ভাঙার গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা
ভাঙার গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা
ভাঙার গান
কাজী নজরুল ইসলাম
উৎস
‘ভাঙার গান’ গানটি ভাঙার গান’ গ্রন্থের প্রথম গান। ভাঙার গান’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রকাশিত চতুর্থ গ্রন্থ। ভাঙার গান’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে। বইটি তখনকার ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হয় ১১ নভেম্বর ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে। ভাঙার গান’ এই দেশাত্মবােধক গানটি ভাঙার গান গ্রন্থ থেকে সংকলিত।
ভাঙার গান কবিতার বিষয়বস্তু
বিষয়-সংক্ষেপ
ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে কাজী নজরুল ইসলামের প্রবল প্রতিবাদী সুর শােনা যায় তাঁর ‘কারার ওই লৌহ-কপাট’ গানে। যে কারাগারে শতসহস্র স্বাধীনতাকামী আন্দোলনকারীকে বেঁধে রাখা হয়েছে, সেই কারাগারের লৌহ-কপাট ভেঙে লােপাট করার ডাক দিয়েছেন কবি। শিকল-পুজোর রক্ত-জমাট পাষাণ-বেদীকে ভেঙে ফেলার | সােচ্চার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তারুণ্যশক্তির আধার মহাদেবকে তাঁকে প্রলয়-বিষাণ বাজিয়ে আবির্ভূত হতে বলেছেন। কবির বাসনা, কারাগারের পূর্বদিকের প্রাচীর ভেদ করে তাঁর ধ্বংসের পতাকা উড়ুক।
গাজন শিবের উৎসব। ওই গাজন উৎসবের বাদ্যি-বাজনা ঢাকঢােলের বাদ্য রণ-দুন্দুভিতুল্য বাজনা। কবির আহ্বান সেই বাজনা বেজে উঠুক। পরাধীনতা থেকে মুক্তি ও স্বাধীনতার স্বপক্ষে যারা উৎসর্গিত প্রাণ তাদের সাজা দেওয়ার মালিক কে, কেই-বা সেই রাজদণ্ডধারী! তার কি সাজা দেওয়ার অধিকার আছে ? অট্টহাসির কারণ এই যে, ভগবান কি ফাঁসির রজ্জ্ব গলায় দেবেন ? সে সর্বনাশীকে এই হীন তথ্য কে শেখায় ?
শ্মশানচারী পাগলা ভােলানাথকে ডাক দিয়ে কবি কামনা করছেন ভােলানাথ যেন প্রলয় ঝাঁকুনি দেন। তাঁর জোরালাে হ্যাচকা টানে গারদগুলি ভেঙে পড়ুক। তিনি হৈদরী হক মারুন, কাঁধে তুলে নিন দুন্দুভি-ঢাক মৃত্যুদেবতা ধর্মরাজ যমকেও ডাক দেওয়া হােক।
কালবৈশাখী কী বসে বসে কাল অতিবাহিত করবে ? তার ঝড়-ঝঞা তাে কারার ভিত নাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। ভােলানাথ ও কালবৈশাখী ওদের অপেক্ষায় না থেকে কয়েদি নিজেরা তালা ভেঙে ফেলার জন্যে উদ্যোগী হয়ে কারার লৌহকপাটে লাথি চড়াক। ভেঙে ফেলুক যত বন্দিশালা আছে সবেতে আগুন লাগাক। বন্দিশালার ভিত উপড়ে ফেলুক।
ভাঙার গান কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর
বড় প্রশ্ন
প্রশ্ন) ‘ভাঙাৱ গান’ গানটিতে কবি কাজী নজরুল ইসলাম কারাগাৱেৱ অবলােপের জন্য কী কী আবেদন ৱেখেছেন আলােচনা করাে।
উপস্থাপনা : কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা গানটির নাম ‘ভাঙার গান। ভাঙার গান’-এর আগাগােড়া কারাগার ভাঙার আবেদন ও নির্দেশ রয়েছে। ভাঙার উদ্দেশ্য হলাে কারাগার ধ্বংস করে ভিত উপড়ে ফেলে বন্দিদের মুক্ত স্বাধীন জীবনে ফিরিয়ে। আনা। অর্থাৎ দেশকে বিদেশি শাসকের শােষণ-শাসন, পরাধীনতার বন্ধন ও অত্যাচার থেকে মুক্ত করা। স্বাধীনতাকামী কবির স্বপ্নই হলাে তাই। ভাঙার মন্ত্রে দেশবাসীকে উজ্জীবিত করার জন্য কবি লেখেন দেশাত্মবােধক ‘ভাঙার গান।
অবলােপের জন্য আবেদন ও নির্দেশ : গানটিতে কবি বন্দিশালা অবলােপের জন্য প্রলয় তথা ধ্বংসের দেবতা তরুণ ঈশান তথা পাগলা ভােলানাথের কাছে আবেদন রেখেছেন। কারার লৌহ-কপাট ভেঙে ফেলা হােক। শিকল-পুজোর রক্ত-জমাট পাষাণবেদীটা ভেঙে লােপাট করা হােক। তরুণ ঈশান প্রলয়ের বিষাণখানা বাজাক। কারাপ্রাচীর ভেঙে ধ্বংস-নিশান উড়িয়ে দেওয়া হােক। গাজনের রণদুন্দুভি বেজে উঠুক। পাগলা ভােলা যেন হ্যাচকা টানে ও প্রলয়-দোলায় যেন গারদগুলি ধ্বংস করে। প্রাকৃতিক শক্তি কালবৈশাখীর কাছেও কবি আবেদন রেখেছেন। কালবৈশাখী নিষ্কর্মা ও নিষ্ক্রিয় হয়ে আর কত কালক্ষেপ করবে ? সে ভয়ংকর ঝড়ঝঞা নিয়ে ভয়ানক কারার ভিত নাড়িয়ে দিক। দৈব ও প্রাকৃতিক শক্তি ছাড়াও কবির আবেদন ও নির্দেশ মানবিক যৌথ শক্তির প্রতি। বন্দিশালার কয়েদিরা সমবেতভাবে বলপ্রয়ােগ করুক। তারা লাথি মেরে ভেঙে ফেলুক কারার লৌহ-কপাটের তালা। বন্দিশালায় আগুন লাগিয়ে দিক। কারার ভিত উপড়ে ফেলুক। বন্দিশালাগুলির অবলােপ ঘটুক।
প্রশ্ন ) ‘কে দেয় সাজা/মুক্ত স্বাধীন সত্যকে ৱে? —মুক্ত স্বাধীন সত্য বলতে কী বােঝানাে হয়েছে? ‘মুক্ত স্বাধীন সত্যকে কী সাজা দেওয়া যায়?
উত্তর: : মুক্ত স্বাধীন সত্য স্বাধীনতাকামী বীর যােদ্ধারা হলেন সত্যের পূজারি। তাঁরা সত্যের উপাসক। তাঁরা সত্য পথের পথিক। দেশকে স্বাধীন করার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা হলাে তাঁদের কাছে একমাত্র সত্য। পরাধীনতার শিকল থেকে দেশকে মুক্ত করার চিন্তা ও সংগ্রাম হলাে তাঁদের সত্য পথে এগিয়ে চলার আদর্শ। তাঁরা মুক্তি ও স্বাধীনতাস্বরূপ সত্যের বার্তাবহ। এই অর্থে ‘মুক্ত স্বাধীন সত্যকে বােঝানাে হয়েছে।
মুক্ত স্বাধীন সত্যকে শাস্তি দিতে অক্ষম : ‘মুক্ত স্বাধীন সত্য একটি ভাবাদর্শ। তার অনুসারী ও অনুগামী যাঁরা, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তির আদেশ জারির অধিকারী অত্যাচারী ইংরেজ সরকার নয়। সত্য ও সত্য পথের অগ্রপথিকদের আটকাবে কে? তাদের কি কারাগার বেঁধে রাখতে পারে ? কারাপ্রাচীরের বাঁধন তাঁদের কাছে তুচ্ছ। ফাঁসির দড়ি তাঁদের কাছে জয়মাল্য। মুক্ত স্বাধীন সত্যের বার্তাবহ যাঁরা, তাঁদের ক-জনকেই বা ফাঁসিতে ঝােলাবে। ব্যক্তিকে মেরে ভাবাদর্শকে কি হত্যা করা যায় ? সত্য ভাবাদর্শ অক্ষয় অমর। অবিনশ্বর ।
প্রশ্নঃ ‘নাচে ওই কাল-বােশেখি/কাটাবি কাল বসে কি?’-কাদেৱ আলসেমিকে কবি ধিক্কার জানিয়েছেন ও কেন? এই উদ্ধৃতিৱ পৱেৱ চরণে করি কী কৱাৱ ডাক দিয়েছেন?
উত্তর : ধিক্কার জানানাের কারণ : ‘কাল-বােশেখি’ হলাে কালবৈশাখী। চৈত্রের শেষ ভাগ থেকে জ্যৈষ্ঠের প্রথম ভাগের মধ্যে কালবৈশাখীর প্রবল ঝড়-ঝঞ্জা হয়ে থাকে। এই ঝড়-ঝঞ্জা নটরাজ রুদ্রের প্রলয়-নাচের মতাে ভয়ংকর। এ এক দুর্বার প্রাকৃতিক শক্তি। ইংরেজ শাসকের কারাগারে বন্দি স্বাধীনতা যােদ্ধাদের কাছে কবি আশা করেন অনুরূপ শক্তির প্রকাশ। কিন্তু তার পরিচয় না পেয়ে বন্দি স্বাধীনতা যােদ্ধাদের কবি তাদের কুঁড়েমি বা আলসেমিকে দায়ী করে তিনি জানতে চেয়েছেন তারা কি আলসেমি বা কুঁড়েমিতে সময়ের অপচয় করবেন ? তাঁর প্রশ্নের মধ্যে ধিক্কারের সুর ধ্বনিত। কারণ কারাবন্দি স্বাধীনতাকামী যােদ্ধার কাছে প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। বৃথা কালক্ষেপের প্রশ্নই ওঠে না।
কবিৱ আহ্বান : এই উক্তির পরের চরণে কবি বলেছেন‘দেরে দেখি/ভীম কারার ওই ভিত্তি নাড়ি!—অর্থাৎ তারা যদি অযথা কালক্ষেপের মানসিকতায় না থাকেন, তাহলে তাঁরা দেখিয়ে দেন কালবােশেখির দুরন্ত শক্তিতে তাঁরা শক্তিমান। তাঁদের শক্তির প্রকাশের নজির হয়ে থাকছে—তাঁদের ধ্বংসকারী প্রচণ্ড শক্তির ঐক্যবদ্ধ আঘাতে কারাগারের ভয়ংকর কঠিন ভিত নাড়া খেয়ে অনিবার্য ধ্বংসের অভিমুখী হবে। তা ধুলায় পরিণত হয়ে কারামুক্তির পথ প্রশস্ত করবে ।
প্রশ্ন ) ‘ওৱে ও পাগলা ভােলা/ দে রে দে প্রলয়দোলা’—‘পাগলা ভােলা’ কে? কাদেৱ উদ্দেশ করে কবি ‘পাগলা ভােলা’ বলেছেন? প্রলয়-দোলা’ৱ শক্তি নিয়ে কবি কী করতে বলেছেন?
উত্তর: ‘পাগলা ভােলা’ হলেন নটরাজ মহাদেব।স্বাধীনতাকামী স্বদেশি আন্দোলনকারী, যাঁরা ইংরেজ শাসকের কারাগারে বন্দি, কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁদের উদ্দেশ করে ‘পাগলা ভােলা বলেছেন।
স্বাধীনতাকামী জেলবন্দিদেৱ কী কী করণীয় : পাগলা ভােলা নটরাজ প্রলয়ের দেবতা। তিনি সৃষ্টি করেন, সৃষ্ট জগৎ রক্ষা করেন, আবার অনাচারে, অন্যায়ে, ঘৃণ্য কাজের পাঁকে সৃষ্ট জগৎ বাসের অযােগ্য হলে ধ্বংসের মূর্তিতে প্রলয় নাচের ভয়ংকর আলােড়নে সবকিছু ধ্বংস করেন। তাই তিনি সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়ের দেবতা। ইংরেজ শাসকের অন্যায়অবিচারের, শাসন-শােষণের, অত্যাচার-নিপীড়নের হাত থেকে দেশ ও দেশবাসীকে স্বাধীন করার মহান উদ্দেশ্যে আন্দোলনে সােচ্চার হলেই ইংরেজ সরকার তাঁদের কারাগারে বন্দি করেন। কারামুক্তির জন্য কবি তাঁদের নটরাজের প্রলয়-আলােড়নের মতাে দুর্বার শক্তি নিয়ে কারাগারের লােহার গারদগুলােয় প্রবল হ্যাচকা টান দিতে বলেছেন। প্রচণ্ড হ্যাচকা টানে গারদ উপড়ে গিয়ে মুক্তির পথ খুলে যাবে। দেশপ্রেমে উজ্জীবিত যারা তারা তাে প্রলয়দেবতার শক্তিতে শক্তিমান। তাঁদের সমবেত শক্তির কাছে শাসকের শক্তি তুচ্ছ। গারদের বেষ্টনী তাঁদের বেঁধে রাখতে পারে না। তাঁদের ঐক্যবদ্ধ যুবশক্তির জয় সুনিশ্চিত।
প্রশ্ন ) ‘ডাক ওরে ডাক/ মৃত্যুকে ডাক জীবন পানে।—ওৱে’ বলে কাদেৱ সম্বােধন করেছেন কবি? মৃত্যুকে জীবন পানে ডাক দেওয়ার তাৎপর্য কী?
উত্তর ওৱা : কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘ভাঙার গান’
কবিতায় ইংরেজ শাসকের স্বাধীনতা সংগ্রামী । বন্দি হয়ে আছেন, তাঁদের কবি ‘ওরে সম্বােধন করেছেন।
নিশ্চিত জেনেও দেশমাতার বন্ধনমুক্তির জন্য নিবেদিতপ্রাণ। মুক্ত তাৎপর্য : দেশের স্বাধীনতাকামী যােদ্ধারা নির্ভীক। মৃত্যু স্বাধীন সত্য পথের পথিক তাঁরা। মুক্ত স্বাধীন সত্য আদর্শে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত তাঁরা। ফাঁসির মঞ্চে জীবনের জয়গান গাওয়ার জন্য তাঁরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মৃত্যু তাঁদের পায়ের ভৃত্য। তাঁরা জানেন তাঁদের জীবনদানে শতসহস্র জীবন উজ্জীবিত হয়ে দেশমুক্তির সংগ্রামে এগিয়ে আসবে। লক্ষ লক্ষ প্রাণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্জয় শক্তি গড়বে। শাসকের দেওয়া প্রাণদণ্ড ব্যক্তি মানুষকে মারবে কিন্তু সেই মৃত্যু বীর শহিদকে করবে মৃত্যুঞ্জয়ী। তাঁর জীবনদান ব্যর্থ হবে , জীবনকে করবে মহান। জীবনের জয়গানে মুখর হবে সহস্র জীবন। মৃত্যুকে ভয় না পেয়ে মৃত্যুকে জীবনমুখী করার আহ্বান জানিয়েছেন কবি।
ভাঙার গান কবিতা নবম শ্রেণী
প্রশ্নঃ ‘আগুন জ্বালা,/ আগুন জ্বালা, ফেল উপড়ি।”—কোথায় ও কী উদ্দেশ্যে করি আগুন জ্বালাৱ কথা বলেছেন? এই উক্তিতে কবিৱ কী মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়?
উত্তর: ইংরেজ শাসকের প্রতিটি বন্দিশালা নির্মম অত্যাচার ও নিষ্ঠুর পীড়নের জায়গা। প্রতিটি কারাগার হলাে স্বাধীনতা যােদ্ধাদের ‘রক্ত-জমাট/পুজোর পাষাণ-বেদী। কবি কাজী নজরুল ইসলাম ওই ‘। বন্দিশালায় আগুন লাগানাের কথা বলেছেন।
: আগুন জ্বালার উদ্দেশ্য : বিদ্রোহ ও বিপ্লবের আগুন জ্বালিয়ে তােলার উদ্দেশ্য হলাে অত্যাচার ও নিধনের ওই বধ্যভূমিগুলিকে ধ্বংস করা দরকার। ‘মুক্ত স্বাধীন সত্যকে প্রতিষ্ঠার জন্য বন্দিশালাগুলিকে নিশ্চিহ্ন করার প্রয়ােজন আছে। সেজন্য প্রচণ্ড আঘাতে আঘাতে কারাগারের ভিত নড়িয়ে দিতে হবে। তালা লাথি মেরে ভেঙে দিতে হবে। আগুন লাগিয়ে বন্দিশালার ভিত উপড়ে ফেলতে হবে।
কবিৱ বিদ্রোহী মানসিকতার প্রকাশ : যেখানে যত অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার, নিষ্ঠুর পীড়ন-তাড়ন, স্বাধীনতা হরণ, কবি কাজী নজরুল সেই সবের বিরুদ্ধে চির বিদ্রোহী। তাঁর কণ্ঠে বিপ্লবের উদাত্ত বাণী। দেশের স্বাধীনতা যােদ্ধাদের দমন ও শায়েস্তার জন্য তাঁদের ওপর নির্মম অত্যাচার হয়েছে ও তাঁদের বুকের রক্তে পাষাণকারা হয়েছে রক্তরাঙা। কবি তাই মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন বিদ্রোহ ও বিপ্লবের আঘাত হেনে বন্দি স্বাধীনতা যযাদ্ধাদের রক্ষা করতে হবে। তাদের স্বাধীনতা অর্জনের স্বপ্নকে সার্থক করতে হবে। সেজন্য অচিরে কারাগারের লৌহ-কপাট ভেঙে লােপাট করতে হবে। কারাপ্রাচীর ভেঙে ধ্বংসের নিশান ওড়াতে হবে। তবেই ‘মুক্ত স্বাধীন সত্য হবে কায়েম। সেজন্য কালবৈশাখীর প্রলয় ঝঞা তুলে কারাগারের ভিত নাড়িয়ে দিতে হবে। অগ্নিক্ষরা বিদ্রোহ ও বিপ্লবের প্রচণ্ড আঘাতে উপড়ে ফেলতে হবে বন্দিশালার বধ্যভূমির পাষাণ ভিতকে। এইভাবে কবি নজরুলের বিদ্রোহী মানসিকতার প্রকাশ ঘটেছে।
ভাঙার গান কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
প্রশ্নঃ‘কাটাবি কাল বসে কি?’-অহেতুক কাল হৱণেৱ কারণ কী?
উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের রচিত . ‘ভাঙার গান কবিতা থেকে গৃহীত। পরাধীনতার বন্ধনমুক্তির সুতীব্র বাসনায় অসংখ্য তরুণ স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে স্বাধীনতা
সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা ইংরেজ সরকারের রােষে পড়ে কারারুদ্ধ ও নির্মমভাবে অত্যাচারিত। তাঁদের কারামুক্ত করার জন্য ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় এসেছে। কালবৈশাখীর প্রলয় শক্তি নিয়ে দেশবাসী সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ুক। বৃথা হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার সময় নয়। ওভাবে কাল হরণ হবে অনুচিত কাজ।
প্রশ্ন ।সবশেষে স্বাধীনতাকামী বন্দি যােদ্ধাদের কাছে কবি কী প্রত্যাশা রেখেছেন?
