নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর

 নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর

নীলধ্বজের-প্রতি-জনা-কবিতার-প্রশ্ন-উত্তর

 

নীলধ্বজের প্রতি জনা

— মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪ ১৮৭৩)

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর:

প্রশ্নঃ) “ভুলিব এ জ্বালা,/এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে।”-বক্তা কে? বক্তা এখানে কোন জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন? শেষপর্যন্ত কীভাবে এই জ্বালা থেকে তিনি মুক্তি খুঁজ্জেছেন? ১+১+ ৩

উত্তর

মধুসূদন দত্তের ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতা থেকে গৃহীত প্রশ্নোস্তৃত অংশের বকা মাহেশ্বরী পুরীর রাজমহিষী জনা। রাজমহিষী জনা পুত্রশােকের জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন। । জনা আশা করেছিলেন, তার স্বামী রাজা নীলধ্বজ পুত্র প্রবীরের হত্যার প্রতিশােধ গ্রহণের জন্য পার্থের বিরুদ্ধে অতি অবশ্যই যুদ্ধযাত্রা করবেন। রাজতােরণে রণবাদ্যের শব্দ, হাতি এবং ঘােড়ার চিৎকার শুনে, আকাশে রাজপতাকা উড়তে দেখে আর রাজসৈন্যদের রণমত্ত ঠুংকারে জনা প্রাথমিকভাবে অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, রাজা নীলধবজ নিশ্চয়। যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পার্থের মৃত্যুর মধ্য দিয়েই শােকে আকুল জনা পুত্র প্রবীরের অকালমৃত্যুর জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন।

 

নীলধবজের কাছে জনার এই প্রত্যাশা একেবারেই পূরণ হয়নি। নীলধ্বজ পার্থকে রাজসভায় আহ্বান ও বন্দনা করেন, মিষ্ট কথাবার্তার মাধ্যমে তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেন। এরপর পার্থের মনােরঞ্জনের জন্য রাজসভায় বসানাে হয় নৃত্য ও গীতের আসর। এইসব ঘটনাপ্রবাহ জনকে আহত এবং ক্ষুব্ধ করে | ক্ষোভ প্রকাশ করার পাশাপাশি নারী হিসেবে নিজের অসহায়তার কথাও জনা বুঝতে পারেন। নিরুপায় জনা সব কিছুকেই নিয়তির পরিহাস বলে মনে করেন এবং স্বামী নীলধবজের প্রতি তীব্র অভিমানে আত্মবিসর্জনের মধ্যেই মুক্তির সন্ধান করেন—“চলিল অভাগা জনা পুত্রের উদ্দেশে!’ ক্ষত্রিয় বংশমর্যাদা রক্ষা এবং মৃতপুত্রের প্রতি ভালােবাসায় জনা জাহ্নবীর জলে আত্মবিসর্জনের মাধ্যমে হৃদয়যন্ত্রণা থেকে মুক্তি খুঁজেছেন।

 

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতা pdf

প্রশ্নঃ) “কি কহিবে, কহ/যবে দেশ-দেশান্তরে জনরব লবে/এ কাহিনি,”—মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।

 

 উত্তর

 

মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় পুত্রের হত্যাকারী পার্থের সঙ্গে মাহেশ্বরী পুরীর রাজা নীলবজের সখ্য রাজমহিষী জনা কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। নীলধবজের সিংহাসনে মিত্ৰশ্রেষ্ঠ হিসেবে পার্থকে বসে থাকতে দেখে জনা স্তম্ভিত ও ক্ষুদ্ধ হন। হতবাক জনা মনে করেন যে, পুত্রশােকে রাজা নীলধবজ হয়তাে তার স্বাভাবিক কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। নির্দয় নিয়তি যেন রাজা নীলধবজের জ্ঞান হরণ করেছে। হলে নীলধবজের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হত না, একজন ক্ষত্রিয় বীর হওয়া সত্ত্বেও পুত্রের হত্যাকারীর সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করা।

 

রাজতােরণে রণবাদ্যের শব্দ, হাতি-ঘােড়ার চিৎকার ইত্যাদি শুনে, আকাশে রাজপতাকা উড়তে দেখে আর রাজসৈন্যদের রণােন্মত্ত হুংকারে জনা প্রাথমিকভাবে অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, রাজা নীলধবজ নিশ্চয় পার্থের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই জনার ভুল ভেঙে যায়। কারণ তখন রাজসভায় নর্তকীরা নৃত্য পরিবেশনে রত, গায়কেরা ব্যস্ত সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অতিথি পার্থের মনােরঞ্জনে। জনা এরপর এই ভেবে বিস্মিত হয়েছেন যে, একমাত্র পুত্র প্রবীরের রক্তে রঞ্জিত যে হাত, একজন ক্ষত্রিয় পিতা হিসেবে রাজা নীলধবজ কীভাবে সেই হাত স্পর্শ করে তঁাকে রাজপুরীতে সাদরে বরণ করছেন! তাকে মিষ্টভাষায় তােষণ করা জনার কাছে চরম বিরক্তি ও লজ্জার ব্যাপার বলেই মনে হয়েছে। ক্ষত্রিয়ধর্মের এই লঙ্ঘন যে দেশে এবং দেশান্তরে নিশ্চিতভাবেই বিরূপ আলােচনা, নিন্দা ও ব্যঙ্গের বিষয় হবে, জনা তা ভালােভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছেন। 

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতা:

প্রশ্নঃ) “বসুন্ধরা গ্রাসিলা সরােষেরথচক্র যবে, হায়;” —মন্তব্যটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে। মন্তব্যটিতে যে পৌরাণিক প্রসঙ্গের উল্লেখ করা হয়েছে তার বিস্তৃত বর্ণনা দাও। ২+ ৩

 

উত্তর

 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ কাব্যাংশে অর্জুনের হাতে মৃত পুত্র প্রবীরের শােকে আকুলা জনা চেয়েছিলেন স্বামী নীলধবজ যেন তার এই পুত্রহত্যার প্রতিশােধ নেন। কিন্তু পরিবর্তে কৃষ্ণুভক্ত নীলধ্বজ অর্জুনের সঙ্গে সখ্য স্থাপন করায় জনা বিস্মিত এবং ক্ষুদ্ধ হন। এমনকি অর্জুনের বন্দনা রাজার ‘ভ্রান্তি’ বলে উল্লেখ করতেও জনা দ্বিধাবােধ করেননি। পার্থ জনার চোখে শুধু পুত্রের হত্যাকারী নন। যে বীরশ্রেষ্ঠ পরিচয়ে জগৎবাসী পার্থকে জানে—তা যে একটি ভ্রান্ত ধারণা, যুক্তির সাহায্যে জনা সেকথাই বলতে চান। তিনি এই প্রসঙ্গেই ব্রহ্মশাপে অসহায় কর্ণকে অর্জুনের হত্যা করার ঘটনাটি তুলে ধরেছেন।

 

 নিজের আসল পরিচয় গােপন রেখে সুতপুত্র কর্ণ ব্রাম্মণ পরিচয়ে পরশুরামের কাছে ব্ৰয়াস্ত্র প্রয়ােগের কৌশল শিখতে যান। শিক্ষালাভের পর ঘটনাচক্রে কর্ণের প্রকৃত পরিচয় জানতে পারলে কুদ্ধ পরশুরাম অভিশাপ দেন যে, মিথ্যাচারের জন্য কর্ণ কার্যকালে ব্ৰয়াস্ত্র প্রয়ােগের বিদ্যা ভুলে যাবেন। অন্যদিকে, একবার পরশুরামের কাছে অস্ত্র অনুশীলনকালে অসাবধানতার কারণে কর্ণ এক ব্রাহ্মণের হােমধেনু হত্যা করলে ব্রায়ণ তাকে অভিশাপ দেন যে, যুদ্ধকালে তার মহাভয় উপস্থিত হবে, পৃথিবীর রথচক্র গ্রাস করবে এবং প্রতিদ্বন্দ্বীর হাতেই কর্ণের মৃত্যু হবে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনের সঙ্গে যুদ্ধের সময় পরশুরাম ও ব্রায়ণের অভিশাপ অনুযায়ী কর্ণ সকল দিব্যাস্ত্র ভুলে যান এবং পৃথিবী তার রথচক্র গ্রাস করে। রথচক্র উদ্ধারকালে অঞ্জলিক বাণে অর্জুন অসহায় কর্ণের শিরচ্ছেদ করেন।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর

 

প্রশ্নঃ) “মিথ্যা কথা, নাথা বিবেচনা কর,” -মিথ্যা কথাটিকা। এক্ষেত্রে বা কীভাবে নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন? ১+8 

 

উত্তর

 

 মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত বীরাঙ্গনা কাব্য থেকে নেওয়া ‘নীলধ্বজের। প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় মহাভারত-এ বর্ণিত তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনের বীরত্বের কথা যে আসলে মিথ্যা—এই কথাই জনা বলতে চেয়েছেন। • পুত্র প্রবীরের মৃত্যুর পরে পুত্রের হত্যাকারী পার্থের সঙ্গে অগ্নির পরামর্শে সন্ধি ও সখ্য স্থাপন করেন রাজা নীলধবজ| কিন্তু পুত্রশােকে কাতর জনা প্রতিশােধ নেওয়ার জন্য এতটাই ব্যাকুল ছিলেন যে নীলধবজের কাছে পার্থের এই মহৎ ভাবমূর্তিকে ভাঙতে প্রয়াসী হন তিনি।

  একের পর এক দৃষ্টান্ত সহযােগে এরপর রাজমহিষী জনা বীর হিসেবে খ্যাত। পার্থের হীনতা এবং চতুরতাকে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। স্বয়ংবরসভায় দ্রৌপদীকে লাভকরারজন্য পার্থব্রায়ণেরছদ্মবেশ ধারণকরে সকলকেছলনা। করেছিলেন। এ ছাড়া, অর্জুনের খাণ্ডববন দহনেতাকে যথেষ্ট পরিমাণে নির্ভর করতে হয়েছিল কৃয়ের ওপর৷ পিতামহ ভীষ্মকে হত্যা করার ক্ষেত্রেও অর্জুন নপুংসক শিখণ্ডীকে সামনে রেখে তাকে তিরের আঘাতে জর্জরিত করতে সক্ষম হন।জনার মতে, গুরু দ্রোণাচার্যকে বধ করার ক্ষেত্রেও কৃয়ের সহায়তায় কৌশল রচনা করেছিলেন অর্জুন।কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে রথচক্র উদ্ধারকালে অঞ্জলিক বাণে অর্জুন অসহায় কর্ণের শিরচ্ছেদ করেন। এসব কারণেই জনা পার্থকে কখনও মহাপাপী’, কখনও নরাধম, আবার কখনােবা বর্বর’ বলে সম্বােধন করেছেন। এভাবেই অর্জুনের বীরত্বপূর্ণ ভাবমূর্তিকে ভেঙে ফেলতে উদ্যোগী হয়ে জনা আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

 

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর class 9

প্রশ্নঃ) “কিন্তু বৃথা এ গঞ্জনা।”বক্তা কে? তিনি কাকে গঞ্জনা। করতে চেয়েছেন? কেন তার মনে হয়েছে এই গঞ্জনা বৃথা ? ১+১+৩ 

 

 উত্তর 

 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্যের অন্তর্গত ‘নীলবজের প্রতি

 

জনা’ কবিতায় মাহেশ্বরী পুরীর রাজকুলবধূরানি জনা এই উক্তিটি করেছেন। জনা তার স্বামী নীলধবজের প্রতি গঞ্জনাবাক্য উচ্চারণ করেছেন। ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় পুত্রের হত্যাকারী পার্থের সঙ্গে নীলধ্বজের সখ্যের কারণে জনা তার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেননা পার্থ অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘােড়া ছেড়ে দিলে এবং জনার পুত্র প্রবীর তার পথ রােধ করলে মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ প্রবীরকে যুদ্ধে হত্যা করেন। এই ঘটনায় রাজমাতা জনা আশা করেছিলেন হয়তাে স্বামী নীলধজপুত্রহত্যাকারী পার্থের উপযুক্ত

 

শাস্তির ব্যবস্থা করবেন দেশের সার্বভৌমত্বও ক্ষত্রিয় বংশের মানমর্যাদা রক্ষা করবেন। কিন্তু তিনি যখন তা না করে পার্থকে রাজকীয় মর্যাদায় বরণ করে তার সঙ্গে সন্ধি ও সখ্য স্থাপন করেছেন এবং নানাবিধ মিষ্ট কথায় পার্থকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন তখনই জনা তঁার তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন। কারণ নীলধ্বজের বীরধর্ম ও মর্যাদার এই বিসর্জন তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। তবুও রাজা নীলধ্বজ রানির কোনাে কথাতেই কর্ণপাত করেননি। তাই জনা বলেছেন—তার এই অভিযােগ, তিরস্কার সবই ব্যর্থ।

 

প্রশ্ন) এ জনাকীর্ণ ভবথল আজি /বিজন জনার পক্ষে।”—জুনা কে? তার কাছে ভবঙ্খল বিজন কেন ? ১+৪ 

 

অথবা, “এ জনাকীর্ণ ভবঙ্খল আজি/ বিজন জনার পক্ষে।” “জনার এমন বিলাপের কারণ কী?

 

 উত্তর 

 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ কাব্যাংশের প্রধান চরিত্র জনা ছিলেন মাহেশ্বরী পুরীর রাজমহিষী এবং রাজা নীলধজের স্ত্রী। । তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনের অশ্বমেধ যজ্ঞের অশ্ব ধরার জন্য একমাত্র পুত্র প্রবীর অর্জুনের হাতে নিহত হয়েছিলেন। এই ঘটনা জনাকে শােকাকুলা করে তুলেছিল। জনা চেয়েছিলেন অর্জুনের রক্তে সেই শােকের আগুন নেভাতে। কিন্তু তার সমস্ত প্রত্যাশাকে ব্যর্থ করে রাজা নীলধ্বজ পুত্রের হত্যাকারী পার্থের সঙ্গে সখ্য স্থাপন করেন। এই ঘটনা জনার মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং বেদনার সৃষ্টি করে—“কি লজ্জা! দুঃখের কথা, হায় কব কারে?” নীলধবজের মধ্যে ক্ষত্রিয়ধর্ম জাগরণের জন্য তিনি পার্থের চরিত্রের নীচতাকে নানা দৃষ্টান্তের সাহায্যে তুলে ধরেন। খাণ্ডব দহন থেকে কর্ণবধের একাধিক ঘটনার উল্লেখ করে জনা বােঝাতে চান যে অর্জুনের বীরত্বের ধারণাটি একেবারেই যথার্থ নয়। কিন্তু তারপরেও নীলধ্বজের চরিত্রে কোনাে পরিবর্তন না দেখে জনার অভিমান তীব্রতর হয়ে ওঠে। যেভাবে নিজের বীরত্ব এবং সম্মানকে নীলধবজ বিসর্জন দিয়েছেন তা জনা মানতে পারেননি। শেষপর্যন্ত যাবতীয় অভিমান আত্মগ্লানিতে রূপান্তরিত হয়েছে—“কুলনারী আমি, নাথ, বিধির বিধানে/পরাধীন!” নিজের মনের বাসনা মেটানাের ক্ষমতা তার নেই। এই অবস্থায় একদিকে পুত্রশােকের যন্ত্রণা, অন্যদিকে স্বামীর বিরূপতায় মানবপূর্ণ পৃথিবীও মানবহীন হয়ে উঠেছে জনার কাছে অসহায়তা আর একাকিত্ব থেকে মুক্তির জন্য আত্মবিসর্জনের কথা ভেবেছেন জনা।

 

 জনার চরিত্র

প্রশ্নঃ) নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কাব্যাংশে উল্লিখিত জনা চরিত্রটি সম্পর্কে আলােচনা করাে।

 

 অথবা, “হায়, পাগলিনী জন।”—পাঠ্য পত্র অনুসরণে পাগলিনী’ জনার চরিত্র বিশ্লেষণ করাে।

 

উত্তরঃ

 

কাব্য-এর একাদশ পত্র ‘নীলধবজের প্রতি

বীরাঙ্গনা জনা’-তে পত্রলেখিকা। রাজমহিষী জনাই হলেন মুখ্য চরিত্র। তার চরিত্রের যেসব বৈশিষ্ট্য এই পত্ৰকবিতায় উজ্জ্বলভাবে প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলি হল—

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার

প্রতিশােধস্পৃহা:অর্জুনের হাতে প্রবীরের মৃত্যুর পরে পুত্রশােকের আকুলতা সত্ত্বেও জনা তার চোখের জলকে রূপান্তরিত করেছেন ক্রোধের আগুনে “ভুলিব এ জ্বালা,/এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে।” 

 

ক্ষত্রধর্ম: জনা যেহেতু ক্ষত্রিয়কুলবধূ এবং ক্ষত্রিয়কুলবালা, তাই তিনি স্বামীকে বারবার উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন পুত্রহন্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের আয়ােজন করার জন্য। এর মধ্য দিয়েই তিনি ক্ষত্রধর্ম রক্ষার প্রচেষ্টা করেছেন। 

 

প্রেমিকা সত্তা; জনার আহত প্রেমই তাকে অভিমানী করে তুলেছে—“তুমি পতি, ভাগ্যদোষে বাম মম প্রতি।’

 

বেদ-পুরাণ–শাস্ত্রে জ্ঞান: জনার আর একটি গুণ শাস্ত্র বেদ পূরাগ ইতিহাস সংক্রান্ত বিষয়ে তার গভীর জ্ঞান | তিনি অর্জুনের বংশগরিমার অসারতা এবং মহাভারত রচয়িতা ব্যাসদেবের চারিত্রিক হীনতা প্রমাণ করার জন্য সচেষ্ট হয়েছেন। একইভাবে তিনি পাণ্ডব-কৌরব বংশের ইতিহাসকে এবং সত্যবতী পুত্র ব্যাসদেবের নিলজ্জতাকে অনায়াসে বিবৃত করেছেন।

 

মাতৃসত্তা: প্রতিবাদী চেতনা সত্ত্বেও জনা মূলত জননী। পুত্রের হত্যাকারীর সঙ্গে স্বামী যখন সখ্য স্থাপন করেছেন, তখন অসহায় জনা আর কোনাে পথ খুঁজে না পেয়ে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছেন—“ছাড়িব এ পােড়া প্রাণ জাহ্নবীর জলে।” প্রতিবাদ ও বীরধর্মের অনন্য মিশেলে জনার মাতৃসত্তা এই পত্ৰকবিতায় এক মহাকাব্যিক রূপ পেয়েছে।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার প্রশ্নঃ

প্রম, ) নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কাব্যাংশে নীলধ্বজের প্রতি জনার যে ক্ষোভ ও অভিমানের প্রকাশ ঘটেছে, তা নিজের ভাষায় লেখাে। 

 

উত্তর

 

বীরাঙ্গনা কাব্য গ্রন্থ থেকে নেওয়া ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ শীর্ষক একাদশ পত্রে পুত্রহস্তা পার্থের সঙ্গে সখ্য স্থাপন করায় রাজা নীলধবজের প্রতি রাজমহিষী জনার তীব্র ক্ষোভ ও অভিমানকে কবি মধুসূদন এই পত্রকাব্যে প্রকাশ করেছেন।

 

একমাত্র পুত্র প্রবীরের পরাজয় ও মৃত্যুর পরে অগ্নির পরামর্শে কৃয়ভক্ত নীলধবজ অর্জুনের সঙ্গে সন্ধি করেন। জনার কাছে স্বামীর এই আচরণ ছিল একেবারে অপ্রত্যাশিত। প্রাথমিকভাবে রণবাদ্যের শব্দ, হাতি-ঘােড়ার আওয়াজ,রাজপতাকার উড়তে থাকাইত্যাদি দেখে তিনি বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। তঁার মনে হয়েছিল যে, এ হয়তাে মাহেশ্বরীরাজের যুদ্ধের প্রস্তুতি। কিন্তু অচিরেই তিনি বুঝতে পারলেন যে, পার্থের আগমনকে স্বাগত জানানাের জন্যই রাজসভায় নর্তকীরা নাচছে, গায়কেরা গান করছে আর বীণাধবনি উথলে পড়ছে| জনা এই ঘটনায় লজ্জিত এবং হতবাক হয়ে যান। ব্যথিত জনা নীলধবজের আচরণকে তার বুদ্ধিভ্রমের প্রকাশ বলে মনে করেন। চরম শত্রুর সঙ্গে নীলধবজের বন্ধুত্ব জনার মনে বিস্ময় ও প্রশ্নের জন্ম দেয়।

 

নীলধবজের কাপুরুষতার কাহিনি যে জগৎজুড়ে প্রচারিত হবে, সেকথাও স্বামীকে জানাতে ভােলেননি ক্ষুদ্ধ ও বিস্মিত জনা|

 

“গুরুজন তুমি”—নীলধবজকে এই সন্ত্রম দেখিয়ে কখনও যুক্তি দিয়ে, কখনও আহত চিত্তের বিক্ষোভে আপন বক্তব্যকে জানাতে দ্বিধা করেননি তিনি। মধুসূদন তার এই কাব্যে জনার মধ্য দিয়ে যেন উনবিংশ শতাব্দীর জেগে ওঠা নারীসত্তার প্রতিবাদী রূপকেই ফুটিয়ে তুলেছেন।

 

প্রশ্নঃ)  নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতায় জনার কুদ্ধ অভিমানী স্বর কীভাবে ধরা পড়েছে ? 

 

 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের বীরাঙ্গনা কাব্য-এর একাদশতম পত্র ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’তে স্বামী নীলধ্বজ মাহেশ্বরী পুরীর রাজা হয়েও পুত্রহস্তা পার্থকে দেবতাজ্ঞানে আপন সিংহাসনে বসিয়ে তার সেবায় নিয়ােজিত হয়েছেন তার মনােরঞ্জনের জন্য সচেষ্ট হয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় জনা কুদ্ধ হয়ে তার স্বামীকে একটি অভিযােগপত্র লিখেছেন। পত্রে তিনি নানা দৃষ্টান্তের সাহায্যে অর্জুন চরিত্রের নীচতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও জনা স্বামীর মনে পুত্ৰহন্তার বিরুদ্ধে প্রতিশােধস্পৃহা জাগিয়ে তুলতে ব্যর্থ হন। 

 

স্বামী গুরুজন, তাই তাকে দোষারােপ করা উচিত কাজ নয় জেনেও পুত্রশােকাতুরা জনা তার মনের দুঃখ ও অভিমানের কথা স্বামীকে না জানিয়ে পারেননি। এমনকি স্বামীকে তিনি ক্ষত্রিয়ধর্ম সম্পর্কেও স্মরণ করিয়ে তার এইরূপ নিন্দনীয় কাজের সমালােচনা করেছেন। সবশেষে রাগ ও অভিমানের স্বালা ভুলতে তিনি জাহ্নবীর জলে প্রাণ বিসর্জনের সংকল্প করেছেন। এখানেই তার কুব্ধ ও অভিমানী স্বর তীব্র আকারে ধরা পড়েছে। স্বামীর মনােযােগ না পাওয়ায় তাই তাকে বলতে শােনা যায়—“এ জনাকীর্ণ ভবস্থল আজি/বিজন জনার পক্ষে৷” এর জন্য তিনি অবশ্য তার ভাগ্যকেই দোষারােপ করেছেন। এই ধরনের খেদোক্তির মধ্য দিয়ে জনার অভিমানী কণ্ঠস্বরই স্পষ্ট  হয়ে ওঠে।

 

 অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি

 

প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও। 

 

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায়

 

১. “… রাজা নীলধ্বজ আজি/নতশির,”— নীলধ্বজের এই অবস্থার কারণ কী?

 

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় রাজা নীলধ্বজের নতশির হওয়ার কারণ হল পুত্র প্রবীরের মৃত্যু।

 

 ২. “চণ্ডালের পদধূলি ব্রায়ণের ভালে?”—‘চণ্ডাল’ ও ‘ব্রাম্মণ’ কারা? 

 

উত্তর: প্রশ্নোধৃত উক্তিটিতে ‘চণ্ডাল’ বলতে পার্থকে এবং ব্রায়ণ’ বলতে রাজা নীলধ্বজকে বােঝানাে হয়েছে।

 

৩. “চণ্ডালের পদধূলি ব্রায়ণের ভালে?”—এই উপমা ব্যবহারের কারণ কী?

 

 উত্তর: অর্জুনের মতাে নীচ ও সুযােগসন্ধানী চরিত্রকে রাজা নীলধ্বজ সখা হিসেবে গ্রহণ করার কারণেই জনা প্রশ্নোধৃত উপমাটি ব্যবহার করেছেন।

 

 ৪, “কুরঙ্গীর অবারি নিবায় কি কভু…”—কথাটি কেন বলা হয়েছে? 

 

উত্তর: পুত্রহারা বীর নীলধ্বজ যেভাবে পুত্রহন্তা অর্জুনের সঙ্গে প্রতিশােধগ্রহণের বদলে সখ্য স্থাপন করছেন তাতে বিস্ময় প্রকাশ করেই প্রশ্নোধৃত কথাটি বলা হয়েছে। –

 

৫. “ভীরুতার সাধনা কি মানে বলবায়ু?”—জনা ভীরুতার সাধনা’ বলতে কী বুঝিয়েছেন? 

 

 উত্তর: জনা ‘ভীরুতার সাধনা’ বলতে অর্জুনের মতাে কুশলী, সুযােগসন্ধানী অথচ বীরধর্মহীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনকে বুঝিয়েছেন।

 

৬. “কিন্তু বৃথা এ গঞ্জনা।”—এ কথার মাধ্যমে কী প্রকাশ পেয়েছে?

 

 উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটিতে মাহেশ্বরী পুরীর রাজমহিষী জনার অসহায়তা প্রকাশ পেয়েছে।

 

৭. জনা কাকে ‘গুরুজন’ বলেছেন?

 

উত্তর। কবি মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় স্বামী নীলধবজৰে জনা ‘গুরুজন বলেছেন।

 

৮, “পড়িব বিষম পাপে গক্সিলে তােমারে।’—এ কথায় বকার চরিত্রের কোন্ দিকটি ফুটে ওঠে?

 

: এবং উত্তর: প্রশ্নোপ্ত মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্বামীর প্রতি জনার শ্রদ্ধাবোধ এ বিষয়ে শাস্ত্রীয় বিশ্বাসের প্রতি তার আনুগত্যই প্রকাশিত হয়েছে।

 

৯. “বিধির বিধানে/পরাধীনা!”— জনার এই উক্তির মাধ্যমে কী প্রকাশ পেয়েছে?

 

উত্তর: মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় জনার প্রশ্নোধৃত উক্তির মধ্যে দিয়ে নারী হিসেবে জনার অসহায়তা প্রকাশ পেয়েছে। 

 

১০. জনা নিজেকে ‘বিধির বিধানে পরাধীনা’ বলেছেন কেন?

 

উত্তর: কবি মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় কুলনারী হিসেবে আপন চিন্তাভাবনাকে কাজে পরিণত করতে অপারগ জনা নিজেকে ‘বিধির বিধানে পরাধীনা’ বলেছেন।

 

১১. “নাহি শক্তি মিটাই স্ববলে/এ পােড়া মনের বাচ্ছা!” কেন বক্তা এ কথা বলেছেন?

 

: উত্তর: নারী হওয়ায় ‘বিধির বিধানে পরাধীন’ জনার পক্ষে অর্জুনকে হত্যার উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব নয় বলেই জনা প্রশ্নোধৃত মন্তব্যটি করেছেন।

 

১২. “নিঃসন্তানা করিল আমারে!”—কে, কাকে নিঃসন্তানা করেছিল?

 

: উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় উল্লিখিত হয়েছে যে, তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন (‘দুরন্ত ফাল্গনী’) প্রবীরকে হত্যা করে মাহেশ্বরী পুরীর রানি জনাকে নিঃসন্তানা করেছিল।

১৩. স্বামী নীলধ্বজকী কারণে তার প্রতি বিরূপ বলে জনা মনে করেছেন?

 

 উত্তর: কবি মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় জনা মনে করেছেন যে, ভাগ্যদোষেই তার প্রতি নীলধ্বজ বিরূপ হয়ে উঠেছেন। 

 

১৪. জনা কী কারণে তাঁর প্রাণ রক্ষা করতে চাননি?

 

উত্তর: : জনার স্বামী আপন পুত্র প্রবীরের হত্যাকারী অর্জুনের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা না করে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করায় জনা নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চাননি।

 

১৫, “… আজি/বিজনে জনার পক্ষে!”—কী বিজন?

 

উত্তর: ‘জনাকীর্ণ ভবস্থল’ অর্থাৎ জনবহুল মাহেশ্বরী পুরী ও পুত্রহারা জনার কাছে বিজন |

 

 

উত্তর: পুত্রের হত্যাকারী অর্জুনের সঙ্গে রাজা নীলধ্বজের সখ্যের ফলে যে অপমান ঘটেছে তার কথাই উধৃতাংশে বলা হয়েছে।

১৬. “আশার লতা তাই রে ছিড়িলি!” —এই ‘আশার লতা’ কে? 

 

উত্তর: মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা পত্ৰকবিতায় উল্লিখিত এই ‘আশার লতা’ হল পুত্র প্রবীরের প্রতি রাজমহিষী জনার পুত্রস্নেহ। 

 

১৭. “যাও চলি, মহাবল,”-কাকে, কোথায় জনা চলে যেতে বলেছেন?

 

 উত্তরঃ জনা রাজা নীলধজকে তার নতুন বন্ধু পার্থকে নিয়ে কৌরবপুরীতে চলে যেতে বলেছেন।

 

১৮. মহাযাত্রা করে জনা কোথায় চলেছেন?

 

১৯. “চলিল অভাগী জনা পুত্রের উদ্দেশে!’—এই যাত্রা কীভাবে সম্ভব হচ্ছিল? 

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্রকবিতায় জাহঘীর জলে আত্মবিসর্জনের মধ্য দিয়ে জনা পুত্রের উদ্দেশে যাত্রা করতে চেয়েছিলেন।

 

২০. “ক্ষত্ৰকুলবালা আমি; ক্ষত্ৰ-কুলবধূ ”—এই মন্তব্যের কারণ কী? 

 

উত্তর: নীলধ্বজের পুত্রহত্যাকারী অর্জুনের সঙ্গে সখ্য স্থাপনে ক্ষত্রিয় বংশের যে অপমান হয়েছে তা জনার কাছে অসহনীয় মনে হওয়ায় তিনি প্রশ্নোধৃত মন্তব্যটি করেছেন।

 

২১. কেন জনা অপমান সহ্য করতে অপারগ হয়েছিলেন? 

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রকবিতায় উল্লিখিত হয়েছে যে, ক্ষত্রিয় বংশের স্ত্রী এবং কন্যা হওয়ায় জনা অপমান সহ্য করতে অপারগ হয়েছিলেন।

 

২২. “ছাড়িব এ পােড়া প্রাণ জাহ্নবীর জলে!”—বক্তা কেন এ কথা বলেছেন?

 

 উত্তর: পুত্ৰহন্তা অর্জুনের সঙ্গে স্বামী রাজা নীলধ্বজ সখ্য করায় রাজবংশের এবং ক্ষাত্রধর্মের যে অপমান হয়েছে তা সহ্য করতে না পেরেই দনা এ কথা বলেছেন।

 

২৩. “ফিরি যবে রাজপুরে প্রবেশিবে আসি,”—তখন কী ঘটবে?

 

 উত্তর: নীলধ্বজ রাজপুরীতে ফিরে ‘জনা’র নাম ধরে ডাকলে শূন্য পুরীতে শুধু প্রতিধ্বনিই হবে, উত্তর আসবে না।

 

২৪. নরেশ্বর, ‘কোথা জনা’ বলি ডাক যদি …”—এই নরেশ্বর’ কে?

 

 উত্তর: প্রশ্নোধৃত উক্তিতে রাজা নীলধজকে ‘নরেশ্বর’ বলা হয়েছে।

 

২৫. “কেমনে এ অপমান সব ধৈর্য ধরি?”—কোন্ অপমান?

 

উত্তর: পুত্রের হত্যাকারী অর্জুনের সঙ্গে রাজা নীলধ্বজের সখ্যের ফলে যে অপমান ঘটেছে তার কথাই উধৃতাংশে বলা হয়েছে।

 

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর saq

 

 

 ১, “এ কি ভ্রান্তি তব?”, জনা কোন্ ঘটনাকে রাজা নীলধ্বজের ‘ভ্রান্তি বলে বর্ণনা করেছেন?

 

অথবা, এ কি ভ্রান্তি তব?’—ভ্রান্তিটি উল্লেখ করাে।

 

 উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় জনা পার্থকে নরনারায়ণ জ্ঞানে পুজো করার ঘটনাকে রাজা নীলধবজের ‘ভ্রান্তি’ বলে বর্ণনা করেছেন।

 

২. “কে না জানে তারে,/স্বৈরিণী?”—কাকে, কেন স্বৈরিণী বলা হয়েছে? 

 

উত্তর: দুর্বাসার বরকে কাজে লাগিয়ে কুন্তী একাধিক দেবতার সঙ্গ লাভ করেছিলেন বলেই জনা তঁাকে ‘স্বৈরিণী’ বলেছেন।

 

৩, অর্জুন কার পুত্র? 

 

উত্তর: মহাভারত-এর কাহিনি অনুযায়ী অর্জুন ভােজবালা কুন্তীর পুত্র, ইন্দ্রের ঔরসে তার জন্ম।

 

৪, পার্থকে রাজা নীলধ্বজের নরনারায়ণ-জ্ঞানে পুজো করাকে জনা কীভাবে ব্যাখ্যা করেছেন?

 

উত্তর: ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্রকাব্যে পার্থকে নীলধবজের নরনারায়ণ জ্ঞানে পুজো করাকে জনা বিধির লীলাখেলা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।

 

 

৫. বিধাতার কোন্ লীলাখেলার কথা জনা এখানে বলেছেন?

 

উত্তর: : মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় একমাত্র পুত্রকে অর্জুনের অকালে কেড়ে নেওয়া এবং তার মানসম্মান স্নান করাকে জনা এখানে বিধাতার লীলাখেলা বলেছেন।

 

৬, “আছিল মান,তাও কি নাশিলি?” —এই কথার মাধ্যমে জনা কী বলতে চেয়েছেন?

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় এই কথার মাধ্যমে জনা সন্তান হারানাের সঙ্গে সঙ্গে মাতৃত্বের গৌরব হারানাের কথাই বলতে চেয়েছেন। :

 

৭. কে পাণ্ডব-কীর্তন গান গায়?

 

অথবা, ‘পাণ্ডব-কীর্তন গান গায়েন সতত’—কে পাণ্ডব কীর্তন করেন?

 

উত্তর: জনা মহাভারত-এর স্রষ্টা দ্বৈপায়ন ঋষি বা বেদব্যাস সম্পর্কে বলেছেন যে, তিনি সবসময়ই পাণ্ডব কীর্তন গান করে থাকেন।

 

 ৮. “সত্যবতীসূত ব্যাস বিখ্যাত জগতে।”-ব্যাস কেন বিখ্যাত? 

 

উঃ: ব্যাস বিখ্যাত মহাভারত-এর মাধ্যমে পাণ্ডবদের জয়গাথা রচনার কারণে |

 

. ৯. পার্থকে কীসের অবতার বলে মনে করা হয়? 

 

উত্তর: প্রচলিত মহাভারত-এর কাহিনি অনুযায়ী পার্থকে পীতাম্বর বা কৃস্নের অবতার বলে মনে করা হয়।

 

১০. “শাশুড়ির যােগ্য বধূ!” –এই বধূ কে?

 

 

 উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় জনার কাছে শাশুড়ির যােগ্য এই বধূ হলেন দ্রৌপদী।

 

১১, ‘গৌরব-সরসে নলিনী’—কাকে, কেন বলা হয়েছে?

 

 উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্রকবিতায় দ্রৌপদীকে পঞ্চপাণ্ডবের স্বামী হওয়ার জন্যই ‘পৌরব-সরসেনলিনী’বলা হয়েছে।

 

 ১২. “জানি আমি কহে লােক রথিকুল-পতি/পার্থ।”—এই মতকে জনা কী মনে করেছিলেন?

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় এই মতকে জনা মিথ্যা ধারণা বলে মনে করেছিলেন।

 

১৩. “মিথ্যা কথা, নাথ!”—কোন্ কথাকে মিথ্যা বলা হয়েছে? ? 

 

উত্তর: সকলে অর্জুনকে যে ‘রথিকুল-পতি’ অর্থাৎ বীরশ্রেষ্ঠ বলে জানে, তাকেই জনা মিথ্যা কথা বলেছেন।

 

১৪. “ছদ্মবেশে লক্ষ রাজে ছলিল দুর্মতি …”-উল্লিখিত ব্যক্তি ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন কেন?

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় উল্লিখিত ব্যক্তি অর্থাৎ তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন দ্রৌপদীর স্বয়ংবরসভায় সাফল্যের জন্য।

 

১৫, পার্থ ছদ্মবেশে রাজাদের কোথায় ছলনা করেছিলেন

 

উত্তর: পার্থ দ্রৌপদীর স্বয়ংবরসভায় নানান দেশের রাজাদের ছলনা করেছিলেন।

 

 

১৬, কীসের ছদ্মবেশে পার্থ স্বয়ংবরে ছলনা করেছিলেন?

