সম্পদ বলতে কী বোঝায় সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পদের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ কারি বিষয়
সম্পদ বলতে কী বোঝায় সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পদের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ কারি বিষয়
সম্পদ বলতে কী বোঝায়
◆সম্পদ বলতে কী বােঝায় উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করাে।
সম্পদ
সংক্রান্ত ধারণাগুলি হল—
পূর্বের ধারণা:
আগে আকরিক লােহা, কয়লা, খনিজ তেল প্রভৃতি প্রাকৃতিক উপাদানকেই কেবল সম্পদ বলা হত।
জিমারম্যানের মত :
বিশিষ্ট সম্পদ বিশেষজ্ঞ জিমারম্যান বলেছেন, সম্পদ বলতে কোনাে বস্তু বা পদার্থকে বােঝায় না, বােঝায় ওই বস্তু বা পদার্থের কার্যকারিতা ক্রিয়াপ্রণালী, যা মানুষের চাহিদা পূরণ করে।
বর্তমান ধারণা: কোনাে বস্তু বা পদার্থ সম্পদ নয়, সম্পদ হল বস্তুনিরপেক্ষ। বরং ওই বস্তু বা পদার্থের কার্যকারিতা (functional ability) এবং উপযােগিতা (utility) বা অভাবপূরণের ক্ষমতাই হল সম্পদ।
উদাহরণ: : [i] উদাহরণ হিসেবে কয়লার কথা বলা যায়। কয়লা যখন মাটির নীচে থাকে তখন তাকে সম্পদ বলা যায় না। কিন্তু কয়লা পুড়িয়ে কয়লার যখন তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, তখন তাকে সম্পদ বলা হয়। কার্যকারিতা এবং এই তাপশক্তি মানুষের নানান উপকারে আসে বা বহু অভাব পূরণ করে—এটাই কয়লার উপযােগিতা। সুতরাং, কয়লা হল। গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। [ii] জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকলে তাকে | সম্পদ বলা যায় না। কারণ পতিত জমির কোনাে কার্যকারিতা। | এবং উপযােগিতা নেই। কিন্তু ওই জমিতে যখন বিভিন্ন ধরনের | ফসল, যেমন—ধান, গম প্রভৃতি শস্য চাষ করা হয় (অর্থাৎ তার কার্যকারিতা ও উপযােগিতা পাওয়া যায়); তখন ওই জমি সম্পদ হিসেবে গণ্য হয়।
অবসুও সম্পদ :
কয়লা বা জমির বস্তুগত রূপ (tangible things) আছে—এগুলি দেখা যায়। কিন্তু মানুষের জ্ঞান, বুদ্ধি, সামাজিক আইন—এগুলিকে চোখে দেখা যায় না, ধরাছোঁয়াও যায় না, অর্থাৎ এগুলি অবস্তু (intangible things)। যেহেতু এসবের কার্যকারিতা ও উপযােগিতা আছে এবং ওই কার্যকারিতা মানুষের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক চাহিদা পূরণ করে—তাই এগুলিও গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। অর্থাৎ, বস্তুগত রূপ না থাকলেও অবস্তুও সম্পদ হতে পারে।
সম্পদের হ্রাসবৃদ্ধি হয় : যেহেতু সম্পদ আপনা-আপনি সৃষ্টি হয় না, মানুষই তাকে সৃষ্টি করে, তাই থানকালপাত্র নির্বিশেষে সম্পদের । হাসবৃদ্ধি হয়।
> সুতরাং, সম্পদ সম্পর্কে বলা যায়, মানুষের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক । অহিদাপূরণের উদ্দেশ্যে কোনাে বিশেষ কালে বা স্থানে, কোনাে বস্তু বা অবস্তু যে কার্য (function) সম্পাদন করে, তাই হল সম্পদ। (resource)। 1992 সালে ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনিরাে শহরে অনুষ্ঠিত বসুন্ধরা সম্মেলনে সম্পদ সম্পর্কে বলা হয় যে, যা কিছু তার কার্যকারিতার মাধ্যমে মানুষের চাহিদা পূরণের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর জৈব পরিমণ্ডলের সংরক্ষণকেও সুনিশ্চিত করে, তাকেই সম্পদ বলে গণ্য করা হয়।
◆ ভারতের বিভিন্ন ধরনের সম্পদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। অথবা, ভারত সম্পদসমৃদ্ধ দেশব্যাখ্যা করাে।
ভারতের বিভিন্ন ধরনের সম্পদ
আমাদের মাতৃভূমি ভারতে বিভিন্ন ধরনের সম্পদ আছে। সেগুলি হল—
1. ভূমিসম্পদ : ভারতের ভৌগােলিক আয়তন প্রায় 32 লক্ষ 87 হাজার বর্গকিলােমিটার। ভারতে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কৃষিযােগ্য জমি এবং পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেচসেবিত জমি রয়েছে।
2. জলসম্পদ : ভারত নদীমাতৃক দেশ। গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রম্মপুত্র, মহানদী, গােদাবরী, কৃয়া, কাবেরী, নর্মদা, তাপ্তি প্রভৃতি বড়াে বড়াে নদী ভারতে আছে। পানীয় জল ও সেচের জলের জোগান,উর্বর পলি সঞয়, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, জলপথ পরিবহণ প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এইসব নদনদীর গুরুত্ব অপরিসীম। ভারতের ভূগর্ভস্থ জলভাণ্ডার সীমিত হলেও তা পানীয় এবং সেচের কাজে ব্যবহৃত হয়। >
3. অরণ্যসম্পদ : ভারতের মােট ভৌগােলিক আয়তনের প্রায় 21.05 শতাংশ (India State Forest Report, 2011) এলাকায় বনভূমি আছে। এই অরণ্য মূল্যবান কাঠ ও বিভিন্ন উপজাত দ্রব্যের জোগান দেয়।
4. পশুসম্পদ : পশুসম্পদে ভারত যথেষ্ট সমৃদ্ধ দেশ এবং গবাদি পশুর (গােরু, ইয়াক, মহিষ, চমরী গাই ইত্যাদি) সংখ্যার বিচারে ভারতের স্থান বিশ্বে প্রথম। মেষ বা ভেড়া, শূকর, ছাগল, পােলট্রি
প্রাণী (মুরগি ও হাঁস) প্রভৃতি এদেশে যথেষ্ট সংখ্যায় প্রতিপালিত হয় বলে ভারতে প্রচুর পরিমাণে দুধ ও দুধজাত দ্রব্য, মাংস, চামড়া, ডিম প্রভৃতি উৎপাদিত হয়।
5. মৎস্যসম্পদ : ভারতে অভ্যন্তরীণ নদীনালা, খালবিল, পুকুর, দিঘি প্রভৃতি থেকে স্বাদুজলের মাছ এবং মহীসােপান অঞ্চল থেকে সামুদ্রিক মাছ আহরণ করা হয়। বিশ্বের মােট মৎস্য উৎপাদনে ভারতের স্থান ষষ্ঠ এবং অভ্যন্তরীণ বা স্বাদুজলের মৎস্য উৎপাদনে দ্বিতীয়।
: > 6. কৃষিসম্পদ : ভারত কৃষিসমৃদ্ধ দেশ। ভারতের সমভূমি ও নদী উপত্যকাগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ধান, গম, আখ, তুলা, পাট, তৈলবীজ প্রভৃতি উৎপাদিত হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন অংশে চা, কফি, রবার, নারকেল, বিভিন্নপ্রকার মশলা, ফল, সবজি প্রভৃতিও উৎপন্ন হয়।
> আকরিক 7. খনিজ সম্পদ : ভারতে যথেষ্ট পরিমাণে কয়লা, লােহা, বক্সাইট, অভ্র, ম্যাঙ্গানিজ, চুনাপাথর প্রভৃতি খনিজ দ্রব্য সতি আছে। তবে ভারতে পেট্রোলিয়াম সামান্য পরিমাণে পাওয়া যায়।
৪. শিল্পসম্পদ : কার্পাসবয়ন শিল্প, লৌহ-ইস্পাত শিল্প, চিনি শিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, চা শিল্প, পাটশিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প, অলংকার শিল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে ভারত যথেষ্ট উন্নত।
9. মানবসম্পদ : জনসংখ্যার বিচারে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ (চিনের স্থান বিশ্বে প্রথম)। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কর্মক্ষম মানুষ ভারতে বাস করে।
উপরােক্ত আলােচনা থেকে বােঝা যায় যে, ভারত একটি সম্পদসমৃদ্ধ দেশ।
◆ সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়ােজনীয়তা কী? সম্পদ সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলি লেখাে। 2+3
সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়ােজনীয়তাগুলি হল
1. যােগান অব্যাহত রাখা: বিশ্বের সম্পদ-ভাণ্ডার বিশেষত প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ খুবই সীমিত। কিন্তু বর্তমানে বেহিসেবি ও যথেচ্ছ ব্যবহারের জন্য তা দ্রুত নিঃশেষিত হচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে সম্পদের যােগান অব্যাহত রাখার জন্য সম্পদ সংরক্ষণ অবশ্যই প্রয়ােজনীয়।
2. গচ্ছিত সম্পদদের বিলুপ্তি থেকে রক্ষা: গচ্ছিত বা অপুনর্ভব সম্পদগুলি পৃথিবী থেকে লুপ্ত হওয়ার আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে সম্পদ সংরক্ষণ বিশেষ জরুরি।
3. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা: পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা ও জৈববৈচিত্র্যের সুরক্ষার জন্য সম্পদ সংরক্ষণ করা দরকার।
4. অর্থনৈতিক উন্নতি অব্যাহত রাখা: অর্থনৈতিক উন্নতি অব্যাহত রাখতে সম্পদ সংরক্ষণ প্রয়ােজন।
5. পরিবেশদূষণ ও বিশ্ব উয়ায়ন প্রতিরােধ: পরিবেশ দূষণ, বিশ্ব উয়ায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন রােধ করার জন্য সম্পদের সংরক্ষণ খুবই জরুরি।
6. দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন: ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা পূরণ ও জন্য সম্পদ সংরক্ষণ করা দরকার।
উন্নয়নের পদ্ধতিগুলি হল—
● সম্পদ সংরক্ষণের পদ্ধতি ॥
সম্পদ সংরক্ষণের 1, সাবিক নিয়ন্ত্রণ : সম্পদের চাহিদা, উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা।
2. গচ্ছিত সম্পদের প্রবহমান সম্পদের সম্পদের ব্যবহার : গচ্ছিত সম্পদের (যেমন—কয়লা, পরিবর্তে পুনর্ভব সম্পদ (যেমন—সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি প্রভৃতি)। ব্যবহারের মাধ্যমে গচ্ছিত সম্পদগুলির আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করা।
3. প্রযুক্তির উন্নয়ন: উন্নত প্রযুক্তি প্রয়ােগের মাধ্যমে সম্পদের অপচয়। বন্ধ করা।
: 4. সচেতনতা বৃদ্ধি : সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা, যেমনকাঠের আসবাবপত্রের বদলে ইস্পাত বা অন্যান্য বিকল্প ব্যবহার।
5. কার্যকারিতা বৃদ্ধি: সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা, যেমনখরস্রোতা নদীতে বাঁধ দিয়ে বহুমুখী উদ্দেশ্যে নদীর জল ব্যবহার করা। :
6. পুনরাবর্তন : সম্পদের পুনরাবর্তন করা, যেমন—অ্যালুমিনিয়ামের ভাঙা বাসনপত্র গলিয়ে পুনরায় নতুন বাসন তৈরি করা।
7. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সম্পদ সংগ্রহ: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিবেশ থেকে সম্পদ সংগ্রহ করা।
৪, আইন প্রণয়ন :সরকারি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সম্পদ সংরক্ষণ করা যায়।
: 9. দুর্যোগ ও বিপর্যয়ে আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ: প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের থেকে সম্পদ রক্ষার জন্য আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
10. জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ:পৃথিবীব্যাপী ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সম্পদের চাহিদা হ্রাস তথা সম্পদ সংরক্ষণ করা যায়।
◆ সম্পদের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণকারী বিষয়গুলি কী কী ?
সম্পদের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণকারী বিষয়সমূহ: সম্পদের কার্যকারিতার নিয়ন্ত্রণকারী বিষয়গুলি হল—
সংস্কৃতি: সংস্কৃতির উন্নয়নই সম্পদের কার্যকারিতাকে বদলে দেয়। এই জন্যই নিরপেক্ষ বস্তুগুলি সম্পদ হয়ে ওঠে।
স্থান ও সময়: বর্তমানে যা নিরপেক্ষ উপাদান বা বাধা হিসেবে গণ্য হয়, স্থান ও সময়ের পরিবর্তনে সেটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যেমন—একসময় তেজস্ক্রিয় পদার্থকে উন্নতির পথে বাধা হিসেবে গণ্য করা হলেও বর্তমানে উন্নত দেশগুলিতে তা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
প্রযুক্তি: প্রযুক্তি বা কারিগরি দক্ষতা সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া চাহিদা, জনসংখ্যা প্রভৃতিও সম্পদের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে।
“◆ জনসংখ্যাকে সম্পদ বলা হয় কেন?
জনসংখ্যাকে সম্পদ বলার কারণ: জনসংখ্যা অবশ্যই সম্পদ যদি তা জ্ঞান-বিজ্ঞান তথা সংস্কৃতিসমৃদ্ধ হয় তবে তা সম্পদরূপে গণ্য হয় এবং তখন তা আর কেবল জনসংখ্যা থাকে না, জনসম্পদে পরিণত হয়। অধ্যাপক জিমারম্যানের মতে, মানুষের স্বীয়র প্রজ্ঞাই হল তার মুখ্য সম্পদ—যে সম্পদ বিশ্ব সম্পদের দ্বার উন্মােচনের চাবিকাঠি। জনসংখ্যা যেমন শ্রমের জোগানকে সুনিশ্চিত করে, তেমন সম্পদের চাহিদা সৃষ্টিতেও সাহায্য করে। জ্ঞান-বিজ্ঞান তথা সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ মানুষ উন্নততর সম্পদ সৃষ্টি করে। সুশিক্ষিত কর্মদক্ষ জনসংখ্যা পৃথিবীর যেকোনাে দেশের প্রধান সম্পদ। অধিক জনসংখ্যাবিশিষ্ট দেশে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং কারিগরি দক্ষতা বিকাশের অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি হয়। আবার স্বল্প জনসংখ্যার কারণে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে সম্পদের বিকাশ ঠিকমতাে হয় না।
●সম্পদ সৃষ্টিতে মানুষের দ্বৈত ভূমিকা কী? অথবা, মানুষ একসাথে সম্পদ সৃষ্টিকারী ও ধ্বংসকারীকারণ ব্যাখ্যা করাে।
সম্পদ বলতে কী বোঝায়
সম্পদ সৃষ্টিতে মানুষের দ্বৈত ভূমিকা: মানুষই বেশিরভাগ সম্পদ সৃষ্টি করে। জল, বায়ু, সূর্যরশ্মি এরকম কয়েকটি প্রাকৃতিক সম্পদ ছাড়া মানুষ যেসব সম্পদ ব্যবহার করে তা মানুষেরই সৃষ্টি। নিজের বুদ্ধি, মেধা দক্ষতা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রভৃতি দিয়ে মানুষ বিপুল পরিমাণ সম্পদ উৎপাদন করে এবং ওইসব সম্পদকে মানুষ নিজেই ব্যবহার করে বা ভােগ করে। সম্পদের ব্যবহারে কিছু সম্পদ বিনষ্ট হয়। কিন্তু সম্পদের সর্বাধিক বিনাশ হয় মানুষের সীমাহীন লােভ এবং নির্বুদ্ধিতার কারণে। অশিক্ষা, ধর্মন্ধতা, যুদ্ধ, দাঙ্গা প্রভৃতির কারণে প্রচুর সম্পদ নষ্ট হয়। অধ্যাপক জিমারম্যান একেই মানুষের দ্বৈত ভূমিকা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
● মানুষ
সম্পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে?
সম্পদ সৃষ্টির প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিতে মানুষের ভূমিকা: মানুষের চাহিদাই সম্পদ সৃষ্টির মূল কারণ। মানুষই সম্পদ সৃষ্টি করে, ভােগ করে। সেইসঙ্গে সম্পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মানুষ নিজেই। এর কারণগুলি হল—
সম্পদ বলতে কী বোঝায়
সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার সম্পদের অতি ব্যবহার সম্পদকে চিরতরে বিনষ্ট করছে।
বনভূমি ধ্বংস: মানুষ তার লােভ, আত্মকেন্দ্রিকতা, লালসার কারণে নির্বিচারে বন ধ্বংস করছে। ফলে বিশ্বউয়ায়ন তথা জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ দূষণ ঘটে চলেছে। তার ফলে বহুপ্রকার সম্পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে।
অবৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষাবাদ: অবৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষবাসের ফলে মাটির গুণাগুণ যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনই মাটির দূষণও ঘটছে।
সামাজিক সমস্যা: পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ বিগ্রহ, দাঙ্গা প্রভৃতির কারণে সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতা
সৃষ্টি হচ্ছে।