উত্তর : সবশেষে স্বাধীনতাকামী বন্দি যােদ্ধাদের কাছে কবি এই প্রত্যাশা রেখেছেন। তারা কারওর সাহায্যের আশায় না থাকুক তারা নিজের বিক্ষুদ্ধ শক্তি প্রয়ােগ করুক। লাথি মেরে ভেঙে ফেলুক কারাগারের তালা। যত বন্দিশালা আছে সবগুলিতে আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দিক। পুড়ে ধ্বংস হােক সব। বেঁধে রেখে মৃত্যু যন্ত্রণা দেওয়ার মতাে অত্যাচারের অবসান হােক।
প্রশ্ন । ‘কাৱাৱ ওই লৌহ-কপাট/ ভেঙে ফেল, কাৱাৱ লােপাট’-কবি নজরুলের এই ডাকের কারণ কী আলােচনা করাে।
> উত্তর : স্বাধীনতা যােদ্ধাদের অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্ধি করে রাখত ইংরেজ সরকার। তাদের ওপর অকথ্য অত্যাচার হতাে। ওই অত্যাচারী, শােষক, নিপীড়ক ইংরেজের সঙ্গে আপসে স্বরাজ প্রাপ্তিতে কবি নজরুল বিশ্বাসী ছিলেন না। এক্ষেত্রে সহিংস সংগ্রামের পক্ষপাতী ছিলেন তিনি। তাই জেলখানার লােহার কপাট ভেঙে ফেলার ডাক দেন তিনি। বন্দি স্বাধীনতাকামীদের মুক্তির জন্য সরাসরি বলপ্রয়ােগ করে লৌহ-কপাট ভেঙে ফেলার কাজে দৃঢ় প্রত্যয় তাঁর।
প্রশ্নঃ ‘ওরে ও তরুণ ঈশান!/ বাজা তােৱ প্রলয়- বিষাণ’-কবি নজরুল তরুণ ঈশানকে প্রলয়- -বিষাণ বাজতে বলেছেন কেন—আলােচনা করাে।
উত্তর: প্রলয় ও ধ্বংসের দেবতা হলেন ঈশান তথা শিব। দেশকে স্বাধীন করার মন্ত্রে যারা দীক্ষিত তারা স্বাধীনতাযােদ্ধা। ইংরেজ সরকার তাদের কারারুদ্ধ করে তাদের স্বাধীনতাস্পৃহাকে দমন করতে চায়। কবি নজরুল সেই সব কারারুদ্ধ তরুণ বিপ্লবীদের ‘ঈশান’ আখ্যা দিয়ে প্রলয় ও ধ্বংসের কাজে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন। তাদের আহ্বান করেছেন প্রলয়- বিষাণ বাজাতে। তাদের ধ্বংসকারী ও প্রলয়রূপী তারুণ্য শক্তিতে জেলখানার পাষাণ-প্রাচীর ধ্বংস হােক। বন্দির বন্ধনমুক্তি হােক।
প্রশ্ন । ‘ধ্বংস নিশান,/ উড়ুক প্রাচী’ৱ প্ৰচীৱ ভেদি।-কবি নজরুল ধ্বংস নিশান ওড়ানাের আহ্বান জানিয়েছেন কেন?
উত্তর : ইংরেজ শাসকের অত্যাচার-অবিচারে, শাসন-শােষণে ভারতবাসীর ওষ্ঠাগত প্রাণ। তারা চায় পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্তি। সেই উদ্দেশ্যে স্বাধীনতাকামী তরুণ যােদ্ধারা শাসক ইংরেজের রোষানলে পড়ে কারারুদ্ধ। সেখানে তারা মিতু, অত্যাচারিত। তাদের কারামুক্তির জন্য কবি নজরুল করিস তরুণদের প্রলয়-দেবতা ‘ঈশান’ আখ্যা দিয়ে কারাপ্রাচীর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি চেয়েছেন কারারুদ্ধ বীর স্বাধীন যােদ্ধারা পূর্বদিকের কারাপ্রাচীর ভেঙে ধ্বংসের পতাকা উড়াক।
প্রশ্নঃ ‘গাজনের বাজনা বাজা/কে মালিক? সে রাজা?’—উদ্ধৃতিটি ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতিটি কবি কাজি নজরুল ইসলামের ভাঃ। গান কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। দেশের স্বাধীনতাকামী যােদ্ধারা শাসক ইংরেজদের রােষানলে পড়ে কারারুদ্ধ। কবি চন তাদের কারামুক্তি। সেই উদ্দেশ্যে তিনি প্রলয় দেবতা শিয়ে ধ্বংসাত্মক শক্তির প্রসঙ্গে এসেছেন। গাজন শিবের উৎসব। গাজনে, বাজনা ঢাকঢােল। তার আওয়াজ রণদুন্দুভির সঙ্গে কবি চান সেই রণদুন্দুভি বাদ্য বাজুক।
প্রশ্ন । কে দেয় সাজা/মুক্ত স্বাধীন সত্যকে ৱে?এই উদ্ধৃতিৱ অর্থ বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : দেশের স্বাধীনতাকামী যােদ্ধারা সত্য-আদর্শে দীক্ষিত। তারা পরাধীন নিপীড়িত মানবাত্মার মুক্তির উদ্দেশ্যে নিবেদিত প্রাণ। তাদের অনুসৃত ধর্ম সত্যধর্ম। মানবতার সপক্ষে যা কিছু হলাে তা সত্য। সত্য স্বাধীন ও মুক্ত। তাকে কারারুদ্ধ করা যায় না। সাজা দেওয়া যায় না। অথচ অজ্ঞ অবিবেচক ইংরেজ সরকার সত্যকে কারারুদ্ধ করে সাজা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। তা ছাড়া সত্যের পূজারী যারা তাদের সাজা দেওয়ার । অধিকার ইংরেজ সরকারের নেই। প্রকৃতপক্ষে তারা এদেশের । মালিকও নয়, রাজাও নয়।
প্রশ্ন । ‘ডাক ওৱে ডাক/ মৃত্যুকে ডাক জীবন পানে!’—উদ্ধৃতির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতিটি কাজি নজরুল ইসলামের রচিত ‘ভাঙার গান কবিতা থেকে গৃহীত। দেশের স্বাধীনতাকামী যােদ্ধারা ছিলেন নির্ভীক। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও দেশমাতার । বন্ধনমুক্তির জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। ফাঁসির মঞ্চে জীবনের পায়ের ভৃত্য। তাঁরা জানতেন মৃত্যুবরণ করে জীবনের । জয়গান গেয়ে যাবেন। দেশের কোটি কোটি মানুষের মুক্ত স্বাধীন জীবনের জন্য তাঁদের আত্মদান হবে এক মহান আদর্শের প্রতিষ্ঠা। অমন মৃত্যু তাে সাধারণ মৃত্যু নয়। পরাধীনতার অভিশাপমুর স্বাধীন জীবনের গৌরবময় মৃত্যুবরণ। এই মৃত্যু হলাে জীবনের জন্য। কবি এরই ডাক দিয়েছেন। ।
প্রশ্ন । ‘ভাঙার গান’ কী ধরনের গান? গান ও কবিতাৱ তফাত কী সংক্ষেপে লেখাে।
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘ভাঙার গান’ একটি বিখ্যাত দেশাত্মবােধক গান।
গান আর কবিতার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলাে গানে সুরারােপ করে লয়-তালে তাকে সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়। কবিতায় সুরারােপের প্রয়ােজন হয় না। তাকে ছন্দ অনুযায়ী পড়তে পারলেই পরিবেশিত হয়। গান ও কবিতা উভয়ই কিন্তু ছন্দোবদ্ধ। এখানে তাদের বড়াে মিল। যেজন্য গানকে কবিতার মতাে করে পড়া যায়। অনেক কবিতাকে আবার গান করে গাওয়াও যায়। সেজন্য ‘ভাঙার গান গান হিসেবে লেখা হলেও কবিতা হিসেবে পাঠ্য বিষয় হয়েছে।
প্রশ্ন ।‘ভাঙার গান কবিতায় কবি প্রথম স্তবকে চাৱটি কাজের আবেদন রেখেছেন।—চাৱটি কাজ কী কী আলােচনা করাে।
উত্তর : ‘ভাঙার গান’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। প্রথম স্তবকে যে চারটি কাজের আবেদন রেখেছেন তা হলাে : এক ] কারাগারের লৌহ-কপাট ভেঙে ফেলার, দুই ] রক্তজমাট শিকল-পুজোর পাষাণ-বেদী লােপাট বা নিশ্চিহ্ন করতে, তিন ] তরুণ ঈশান যেন তার প্রলয়-বিষাণ বাজায়, চার প্রাচী’র প্রাচীর ভেদ করে বন্দিশালায় যেন ধ্বংস-নিশান ওড়ানাে হয়।
ভাঙার গান কবিতা 2022
প্রশ্ন । হা হা হা রবে অট্রহাসির কারণ কী? গাজনের বাজনা কী ও তা কীসের প্রতীক?
: উত্তর : হা হা হা করে অট্টহাসি কিন্তু প্রাণখােলা হাসি নয়। ওর ভিতর পরিহাসের সূক্ষ্ম হুল থাকে। এই পরিহাস ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে। তাদের অন্যায় বিচারের যথেচ্ছাচারে কথায় কথায় রঞ্জুর ফাঁস ওঠে নিরপরাধ স্বাধীনতা যােদ্ধাদের গলায়। তাদের এমন অন্ধ অহমিকা যে তারা নাকি সর্বশক্তিমান ভগবানকেও রঙ্গুর ফাঁসে লটকাতে পারে ! এমন হাস্যকরতুল্য কীর্তিকলাপ।
গাজনের বাজনা হলাে ঢাকবাদ্য বা রণদুন্দুভিতুল্য বাদ্য। কাজেই গাজনের বাজনা রণদুন্দুভি বাদ্যের প্রতীক।
প্র) ‘মুক্ত স্বাধীন সত্যকে সাজা দেয় কে? তার কি সাজা দেওয়ার অধিকার আছে ?
উত্তর : ‘মুক্ত স্বাধীন সত্যকে সাজা দেয় ইংরেজ সরকার।
| ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সাজা দেওয়ার অধিকার ইংরেজ সরকারের নেই। প্রকৃতপক্ষে তারা এদেশবাসীর মালিক নয়, রাজাও নয়। তারা এদেশে বাণিজ্য করতে এসে বাহুবলে, নানা ছলনা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে, এদেশের মালিক ও রাজা হয়ে বসেছে। এদেশকে পরাধীন করে দেশবাসীর সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। স্বাধীনতার কথা উচ্চারণ করলেই তাকে জেলে পােরার সাজা দিয়ে দেশদ্রোহী বলে নির্মম অত্যাচার করছে।
প্রশ্ন । ‘পাগলা ভােলা’ কে? কবি তাঁকে আহ্বান করে কী আবেদন রেখেছেন?
উত্তর ; ‘পাগলা ভােলা হলেন ভােলা মহেশ্বর—ভােলানাথ। দেবাদিদেব মহাদেব ।
কবি ভােলানাথকে আহ্বান করে এই আবেদন রেখেছেন যে, তিনি প্রলয়ের দেবতা। গারদ বা বন্দিশালা হলাে সবচেয়ে বেশি পীড়ন-তাড়ন ও নির্মম অত্যাচারের কেন্দ্র। সেজন্য বন্দিশালার অবলােপ ঘটিয়ে বন্দি স্বাধীনতাকামী যােদ্ধাদের মুক্ত করা হােক। ওই অবলােপের জন্য প্রলয়-দেবতা নটরাজের সাহায্য চান কবি। তাঁর অনুরােধ হলাে ভােলানাথ হ্যাচকা টানের প্রলয়-দোলায় গারদগুলি ধ্বংস করুন।
প্রশ্ন । কালবৈশাখীৱ কালক্ষেপ নিয়ে কবি কী বলেছেন? দেৱে দেখি’-কবি কালবৈশাখীর কাছে কী দেখতে চেয়েছেন?
উত্তর : কালবৈশাখীর কালক্ষেপ নিয়ে কবি বলেছেন যে, বসে থেকে বৃথা কালক্ষেপ করছে কালবৈশাখী ।
কালবৈশাখী ঝড়-ঝঞ্ঝার সৃষ্টিকর্তা। কালবৈশাখীর ঝড়-ঝঞ্জা প্রলয়ের মতাে ভয়ংকর ধ্বংসাত্মক। কাজেই কালবৈশাখী তার ঝড়ঝঞা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুক বন্দিশালার ওপর। কবি সেটাই দেখতে চেয়েছেন। তার ভয়ংকর ঝড়-ঝক্কার শক্তি প্রয়ােগ করে ভয়ংকর কারাগুলির ভিত নাড়িয়ে দিক।
ভাঙার গান কবিতার ছোট প্রশ্ন উত্তর
ছোট প্রশ্ন
প্রশ্নঃ স্বাধীনতাকামী যােদ্ধাদের কাছে কবিৱ কী বদন?
উত্তর : স্বাধীনতাকামী যােদ্ধাদের কাছে কবির আবেদন যে, তারা যেন লাথি মেরে বন্দিশালার তালা ভাঙে ও আগুন লাগায়।
প্রশ্ন । ‘ডাক ওৱে ডাক/ মৃত্যুকে ডাক জীবন পানে।’—এখানে কী হিসেবে বলা হয়েছে?
উত্তর : গতিহীন, থবির, অচঞ্চল জীবনে ঝুঁকি নিয়ে দেশের কাজে, স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন । কবি ‘রক্ত-জমাট শিকল’ কথাটি উল্লেখ করেছেন কেন?
– উত্তর; অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসক ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কারাগারে শিকল দিয়ে বেঁধে বন্দি করে রাখার ঘটনাকেই কবি ‘রক্ত-জমাট শিকল’ বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রশ্ন । ‘আগুন জ্বালা,/আগুন জ্বালা, ফেল উপাড়ি। -কবি কী বােঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর : স্বদেশিদের ব্রিটিশ শাসকদের তৈরি কারাগারে আগুন জ্বালিয়ে গরাদ উপড়ে ফেলে তছনছ করে দিতে বলেছেন কবি।
প্রশ্ন । কবি কাদেৱ বন্দিশালায় আগুন জ্বালাতে বলছেন?
উত্তর : স্বাধীনতাকামী তরুণদের কবি বন্দিশালায় আগুন জ্বালাতে বলছেন।
প্রশ্ন । তরুণ ঈশান আসলে কাদেৱ বলা হয়েছে?
উত্তর : ‘অরুণ প্রাতের তরুণ দল’ নব্য যুবাদের তরুণ ঈশান বলা হয়েছে।
প্রশ্ন । গাজনের বাজনা বাজা।”–গাজন’ কী?
উত্তর : চৈত্র মাসের শিবের আবির্ভাব উপলক্ষ্যে আনুষ্ঠিক লৌকিক উৎসবকে ‘গাজন বলা হয়।
উত্তর : মহাদেবের হলো দুটি রূপ—শিব ও রুদ্র। ‘রুদ্র রূপে তিনি জাৎকে ধ্বংস করেন ও ‘শিব’ রূপে পালন করেন।
প্রশ্ন । ‘নাচে ওই কাল-বোশেখি,’—এখানে কাল, বােশেখি’ কীসের প্রতিরূপ?
উত্তর; এখানে ‘কাল-বােশেখি’ হলাে থেমে থাকা প্রস রাজনৈতিক আন্দোলন ও অস্থিরতার প্রতিরূপ।
প্রশ্ন । ‘ভাঙার গান’ কবিতার মূল বক্তব্যটি একটি বাক্যে লেখাে।
উত্তর : বিপ্লবাত্মক আন্দোলনের দ্বারা পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্তিলাভ করাই হলাে কবিতাটির মূলকথা।
প্রশ্ন । ‘লাথি মাৱ, ভাঙৱে তালা!’—কোথায় লাথি মাৱা হবে?
উত্তর ; বিপ্লবীদের যেসব কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে সেখানে লাথি মারা হবে।
প্রশ্ন । হৈদৱী হঁাঁক’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
উত্তর ; হৈদরী হাঁক’ অর্থাৎ, হজরত মহম্মদের পরবর্তী খলিফা হৈদরের হাঁক বা ডাক ছিল খুব উচ্চস্বর। তাঁর হাঁকের মতাে রণহুংকার।
প্রশ্ন । ‘ভাঙার গান কবিতা থেকে চাৱটি বিদেশি শব্দ চয়ন করাে।
উত্তর : বিদেশি শব্দগুলি হলাে—লােপাট, নিশান, গারদ < গার্ড, হৈদরী, মালিক ইত্যাদি। :
প্রশ্ন । ‘ভাঙার গান কবিতা থেকে কয়েকটি দেশি শব্দ চয়ন করো।
উত্তর : দেশি শব্দ
—ঢাক, ডাক, হেঁচকা, উড়ুক ইত্যাদি। >
প্রশ্ন । ‘ভাঙাৱ গান কবিতায় কবি কাদেৱ জাগতে চেয়েছেন?
উত্তর : ‘ভাঙার গান কবিতায় কবি দেশের তরুণ সমাজকে জাগাতে চেয়েছেন। :
প্রশ্নঃ কী বাজাতে বলেছেন?
উত্তর : কবি দুন্দুভি বাজাতে বলেছেন।
প্রশ্নঃ কাৱাৱ লৌহ-কপাটকে কী কৱতে বলা হয়েছে?
উত্তর : কারার লৌহ-কপাটকে ভেঙে ফেলে লােপাট করতে বলা হয়েছে।
প্রশ্ন । কবি কাজী নজরুল ইসলাম কী লােপাট করতে বলেছেন?
উত্তর : কবি কাজী নজরুল ইসলাম লৌহ-কপাট ও রক্ত-জমাট শিকল-পুজোর পাষাণ-বেদীকে সােপার্ট করতে বলেছেন।
প্রঃ । কবি তরুণ ঈশানকে কী কৱতে বলেছেন?
উত্তর: বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তরুণ ঈশানকে তার প্রলয়-বিষাণ বাজাতে বলেছেন।
প্রশ্ন। কাৱাগাৱেৱ প্রাচীর ভেদ কৱে কী কৱতে বলা হয়েছে ?
উত্তর: কবি কাজী নজরুল ইসলাম বন্দি স্বাধীনতা যােদ্ধাদের কারাগারের প্রাচীর ভেদ করে ধ্বংসের পতাকা ওড়াতে বলেছেন।
প্রশ্ন । গাজনের বাজনা বাজা।’-কবি কী অর্থে গাজনেৱ বাজনা বাজানাের কথা বলেছেন?
উত্তর: গাজনের বাজনা হলাে ঢাক, যা রণদুন্দুভিতুল্য, তা বাজিয়ে রণবাদ্য বাজাতে বলেছেন কবি।
ভাঙার গান কবিতা
প্রশ্ন। মালিক ও ব্রজাৱ প্রশ্ন তুলে কবি কী বলতে চেয়েছেন?
উত্তর: ইংরেজ সরকার মালিক ও রাজা না হয়েও ‘মুক্ত স্বাধীন সত্য-কে সাজা দেওয়ার অধিকার তার নেই।
প্রশ্নঃ হা হা হা পায় যে হাসি,’-অট্টহাসি পাওয়ার কারণ কী?
উঃ: অট্টহাসি পাওয়ার কারণ হলো স্বাধীনতাকামী যােদ্ধাদের বিরুদ্ধে ধবংসকারীর অনি। ভিযােগ হিসেবে ফাঁসি দেওয়ার চণ্ডকারখানা দেখে ।
প্রশ্নঃ পাগলা ভােলাকে কবি ডাক দিয়েছেন কেন?
উত্তর : পাগলা ভােলাকে কবির ডাক দেওয়ার কারণ, সে গারদগুলিকে জোরসে হ্যাচকা টান দিয়ে প্রলয়-দোলা দিতে পারবে।
প্রশ্ন) জীবন পানে কবি কাকে আহ্বান জানিয়েছেন?
উত্তর : কবি কাজী নজরুল ইসলাম মৃত্যুকে জীবন পানে আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রশ্ন । কবি বসে বসে কী কাটাতে নিষেধ কৱেছেন?
উত্তর : কবি বসে বসে আলস্যে ও নিশ্চেষ্ট হয়ে কাল অর্থাৎ, সময় কাটাতে নিষেধ করেছেন।
প্রশ্ন । কাঁধে কী নিয়ে কী হক মারতে বলছেন কবি?
উত্তর : কবি বলছেন কাঁধে দুন্দুভি ঢাক নিয়ে হৈদরী হাঁক মারতে।
প্রশ্নঃ‘কাল-বােশেখি’-র কাছে কবি কী প্রশ্ন রেখেছেন?
উত্তর : কবি ‘কাল-বােশেখি’-র কাছে এই প্রশ্ন রেখেছেন যে, সে কি বসে বসে অযথা কালক্ষেপ করবে ?
প্রশ্ন । ‘কে দেয় সাজা/মুক্ত স্বাধীন সত্যকে ৱে? -এখানে কোন্ সাজাৱ কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর : ভারতবর্ষের স্বাধীনতা হরণ করে ভারতবাসীর প্রতি ব্রিটিশ সরকারের শােষণ, লাঞ্ছনার সাজার কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন । ‘শিখায় এ হীন তথ্য কে ৱে?’—এখানে কোন্ হীন তথ্যের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর : ‘ভগবান পরবে ফাঁসি ?’—এই হীন তথ্যের কথা এখানে বলা হয়েছে।
প্রশ্ন । কবি কালবৈশাখীকে কী করতে বলেছেন?
উত্তর ; কবি কালবৈশাখীকে ঝড়-ঝার প্রচণ্ড আঘাতে ভয়ংকর কারাগারের ভিত নাড়িয়ে দিতে বলছেন।