 

উত্তর: মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় ব্রাহ্মণপুত্রের ছদ্মবেশে পার্থ দ্রৌপদীর স্বয়ংবরসভায় ছলনা করেছিলেন।

 

১৭. “রাজদলে তেঁই সে জিতিল…”—এই রাজারা সমবেত হয়েছিল কোন্ সভায়? “

 

উত্তর: “রাজদলে তেঁই সে জিতিল”—এই রাজারা সমবেত হয়েছিল পাঞ্চালীর স্বয়ংবরসভায়।

 

১৮. কৃষ্ণর সাহায্যে অর্জুন কী দগ্ধ করেছিলেন?

 

উত্তর: কবি মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় উপ্লিখিত হয়েছে যে, কৃয়ের সাহায্যে অর্জুন খাণ্ডব বন দগধ করেছিলেন।

 

 ১৯, “দহিল খাণ্ডব দুষ্ট কৃয়ের সহায়ে”-কে, কেন খাণ্ডব দহন করেন?

 

উত্তর: কৃয়কে সঙ্গে নিয়ে অর্জুন খান্ডব বন দহন করেছিলেন অগ্নিদেবের তাবুখ সারানােয় সাহায্য করার জন্যে।

 

২০, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কাকে বধ করতে অর্জুন শিখণ্ডীকে ব্যবহার করেন?

 

 উত্তর: কবি মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় উল্লিখিত হয়েছে যে, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে পিতামহ ভীষ্মকে বধ করতে অর্জুন শিখণ্ডীকে ব্যবহার করেন।

 

 

২১. অর্জুনের অস্ত্রগুরু কে ছিলেন?

 

উত্তর: মহাভারএর কাহিনি অনুযায়ী অর্জুনের অস্ত্রগুরু ছিলেন দ্রোণাচার্য।

 

২২. বসুন্ধরা কার রথের চাকা গ্রাস করেছিল? 

 

উত্তর: মহাভারতএর কাহিনি অনুযায়ী কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বসুন্ধরা কর্ণের রথের চাকা গ্রাস করেছিল।

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর

২৩. কী কী কারণে যুদ্ধে ‘ বিকল হয়েছিলেন? 

 

উত্তর: কবি মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় উমিখিত হয়েছে যে, ব্রয়শাপে কর্ণ যুদ্ধে ‘বিকল হয়েছিলেন।

 

 ২৪. “মহারথী-প্রথা কি হে এই, মহারথি?”—কার, কোন্ কাজ মহারথীপ্রথার বিরােধী? 

 

উত্তর: ব্রয়শাপে কর্ণের রথের চাকা মাটিতে বসে গেলে তার সুযােগ নিয়ে অর্জুন যেভাবে কর্ণকে বধ করেছিলেন, তা জনার মতে মহারথীপ্রথা বিরােধী।

 

 ২৫. জনা কাকে ‘স্বৈরিণী’ বলে উল্লেখ করেছেন? 

 

উত্তর: কবি মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্রকবিতায় জনা কুন্তীকে ‘স্বৈরিণী’ বলে উল্লেখ করেছেন।

 

 ২৬. ব্যাস কার পুত্র ছিলেন?

 

উত্তর: কবি মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় উল্লিখিত ব্যাস সত্যবতীর পুত্র ছিলেন।

 

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার ছোট প্রশ্ন উত্তর:

 

১. ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ বীরাঙ্গনা কাব্য-এর কত সংখ্যক পত্র?

 

 উত্তর: ‘নীলধবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতাটি কবি মধুসূদন দত্ত রচিত বীরঙ্গনা কাব্য-এর একাদশ সংখ্যক পত্র।

 

 ২.প্রবীর কোথাকার যুবরাজ ছিলেন?

 

মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলবজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় উল্লিখিত হয়েছে যে, প্রবীর ছিলেন মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ।

 

৩, জনা রাজা নীলধ্বজকে পত্র লিখেছিলেন কেন? ?

 

উত্তর: রাজা নীলংবজ পুত্রের হত্যাকারী পার্থের সঙ্গে মুখােমুখি লড়াই না করে সন্ধি করায় ক্ষুব্ধ জনা পত্র লিখেছিলেন।

 

৪.মাহেশ্বরী পুরীতে কখন হ্রেষাধ্বনি শােনা গিয়েছিল

 

উত্তর: মাহেশ্বরী পুরীর রাজতােরণে যখন রণবাদ্য বেজে উঠেছিল তখন হ্রেষাধ্বনি শােনা গিয়েছিল।

 

৫, “উড়িছে আকাশে/রাজকেতু!”—এই রাজপতাকা ওড়ার কারণ কী বলে জনা প্রাথমিকভাবে মনে করেছিলেন?

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রটিতে “উড়িছে আকাশে/রাজকেতু!” উদ্ধৃতাংশে রাজপতাকা ওড়ার কারণ হিসেবে পুত্রের হত্যাকারী পার্থের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি বলে মাহেশ্বরী রাজ্যের রানি জনা প্রাথমিকভাবে মনে করেছিলেন।

 

৬.“ভুলিব এ জ্বালা,”—রাজমহিষী জনা তার জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন কীভাবে?

 

 উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রটিতে রাজমহিষী জনা পুত্রহত্যার প্রতিশােধ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তার জ্বালা ভুলতে চেয়েছেন।

 

৭. নীলধ্বজ যুদ্ধসাজ কেন করছেন বলে জনা কল্পনা করেছেন? 

 

উত্তর: পুত্রহত্যার প্রতিশােধ গ্রহণের জন্য নীলধ্বজ যুদ্ধের সাজে সেজেছেন। বলে জনা কল্পনা করেছেন।

 

জনা তার শােকাগ্নি কীসের দ্বারা নেভাতে চেয়েছেন?

 

৮. অথবা, ‘নিবাইতে এ শােকাগ্নি’—কার কীসের শােক?  

 

উত্তর: মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় পুত্রহারাজনা তাঁর শােকাগ্নি ফাল্গনির লােহে বা অর্জুনের রক্তের দ্বারা নেভাতে চেয়েছেন। 

 

৯, “এই তাে সাজে তােমারে,”—কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে?

