গ্যালিলিও গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণি বাংলা
গ্যালিলিও গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণি বাংলা
গালিলিও
সত্যেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯৪-১৯৭৪)
গ্যালিলিও গল্প বড় প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ) ১৬০৯ সালে ঘটল এক নতুন ব্যাপার”~-১৬০১ সালে ঘটা নতুন ব্যাপারটি উল্লেখ করে এই সূত্রে কোন্ ঘটনা গালিলিওকে ‘আমােদ’ দিয়েছিল তা লেখাে।
উত্তর
সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে দেখা যায়, ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে হল্যান্ডবাসী এক ওলন্দাজ এক অভিনব যন্ত্র নির্মাণ করেন|কাচের লেন্স নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে তিনি হঠাৎই একটি নলের দুপাশে চোখ রেখে দেখেন যে, দূরের জিনিস বড়াে দেখাচ্ছে এবং দেখে মনে হচ্ছে যেন তা কাছে এগিয়ে এসেছে। তবে তার তৈরি দূরবিন খুব উন্নত বা উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ছিল । তা ছাড়া সেই দূরবিনে সব কিছু উলটোও দেখাত।
• হল্যান্ডের নাগরিকের এই যুগান্তকারী আবিষ্কারে অনুপ্রাণিত হয়ে গালিলিও নিজে দূরবিন তৈরি করেন এবং তার সাহায্যে লক্ষ করেন, চন্দ্রপৃষ্ঠ অত্যন্ত অসমান ও বন্ধুর—যাকে ‘াদের পাহাড়’ বলা হয়। ছায়াপথ যে প্রকৃতপক্ষে লক্ষ লক্ষ নক্ষত্রের সমাবেশমাত্র, বৃহস্পতি গ্রহের চারদিকে যে চারটি উপগ্রহ প্রদক্ষিণ করছে—এ দৃশ্যও তার আবিষ্কৃত দূরবিনে ধরা পড়ে। ভেনিসবাসী ধর্মভীরু পণ্ডিতরা গালিলিওর এসব পর্যবেক্ষণ এবং আবিষ্কারের কথা বিশ্বাস করতে চাইলেন না। তারা গালিলিওর শত অনুরােধেও দূরবিনে চোখ রাখতে রাজি হলেন না—পাছে দূরবিনে চোখ রাখলে তাদের ধর্মবিশ্বাস টলে যায়। ভেনিসের ধর্মভীরু পণ্ডিতদের এই গোঁড়ামি এবং কূপমণ্ডুক মানসিকতা লক্ষ করেই আমােদ পেয়েছিলেন যুক্তিবাদী বিজ্ঞানী গালিলিও।
প্রশ্ন) দূরবিন আবিষ্কার করার ফলে ভেনিস কর্তৃপক্ষের নিকট কীভাবে গালিলিওর কদর বেড়ে গিয়েছিল?
উত্তর
১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্লোরেন্সের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভেনিসে চাকুরিসূত্রে থাকাকালীন গালিলিও হল্যান্ডবাসী এক ব্যক্তির এক যন্ত্র আবিষ্কারের সংবাদ শুনতে পান, যে যন্ত্রের সাহায্যে দূরের বস্তু কাছে দেখা যায়। এর কিছুদিনের মধ্যেই তিনি দূরবিন আবিষ্কার করেন। এই দূরবিন আবিষ্কার করার ফলেই ভেনিসের কর্তৃপক্ষের কাছে গালিলিওর কদর বেড়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে সেযুগে ভেনিস ছিল সমুদ্র বাণিজ্যে উন্নত এক সমৃদ্ধিশালী নগররাষ্ট্র। সমুদ্রপথে জাহাজে করে ভেনিসবাসীরা নানা দেশ থেকে যেমন জিনিসপত্র সংগ্রহ করত, তেমনি ইউরােপের নানা দেশে তা রপ্তানিও করত। তবে, মাঝে-মধ্যেই ভেনিসের বাণিজ্য-জাহাজগুলিকে শত্রুরাষ্ট্রের আক্রমণের কবলে পড়তে হত। সেই আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে জরুরি ছিল শত্রুর আক্রমণের আগাম খবর পাওয়া। সেই উদ্দেশ্যে, শত্রুকে আগে থেকেই লক্ষ করার জন্য বা আগাম যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ভেনিস কর্তৃপক্ষ প্রতিটি জাহাজে একটি করে দূরবিন রাখার প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করলেন। তাই তারা গালিলিওকে দূরবিন সরবরাহের অনুরােধ জানান। দূরবিন আবিষ্কারের কারণেই ভেনিসের কর্তৃপক্ষের কাছে গালিলিওর কদর বেড়ে গিয়েছিল।
গ্যালিলিও গল্প প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ)“নিজের দুরবিন নিয়ে গালিলিও অনেক নতুন আবিষ্কার করলেন।”দুরবিনের সাহায্যে গালিলিও কী কী আবিষ্কার করলেন? সনাতনীরা তার বিরুদ্ধতা করেছিলেন ২+
অথবা, “নিজের দূরবিন নিয়ে গালিলিও অনেক নতুন আবিষ্কার করলেন।”–গালিলিও কী কী আবিষ্কার -করলেন? এইসব আবিষ্কার সনাতনপঙ্খীদের মধ্যে কী ২+৩
প্রভাব ফেলল ?
উত্তর
ভেনিসে থাকাকালীন গালিলিও নিজের তৈরি দূরবিনে চোখ রেখে লক্ষ করেন, চন্দ্রপৃষ্ঠ অত্যন্ত অসমান ও বন্ধুর, যা ‘চঁাদের পাহাড়’ নামে অভিহিত এবং ছায়াপথ প্রকৃতপক্ষেলক্ষলক্ষতারার সমাবেশ।বৃহস্পতির চারটি এবং পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চঁাদকেও পর্যবেক্ষণ করেন তিনি|স্বদেশে ফিরে গালিলিও লক্ষ করেন সূর্যমণ্ডলের অসংখ্য কলঙ্কবিন্দু। চাদের মতাে শুক্র গ্রহের হ্রাসবৃদ্ধি এবং শনি গ্রহের চারিদিকের বলয়রেখাও পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। |
গালিলিও ভেনিসে থাকাকালে দূরবিনের সাহায্যে চাদের পাহাড়, ছায়াপথের প্রকৃতি, বৃহস্পতির চারটি এবং পৃথিবীর উপগ্রহ চঁাদকে আবিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু সেখানকার ধার্মিক পণ্ডিতেরা সেসব মানতে চাননি। কুসংস্কারাচ্ছন্ন এই সনাতনীরা গালিলিওর শত অনুরােধেও কিছুতেই দূরবিনে চোখ রাখেননি। সম্ভবত তাদের ভয় ছিল, এতে পাছে তাদের ধর্মবিশ্বাস টলে যায়। বরং তারা বলেন যে, যা খালি চোখে দেখা যায় না, তা যদি যন্ত্র দিয়ে দেখা যায়, তাহলে সেটা মােটেও বাস্তব নয়, যন্ত্রেরই কারসাজি। তারা তাই গালিলিওর বিরুদ্ধতা করে জানিয়েছিলেন যে, গালিলিও আসলে চালাকির সাহায্যে কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক ব্ৰত্মাণ্ড-বিন্যাসের সপক্ষে যুক্তি সংগ্রহের মতাে অন্যায় কর্ম করছেন।
গ্যালিলিও গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণি বাংলা
প্রশ্ন )ক্যাথােলিক খ্রিস্টান যাজকদের সঙ্গে গালিলিওর বিরােধের কারণ কী? গালিলিওর জীবনের শেষ নবছর যে অবস্থায় কেটেছিল, তার বিবরণ দাও। ২+৩
গ্যালিলিও গল্পের প্রশ্ন উত্তর
উত্তর
প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে দেখা যায় যে, দূরবিন যন্ত্র তৈরি করে গালিলিও তাতে চোখ রেখে আবিষ্কার করেন চঁাদের পাহাড়, ছায়াপথের প্রকৃতি, বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ। ভেনিসের ক্যাথােলিক যাজকরা এসব যেমন বিশ্বাস করলেন না, তেমনই গালিলিওর দূরবিনে চোখ রাখতেও সম্মত হলেন না তারা। তাদের মতে খালি চোখে দেখতে না পাওয়া কিছু যদি যন্ত্রে দেখা যায়, তবে তা বাস্তব নয়, তা যন্ত্রেরই কারসাজি। তারা ভাবলেন যে, এইভাবে গালিলিও আসলে কোপারনিকাসের ধর্মবিরােধী মতবাদকেই প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। তাই পরবর্তীকালে ফ্লোরেন্সে তিনি যখন কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদের সপক্ষে বই লেখেন, তখন সেখানকার ধর্মযাজকরা প্রচার করলেন যে, গালিলিওর অধ্যাপনা এবং গ্রন্থ ধর্মবিশ্বাস এবং বাইবেলের বিরােধী। এভাবেই গালিলিওর সঙ্গে ক্যাথােলিক যাজকদের বিরােধ বাধে।
• ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল পােপের নির্দেশে গালিলিও রােমে উপস্থিত হলে, সেই তারিখেই তিনি কারারুদ্ধ হন এবং বন্ধুদের সঙ্গে তার দেখা করাও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ৩০ এপ্রিল গালিলিওকে দিয়ে স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয় যে, তার লেখা বইতে কথােপকথনের ছলে তিনি যাকিছু লিখেছেন, তা সমস্তই তঁার অসতর্কতা, বৃথা অহংকার এবং অজ্ঞতার দৃষ্টান্ত। রােম শহরের ধর্মাধ্যক্ষরা গালিলিওকে বলতে বাধ্য করেন যে, তিনি কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ববিন্যাস মতবাদে আর বিশ্বাসী নন। বিচারকরা তাকে জানান যে, তাঁর ভুল দেশের ভয়ংকর ক্ষতি করায় একদিকে যেমন তার বই নিষিদ্ধ বলে ঘােষিত হবে, অন্যদিকে বিচারপতিরা যতদিন চাইবেন তাকে ততদিন কারারুদ্ধ থাকতে হবে। দুদিন পরেই অবশ্য রােমের বিচারপতিরা গালিলিওকে ফ্লোরেন্সের দূতাবাসে পাঠান। সেখান থেকে প্রথমে সিয়েনা (Siana) র আর্চবিশপ (প্রধান যাজক)এর গৃহে, পরে ফ্লোরেন্স শহরের উপকণ্ঠে গালিলিওকে তার বাড়িতেই গৃহবন্দি করে রাখা হয়।
এইসময় জীবন গালিলিওর কাছে একেবারে তিক্ত হয়ে উঠেছিল। যে মেয়েটি তার সেবাযত্ন করত, সেও ইতিমধ্যে মারা যায়। শেষ পাঁচ বছর অবশ্য পােপের করুপায় প্রায়ান্ধ গালিলিও বিধিনিষেধের হাত থেকে কিছুটা মুক্তি পান। অবশেষে ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি আটাত্তর বছর বয়সে এই মহান বিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে।
গ্যালিলিও গল্প
প্রশ্ন,) ‘গালিলিও প্রবন্ধ অনুসরণে গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার পরিচয় দাও।
উত্তর
সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও’ রচনাটিতে জগদবিখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিওর জীবনকথা বর্ণিত হয়েছে। পিতার ইচ্ছায় সতেরাে বছর বয়সে ডাক্তারিতে ভরতি হলেও গালিলিও ক্রমশ পদার্থবিদ্যা ও গণিতে উৎসাহী হয়ে পড়েন। এবং এই দুটি বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। শুরু হয় তার বিজ্ঞানসাধনা| প্রথমদিকে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে, তারপর প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভেনিসের পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন তিনি। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমদিকেই গালিলিও কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ববিন্যাসে আস্থাশীল হয়ে ওঠেন। এইসময়েই এক হল্যান্ডবাসীর দূরবিন আবিষ্কারের সংবাদ শুনে গালিলিও আরও উন্নত দূরবিন যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলেন। সেই দূরবিনে চোখ রেখে গালিলিও চঁাদের পাহাড়, ছায়াপথের প্রকৃতি, বৃহস্পতি গ্রহের চারটি এবং পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাদকে পর্যবেক্ষণ করেন। পরে স্বদেশে ফিরে সূর্যমণ্ডলের কলঙ্কবিন্দু, শুক্র গ্রহের হ্রাসবৃদ্ধি এবং শনির বলয় পর্যবেক্ষণ করেন| কোপারনিকাসের মতবাদের সপক্ষে মাতৃভাষা ইটালিয়ানে জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটি বই লিখে রােমের ইনকুইজিসন-এ তিনি অপমানিত এবং ভর্ৎসিত হন| দীর্ঘদিন পর ১৬৩০ খ্রিস্টাব্দে কথােপকথনের আদলে পালিলিও সূর্যকেন্দ্রিক ব্রয়াণ্ডবাদের সপক্ষে আরও-একটি বই লেখেন। এই বইটির জন্যই গালিলিওর শেষ নয় বছরের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে ৭৭ বছর বয়সে গালিলিওর বিজ্ঞানসাধনার অবসান ঘটে।
ক) অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
গ্যালিলিও গল্পের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও।
গ্যালিলিও গল্পের প্রশ্ন উত্তর
প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান ১.
১) নতুন পােপ সম্পর্কে গালিলিওর কী ধারণা ছিল?
উত্তর: : নতুন পােপ সম্পর্কে গালিলিওর ধারণা ছিল—তিনি বিজ্ঞানকে শ্রদ্ধা করেন।
২ গালিলিও সম্পর্কে Inquisition-এর রায় কী ছিল?
উত্তর: গালিলিওর বক্তব্য সম্পর্কে পবিত্র আদালত Inquisition-এর রায় ছিল যে, সূর্য জগতের কেন্দ্রস্বরূপ—এই কথাটি অযৌক্তিক এবং ধর্মমতের বিরােধী।
৩, খ্রিস্টানদের মধ্যে কোন অংশে গালিলিওর খ্যাতি ছড়ায়?
উত্তর: খ্রিস্টানদের মধ্যে যারা ছিলেন প্রোটেস্টান্ট, তাদের মধ্যেই গালিলিওর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
৪. গালিলিওর জীবনের মূল কথা কী ছিল?
: উত্তর: গালিলিওর জীবনের মূল কথা ছিল সৰ সত্যকে বিচার ও যাচাই করতে হবে আপ্তবাক্যকে বিশ্বাস করে জীবনকে গড়ে তুললে ভুল হবে।
৫. “যদি তাতে তিনি অস্বীকৃতহন”—তবে কী করা হবে?
উত্তর: ‘যদি তাতে তিনি অস্বীকৃত হন” অর্থাৎ ইনকুইজিসনের নির্দেশ যদি গালিলিও না মানেন তাহলে তাকে কারারুদ্ধ করা হবে
: ৬. “তার মুখ দিয়ে বলানাে হল”—কার মুখ দিয়ে কী বলানাে হল?
উত্তর: গালিলিওর মুখ দিয়ে বলানাে হল যে, তিনি কোপারনিকাসের মতের ওপর থেকে বিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
৭. পােপ বেলারিমিনকে কী আদেশ দেন?
উত্তর: পােপ আদেশ দিলেন কার্ডিনাল বেলারিমিন যেন গালিলিওকে বুঝিয়ে বলেন তার ভ্রান্ত বিশ্বাস ত্যাগ করতে।
৮, কত খ্রিস্টাব্দে রােমে গালিলিওর ডাক পড়ল
উত্তর: ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে গালিলিওকে কার্ডিনাল বেলারিমিন রােমে ডাকলেন।
৯. গালিলিওর সুহৃদ কে ছিলেন?
উত্তর: কার্ডিনাল বেলারিমিন ছিলেন গালিলিওর সুহৃদ।
১০, ৩০ এপ্রিল তাকে কী স্বীকার করানাে হয়েছিল?
উত্তর: ৩০ এপ্রিল ইনকুইজিসনের সামনে গালিলিওকে দিয়ে স্বীকার করানাে হয়েছিল যে, কথােপকথনের ছলে তিনি যা লিখেছেন, তা তঁার বৃথা গর্বের, অজ্ঞতার ও অসতর্কতার নিদর্শন।
১১. “সূর্য যে জগতের কেন্দ্র-স্বরূপ—এটি অযৌক্তিক এবং যথার্থ ধর্মমতের পরিপন্থী।”—Inquisition তার এই বক্তব্যের সপক্ষে কী যুক্তি দিয়েছিল?
উত্তর: : Inquisition তার বক্তব্যের সপক্ষে বলেছিল যে, সূর্যকেন্দ্রিক এই মতবাদ বাইবেলের অনেক লেখার সঙ্গে মেলে না, যেগুলি ততদিন পর্যন্ত যাজক ও পণ্ডিতেরা শিক্ষা দিয়েছেন৷
১২. “আর তা যদি তিনি না করতে চান”—কী না করতে চাওয়ার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: গালিলিওর কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ববিন্যাস-মতবাদে বিশ্বাস ত্যাগ করতে না চাওয়ার কথা বলা হয়েছে এখানে। :
১৩, “আর তা যদি তিনি না করতে চান, তাহলে কী করা হবে বলে জানিয়েছিলেন পােপ?
উত্তর: পােপ জানিয়েছিলেন যে, গালিলিও অরাজি হলে তাকে তার ভ্রান্ত মতপ্রচার বা আলােচনা বন্ধ করার বিধিবদ্ধ আদেশ দেওয়া হবে।
১৪, “এক সময়ে গালিলিও ভাবতেন—ইনি বিজ্ঞানকে শ্রদ্ধা করেন।” কার সম্বন্ধে এ কথা ভেবেছিলেন গালিলিও?
১৫. “ফলে ইতালি দেশই পিছিয়ে পড়ল।”—এই পিছিয়ে পড়ার কারণ কী?
উত্তর: ইতালিতে সনাতনপন্থী ধার্মিকরা বিজ্ঞানকে শ্বাসরুদ্ধ করতে চেষ্টা করেছিলেন বলেই ইতালি দেশটি পিছিয়ে গিয়েছিল।
১৬. কোন্ কোন্ দেশে গালিলিওর আজন্ম সাধনা সুফল প্রসব করল?
উত্তর: ফ্রান্স, ইংল্যান্ড এবং ইতালি ছাড়াও ইউরােপের অন্যান্য দেশে গালিলিওর আজন্ম সাধনা সুফল প্রসব করেছিল।
১৭ “এ সত্ত্বেও পৃথিবী চলমান”—কখন গালিলিও এই উক্তি করেন?
উত্তরঃ এরকম প্রবাদ আছে যে, ইনকুইজিশন-এর বিচারকদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গালিলিও মন্তব্যটি করেন।
১৮. খ্রিস্টীয় কোন্ মহলে গালিলিওর প্রতি সহানুভূতি ছিল?
উত্তর: প্রােটেস্টান্ট ধর্মাবলম্বীদের গালিলিওর প্রতি সহানুভূতি ছিল।
১৯. “৩০শে এপ্রিল গালিলিওকে স্বীকার করানাে হলাে”–গালিলিওকে কী স্বীকার করানাে হয়েছিল?
উত্তরঃ গালিলিওকে স্বীকার করানাে হয়েছিল যে টলেমি কোপারনিকাসের বিশ্ববিন্যাসের গুণাগুণ নিয়ে তিনি যা লিখেছেন সবই তঁার মিথ্যা অহংকার আর অসতর্কতার নিদর্শন।
২০. “পােপ আদেশ দিলেন…”—পােপের আদেশ কী ছিল?
উত্তরঃ পােপ কার্ডিনাল বেলারিমিনকে আদেশ দিয়েছিলেন যে তিনি যেন আহ্নিক, বার্ষিক গতি বিষয়ে গালিলিওকে তার ভ্রান্ত ধারণা ত্যাগ করতে বলেন।
গ্যালিলিও গল্পের ছোট প্রশ্ন উত্তর
খ) অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান কমবেশি ২ষ্টি শব্দে উত্তর দাও।
১, ভেনিস কর্তৃপক্ষের কাছে গালিলিওর কদর বেড়ে গিয়েছিল কেন?
উত্তর: দূরবিন আবিষ্কারের ফলে নৌবহরের শত্রুপক্ষের আক্রমণের আশঙ্কা কমে গিয়েছিল। তাই ভেনিস কর্তৃপক্ষের কাছে গালিলিওর কদর বেড়ে গিয়েছিল।
২. গালিলিওর আবিষ্কৃত দূরবিন ভেনিস কর্তৃপক্ষের কোন্ কাজে লেগেছিল?
উত্তর: গালিলিওর আবিষ্কৃত দূরবিন ভেনিস কর্তৃপক্ষ তথা সরকারের নৌবাহিনীর শত্রুপক্ষের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার কাজে লেগেছিল।
৩. দূরবিনের মধ্যে বৃহস্পতির চাঁদের ছবি দেখতে পাওয়াকে ধার্মিক পণ্ডিতেরা কী মনে করেছিলেন?
উত্তর: দূরবিনের মধ্যে বৃহস্পতির চাদের ছবি অর্থাৎ উপগ্রহের ছবি দেখতে পাওয়াকে ধার্মিক পণ্ডিতেরা যন্ত্রের কারসাজি বলে মনে করেছিলেন
৪. দূরবিনের ব্যবহারে রাজি না হওয়া ধর্মযাজক মারা গেলে গালিলিও কী বলেছিলেন?
উত্তর: দূরবিন ব্যবহার করতে রাজি না হওয়া ধর্মযাজক মারা গেলে গালিলিও বলেছিলেন—হয়তাে এবার স্বর্গে যাওয়ার সময় বৃহস্পতির চন্দ্রগুলি দেখতে পাবেন।
৫, কখন গালিলিও ভেবেছিলেন যে তিনি আকাঙ্ক্ষিত অবসর পাবেন?
উত্তর: যখন গালিলিওর ছাত্র কসমাে তাস্কানির সিংহাসনে বসেন তখন গালিলিও ভেবেছিলেন যে তিনি তাস্কানিতে থাকতে পারলে অর্থের চিন্তা ছাড়াই আকাঙ্ক্ষিত অবসর পাবেন।
৬. ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে গালিলিও কেন অবসর চেয়েছিলেন?
উত্তর: অনেক বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষা ও আবিষ্কার করার সুযােগের জন্য ১৬০৯ সালে গালিলিও অবসর চেয়েছিলেন।
৭. ভেনিসের শাসকরা প্রতিটি জাহাজে দূরবিন বসিয়েছিলেন কেন?
উত্তর: ভেনিসের শাসকেরা তাদের নৌবাহিনীর প্রতিটি জাহাজে দূরবিন বসিয়েছিল, কারণ আক্রমণকারী শত্রু সেনাদের অনেক আগে থেকেই তাহলে দেখতে পাওয়া যাবে।
৮. ভেনিসের ধর্মযাজকরা দূরবিনে চোখ রাখতে রাজি হয়নি কেন?
উত্তর: ভেনিসের ধর্মযাজকেরা ধর্মবিশ্বাস টলে যাওয়ার ভয়ে দূরবিনে চোখ রাখতে রাজি হননি।
৯. কোন দেশের লােক প্রথম দূরের জিনিসকে কাছে দেখার যন্ত্র তৈরি করেন?
উত্তর: হল্যান্ডের অধিবাসী এক ব্যবসায়ী কাচের লেন্স দিয়ে প্রথম দূরের জিনিসকে কাছে দেখার যন্ত্র তৈরি করেন।
১০, “শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হল’—কীভাবে সমস্যার সমাধান হল?
উত্তর: গালিলিও কাগজে প্ল্যান এঁকে আলোর রেখাপথের বিষয় বিচার করে। দূরের জিনিস দেখার জন্য কাচের নল বানিয়ে সমস্যার সমাধান করলেন।
১১. সমুদ্রপথে ভেনিসের নৌবাহিনী ঘুরে বেড়াত কেন?
উত্তর: নানা দেশ থেকে পণ্য সংগ্রহ করে এনে ইউরােপের নানা স্থানে দিবসের নৌবাহিনী ঘুরে বেড়াত।
১২. গালিলিওর বাড়ি ফ্যাক্টরি হয়ে ওঠার কারণ কী?
উত্তরঃ ভেনিসের প্রতিটি জাহাজের জন্য অসংখ্য দূরবিনের জোগান দিতে গালিলিওর বাড়ি ফ্যাক্টরি হয়ে উঠেছিল
১৩, গালিলিও বৃহস্পতির ক-টি উপগ্রহ দেখেছিলেন?
উত্তর: দূরবিনের সাহায্যে গালিলিও বৃহস্পতির ৪টি উপগ্রহ দেখেছিলেন।
১৪, বিজ্ঞানচর্চার জন্য অবসর পেতে গালিলিও কী করবেন ভাবলেন?
উত্তর: বিজ্ঞানচর্চার জন্য অবসর পেতে নিজের পুরােনাে ছাত্র কসমাে, যে তাস্কানির ডিউক হয়েছিল তার কাছে দরবার করার কথা ভেবেছিলেন গালিলিও।
১৫. ভেনিসে কী ধরনের শাসনতন্ত্র প্রচলিত ছিল?
উত্তর: গালিলিও যখন পাডুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতেন তখন ভেনিসে উদার গণতন্ত্র প্রচলিত ছিল।
১৬. “১৬০৯ সালে ঘটল এক নতুন ব্যাপার”—কোন্ নতুন ব্যাপারের কথা বলা হয়েছে?
উ: ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে এক হল্যান্ডবাসী কাচের লেন্স নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে হঠাৎ একটি নলের দুপাশে লেন্স রেখে দেখলেন যে, দূরের জিনিস বড়াে দেখাচ্ছে।
১৭. “আকাশের দিকে ফিরিয়ে গালিলিও অনেক নতুন দৃশ্য দেখলেন।” -কী কী ‘নতুন দৃশ্য দেখেছিলেন?
উত্তর: : দূরবিনের মধ্য দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে গালিলিও চাদের পাহাড়, ছায়াপথের মধ্যে নক্ষত্রের সমাবেশ, পৃথিবীর উপগ্রহ চঁাদ, বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ—এসব নতুন দৃশ্য দেখেছিলেন।
১৮. “তখনকার দিনে ধার্মিক পণ্ডিতেরা এসব বিশ্বাস করতে চাইলেন ।”—পণ্ডিতেরা কী বিশ্বাস করতে চাইলেন না?
উত্তর: চাদের পাহাড়, ছায়াপথের মধ্যে নক্ষত্রের সমাবেশ, পৃথিবীর উপগ্রহ চঁাদ, বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ—দূরবিনে দেখতে পাওয়া এসব বিষয় বিশ্বাস করেননি ধার্মিক পণ্ডিতেরা।
গ্যালিলিও গল্পের প্রশ্ন উত্তর
১৯, “এতে গালিলিওর আমােদ লাগল।”—কীসে?
উত্তর: তৎকালীন ধার্মিক পণ্ডিতেরা তাদের ধর্মবিশ্বাস টলে যাওয়ার ভয়ে দূরবিনের ভিতর দিয়ে কোনাে কিছু দেখতে চাইলেন না, এই বিষয়টিতেই গলিলিওর আমােদ লেগেছিল |
২০. “সেই সময়ে গালিলিও রহস্য করে বললেন”—কোন্ সময়ে?
উত্তর: বৃহস্পতির উপগ্রহে অবিশ্বাসী এক উচ্চপদস্থ ধর্মযাজক, যিনি দূরবিন ব্যবহার করতে চাননি, তার মৃত্যুর অব্যবহিত পরের কথা এখানে বলা হয়েছে।
২১. “যা এখানকার লােকেরা চায়।”—কারা, কী চায়?
ভেনিসের লোকেরা চাইতেন যে, গ্যালিলিও যতদিন সম্ভব সে নগর রাষ্ট্রের প্রধান এবং লেখাপড়া করুন।