খোকনের প্রথম ছবি প্রশ্ন উত্তর Teacj Sanjib
খোকনের প্রথম ছবি প্রশ্ন উত্তর Teacj Sanjib
খোকনের প্রথম ছবি
বনফুল (বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়)
খোকনের প্রথম ছবি প্রশ্ন উত্তর, বিষয়বস্তু,নামকরণ, অনুশীলনী প্রশ্ন উত্তর, mcq প্রশ্ন উত্তর, এবং অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে।
খোকনের প্রথম ছবি বিষয়বস্তু:
বিষয়সংক্ষেপ
‘খোকনের প্রথম ছবি’ গল্পের কিশোর-নায়ক খোকন দশম শ্রেণির ছাত্র। শৈশব থেকেই সে ছবি আঁকতে ভালোবাসত। স্কুল জীবনে সে টুল, টেবিল, চেয়ার, কলসি, কাপ, গোরু প্রভৃতির ছবি আঁকতে শিখেছিল ড্রইংয়ের মাস্টারমশায়ের প্রেরণাতে।
সে প্রকৃতির ছবি আঁকতে বসে বাড়ির পাশের ইউক্যালিপটাস, পুল, সূর্য, গোলাপ, মেঘ ইত্যাদির ছবি এঁকে ফেলে। কিন্তু প্রকৃতির ছবি আঁকা তার নিজেরই পছন্দ হল না। কারণ, সূর্যের দীপ্তি ছবিতে তেমন ফোটে না। গোলাপের সৌন্দর্য ছবিতে প্রকাশ পায় না। আকাশে দৃশ্যমান মেঘের ছবি পরক্ষণেই বদলে যায়।
একদিন খোকনের বাবার এক বিখ্যাত চিত্রকর বন্ধু খোকনের আঁকা ছবি দেখে খুশি হয়ে বলেন—সে অনেক ছবি এঁকেছে কিন্তু সবই নকল করা ছবি, তার নিজের আঁকা ছবি কোথায়? খোকন অবাক হয় এবং জানতে চায় তা কেমন করে সম্ভব?
চিত্রকর পরামর্শ দেন, চোখ বুজে কল্পনায় যা দেখবে সেটাই এঁকে ফেলতে। তার পরামর্শ মতো খোকন একদিন নিজের ঘরে চোখ বুঝে বসে কেবলই অন্ধকার দেখতে পায় চারদিকে।
তারপর সে রং আর তুলি নিয়ে তার ড্রইং খাতার একটি পাতা জুড়ে সেই অন্ধকারের ছবি আঁকে কালো রঙে ভরিয়ে দিয়ে। সেই ছবির মধ্যে সে চোখ, মুখ এবং সেই মুখের এক অদ্ভুত হাসি দেখতে পায় এবং ওটাই হয় তার জীবনের প্রথম সৃষ্টির আনন্দ ।
খোকনের প্রথম ছবি নামকরণ:
নাম হল পরিচয়। কোর্নো গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ—যাই হোক না কেন, তার নামকরণের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই রচয়িতারা বিষয়বস্তু অনুযায়ী কখনও চরিত্রকেন্দ্রিক বা কখনও ঘটনাকেন্দ্রিক বা ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণ করেন।
– লেখক বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় পাঠ্যাংশটির নামকরণ করেছেন – ‘খোকনের প্রথম ছবি’। এখানে দেখা যায়—একটি ছেলে যার ছবি আঁকার অত্যন্ত ইচ্ছে, সে স্কুলজীবন থেকেই নানারকম ছবি আঁকত।
কিন্তু, কিছুদিন পরে সে নিজেই বুঝতে পারে নিজের ছবি নিজেরই পছন্দ হচ্ছে না। অবশেষে তার বাবার একজন বিখ্যাত চিত্রকর বন্ধু তাদের বাড়িতে আসেন,
তিনি খোকনকে তার মন থেকে ছবি আঁকতে শেখান। চিত্রকরের পরামর্শ মতো খোকন একদিন চোখ বুজে নিজের ঘরে বসে থাকে। অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না সে। অবশেষে সে স্থির করে ওই অন্ধকারেরই ছবি আঁকবে।
কালো রং আর তুলি নিয়ে সে শুরু করে দেয় আঁকতে। ড্রইং খাতার একটা পাতা কালো রঙে ভরে যায়। তারপর সেটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে সে দেখতে পায় ওই কালোর ভিতরেই একটা মুখ রয়েছে, চোখ রয়েছে এবং অদ্ভুত সৃষ্টি—প্রথম হাসি সেই চোখে।
আর এটাই হল খোকনের প্রথম সৃষ্টি— আঁকা ছবি। তাই বিষয়ভিত্তিক তাৎপর্য অনুযায়ী ‘খোকনের প্রথম ছবি’ নামকরণ সার্থক ও যুক্তিসংগত।
খোকনের প্রথম ছবি অনুশীলনী প্রশ্ন উত্তর:
প্রশ্নোত্তর বিভাগ হাতেকলমে
১.গল্প থেকে একইরকম অর্থযুক্ত আর একটি করে শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো: শিল্পী, নগর, ঐরাবত, উজ্জ্বলতা, অনুকরণ
শব্দ প্রতিশব্দ
শিল্পী – চিত্রকর
ঐরাবত – হাতি
নগর – শহর
অনুকরণ – নকল
উজ্জ্বলতা – দীপ্তি
২.বিশেষ্য থেকে বিশেষণে ৰূপান্তরিত করো
প্রকৃতি,গাছ, কল্পনা, ফুল, দীপ্তি।
বিশেষ্য বিশেষণ
প্রকৃতি – প্রাকৃতিক
গাছ – গেছো
কল্পনা – কাল্পনিক
ফুল – ফুলেল
দীপ্তি – দীপ্ত
৩. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর দাও :
৩.১ ড্রইং শিখতে লাগল খোকন’ – খোকন কোথায় ড্রইং শিখত? আর প্রথম দিকে কী কী আঁকত?
( ) উত্তর খোকন স্কুলে ড্রইং শিখত।
সে প্রথমের দিকে টুল, টেবিল, চেয়ার, কলসি, কাপ, গো প্রভৃতির ছবি আঁকত।
৩.২। একদিন তো মেঘের ছবি আঁকতে গিয়ে বেকুব হয়ে গেল খোকন’—’বেকুব’ শব্দটির অর্থ কী ? মেঘের ছবি আঁকতে গিয়ে খোকন বেকুব হয়ে গিয়েছিল কেন?
উত্তর ‘বেকুব’ শব্দটির অর্থ নির্বোধ বা বোকা।
ড্রইং মাস্টারমশায়ের পরামর্শ অনুযায়ী একদিন সূর্য, গোলাপ প্রভৃতি প্রকৃতির ছবি আঁকার পর খোকন হাতির মতো আকাশে একটা মেঘ দেখতে পেল। ঠিক যেন একটা হাতি পিছনের দু-পায়ে ভর করে শুঁড় তুলে আছে। খোকন তাড়াতাড়ি তার ড্রইং খাতায় হাতির মতো মেঘ আঁকতে লাগল। আঁকা শেষ করার পর মিলিয়ে দেখতে গেল ঠিক হয়েছে কি না। গিয়ে দেখে হাতি নেই, প্রকাণ্ড একটা কুমির শুয়ে আছে অর্থাৎ “হাতি কুমির হয়ে গেছে”। এইজন্যই খোকন বেকুব হয়ে গিয়েছিল।
৩.৩ ‘এতগুলো সব নকল করা ছবি।’- কে, কাকে এই কথা বলেছেন? ‘নকল করা ছবি’ বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন ?
উত্তর: বনফুলের লেখা ‘খোকনের প্রথম ছবি’ পাঠ্যাংশের অন্তর্গত
উদ্ধৃত অংশটি খোকনের বাবার একজন বিখ্যাত চিত্রকর খোকনকে বলেছেন। འ།
‘নকল করা ছবি’ নিজের ভাবনা থেকে যে ছবি তৈরি না যা কোনো কিছু দেখে হুবহু আঁকা, সেই ছবিকে বোঝানো হয়েছে। স্কুলজীবন থেকে টুল, টেবিল, চেয়ার, কলসি, কাপ, গোরু প্রভৃতি। যে ছবি খোকন এঁকেছে তা সবই দেখে আঁকা। সেখানে নিজস্বতার অভাব লক্ষ করে লখনউ-এর বিখ্যাত চিত্রকর খোকনের আঁ ছবিগুলিকে নকল করা ছবি বলেছেন।
খোকনের প্রথম ছবি গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
[8.2] পুলের ছবিটা দেখেও খুব প্রশংসা করলেন মাস্টারমশাই।
উত্তর: পুলের ছবিটা মাস্টারমশাই দেখলেন। ছবিটা দেখে তিনি খুব প্রশংসা করলেন।
৪.নীচের প্রতিটি বাক্যকে দুটি বাক্যে ভেঙে লেখো :
৪.১ সে যখন খুব ছোটো কাগজের উপর রঙিন পেনসিল দিয়ে হিজিবিজি কাটত।
উত্তর সে তখন খুব ছোটো ছিল। সে কাগজের উপর রঙিন পেনসিল দিয়ে হিজিবিজি কাটত।
8.2] পুলের ছবিটা দেখেও খুব প্রশংসা করলেন মাস্টারমশাই।
উত্তর: পুলের ছবিটা মাস্টারমশাই দেখলেন। ছবিটা দেখে তিনি খুব প্রশংসা করলেন।
[৪৩] সূর্যের যে ছবিটা এঁকেছে সেটা তো সূর্যের মতো নয়।
উত্তর: সূর্যের ছবিটা এঁকেছে। সেটা তো সূর্যের মতো নয়।
8.8 ] একদিন তো মেঘের ছবি আঁকতে গিয়ে বেকুব হয়ে গেল খোকন।
উত্তর : একদিন খোকন মেঘের ছবি আঁকল। ছবিটা আঁকতে গিয়ে সে বেকুব হয়ে গেল।
[ ৪.৫ খোকন একদিন নিজের ঘরে চোখ বুজে বসে রইল।
উত্তর: খোকন একদিন নিজের ঘরে বসে ছিল। তখন সে চোখ বুজে ছিল।
৫. নীচের আলাদা আলাদা বাক্যগুলি জুড়ে একটি বাক্য তৈরি করো :
৫.১ খোকন বড়ো হয়েছে। ক্লাস টেন-এ পড়ে।
উত্তর: খোকন বড়ো হয়ে ক্লাস টেন-এ পড়ে।
৫.২ খোকনের বাবার একজন বন্ধু বিখ্যাত চিত্রকর। তিনি লক্ষ্ণৌ শহরে থাকেন।
উত্তর খোকনের বাবার একজন বিখ্যাত চিত্রকর বন্ধু লখনউ শহরে থাকেন।
[৫.৩] নিজের আঁকা ছবি? তা কী করে আঁকব ?
উত্তর : নিজের আঁকা ছবি কী করে আঁকব ?
৫. ৪ চোখ বুজে কল্পনা করো। কল্পনায় যা দেখবে সেটাই এঁকে ফেলো।
উত্তর: চোখ বুজে কল্পনায় যা দেখবে সেটাই এঁকে ফেলো।
৫.৫ তারপর হঠাৎ দেখতে পেল ওই কালোর ভেতরেই একটা মুখ রয়েছে। চোখও আছে।
উত্তর তারপর হঠাৎ দেখতে পেল ওই কালোর ভিতরেই একটা মুখ ও চোখ আছে।
৬.গল্পে রয়েছে এমন দশটি ইংরেজি শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো।
উত্তর: গল্পে রয়েছে এমন দশটি ইংরেজি শব্দ হল—(১) টেন, (২) পেনসিল, (৩) স্কুল, (৪) ড্রইং, (৫) টেবিল, (৬) চেয়ার, (৭) কাপ, (৮) বুক, (৯) পুল, (১০) টুল।
৭ ‘খোকন জিজ্ঞেস করলে– প্রকৃতি থেকে? – প্রশ্ন পরিহার করো।
উঃ প্রকৃতি থেকে কি না সে-কথা খোকন জানতে চাইল।
৮. লখনউ শহরটি কোথায়? সেখানকার একটি স্থাপত্যের নাম লেখো।
উঃ লখনউ শহরটি উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত। সেখানকার একটি স্থাপত্য হল ‘ভুলভুলাইয়া । ‘
৯. খোকনের ‘ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই’ কীভাবে খোকনকে প্রকৃতি দেখতে শিখিয়েছিলেন ?
উত্তর: খোকন যে স্কুলে পড়ত, সেখানকার ড্রইং-এর মাস্টারমশাই তাকে প্রকৃতি থেকে বিষয় সংগ্রহ করে ছবি আঁকার কথা বলেছিলেন। ব্যাপারটি খোকন ঠিক বুঝে উঠতে পারেনি। তখন তিনি তাকে বুঝিয়েছিলেন, প্রকৃতিতে ছড়িয়ে আছে অনেক ছবি।
সেইগুলোই দেখে দেখে অনবরত ছবি আঁকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। খোকনদের বাড়ির সামনে যে ইউক্যালিপটাস গাছটি ছিল, সেটা তিনি একদিন এঁকে ফেলতে বলেছিলেন। রোকন সত্যি সত্যি একদিন সেটির ছবি এঁকে প্রথম ‘প্রকৃতি-চিত্র ’ এঁকেছিল।
মাস্টারমশাই সে ছবিই প্রশংসা করে বলেছিলেন ‘আরো আঁকো’। এরপর তিনি খোকনকে তাদের বাড়ির ছাদ থেকে দেখতে পাওয়া পুলটার ছবি আঁকতে বলেছিলেন তা আঁকা হলে, সে ছবিও মাস্টারমশাইয়ের দ্বারা খুব প্রশংসিত হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘চারপাশে যা দেখবে এঁকে ফেলবে।’ এভাবেই তিনি খোকনকে প্রকৃতি দেখতে শিখিয়েছিলেন।
১০. প্রকৃতির দৃশ্যের যে বদল অহরহ হয় তা খোকন কীভাবে বুঝল?
খোকন ছোটোবেলা থেকেই ছবি আঁকতে ভালোবাসত। স্কুলজীবন থেকে টুল, টেবিল, চেয়ার, কলসি, গোরু প্রভৃতির ছবি আঁকা সে শিখেছিল অনায়াসে। ড্রইংয়ের মাস্টারমশাইয়ের অনুপ্রেরণাতে প্রকৃতিরও ছবি আঁকতে শিখেছিল সে।
একদিন সে দেখল আকাশের মেঘ একটা হাতির মতো; ঠিক যেন একটি হাতি পিছানের দু-পায়ে ভর করে শুঁড় তুলে আছে। খোকন তাড়াতাড়ি তার ড্রইং খাতায় ছবিটা আঁকতে শুরু করেছিল।
কিন্তু আঁকা শেষ হবার পর মিলিয়ে দেখতে গিয়ে সে দ্যাখে- হাতি নেই, একটা কুমির শুয়ে আছে অর্থাৎ হাতি কুমির হয়ে গেছে। এই দেখেই খোকন বুঝতে পারে প্রকৃতির দৃশ্যের বদল অহরহ ঘটে।
১১। খোকন অবাক হয়ে গেল’, আর ‘ …. অবাক হয়ে চেয়ে রইল খোকন।’—এই দুই ক্ষেত্রে খোকনের ‘অবাক’ হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করো।
উত্তর ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই-এর কাছ থেকে খোকন প্রকৃতি দেখতে শিখেছিল। তাঁর অনুপ্রেরণায় খোকন প্রকৃতির যা কিছু দেখত তাই মহা উৎসাহে আঁকত।
তার আঁকা ছবি দেখে তার বাবার একজন চিত্রকর বন্ধু প্রথমে তাকে বাহবা দিলেও পরে যখন জিজ্ঞাসা করেন খোকনের নিজের আঁকা ছবি কোথায়—তখন খোকন প্রথমবার অবাক হয়ে যায়।
তারপর, খোকনের বাবার চিত্রকর বন্ধু চলে যাওয়ার মুহূর্তে খোকনকে বলে যান—“চোখ বুজে বসে কল্পনা করো। কল্পনায় যা দেখবে সেটাই এঁকে ফেলো।” তাই খোকন নিজের ঘরে বসে অন্ধকারের ছবি আঁকবে স্থির করে। কালো রং আর তুলি নিয়ে শুরু করে দেয় আঁকতে।
ড্রইং খাতার একটা পাতা কালো রঙে ভরে যায়। তারপর সেই ছবির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে সেই কালোর ভিতরে সে একটা মুখ-চোখ দেখতে পায়। নিজের প্রথম সৃষ্টির দিকে অবাক হয়ে চেয়ে থাকে।
১২.”চিত্রকর চলে গেলেন—এই চিত্রকরের পরিচয় দাও। চলে যাওয়ার আগে তিনি খোকনকে কী বলে গেলেন ?
উত্তর ‘খোকনের প্রথম ছবি’ গল্পে উল্লিখিত চিত্রকর হলেন
খোকনের বাবার বন্ধু। তিনি লখনউ শহরে থাকেন। চলে যাওয়ার আগে খোকনের বাবার চিত্রকর বন্ধু খোকনকে চোখ বুজে কল্পনা করে, সেই কল্পনার ছবি আঁকতে বলেন। কারণ তবেই খোকনের পক্ষে মৌলিক ছবি আঁকা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
১৩ “এই অন্ধকারেরই ছবি আঁকবে।’— খোকন কখন এমন সিদ্ধান্ত নিল? অন্ধকারের সেই ছবির দিকে তাকিয়ে খোকন কী দেখতে পেল ?
উত্তর লখনউ থেকে আসা বাবার চিত্রকর বন্ধু একসময় খোকনদের বাড়ি থেকে চলে যান। যাওয়ার আগে তিনি খোকনকে বলে গিয়েছিলেন, চোখ বুজে কল্পনা করতে এবং কল্পনায় যা দেখবে তাই এঁকে ফেলতে।
এই পরামর্শ মেনেই খোকন একদিন নিজের ঘরে অনেকক্ষণ চোখ বুজে বসে থাকে কিন্তু অন্ধকার ছাড়া কিছুই সে দেখতে পায় না। তখনই খোকন ঠিক করে, সে অন্ধকারেরই ছবি আঁকবে।
খোকন অন্ধকারের যে ছবি এঁকেছিল, তা ছিল নিছকই সাদা কাগজের উপর কালো রঙের গভীর প্রলেপ। কিন্তু সেটার দিকে স্থির চোখে তাকিয়ে থাকার পর সে দেখতে পায়, কেবল অন্ধকারের কালো নয়, তার ভিতর “একটা মুখ রয়েছে। চোখও আছে। অদ্ভুত হাসি সে চোখে।”
১৪.গল্পে ‘খোকনের প্রথম ছবি হিসেবে তুমি কোন ছবিটিকে স্বীকৃতি দেবে এবং কেন তা বুঝিয়ে লেখো।
উঃ। ‘খোকনের প্রথম ছবি’ গল্পে খোকনের প্রথম ছবি হিসেবে আমি সেটাকেই স্বীকৃতি দেব, যেটা খোকন অন্ধকারে কল্পনা করে এঁকেছিল। কালো রঙের ভিতর সে একটা মুখ ও অদ্ভুত হাসিযুক্ত চোখ দেখতে পেয়েছিল।
কারণ, প্রকৃতির ছবি বা অন্য কোনো ছবি যে কেউ আঁকতে পারে আর এগুলি সবই নকল ছবি। কিন্তু, মানুষের নিজের মনের ভিতর থেকে যে ছবি আসে সেটা আসল ছবি। তার মধ্যে কোনো কৃত্রিমতা নেই। সেটাই তার মনন এবং চিন্তনের বিকাশ। কপি বা নকল করা ছবিতে যে আনন্দ তার থেকে অনেক বেশি আনন্দ হয় নিজের সৃষ্টিতে।
১৫. পাঁচজন সাহিত্যিকের নাম এবং তাদের ছদ্মনাম পাশাপাশি লেখো। সাহিত্যিকেরা কেন ছদ্মনাম ব্যবহার করেন তা শিক্ষক/শিক্ষিকার থেকে জেনে নাও।
উত্তরঃ
সাহিত্যিকের নাম – ছদ্মনাম
রাজশেখর বসু – পরশুরাম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – ভানুসিংহ
প্যারীচাদ মিত্র – টেকচাঁদ ঠাকুর
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – অনিলা দেবী
সুনীল গঙ্গোপাধ্যার – নীললোহিত
সাহিত্যিকেরা ছদ্মনাম ব্যবহার করেন আত্মপরিচয় গোপনের উদ্দেশ্যে, কারোর দ্বারা ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার না-হওয়ার কারণে।
১৬. তুমি যদি বড়ো হয়ে সাহিত্যিক হও, কোন্ ছদ্মনাম ব্যবহার করবে এবং কেন—তা লেখো।
উঃ আমি বদি বড়ো হয়ে সাহিত্যিক হই তাহলে আমি ‘কোকিল’ ছদ্মনাম নেব।
কারণ ‘কোকিল’ একটি পাখি। তার কুহু স্বর শুনে মানুষ ঘুম থেকে জেগে ওঠে। আবার সেই কোকিল মানুষের কর্মময় সময় নির্ঘণ্টকে মনে করিয়ে দেয়, অলস জীবনধারাকে জাগরিত করে। কোকিল প্রভাতের গায়ক পাখি।
প্রভাতী সংগীতে মানুষের মনে যেমন নতুন ছন্দ ধ্বনিত হয়, তেমনি কর্মে গতি আসে। তার কণ্ঠস্বর শোনামাত্রই আর কেউ নিদ্রিত থাকতে চায় না।
আমি কোকিলের মতো সুমিষ্ট স্বরে সাহিত্যরচনা করতে চাই। আমার লেখা পড়ে মানুষ যেন কর্মবিমুখ না হয়। অলস জীবন ত্যাগ করে নতুন নতুন কর্মে মনোনিবেশ করতে পারে।
সে যেন ছন্দহীন-গতিহীন না হয়। যে-কোনো কর্মে আনন্দ থাকবে এবং সেই আনন্দরস পরিবেশন করাই হবে আমার সাহিত্যরচনার একমাত্র লক্ষ্য। তাই ‘কোকিল’ ছদ্মনাম পছন্দের বলেই এই নাম নিতে চাই।
১৭. খোকনের ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই আর তার বাবার এক বন্ধু যে যে ভাবে তাকে ছবি আঁকতে অনুপ্রাণিত করেছিল, তা লেখো। কোন্ রীতিটিকে তোমার পছন্দ হল এবং কেন তা যুক্তি-সহ লেখো।
উত্তর: বনফুলের লেখা ‘খোকনের প্রথম ছবি’ গল্পে ছবি আঁকার প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী ছিল খোকন। তাকে ছবি আঁকতে যে দু-জন প্রেরণা দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে একজন হলেন ড্রইংয়ের মাস্টারমশাই, অন্যজন তার বাবার একজন বিখ্যাত চিত্রকর বন্ধু।
খোকন যে ছবিই আঁকত তার মাস্টারমশাই তাতেই তাকে বাহবা দিতেন। তিনি বলতেন চারপাশে যা দেখবে এঁকে ফেলবে। অপরদিকে, খোকনের বাবার বন্ধু বলেছিলেন পরিবেশের থেকে কপি করে ছবি আঁকা ঠিক নয়। তিনি তাকে নিজের মন থেকে ছবি আঁকতে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
এই দুই পদ্ধতির মধ্যে খোকনের বাবার চিত্রকর বন্ধুর নির্দেশিত দ্বিতীয় পদ্ধতিটিই আমার পছন্দ। কেন-না আমার মনে হয়, খোকনের আঁকার মাস্টারমশাইয়ের পদ্ধতিতে রয়েছে নিছকই কপি করা। আলোকচিত্র তোলার মতো সহজতা ও সাধারণত্ব।
এমন অনুকরণপ্রিয়তার পথে কোনো ছবিতে নিজস্বতা আসে না। অন্যদিকে দ্বিতীয় পদ্ধতিটিতে আছে নিজে করার দৃঢ় মানসিকতা, শিল্পীর কল্পনার সক্ষম প্রকাশ এবং মনের রং মিশিয়ে ছবি করার চেষ্টা।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর:
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নোত্তর
সঠিক উত্তর নির্বাচন করো
১ খোকন এখন পড়ে ক্লাস (টেন-এ / সেভেন-এ / নাইন-এ)।
উঃ টেন-এ।
২ স্কুলে খোকনকে (ড্রইং/লাফিং/ফাইটিং) শেখানো হত।
উত্তর- ড্রইং
৩.তারপর ড্রইং-বুক থেকে (নকল/কপি/ ধার) করে করে অনেক ছবি আঁকল খোকন।
উঃ কপি।
৪. খোকন একদিন সত্যি সত্যি এঁকে ফেলল (ইউক্যালিপটাস/ক্যাকটাস /ঝাউ গাছটাকে।
উঃ ইউক্যালিপটাস।
৫. খোকন (মহাউৎসাহে/দুঃখে/বেদনায়) ছবি আঁকতে লাগল ।
উঃ মহাউৎসাহে।
৬. প্রকৃতির ছবি ঠিক (আঁকা যায়/আঁকা যায় না/আঁকা অসম্ভব)।
• আঁকা যায় না।
৭. আকাশে হাতির মতো মেঘ দেখে খোকন যে ছবি এঁকেছিল পরক্ষণে সেই হাতিটি ও কুমির। (বাঘ/হরিণ/কুমির) বলে মনে হয়েছিল।
উঃ কুমির
৮ চিত্রকর খোকনের ছবি দেখে বলেছিল এগুলি সব (নকল/আসল/উলটো) করা ছবি।
উঃ নকল করা ছবি।
>৯ (জ্যোৎস্না/আলো/অন্ধকার) ছাড়া আর কিছু দেখতে পেল না।
উঃ অন্ধকার
১০. নিজের প্রথম (সৃষ্টির/কাজের/আঁকার) দিকে অবাক হয়ে চেয়ে রইল খোকন।
● ।সৃষ্টির
শূন্যস্থান পূরণ করো
প্রশ্ন
১.সে যখন খুব ছোটো ছিল কাগজের উপর—–পেনসিল দিয়ে হিজিবিজি কাটত।
উঃ রঙিন
২। তোমার বাড়ির সামনেই তো——গাছ আছে একটি।
উঃ চমৎকার
৩. ——– ছবিটি দেখেও খুব প্রশংসা করলেন মাস্টারমশাই।
উঃ পুলের
৪. খুব বড়ো—–হবে তুমি ।
উঃ চিত্রকর
৫. সূর্যের দীপ্তি তো——ফোটেনি ।
উঃ ছবিতে।
৬. মেঘের ছবি আঁকতে গিয়ে—-হয়ে গেল খোকন ।
উঃ বেকুব।
৭. খোকনের বাবার বন্ধু—–শহরে থাকেন।
উঃ লক্ষ্ণৌ।
৮. এগুলো সব——-করা ছবি ।
উত্তর: নকল।
৯. ——-রং আর——-
উঃ কালো,তুলি।
১০.——- হাসি সে চোখে।
উঃ অদ্ভুত
খোকনের প্রথম ছবি প্রশ্ন:
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন
১.’খোকনের প্রথম ছবি’ পাঠ্যাংশটির লেখক কে?
২.খুব ছোটো থাকাকালীন খোকনের অঙ্কন প্রয়াস কেমন ছিল?
৩.খোকন কোথায় ড্রইং শিখত ?
৪.খোকনের বাড়ির সামনে একটা চমৎকার গাছ ছিল তার নাম কী?
৫.খোকনদের বাড়ির ছাদ থেকে কী দেখা যায় ?
৬.খোকনের বাবার বন্ধু কোন শহরে থাকতেন ?
৭. “এসবই তো কপি করেছ” – পাঠ্যাংশ থেকে ‘কপি’ শব্দটির প্রতিশব্দ লেখো।
৮.“ তোমার নিজের আঁকা ছবি কই ?”- এ কথা কে বলেছিলেন ?
উত্তর
১.‘খোকনের প্রথম ছবি’ পাঠ্যাংশটির লেখক বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় (বনফুল)।
২• খুব ছোটো থাকাকালীন খোকন কাগজের উপর রঙিন পেনসিল দিয়ে হিজিবিজি কাটত। খোকন স্কুলে ড্রইং শিখত।
৩. খোকন স্কুলে ড্রয়িং শিখতো
৪.খোকনের বাড়ির সামনে একটা চমৎকার গাছের নাম ছিল ইউক্যালিপটাস।
৫.খোকনের বাড়ির ছাদ থেকে একটা পুল দেখা যায়।
৬.খোকনের বাবার বন্ধু থাকতেন লখনউ শহরে
৭.’কপি’ শব্দের প্রতিশব্দ হল নকল।
৮.খোকনের বাবার একজন চিত্রকর বন্ধু বলেছিলেন।