 

 উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রে উদ্ধৃত “এই তাে সাজে তােমারে,” কথাটি রাজার যুদ্ধপ্রস্তুতি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। 

 

১০. জনা নীলধ্বজকে কীভাবে যুদ্ধযাত্রা করতে বলেছেন?

 

 উত্তর: যেভাবে গজরাজ তার যমদণ্ডের মতাে গঁড় আস্ফালন ও ভীষণ আওয়াজ করে, ঠিক সেইভাবে বিক্রমের সঙ্গে জনা নীলধ্বজকে যুদ্ধযাত্রা করতে বলেছেন।

 

১১. “টুট কিরীটির গর্ব আজি রণস্থলে।”—‘কিরীটী’ কে? 

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতা থেকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটিতে ‘ কিরীটি’ বলতে অর্জুনকে বােঝানাে হয়েছে।

 

 ১২. অর্জুনের ছিন্নমুণ্ড রানি কীভাবে আনার কথা বলেছিলেন?

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় রানি জনা রাজা নীলধ্বজকে অর্জুনের ছিন্নমুণ্ড শূলদণ্ডের আগায় বিদ্ধ করে নিয়ে আসতে বলেছিলেন।

 

১৩. “অন্যায় সমরে মূঢ় নাশিল বালকে।”—“মূঢ়’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? 

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতা থেকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটিতে ‘মূঢ় বলতে অর্জুনের কথা বলা হয়েছে।

 

১৪. প্রবীরের সঙ্গে পার্থের যুদ্ধকে জনা অন্যায় সমর’ কেন বলেছেন?

 

 উত্তর: বালক প্রবীর পাণ্ডবদের অশ্বমেধের ঘােড়ার পথ রােধ করার জন্য অর্জুন তার সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন, তাই একে জনা অন্যায় সমর’ বলেছেন। 

 

১৫. “অন্যায় সমরে মূঢ় নাশিল বালকে।”—বালকের পরিচয় দাও। 

 

উত্তর: প্রশ্নোধৃত অংশে উল্লিখিত বালকটি হল মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ প্রবীর, অর্জুনের অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘােড়া ধরার জন্য তাঁকে নিহত হতে হয়।

 

 ১৬. “জন্মে মৃত্যু, বিধাতার এ বিধি জগতে।”—কোন্ প্রেক্ষিতে জনা এই মন্তব্য করেছেন?

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় বীর পুত্র প্রবীরের মৃত্যু প্রসঙ্গে জনা এই মন্তব্য করেছেন।

 

১৯. জনা রাজা নীলধ্বজকে কীভাবে ক্ষত্রিয়ধর্ম রক্ষা করতে বলেছিলেন?

 

 উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলজের প্রতি জনা পত্রকবিতাটিতে জনা রাজা নীলধবজকে নিজের শক্তিতে পুত্রের হত্যাকারীর সাথে লড়াই করে ক্ষত্রিয়ধর্ম রক্ষা করতে বলেছিলেন।

 

২০. প্রতিশােধস্পৃহার বদলে পুত্রের ঘাতক পার্থের সঙ্গে স্বামী নীলধ্বজের সখ্যের ভাব যখন জনা বুঝলেন, তখন নিজেকে তিনি কী বলেছিলেন?

 

 উত্তর; স্বামী নীলধ্বজের প্রতিশােধস্পৃহার বদলে পুত্রের হত্যাকারীর সঙ্গে বন্ধুত্বের ভাব জনা যখন বুঝলেন তখন তিনি নিজেকে পাগলিনি বলে উল্লেখ করলেন।

 

২১. “হায়, পাগলিনী জনা!”—জনাকে পাগলিনি বলেছেন কে? 

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় জনা নিজেই নিজেকে পাগলিনি বলেছেন।

 

২২. “তব সিংহাসনে/বসিছে পুত্রহা রিপু-…”-এই ‘রিপু’ বা শত্রু কে? 

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতা থেকে উধৃত আলােচ্য অংশটিতে এই ‘রিপু’ বা শত্রু হলেন তৃতীয় পাণ্ডব পার্থ। “

 

২৩. “সেবিছ যতনে তুমি অতিথিরতনে।”—এই অতিথিরত্নটি কে? 

 

উত্তর: : মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতা থেকে উদ্ধৃত আলােচ্য অংশটিতে অতিথিরত্নটি হলেন তৃতীয় পাণ্ডব পার্থ। 

 

২৪, “দুঃখের কথা, হায় কব কারে?”—জনার কাছে এই দুঃখের কথা কী ? ছিল?

 

: উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রে জনার কাছে এই ‘দুঃখের কথা হল পুত্রের হত্যাকারী অর্জুনের সঙ্গে স্বামী নীলধ্বজের বন্ধুত্ব।

 

২৫. ‘মাহেশ্বরী-পুরীশ্বর’ কে? 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতা থেকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটিতে ‘মাহেশ্বরীপুরীশ্বর’ হলেন মাহেশ্বরী নগরীর রাজা নীলধ্বজ।

 

২৬. “নাশ, মহেষ্বাস তারে!”—“মহেষাস’শব্দের অর্থ কী?

 

 উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতা থেকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটিতে ‘মহেষাস’ শব্দের অর্থ হল মহাধনুর্ধর। 

 

২৭. ‘হরি পুত্রধনে’-কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে?

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় অর্জুনের দ্বারা প্রবীর বধ আসলে নিয়তিরই পরিহাস—এ কথা বলতে গিয়েই প্রশ্নোপ্ত মন্তব্যটি করা হয়েছে।

 

২৮, “হরিলা কি তিনি/জ্ঞান তব?”—কে, কার জ্ঞান হরণ করেছেন?

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতা থেকে উদ্ধৃত আলােচ্য অংশটিতে নিয়তির দ্বারা রাজা নীলধ্বজের জ্ঞান হরণের কথা বলা হয়েছে।

 

২৯. জনা পার্থকে ‘ পারথী’ বলেছেন কেন?

 

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতায় জনা পার্থকে ‘পাণ্ডুরথী’ বলেছেন কারণ পার্থ ছিলেন একজন পাণ্ডববংশীয় যােদ্ধা বা বীরপুরুষ।

 

৩০, “এ পাষণ্ড পাণ্ডরথী পার্থ তব পুরে…”—পার্থকে ‘পাষণ্ড পারথী’ বলা হয়েছে কেন?

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্ৰকবিতা থেকে

নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *