কাজ করবে।

 

প্রশ্ন  মহম্মদ শাৱ বাড়িতে ভাড়াটে মজুর ও মজুৱানি হয়ে কাজ করতে গিয়ে প্রথমে ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর কী হতাে?

 

উত্তর : ভাড়াটে মজুর ও মজুরানি হয়ে কাজ করতে গিয়ে ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর প্রথমে বেশ কষ্ট হতাে।

 

প্রশ্ন  ইলিয়াসকে এক বাটি কুমিস দিলে সে কী করল?

 

উত্তর : ইলিয়াসকে এক বাটি কুমিস দেওয়ায় সে অতিথি ও গৃহস্বামীকে মাথা নীচু করে নমস্কার করল এবং একটু খেয়ে বাকিটা নামিয়ে রাখল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *