ডাকাতের মা গল্পের প্রশ্ন উত্তর

 ডাকাতের মা গল্পের প্রশ্ন উত্তর

ডাকাতের-মা-গল্পের-প্রশ্ন-উত্তর

 

ডাকাতের মা

সতীনাথ ভাদুড়ী

ডাকাতের মা গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর:

প্রশ্নঃ )”দিনকালই পড়েছে অন্যরকম!”—বক্তার এ কথা বলার কারণ আলােচনা করাে।

 উত্তর-

সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা ছােটোগল্প থেকে গৃহীত এই উদ্ধৃতিটি। প্রকৃতপক্ষে ডাকাতসর্দার সৌখীর মায়ের ভাবনা। সৌখীর মা শীতের রাতে বিছানায় একা একা শুয়ে তার মন্দভাগ্যের কথা ভাবছিল। নানা কথা ভাবতে ভাবতে প্রশ্নে উদ্ধৃত ভাবনাটি তার মনে আসে। সৌখীর অনুচরদের আচরণের ফলেই ‘ডাকাতের মা’ এমন ভাবনা ভাবতে বাধ্য হয়েছে। সৌখীর বাবার আমলের এক ডাকাত যখন আহত হয়ে ধরা পড়ে, তখন সে নিজের হাতেই নিজের জিভ কেটে ফেলেছিল—যাতে দলের গােপন কথা তার মুখ বেরিয়ে না যায়। সৌখীর দলে কিন্তু এমন বিশ্বাসী এবং দল-অন্ত-প্রাণ অনুচর নেই। সে কারণেই সৌখীকে বারংবার দরজায় সাংকেতিক টোকা দেওয়ার নিয়মাবলি পালটাতে হত। দীর্ঘ পাঁচ বছর আগে সৌখী শেষবারের মতাে জেলে গেলে তার অনুচররা প্রথম দুবছর নিয়মমতাে তার মাকে মাসে মাসে টাকা পাঠালেও তারপর থেকে তারা বেপাত্তা হয়ে যায়। সৌখীর বাবার আমলে এমনটা কল্পনাও করা যেত না। এমনকি সৌখীর আমলেও এর আগে এমন ঘটনা ঘটেনি। তখন মাস শেষ হওয়ার আগেই, কখনাে-বা তিন-চার মাসের আগাম টাকাও দিয়ে যেত তারা। দুঃখদারিদ্রে জর্জরিত,একাকী প্রৌঢ়া বিধবা তাই হতাশ হয়েই এমন ভাবনায় ভাবিত হয়েছেন।

ডাকাতের মা গল্পের প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্নঃ) বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে সৌখীর প্রবেশের আগে বিছানায় শুয়ে সৌখীর মা কী কী কথা ভাবছিল—“ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প অবলম্বনে তা বর্ণনা করাে।

 

উত্তর:

 

  সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা ছােটোগল্পে দেখা যায়, সৌখীর মা শীতের রাতে একা একা শুয়ে ভাবছিল যে, “সময়টা আর আগের মতাে নেই।” সৌখীর বাবার আমলের এক ডাকাত যখন আহত অবস্থায় ধরা পড়ে, তখন সে নিজের হাতেই তার জিভটা কেটে ফেলে, যাতে তাদের দলের গােপন কথা তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে না যায়। ছেলে সৌখীর কিন্তু তেমন অনুচরভাগ্য নেই। পাঁচ বছর আগে শেষবার জেলে যাওয়ার পর তার অনুচরেরা প্রথম দুবছর সৌখীর মাকে টাকা দিয়ে গেলেও তারপর আর কোনাে খোজও নেয়নি। সৌখীর নিঃসন্তান প্রথম স্ত্রীর শরীর স্বাস্থ্য ভালাে ছিল। কিন্তু তার দ্বিতীয় স্ত্রীর স্বাস্থ্য ভালাে নয়—“সৌখীর এবারকার বউটা রােগা-রােগা’ ছেলে হওয়ার পর তার শরীর একেবারেই ভেঙে গেছে। যার বাবার নামে চৌকিদারসাহেব কাপে, দারােগাসাহেবও যার বাবার সঙ্গে কখনও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কথা বলেন না—সেই ছেলেরই কিনা দু-বেলা অন্ন জোটে না! ছেলের মা তার রুগল্প শরীরের জন্য পরিশ্রম করে ছেলের মুখে অন্ন জোগাতে অক্ষম। সৌখীর মা তাই খই ও মুড়ি বাড়ি বাড়ি বিক্রি করে যৎসামান্য আয় করে। কিন্তু তাতে একজনের পেট চালানােই মুশকিল। তা ছাড়া জাতে গােয়ালা বলে ডাকাতসর্দারের মা তাে ঝিয়ের কাজও করতে পারে না | আর করতে চাইলেও কে তাকে বিশ্বাস করে এই কাজ দেবে? একারণেই বউমাও নাতিকে বেয়াইবাড়িতে পাঠাতে বাধ্য হয় সে। সে ভাবে, বছরখানেক পর সৌখী এলে তাদের সুদিন আসবে। তখন সৌখীকে বলে তার দলের বদলােকগুলােকে সে শায়েস্তা করবে। সৌখীর বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে ঢােকার আগে এসবই ভাবছিল সৌখীর মা।

দেখতে পায় না, শুধু বিড়ির গন্ধ পায়। এর ঠিক পরেই অগড়ে দরজায়। তাড়াতাড়ি ছেলের নির্দেশমতাে দশবার শ্বাস ফেলে দরজা: সে দেখে, তার সামনে দাড়িয়ে আছে এক বড়ােসড়াে চেহারার মানুষ তার। ছেলে সৌখী।

 

প্রশ্নঃ) *” এ কী কম দুঃখের কথা।”~~-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বক্তার এ কথা বলার কারণ আলােচনা করাে।

 

উত্তরঃ

 

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প থেকে উধৃত এই খেদোক্তিটি করেছে ডাকাতসর্দার সৌখীর মা।

 

 প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেছে সৌখী জেলে বন্দি। অভাবের তাড়নায় নাতি ও। বউমাকে বেয়াই বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয় সৌখীর মা | নিঃসঙ্গ বিধবা। সৌখীর মায়ের বেশ কিছুদিন ধরেই রাতে ভালাে ঘুম হচ্ছিল না। এমনিতেই শীতকালে আপাদমস্তক কম্বল মুড়ি দিয়ে না শুলে তার ঘুম হত না। বেশ কয়েক বছর আগে এমনই এক শীতের রাতে সে যখন আপাদমস্তক কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমােচ্ছিল, তখন তার ছেলে সৌখী ‘কোথা থেকে রাতদুপুরে’ ঘরে ফিরে দরজায় সাংকেতিক টোকা দিলেও তার মায়ের কানে সে শব্দ পৌঁছােয়নি| দরজা খােলার পর প্রচণ্ড কুদ্ধ হয়ে ছেলে সৌখী মাকে খুব মারধর করে। সৌখী শাসানি দিয়ে বলে যে, সে যদি আর কখনও অমনভাবে নাকমুখ ঢেকে তার মাকে ঘুমােতে দেখে, তবে তাকে খুন করে ফেলবে। এই ঘটনায় ছেলের সম্পর্কে মার মন্তব্য ছিল “বাপের বেটা, তাই মেজাজ অমন কড়া।” কিন্তু বিগত পাঁচ বছর ধরে তার রাগী ছেলে সৌখী জেলে থাকায়, আপাদমস্তক কম্বল মুড়ে নাক ডেকে ঘুমােলেও তাকে বকুনি দেওয়ার মতাে লােক আর তার বাড়িতে নেই। বাড়িতে তাকে শাসন করার মতাে কোনাে আপনজন নেই— এটাই তার দুঃখের কারণ।

ডাকাতের মা গল্পের প্রশ্ন

প্রশ্নঃ)..ছেলের নামে কলঙ্ক এনেছে সে।”-কে ছেলের নামে কলঙ্ক এনেছে? ‘কলঙ্ক’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ কী?১+ ৪ 

 

সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিটিতে ডাকাতসর্দার সৌখীর মায়ের ‘ছেলের নামে কলঙ্ক’ আনার কথা বলা হয়েছে।

 

জেল থেকে হঠাৎ বাড়ি ফিরে আসা ছেলে ডাকাতসর্দার সৌখীকে পরদিন সকালে খাওয়ানাের জন্য তার কপর্দকশূন্য মা ভােররাতে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে লােটা চুরি করে। কিন্তু সকালবেলাতেই সেই ছিচকে চুরির সাক্ষী প্রমাণ-সহ পুলিশের আগমন ঘটলে লজ্জায় ও অপমানে ‘বুড়ির বুক কেঁপে ওঠে। এই সময় সবকিছু অনুধাবন করে সৌখী যখন মাকে বাঁচাতে হিঁচকে চুরির দায় নিজের ঘাড়ে নেয়, তখনই সৌখীর মা এই কথা বলে ভেঙে পড়ে, …ছেলের নামে কলঙ্ক এনেছে সে।” 

ডাকাতের মা গল্পের প্রশ্ন উত্তর

ডাকাতসর্দারের বিধবা এবং ডাকাতসর্দারের মা হিসেবে সৌখীর মা গর্বিতই ছিল। কারণ সে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, “ডাকাতি করা তার স্বামী-পুত্রের হকের পেশা। সে তাে মরদের কাজ; গর্বের জিনিস। জেলে যাওয়া সেক্ষেত্রে দুরদৃষ্ট মাত্র। তা ছাড়া, তার পুত্র ডাকাতসর্দার হিসেবে এতটাই গর্বিত ছিল যে, কারাবাসকালে সে কখনও হিঁচকে ‘কদুচোর’দের সঙ্গে, এমনকি ছােটোখাটো অপরাধীদের সঙ্গেও পারতপক্ষে কথা বলত । তার নামে চৌকিদারসাহেব কঁাপে’, দারােগাসাহেব পর্যন্ত তাকে ‘তুইতােকারি করতে সাহস করেননি কোনােদিন’ | ছেলের সেই উচ্চ ভাবমূর্তি তার দোষে কালিমালিপ্ত হয়েছিল বলেই ‘ডাকাতের মা’ ‘কলঙ্ক’ শব্দটি ব্যবহার করেছে।

 

ডাকাতের মা গল্পের প্রশ্ন উত্তর

প্ৰশ্ন) “এতক্ষণে বােঝে সৌখী ব্যাপারটা।”—কোন্ ব্যাপারটার কথা বলা হয়েছে? সে কীভাবে এই ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল, তা আলােচনা করাে। ১+৪ 

 

উত্তরঃ

 

সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ গল্পের সৌখীর মা যে চোদ্দো আনা পয়সার জন্য লােটা চুরি করেছে—সেই ব্যাপারটাই সৌখী বুঝতে পেরেছিল। 

 

ডাকাতসর্দার সৌখী জেল থেকে প্রায় পাঁচ বছর পর, নির্দিষ্ট মেয়াদের আগেই ছাড়া পেয়ে একদিন রাতে তার বাড়ি ফিরে আসে। তার স্ত্রী এবং নাদেখা শিশুপুত্র তার শ্বশুরবাড়িতে থাকায় তার বিধবা মার সঙ্গেই কেবল দেখা হয়। সে রাতে খাওয়া দাওয়া করে সে তার বিধবা মাকে জেল থেকে আনা নতুন কম্বলটা দিয়ে নিজে মার পুরােনাে কম্বলটা নিয়ে শুয়ে পড়ে অনেক বেলা অবধি ঘুমােনাের ইচ্ছা নিয়ে। কিন্তু সকালবেলায় হই-হট্টগােল শুনে সে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখে যে, পাড়ার মাতাদিন পেশকারের লােটা চুরির করতে পেশকারসাহেব বাসন-বিক্রেতাকে এবং থানার দারােগাসাহেবকে নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছেন তার মা এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় এতটাই হতবুদ্ধি হয়ে যায় এবং ডাকাতসর্দারের মা হয়েও লােটাচুরির অভিযােগে এতটাই লজ্জিত হয়ে পড়ে যে, চুরির অভিযােগ অস্বীকার করতে পর্যন্ত ভুলে যায়। দারােগাসাহেব একটা লােটা দেখিয়ে যখন সৌখীর মাকে সেটি বাসনওয়ানাকে চোদ্দো আনায় বিক্রি করার কথা জিজ্ঞাসা করে, তখন সৌখীর মায়ের মুখ থেকে কোনাে কথা বেরােয় না। শুধু একবার ছেলে সৌখীর দিকে তাকিয়ে মাথা হেঁট করে নেয় সে। এসবকিছু দেখেশুনেই সৌখী সমস্ত ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল৷ 

প্রশ্নঃ)“এতক্ষণে বােঝে সৌখী ব্যাপারটা।”—সৌখী কোন্ ব্যাপারটা কীভাবে বুঝল? এরপর তার মনােভাব কী হয়েছিল ? ২+ ৩

 

উত্তরঃ

 

সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখী যেদিন জেল থেকে মাঝরাতে বাড়ি ফিরে ঘুমােতে যায়। তার পরদিন সকালেই হই-হট্টগােল শুনে বাইরে বেরিয়ে সে দেখে যে, দারােগাসাহেব পেশকার ও বাসনওয়ালাকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ার মাতাদিন পেশকারের লােটাচুরির তদন্তে এসেছেন। দারােগা সৌখীর মাকে লােটাটা দেখিয়ে সেটি বাসনওয়ালাকে চোদ্দো আনায় বিক্রি করেছে কি না জিজ্ঞাসা করেন। এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সৌখীর মা নীরবে তার ছেলের দিকে তাকিয়ে মাথা হেঁট করে নেয়। তখনই সৌখী বােঝে যে, সামান্য কটা পয়সার জন্য শেষপর্যন্ত তার মা লােটাটা চুরি করেছে।

 

* এরপরই সৌখী ভাবে যে, মা তাে তাকে তার অনটনের কথা বলতেই পারত৷ এতদিন জেলখানার গুদামঘরের কাজের দায়িত্ব ছিল তার। জেলের ঠিকাদারের অধীনে কাজ করে মােট নব্বই টাকা সে আয় করেছে। সে তাই ভাবে যে বাড়ি-ঘর-দুয়ারের দিকে তাকিয়ে, তারই বােঝা উচিত ছিল তার প্রৌঢ়া, বিধবা মায়ের অবস্থা| সেটা বুঝে মার হাতে টাকা দেওয়া উচিত ছিল তার। অবশ্য অতশত ভাবার সময় সে পায়নি। সৌখী ভাবে, সে যে জেলে ‘লাইফার’-দের সঙ্গেই আলাপ-পরিচয় করে, হিঁচকে ‘কচুচোর’-দের সঙ্গে পারতপক্ষে কথা বলে না—সেকথা জানা সত্ত্বেও তার মা কী করে সামান্য লােটা চুরি করতে পারল? এসব কথা ভাবার সময় যখন দারােগাবাবু তার প্রশ্নের উত্তর চাইলেন সৌখীর মার কাছে, তখন আর চুপ থাকতে পারল না সৌখী। সে মায়ের সম্মান রক্ষা করার তাগিদে লােটা-চুরির দায় মাথা পেতে নেয়। দারােগাবাবু এরপর তার মায়ের দোষ স্বীকারকে অবিশ্বাস করেন। সৌখী সেসময় মায়ের হিঁচকে চুরির দায় মাথায় নিয়ে তার টাকা-ভরাবটুয়াটা খাটিয়ার ওপর রেখে রওনা হয় থানার উদ্দেশে।

প্রশ্নঃ ) “কিন্তু আজ যে ব্যাপার অন্য।”—কোন্ দিনটার কথা বলা হয়েছে? সেদিনের অন্য ব্যাপারটির পরিচয় দাও।১+৪ 

 

উত্তরঃ

 

সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পে সৌখীর মা যেদিন ভোররাতে ঘটি চুরি করেছিল, সেই দিনটার কথাই এখানে বলা হয়েছে। 

 

 জেল থেকে হঠাৎ ছাড়া পেয়ে সৌখী গভীর রাতে ফিরে আসে। পরদিন সকালে ছেলেকে কী খেতে দেবে, বাড়িতে সেই চিন্তায় বিছানায় শুয়ে অস্থির হয়ে পড়ে সৌখীর কপর্দকশূন্য মা। সকালে সৌখীকে তার প্রিয় আলুচচ্চড়িসহ ভাত খাওয়াতে হলে যে আলু, চাল, তেল—সবই তাকে কিনতে হবে। তাই অনন্যোপায় হয়ে সৌখীর মা মাঝরাতে প্রতিবেশী মাতাদিন পেশকারের দরজার বাইরে থেকে তার দামি ঘটিটা চুরি করে ভােরবেলা বাসনের দোকানে সেটি চোদ্দো আনা পয়সায় বিক্রি করে দেয়। সকালে যখন সৌখী বিছানায় নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছিল এবং তার মা উনুনে আলুচচ্চড়ি চাপিয়েছিল—তখনই সেই বাসনওয়ালা এবং পেশকারসাহেব-সহ দারােগা-পুলিশ এসে উপস্থিত হয় তাদের বাড়ি। তাদের দেখে বুড়ির বুক কেঁপে ওঠে। ডাকাতসর্দারের বিধবা এবং ডাকাতসর্দারের মা হিসেবে পুলিশকে তার ভয় পাওয়ার কারণ নেই। এর আগে অনেকবারই পুলিশ তাদের বাড়ি হানা দিয়েছে। কিন্তু আজ তার সদ্য হিঁচকে চুরির সাক্ষী-প্রমাণসহ বাড়িতে পুলিশের আগমন ঘটেছে। তাই সেই দিনটিতে পুলিশ দেখে নিজের ও পরিবারের সম্মান হারানাের ভয়ে বুক কেঁপে উঠেছিল বুড়ির।

প্রশ্নঃ) ডাকাতের মা’ ছোটোগল্প অবলম্বনে সৌর্থীর মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করাে। 

 

উত্তরঃ

 

‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পের প্রধান চরিত্র সৌখীর মা চরিত্রটির বৈশিষ্ট্যগুলি হল

 

অপত্যস্নেহ: পুত্রের চিন্তাভাবনা, আচার-আচরণের প্রতি সৌখীর মার যেমন পূর্ণ সমর্থন ছিল, তেমনি মেজাজি ডাকাত সর্দারের মা হিসেবে তার যথেষ্ট গর্বও ছিল| পুত্রের প্রতি তার সম্ভম ও স্নেহ—দুই-ই প্রবল ছিল বলেই পুত্রকে সে নিজের দুর্বিষহ দারিদ্র্যের কথা যেমন জানাতে পারেনি, তেমনই তাকে আলুচচ্চড়ি-ভাত খাওয়াতে হিঁচকে চুরির মতাে মর্যাদাহানিকর কাজে হাত দিতেও কুণ্ঠাবােধ করেনি।

 

পুত্রবধূর প্রতি স্নেহপরায়ণতা: দুর্বল চেহারার পুত্রবধূর উপযুক্ত পরিচর্যার জন্য সে বাধ্য হয়েই নাতি-সহ বউমাকে তার বেয়াই বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল।

 

শ্রমশীলতা; সৌখীর মা অত্যন্ত পরিশ্রমী মহিলা ছিল। তাই সৌখীর অনুচররা তার জেলে যাওয়ার দুবছর পর টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে সে বাড়ি বাড়ি খই-মুড়ি বিক্রি করে নিজের পেট চালিয়ে নিয়েছে।

 

পুরুষতন্ত্রে আখা: নিরক্ষর সৌখীর মা পুরুষের আধিপত্যকে শিরােধার্য করে নিয়েছিল। তাই সে বলে, “বাপের বেটা, তাই মেজাজ অমন কড়া।” পুত্রের প্রহার বা শাসানিও তাই তাকে বিচলিত করেনি।

 

বাস্তবুদ্ধি: সৌখীর মার যথেষ্ট বাস্তববুদ্ধি থাকার জন্য দীর্ঘদিন পর ছেলে বাড়ি ফিরলে সেই মুহূর্তেই সে তার ছেলেকে তার ডাকাত-অনুচরদের স্বার্থপরতার কথা অথবা তার স্ত্রী-পুত্রের অসুস্থতার কথা জানায়নি। এসব সত্ত্বেও তার একটা আবেগতড়িত ভুল সিদ্ধান্তের জন্যই গল্পটি বিষাদময় পরিসমাপ্তির দিকে এগিয়ে গিয়েছে।

 

 

ডাকাতের মা গল্পের অতিসংক্ষিপ্ত  প্রশ্ন উত্তর

১. “চোর ধরা পড়বার পর দারােগাসাহেবের কাজে আর ঢিলেমি নেই।” কী করলেন তিনি?

 

উত্তর: পেশকারসাহেব থানায় খবর দিলে দারােগাসাহেব তৎক্ষণাৎ সাইকেলে করে অকুস্থলে এসে হাজির হন। তিনি সবকিছু শুনে সদলবলে সৌখীর বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন।

 

২.”সব ব্যাপার শুনে তিনি সদলবলে সৌখীর বাড়িতে গিয়ে ঠেলে উঠলেন।”—সেখানে গিয়ে কী দেখলেন তারা?

 

উত্তর: দারােগাসাহেব সদলবলে সৌখীর বাড়িতে গিয়ে দেখলেন যে, সৌখীর মা উনুনে আলুর তরকারি চড়িয়েছে, তার ছেলে সৌখী তখনও ঘুম থেকে ওঠেনি।

 

৩, “কিন্তু আজ যে ব্যগিরি অন্য।”—অজি অন্য ব্যাপার কেন? উত্তর: পাঁচ-সাত বছর আগে বন্দুকের তল্লাশিতে ভােররাতে পুলিশ সৌখীদের বাড়ি যখন ঘেরাও করেছিল, তখন সৌখীর মার মাথা হেঁট হয়নি।

 

উত্তর: সেদিন গুলিশের সঙ্গে মাতাদিন পেশকার এবং বাসনওয়ালি সৌখীর মার বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন বলে লেখক আলোচ্য উধৃতিটি করেছেন। . “তখন তাে মাথা হেঁট হয়নি তার।”—কখন তার মাথা হেঁট হয়নি?

 

৫. “কোনাে জবাব বেরােল না বুড়ির মুখ দিয়ে।” কোন্ প্রশ্নের জবাব বেরােয়নি?

 

উত্তর: দারােগাসাহেব যখন সৌখীর মাকে জিজ্ঞাসা করেন, তার দেখানাে লােটাটা সেদিন সে বাজারের বাসনের দোকানে চোদ্দো আনায় বিক্রি করেছে কি না, সেই প্রশ্নের কোনাে জবাব বেরােয়নি বুড়ির মুখ দিয়ে।

 

৬. “এখনও সে টাকা তার কোমরের বাটুয়ায় রয়েছে।”—সে কীভাবে সে টাকা উপার্জন করেছিল?

 

উত্তর: জেলখানার গুদামে ঠিকাদারের অধীনে ডিউটি করে সৌখী নব্বই টাকা উপার্জন করেছিল।

 

৭, “…এ কথা তাে মায়ের অজানা নয়…”-কোন্ কথা?

 

. উত্তর: জেলে থাকাকালীন সৌখী যে ছিচকে ‘কদুচোর’-দের সঙ্গে পারতপক্ষে কথা বলত না, কথা বলত শুধু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আসামিদের সঙ্গেই—সে কথা সৌখীর মায়ের অজানা ছিল না।

 

৮. “বিজ্ঞ দারােগাবাবু তাঁর অনুচরদের দিকে বিজয়ীর দৃষ্টি হেনে ভাব দেখাতে চাইলেন যে,”—কী ভাব দেখাতে চাইলেন দারােগাবাবু?

 

উত্তর: দারােগাবাবু এই ভাব দেখাতে চাইলেন যে, অনেক বেলা পর্যন্ত সৌখীকে ঘুমােতে দেখে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, সৌখীহ চোর। তবুও বৃদ্ধার মুখ থেকে সেই কথাটা বার করে নিতেই তিনি সচেষ্ট ছিলেন।

 

৯. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে নতুন-পাওয়া স্বাধীনতা উপভােগ করবার জন্য সৌখী কী ঠিক করেছিল?

 

উত্তর: নতুন-পাওয়া স্বাধীনতা উপভােগ করার জন্য সৌখী ঠিক করেছিল বেলা বারােটার আগে সে ঘুম থেকে উঠবে না৷

 

১০, ‘ডাকাতের মা’ গল্পে বাসনওয়ালাকে লােটা বিক্রি করে সৌখীর মা নিশ্চিন্ত ছিল কী ভেবে?

 

উত্তর: বাসনওয়ালাকে চুরি করা লােটা বিক্রি করে সৌখীর মা নিশ্চিন্ত ছিল এই ভেবে যে পুরােনাে বাসন রং-চং করেই তা বিক্রি করা হয়। ফলে কেউই আর তার চুরির হদিশ করতে পারবে না |

 

১১. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখী যখন দারােগাবাবুর সঙ্গে থানায় যাচ্ছিল, তখন সৌখীর মা কী করছিল?

 

উত্তর: সৌখী যখন লােটা চুরির দায়ভার গ্রহণ করে দারােগার সঙ্গে থানায় যাচ্ছিল তখন তার মা মেঝেতে পড়ে ডুকরে কঁদছিল।

 

১২. ‘ডাকাতের মা’ গল্পের শেষাংশে সৌখীর মা কেঁদেছিল কেন? 

উত্তর: তার অপরাধের জন্য নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও ছেলে সৌখীকে যখন পুলিশ ধরে নিয়ে যায়, তখনই সৌখীর মা ডুকরে কেঁদে উঠেছিল।

 

 ১৩, সৌখী জেলে থাকাকালীন কত টাকা রােজগার করেছে?

 

 

উত্তর: সতীনাথ ভাদুড়ীর লেখা ‘ডাকাতের মা’ গল্পে দেখা যায়, সৌখী জেলে থাকাকালীন জেলখানার গুদামে ডিউটি করে নববই টাকা রােজগার করেছে।

 

 

2 অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি ডাকাতের মা গল্পের:

 

প্রতিটি প্রশ্নের পুর্ণমান১

 কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও

 

। ২. “সে পাঁচিল ভাঙতে বুড়ির বিশেষ অসুবিধা হল না!…”-কেন?

 

১. “আজ যখন মুড়ি বেচতে গিয়েছিল, তখন দেখেছে যে,”-কী দেখেছে?

 

 উত্তর: সৌখীর মা পাড়ায় মুড়ি বেচতে গিয়ে দেখেছিল যে, পেশকারসাহেবের বাড়ির পড়ে যাওয়া উত্তরের পাঁচিলটা রাজমিস্ত্রি দিয়ে গাঁথা হচ্ছে।

 

। ২. “সে পাঁচিল ভাঙতে বুড়ির বিশেষ অসুবিধা হল না!…”-কেন?

 

উত্তর: পেশকারসাহেবের বাড়ির পাঁচিলটা মাত্র দু-আড়াই হাত গাঁথা হয়েছিল এবং তার দুপাশে মাটি আর ভাঙা ইটের পাহাড় পড়ে থাকায় তা ভাঙতে সৌখীর বুড়িমার বিশেষ অসুবিধা হয়নি।

 

৩. “বারান্দার দোরগােড়ায় গুছিয়ে রাখা রয়েছে…”—কী গুছিয়ে রাখা ছিল?

 

উত্তর: পেশকারসাহেবের বাড়ির বারান্দার দোরগােড়ায় তার খড়মজোড়া এবং জলভরা একটি ঘটি গুছিয়ে রাখা ছিল।

 

৪. “সেইজন্য হুলস্থূল পড়ে গেল তাঁর বাড়িতে সকালবেলায়।”—কেন হুলস্থূল পড়ে গিয়েছিল?

 

উত্তর: লােটা চুরি যেতে সকালবেলায় মাতাদিনের বাড়িতে তুলস্থূল পড়ে গিয়েছিল কারণ লােটা ছাড়া সংসার অচল। এ ছাড়া, সারাদিনে কয়েকবার ললাটাটা না মাজলে মাতাদিনের হাত নিশপিশ করত।

 

৫. “খােকার মা নাকে কেঁদে স্বামীকে মনে করিয়ে দিলেন…”—কী মনে করিয়ে দিলেন?

 

উত্তর: মাতাদিন পেশকারের খােকার মা স্বামীকে মনে করিয়ে দেন যে, ললাটা বাড়ির লক্ষ্মী এবং বাড়ির লক্ষ্মীশ্রী ফেরানাের জন্য অবিলম্বে আরএকটি লােটা কিনে আনা দরকার।

 

৬. “আইনের ধারায় স্পষ্ট লেখা আছে যে,”—কী স্পষ্ট লেখা আছে?

 

. উত্তর: আইনের ধারায় স্পষ্ট লেখা আছে যে, চুরির খবর পুলিশকে না দিলে জেল পর্যন্ত হতে পারে।

 

৭. “ফিরতিমুখাে তিনি এলেন বাসনের দোকানে।”—কোথা থেকে ফিরতিমুখাে তিনি বাসনের দোকানে এলেন?

 

উত্তরঃ মাতাদিন পেশকার থানা থেকে ফিরতিমুখাে বাসনের দোকানে এলেন।

 

 ৮. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে মাতাদিন পেশকারের হাত নিশপিশ করে কখন?

 

 উত্তর: সারাদিন বেশ কয়েকবার লােটাটাকে না মাজলে মাতাদিন পেণকারের হাত নিশপিশ করে। 1

 

৯. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখীর মা মাতাদিন পেশকারের বাড়ি কীভাবে প্রবেশ করেছিল?

 

উত্তর। সৌখীর মা দু-আড়াই হাত গাথা পাঁচিল ডিঙিয়ে মাতাদিন পেশকারের বাড়িতে প্রবেশ করেছিল |

 

১০, ‘ডাকাতের মা’ গল্পে লােটা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসার সময় সৌখীর মা কী ভেবেছিল?

 

উত্তর: লােটা চুরি করে বাইরে বেরিয়ে আসার সময় সৌখীর মা ভেবেছিল, রাতদুপুরে জল-ভরতি লােটা হাতে দেখলে কেউ সন্দেহ করবে না। .

 

১১. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে মাতাদিন পেশকার তার স্ত্রীকে আইনের ধারায় কী স্পষ্ট লেখা থাকার কথা বলেছিলেন?

 

 উত্তরঃ মাতাদিন গেশকার তার স্ত্রীকে বলেছিলেন যে আইনের ধারায় লেখা আছে, চুরির খবর পুলিশকে না দিলে জেল পর্যন্ত হতে পারে।

 

 ১২. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে দোকানদারের দোকানে নিজের লােটা দেখে পেশকার কী অভিযােগ করেছিলেন?

 

উত্তর: দোকানদারের দোকানে নিজের লােটা দেখে পেশকার বলেছিলেন যে, দিনে দোকানদারি করলেও দোকানদার রাত্রে সিঁধকাঠি নিয়ে চুরি করতে বেরােয়।

 

১৩, “ঘটি দেখেই তার খটকা লাগল।”—কার খটকা লাগল? খটকা দূর হল কীভাবে? 

 

উত্তর: দোকানদারের দেওয়াঘটিটি দেখেমাতাদিন পেশকারের খটকা লাগল।

 

 • চোখেচশমালাগানাের পর মাতাদিন যখন ঘটিটিরনীচেতার নিজের ঘটিটি মতােই তারাচিহ্ন আঁকা রয়েছে দেখতে পেলেন, তখনই খটকা দূর হল তার।

 

 ১৪. “লােটা হল বাড়ির লক্ষ্মী”—এ কথা কে, কাকে বলেছিল? 

 

উত্তরঃ মাতাদিন পেশকারের স্ত্রী তাকে এ কথা বলেছিল।

 

 ১৫. “পেশকারসাহেব বড়াে খুঁতখুঁতে।”—কী ব্যাপারে? 

 

উত্তর: পেশকারসাহেব তার ললাটা সম্বন্ধে খুব খুঁতখুঁতে, খুরাে-দেওয়া বড়াে সাইজের মুখের লােটার জন্যই তঁার এই খুঁতখুঁতে স্বভাব। 

 

১৬. “ঘটি দেখেই তঁার খটকা লাগল।”—এই খটকা লাগার কারণ কী?

 

 উত্তর: ঘটি দেখে খটকা লাগার কারণ হল পেশকারের চুরি যাওয়া লােটার মতােই এটিরও খুরাের নীচে তারা আঁকা ছিল।

 

ডাকাতের মা গল্পের ছোট প্রশ্ন উত্তর

 

প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান ১

 

কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও।

 

 

 

। ১. “তাই বেশি রেমিশন পেয়ে গেলাম।”—বেশি রেমিশন পাওয়ার কারণ কী?

 

 উত্তর: জেলে সৌখী হেড জমাদারকে ঘুস দেওয়ায় তিনি জেলারবাবুর কাছে তার হয়ে সুপারিশ করলে লাটসাহেবের কাছে জেলার সৌখীর প্রশংসা করে। এ কারণেই লাটসাহেবের হুকুমে সৌখী বেশি রেমিশন পায়।

 

২. “তাই বাপের মুখের আদল ধরা পড়েছে ছেলের মুখে।”—কী কারণে এমনটা হয়েছিল?

 

: উত্তর: পাঁচ বছর পর জেল থেকে ফিরে আসা সৌখীর চুলে বেশ পাক ধরাতেই সৌখীর মার মনে হয়েছিল যে, সৌখীর মুখে তার মৃত বাপের আদল ধরা পড়েছে।

 

৩. অপ্রতিভের চেয়ে হতাশ হয়েছে বেশি সৌখী।”—কখন?

 

উত্তর: সৌখী যখন শােনে তার বউ ছেলেসহ বাপের বাড়ি গেছে, তখনই সে অপ্রতিভের তুলনায় বেশি পরিমাণে হতাশ হয়।

 

৪, “তাই নিয়ে কত কল্পনার ছবি এঁকেছে জেলে বসে বসে।”—সৌখী কী নিয়ে কল্পনার ছবি এঁকেছে?

 

উত্তর: সৌখীর না-দেখা ছেলেটা দেখতে কেমন হয়েছে—তা নিয়ে সে জেলে কল্পনার ছবি এঁকেছে। :

 

৫. “সে মনে মনে ঠিক করে ফেলে যে…”—কখন সে মনে মনে ঠিক করেছিল?

 

উত্তরঃ পাঁচ বছর পর জেল থেকে ফিরে এসে যখন সৌখী তার মার কাছে শােনে যে তার স্ত্রী পুত্র-সহ তার বাপের বাড়ি গেছে, তখনই সে মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিল। :

 

৬, “সে মনে মনে ঠিক করে ফেলে যে…”—কী ঠিক করে ফেলেছিল?

 

 উত্তরঃ সৌখী মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিল যে, পরদিনই সে শ্বশুরবাড়ি যাবে তার বউ-ছেলেকে নিয়ে আসতে। “

 

৭. “এ কথা এখনই মাকে বলে ফেলা ভালাে দেখায় না;”—কোন্ কথা?

 

 উত্তরঃ সৌখী মনে মনে ঠিক করেছিল যে পরদিনই সে বউ-ছেলেকে আনতে শ্বশুরবাড়ি যাবে—সেই কথা তখনই সে তার মাকে জানাতে চায়নি। 

 

৮. ‘ভােরে উঠেই কী ছেলেকে বলা যায় যে,”—ছেলেকে কী বলা যায় না? 

 

উত্তর: সদ্য জেলফেরত ছেলে সৌখীকে ভােরে উঠেই বলা যায় না যে, সে পয়সা জোগাড় করে আনলে তবেই তার মা তাকে বেঁধে দেবে।

 

৯.  “দরকারের চাইতেও জোরে কথাগুলাে বলল সৌখী সৌখী কেন জোরে কথা বলেছিল?

 

উত্তর: ঘরে থাকা অন্যরা অর্থাৎ তার স্ত্রী ও ছেলে যাতে তার কথাগুলাে শুনতে পায় তার জন্য সৌখী জোরে কথা বলেছিল।

 

১০. “বাপের মুখের আদল ধরা পড়েছে ছেলের মুখে।”—কী কারণে?

 

 উত্তর: সৌখীর চুলে পাক ধরায় তার মুখে বাপের আদল ধরা পড়েছিল।

 

 ১১, “প্রতি মুহূর্তে বুড়ি এই প্রশ্নের ভয়ই করছিল।”—প্রশ্নটা কী?

 

উত্তর: বাড়ি ফিরে সৌখী ছেলেবউকে দেখছে না কেন—সৌখীর এই প্রশ্নের ভয়ই করেছিল তার বুড়ি মা।

 

১২. “তার বাড়ি ফিরবার আনন্দ অর্ধেক হয়ে গিয়েছে মুহূর্তের মধ্যে। -তার আনন্দ অর্ধেক হওয়ার কারণ কী? 

 

উত্তর: সৌখীর বাড়ি ফেরার আনন্দ অর্ধেক হয়ে যাওয়ার কারণ হল তার বউয়ের ছেলে-সহ বাপের বাড়ি যাওয়া।

 

 ১৩. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে জেলে বসে সৌখী কী কথা ভাবত?

 

  উত্তর: জেলে বসে সৌখী ভাবত তার ছেলেটা কেমন দেখতে হয়েছে। 

 

১৪. ‘ডাকাতের মা’ গল্পেবাড়ি ফিরে সৌখী শােওয়ার আগেকিকিছু খেয়েছিল?

 

  উত্তর: সতীনাথ ভাদুড়ীর লেখা ‘ডাকাতের মা’ গল্পে বাড়ি ফিরে সৌখী শােওয়ার আগে শুকনাে খাবার খইমুড়ি খেয়েছিল।

ডাকাতের মা গল্পের প্রশ্ন উত্তর

১৫. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে হেড জমাদার সৌখীর জন্য জেলারের কাছে সুপারিশ করেছিল কেন?

 

উত্তর: সৌখীর কাছে টাকা ঘুস নিয়ে হেড জমাদার সৌখীর জন্য জেলারের কাছে সুপারিশ করেছিল। .

 

১৬. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখী ঘরে ঢুকে মাকে কুপি জ্বালাতে বলে কী খুঁজেছিল?

 

উত্তর: সৌখী রাতে ঘরে ঢুকে তার মাকে কুপি জ্বালাতে বলে তার স্ত্রী ও পুত্রকে খুঁজছিল।

 

১৭. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখী স্ত্রীর বাপের বাড়ি যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার মা কী বলেছিল?

 

উত্তর: সৌখীর মা সৌখীকে বলেছিল যে, মা বাবাকে দেখার জন্যই তার বউ বাপের বাড়ি গেছে।

 

১৮. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে জেল থেকে ফেরার পর সৌখীকে দেখতে কেমন হয়েছিল?

 

উত্তর: জেল থেকে ফেরার পর সৌখীর চুলে পাক ধরেছিল, বাপের মুখের আদিল তার মুখে ধরা পড়েছিল এবং তাকে রােগা লাগছিল।

 

১৯. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখীর কাজ দেখে কে খুশি হয়েছিল? উত্তর: ‘ডাকাতের মাগল্পে জেলে বন্দি সৌখীর কাজ দেখে লাটসাহেব খুশি হয়েছিল। :

 

২০. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখী কীভাবে তার মাকে তেলের টেমি খুঁজতে সাহায্য করেছিল?

 

সৌখী তার কাছে রাখা দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালিয়ে তার মাকে তেলের টেমি খুঁজতে সাহায্য করেছিল?

 

২১. “কথা বলতে হবে সাবধানে।”—কেন সাবধান হওয়ার দরকার পড়েছিল বক্তার?

 

উত্তর : বক্তা সৌখীর মার পুলিশের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে সাবধান হওয়ার দরকার পড়েছিল যাতে সৌখীর অজান্তে পুলিশের কাছে সৌখীর ডাকাতদলের কারও নামধাম বেরিয়ে না যায়।

 

২২. “কিন্তু দরজায় টোকা মেরে মা-র সঙ্গে খুনশুড়ি হচ্ছিল এতক্ষণ – কেন এ কথা ভেবেছিল সৌখীর মা?

 

উত্তর: জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বুক ফুলিয়ে পাড়া জাগিয়ে ঘরে না ঢুকে সৌখী দরজায় টোকা দিয়ে ঘরে ঢুকেছিল বলেই তার মা এ কথা ভেবেছিল।

 

২৩. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে প্রথমবার কখন সৌখীর মা জোড়া-টোকার শব্দ শােনে?

 

উত্তর: সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখীর মা যখন তার গায়ে দেওয়া পুরােনাে কম্বলটার বয়স হিসাব করছিল, তখন জোড়া-টোকার শব্দ শুনতে পেয়েছিল।

 

২৪. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে দ্বিতীয়বার কখন সৌখীর মা জোড়া-টোকার শব্দ শােনে?

 

উত্তর: সৌখীর মা যখন টিকটিকির খুনশুড়ি করার কথা ভেবে বিরক্ত হচ্ছিল তখন দ্বিতীয়বার জোড়া-টোকার শব্দ শুনেছিল।

 

২৬. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে দ্বিতীয়বারের জোড়া টোকার শব্দ শুনে সৌখীর মা কী ভেবেছিল?

 

. উত্তরঃ দ্বিতীয়বার জোড়া টোকার শব্দ শুনে সৌখীর মা ভেবেছিল, সৌখীর অনুচর এসেছে বাড়িতে টাকা দিতে।

 

২৭. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে তৃতীয়বার দরজায় জোড়া টোকার শব্দ শুনে সৌখীর মা কী ভেবেছিল?

 

উত্তরঃ তৃতীয়বার দরজায় জোড়া টোকার শব্দ শুনে সৌখীর মা ভেবেছিল নিশ্চিতভাবেই সৌখীর অনুচর এসেছে।

 

২৮. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে দীর্ঘদিন পর বাড়িতে ফিরে সৌখী কেন দরজায় সাংকেতিক টোকা দিয়েছিল?

 

উত্তর: সৌখীর মায়ের ধারণা, দীর্ঘদিন পর বাড়িতে ফিরে সৌখী দরজায় সাংকেতিক টোকা দিয়েছিল তার মার সঙ্গে খুনশুড়ি করার জন্য।

ডাকাতের মা গল্প pdf

: ২১. “…এ আনন্দ তার রাখবার জায়গা নেই…”—এই আনন্দের কারণ কী?

 

 উত্তর: সৌখীর মার আনন্দের কারণ, এতদিন পর জেল থেকে ফিরেও তার সঙ্গে ছেলে খুনশুড়ি করছে।

 

৩০, ‘ডাকাতের মা’ গল্পে রাতে সৌখীদের ঘরের বাইরে কীসের শব্দ হয়েছিল?

 

: ‘ডাকাতের মা’ গল্পে দেখা যায়, রাতে সৌখীদের ঘরের বাইরে নােনাভ্রাতা গাছের শুকনাে পাতার খড়খড় করার শব্দ হয়েছিল।

 

৩১. ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখীর মা ঘরে আগুন জ্বেলেছিল কেন?

 

 উত্তর: সতীনাথ ভাদুড়ী রচিত ‘ডাকাতের মা’ গল্পে দেখা যায়, শীতের রাতে ঘর গরম রাখার জন্যই সৌখীর মা ঘরে আগুন জ্বেলেছিল।

 

৩২. “ঘুম আর আসতে চায় না”—কার কেন ঘুম আসে না? 

 

উত্তর: মাথা পর্যন্ত কম্বলে ঢুকিয়ে না দিলে শীতের দিনে সৌখীর মার ঘুম আসে না। অথচ ছেলের কড়া নিষেধে তা না করতে পারায় সৌখীর মার ঘুম আর আসতে চায় না।

 

৩৩, “কী মারই মেরেছিল মাকে!”—সৌখীর মাকে মারারকারণ কী?

 

 উত্তর: সৌখী একবার রাতদুপুরে ফিরে দরজায় টোকা দিলেও কম্বল মুড়ে শােওয়ার জন্য তার মা সেটা শুনতে পায়নি। এই কারণে সৌখী তার মাকে মেরেছিল।

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *