বহুরূপী গল্প ক্লাস টেন প্রশ্নোত্তর টেকজ সঞ্জীব
বহুরূপী গল্প ক্লাস টেন প্রশ্নোত্তর টেকজ সঞ্জীব
বহুরূপী গল্প ক্লাস টেন প্রশ্নোত্তর
বহুরূপী গল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে।
বহুরূপী গল্প ক্লাস টেন প্রশ্নোত্তর
বহুরূপী গল্পের হরিদার চরিত্র
প্রশ্ন ) বহুরূপী হরিদার চরিত্র বৈশিষ্ট্য আলােচনা করো।
: উত্তর : প্রখ্যাত লেখক সুবােধ ঘােষের ‘বহুরূপী’ গল্পের প্রধান চরিত্র বহুরূপী হরিদার মধ্যে বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
প্রথমত, শহরের সবচেয়ে ছােটো গলির মধ্যে ছােট্ট একটি ঘরে থাকা হরিদা তার চেয়ে কমবয়সিদের সঙ্গে নিবিড় একটা আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তােলেন।
দ্বিতীয়ত, সন্ন্যাসীদের প্রতি শ্রদ্ধার মনােভাব পােষণ করেন বলে কথকদের মুখে হিমালয় প্রত্যাগত সাধুর কথা শুনে তার পায়ের ধুলাে নেওয়ার কথা বলেন।
তৃতীয়ত, হরিদা বহুরূপী সেজে মানুষকে চমৎকৃত করেন সহজাত দক্ষতায়, উন্মাদ, কাপালিক, ফিরিঙ্গি সাহেব বা রূপসি বাইজির সাজে পথচলতি মানুষদের সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চতুর্থত, শিল্পীসুলভ এক ধরনের অনিকেত মনােভাব তার মধ্যে রয়েছে। তাই ছকে বাঁধা জীবন বা জীবিকা থেকে দূরে থাকেন তিনি।
পঞ্চ মত , অতি সাধারণ হরিদা যখন বহুরূ পীর সাজে আবির্ভূত হন তখন অদৃশ্য এক ব্যক্তিত্ববােধ কাজ করে। তাই বিরাগী সাজা হরিদার শান্ত প্রসন্ন দৃষ্টি বা গভীর দার্শনিক কথা কথকদের কাছেও অপরিচিত মনে হয়।
বহুরূপী গল্প ক্লাস টেন প্রশ্নোত্তর
ষষ্ঠত, নির্লোভ মনােভাব তার মধ্যে থাকায় বিরাগীরূপী হরিদাকে জগদীশবাবু একশাে একটাকা প্রণামী দিতে চাইলে তিনি তা ফিরিয়ে দেন। বরং পরে গিয়ে বহুরূপী সাজার জন্য সামান্য বকশিশ আনার কথা বলেন।
হরিদা নির্লোভ, বন্ধুত্বপূর্ণ দরিদ্র জীবনের মধ্যে থেকেও এক অতুলনীয় উন্নত মনােভাব তার চরিত্রকে উজ্জ্বল করেছে।
বহুরূপী গল্পের প্রশ্ন উত্তর
সংক্ষিপ্ত
প্রশ্ন ।। ‘হরিদা পুলিশ সেজে কোথায় দাঁড়িয়েছিলেন? তিনি কীভাবে মাস্টারমশাইকে বােকা বানিয়েছিলেন?
উত্তর : কথাসাহিত্যিক সুবােধ ঘােষের ‘বহুরূপী’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে দাঁড়িয়েছিলেন।
বহুরূপী হরিদার সাজ গ্রহণের দক্ষতা ছিল তর্কাতীত। ছদ্মবেশ ধরে যে-কোনাে চরিত্রের সঙ্গে তিনি একাত্ম হয়ে যেতেন। পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে দাঁড়িয়ে থেকে তিনি স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরে ফেলেছিলেন। ছেলেগুলি ভয়ে কেঁদে ফেলেছিল। স্কুলের মাস্টারমশাই এসেও হরিদাকে চিনতে পারেননি। ছেলেগুলিকে তার হাত থেকে বাঁচানাের জন্য তিনি ওদের হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এতেও সমস্যা না মেটায় তিনি নকল-পুলিশ হরিদাকে আট আনা ঘুষ দিয়ে ছেলেগুলিকে ছাড়িয়ে নেন।
প্ৰশ্ন।। “এই প্রণামী,” -কার উদ্দেশ্যে এই প্রণামী’? বা কীভাবে এই প্রণামী প্রদান করেছিলেন?
উত্তর : বিরাগীর উদ্দেশ্যে প্রণামী দিতে চান জগদীশবাবু।
বিরাগীর ছদ্মবেশ নেওয়া হরিদার উপস্থিতি জগদীশবাবুকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এক অলৌকিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে সমর্থ হওয়া বিরাগীর উদ্দেশ্যে ধনী ভক্ত জগদীশবাবু কিছু প্রণামী দিতে চান। বিরাগীর পায়ের কাছে একশাে এক টাকা রাখা থলেটি নিবেদন করে সেই প্রণামী গ্রহণ করার জন্য তিনি কাতর প্রার্থনা করেন।
প্ৰশ্ন।।…. তবে কিছুউপদেশ শুনিয়ে যান বিরাগীজি।” -বক্তার অনুরােধে বিরাগীজি কোন্ উপদেশ শুনিয়েছিলেন?
উত্তর : বিরাগীকে নিজের বাড়িতে অবস্থানের জন্য প্রার্থনা করেও ব্যর্থ হন জগদীশবাবু। তখন তিনি তাকে অনুরােধ করেন কিছু উপদেশ দিতে। বিরাগী তার আবির্ভাবেই এক অপার্থিব পরিবেশ তৈরি করেছিলেন। তিনি বলেন ধন জন যৌবন হলাে অনিত্য ও নিছক সুন্দর বনা। মােহ থেকে মুক্ত হয়ে নিবিষ্ট চিত্তে ঈশ্বরকে আপন করে ভাবতে হবে। ঈশ্বর প্রাপ্তির মধ্যে সমস্ত ঐশ্বর্য প্রাপ্তি হবে বলে বিরাগী উপদেশ দেন।
বহুরূপী গল্প ক্লাস টেন প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ।। “চমকেউঠলেন জগদীশবাবু।” – জগদীশবাবুর চমকে ওঠার কারণ আনুপূর্বিক বর্ণনা করাে।
উত্তর : বহুরূপী হরিদা ছােটো বহরের থান পরে ও ঊর্ধ্বাঙ্গে একটা সাদা উত্তরীয় জড়িয়ে মাথায় সাদা চুল নিয়ে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হন। ধূলিধূসরিত পা, হাতের ঝােলার মধ্যে থাকা গীতা বার করে কিছু দেখে নিজের মনে হাসেন। কোনাে রহস্যলােক থেকে যেন নেমে আসা হরিদার শীর্ণ শরীরের অদ্ভুত উদাত্ত শান্তি ও উজ্জ্বল দৃষ্টি দেখে জ্ঞানী ও প্রবীণ মানুষ জগদীশবাবু চমকে ওঠেন। তাঁর বাড়ির বারান্দার সিঁড়িতে দাঁড়ানাে বহুরুপী হরিদার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন।
প্রশ্নঃ।। কী অদ্ভুত কথা বললেন হরিদা।’-হরিদা কোন্ অদ্ভুত কথা বলেছিলেন? কথাটিকে অদ্ভুত বলার কারণ কী?
উত্তর : সুবােধ ঘােষের বহুরুপী গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা যে অদ্ভুত কথাটি বলেছিলেন তা হলো সে এক জন বিরাগী হয়ে তিনি টাকা-ফাকা স্পর্শ করতে পারেন না, এতে তার ঢং নষ্ট হয়ে যায়।
কথাটিকে অদ্ভুত মনে করার কারণ হলাে, হরিদা বস্তুত কোনাে বিরাগী নন। তিনি একজন বহুরূপী। তিনি এতই দরিদ্র যে মাঝে মাঝেই তাকে উপােষ করতে হয়। জগদীশবাবুর দেওয়া টাকাটা নিলে তার অনেক সুবিধা হতাে এবং এতে তেমন কোনাে অপরাধও হতাে না। কিন্তু বিরাগীর সাজে তিনি হয়ে উঠলেন প্রকৃতই বিরাগী। অভাবের দংশনের চেয়ে বড়াে হয়ে উঠল তার ঢং, মর্যাদা রক্ষা। এই মানসিকতা মােটেই স্বাভাবিক নয়।
প্রশ্ন) “এটা কী কাণ্ড করলেন, হরিদা?” –
কান্ডটা কি?
উত্তর : জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ধ্যায় বিরাগীবেশী হরিদার উপস্থিতি অসাধারণ এক পরিমণ্ডল সৃষ্টি করে। বিরাগীর অলৌকিক উপস্থিতির পাশাপাশি উচ্চ দার্শনিক কথাবার্তায় প্রভাবিত হয়ে জগদীশবাবু তাঁকে একশাে এক টাকা প্রণামী হিসেবে দিতে চেয়েও ব্যর্থ হন। অনাদি তাকেই পাঁচশাে টাকা বলে অভিহিত করেন এবং হরিদা তা গ্রহণ না করায় বিস্মিত হয়ে ঘটনাটিকে ‘কী কাণ্ড’ বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রশ্ন ) আপনি বিরাগী— বক্তার দৃষ্টিতে কীভাবে প্রমাণিত হয় যে হরিদাই বিরাগী?
উত্তর : জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীবেশী হরিদা উপস্থিত হয়েছিলেন এক অপার্থিব পরিবেশ তৈরি করে। তার পরিধেয় বস্ত্রের মধ্যে অন্যতম ছিল একটা সাদা উত্তরীয়। ধুলাে ভরতি পা ও হাতে রাখা ঝােলায় ছিল একটি গীতা। হরিদার ছােট্ট ঘরের মাদুরে সেই সাদা উত্তরীয় পাশাপাশি ঝােলা আর গীতা দেখে ভবতােষ নিঃসংশয়। হন যে হরিদা সত্যিই সন্ধ্যায় জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগী সেজে উপস্থিত হয়েছিলেন।
প্রশ্ন ।। হরিদা কি ভুল করেছিলেন যা অদৃষ্ট কখনো ক্ষমা করবে না
তার সম্পর্কে এমন মন্তব্যের কারণ কী?
উত্তর : বহুরূপী হরিদাকে বিরাগীর ছদ্মবেশে দেখে, তাকে যথার্থ বিরাগী ভেবে জগদীশবাবু একশাে এক টাকার যে প্রণামী দিয়েছিলেন। হরিদা তা নেননি, তার এই কাজকে ভুল বলা হয়েছে।
হরিদা একজন বহুরুপী। অত্যন্ত দরিদ্র। মাঝে মাঝেই অর্থাভাবে তাকে উপােষ করতে হয়। তাই অর্থলাভের কোনাে সুযােগ এলে অবশ্যই সে সুযােগ তার গ্রহণ করা উচিত। বিরাগী তার ছদ্মবেশমাত্র। তিনি প্রকৃত বিরাগী নন। বিরাগীর ভূমিকা রক্ষা করতে গিয়ে এতগুলি টাকা প্রত্যাখ্যান করা এক ক্ষমাহীন ভুল। এই ধরনের ভুলে অভ্যস্ত ব্যক্তির দারিদ্র্য কোনো দিন দূর হবে না। অদৃষ্ট প্রসন্ন হবে না কোনাে দিন।
বহুরূপী গল্প ক্লাস টেন প্রশ্নোত্তর
– প্রশ্ন ) “আপনার কাছে আমার তাে কিছু চাইবার দরকার হয় না।” –‘আপনারবলতে কাকে বােঝানাে হয়েছে? বক্তার উদ্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে কিছু চাইবার দরকার হয় না কেন?
উত্তর : ‘আপনার’ বলতে ধনী ভক্ত জদীশবাবুকে বােঝানাে হয়েছে।
বিরাগী সংসারত্যাগী মােহমুক্ত এক মানুষ। ধন-দৌলত, লােভ-লালসা কোনাে কিছুই তাঁকে স্পর্শ করে না। ঈশ্বরের তৈরি এই বিশাল পৃথিবীকে আপন করে সংসার বিচ্ছিন্ন হয়ে তিনি সেখানে অবস্থান করেন। ঈশ্বরের পদাশ্রিত হওয়ায় কোনাে বিষয়ীর সাহায্য প্রয়ােজন হয় না। বিষয়ী জগদীশবাবুর কাছে তাই তার চাইবার কিছু প্রয়ােজন হয় না।
প্রশ্ন ) “আমি এক বিষয়ীর দালান বাড়ির ঘরে থাকব কেন, বলতে পারেন?” –‘আমি’ কে? বক্তা কেন বিষয়ীর দালান বাড়ির ঘরে থাকতে চান না?
উত্তর : ‘আমি’ বলতে বিরাগীরূপী হরিদা।
বিরাগী সংসার ত্যাগ করে মােহমুক্ত হয়ে ঈশ্বরের কাছে নিজেকে সমর্পণ করেন। কোনাে পার্থিব লােভ-লালসা, কামনা-বাসনা তাকে গ্রাস করে না। ঈশ্বরের সৃষ্ট এই বিশাল জগৎকে নির্মোহভাবে গ্রহণ করেন। জগদীশবাবু বিরাগীকে তার বাড়িতে অবস্থানের অনুরােধ করলে বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা বলেন মুক্ত পৃথিবীর পরিবর্তে তার মতাে এক বিষয়ীর বাড়িতে তিনি অবস্থান করতে পারেন না।
প্রশ্ন ) “আপনি কী ভগবানের চেয়ে বড়াে ?”—কাকে এ কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : সুবােধ ঘােষের ‘বহুরূপী’ গল্পে বিরাগীর ছদ্মবেশধারী হরিদা জগদীশবাবুকে এ কথা বলেছিলেন। অর্থাৎ জগদীশবাবুকে এ কথা বলা হয়েছে।
সাজে, ভূমিকায়, অভিনয়ে পুরােদস্তুর বিরাগীর বেশে হরিদাকে দেখে জগদীশবাবু চমকে গিয়েছিলেন। বড়াে অপার্থিব এবং রহস্যময় ছিল তার আবির্ভাব। কিংকর্তব্যবিমূঢ় জগদীশবাবু বারান্দায় দাঁড়িয়েই তাকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার এই আচরণকে ধৃষ্টতা বলে গণ্য করেছেন বিরাগী। বারান্দা থেকে নেমে এসে সম্মান জানানাে উচিত ছিল জগদীশবাবুর, কিন্তু তিনি ধনবান হওয়ার দম্ভে নেমে আসেননি।ধনের গর্বে তিনি এভাবে ভগবানকে তুচ্ছ করেছেন, তাই এই উক্তি।
প্ৰশ্ন।। … ঠিক দুপুরবেলাতে একটি আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল।” -কী কারণে আতঙ্কের হল্লা? যাকে কেন্দ্র করে আতঙ্কের হল্লা তার আচরণের পরিচয় দাও।
উওর : বহুরূপী হরিদা একদিন শহরের চকের বাসস্ট্যান্ডে উন্মাদ সেজে বাসযাত্রীদের ভয় দেখালে আতঙ্কের হল্লার সৃষ্টি হয়।
একদিন চকের বাসস্ট্যান্ডের কাছে দুপুরবেলা হরিদা বদ্ধ উন্মাদ সেজে উপস্থিত হন। পাগলদের মতাে তার মুখ থেকে লালা ঝরতে থাকে, চোখ হয়েছে টকটকে লাল। একটা ছেড়া কম্বলকে কোমরে জড়িয়ে, গলায় টিনের কৌটোর মালা নিয়ে উন্মাদ সেজেহরিদা হাতে থান ইট নিয়ে বাসের যাত্রীদের ভয় দেখান।
বহুরূপী গল্প ক্লাস টেন প্রশ্নোত্তর
দশম শ্রেণীর বাংলা বহুরূপী গল্পের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন।। হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে।’—হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যটা কী?
উত্তর : সুবােধ ঘােষর ‘বহুরূপী’গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা।
কাজের একঘেয়েমি এবং সময়ের শাসন জানতে পারেন না বলে হরিদা কোনাে পেশায় নিযুক্ত হতে পারেননি। তাই অভাব তাঁর নিত্যসঙ্গী। মাঝে মাঝেই তিনি উপোেষও করেন। কিন্তু এতে তার বর্ণময় শিল্পী মনটির মৃত্যু ঘটে না। তিনি মাঝে মাঝেই বহুরূপীর সাজগ্রহণ করে পথে বেরিয়ে পড়েন। বিচিত্র সাজে মানুষকে অবাক করে দেন। তাঁর সাজ আর অভিনয় এত নিখুঁত যে তাঁকে কেউ চিনতে পারে না। তার সাজটাকেই সত্য ভেবে নানান হাস্যকর প্রতিক্রিয়া করে। এই শিল্পীমানুষ এই সময় তার দরিদ্র -জর্জর জীবন থেকে বেরিয়ে গিয়ে অন্য ভুবনে পৌঁছে যান।
প্রশ্ন ।। “ওটা কি একটা বহুরূপী?”-বক্তার পরিচয় দাও। বক্তার এমন উক্তির কারণ কী?
উত্তর : সুবােধ ঘােযের ‘বহুরূপী’গল্প থেকে গৃহীত এই অংশটির বক্তা বাসের জনৈক যাত্রী।
হরিদা একদিন বদ্ধ উন্মাদ সেজে চকের বাসস্ট্যান্ডে উপস্থিত হন। তাঁর মুখ থেকে গড়িয়ে পড়তে থাকে লালা, চোখ হয় টকটকে লাল। কোমরে ভেঁড়া কম্বল ও গলায় টিনের কৌটোর মালা জড়িয়ে হাতে থান ইট নিয়ে তিনি বাসযাত্রীদের ভয় দেখান। বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ বহুরূপী হরিদাকে চিনতে পেরে অন্যদিকে যাওয়ার কথা বললে জনৈক বাসযাত্রী বিস্মিত হয়ে কথাগুলো বলেন।
প্রশ্নঃ।। ‘সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস।”—দুর্লভ জিনিসটি কী? কে, কীভাবে তা সংগ্রহ করেছিলেন?
উত্তর : শহরের ধনবান জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয়ের গুহা থেকে যে উঁচুদরের সন্ন্যাসী এসেছিলেন, তাঁর পদধূলি অত্যন্ত দুর্লভ জিনিস।
সন্ন্যাসী তাঁর পদধূলি যাকে তাকে দেন না। এমনকী জগদীশবাবুও সাতদিন ধরে তার সেবাযত্ন করে সহজে পদধূলি পাননি। বেশ কায়দা করেই তিনি পদধূলি নিয়েছেন। একজোড়া কাঠের খড়মে সােনার বােল লাগিয়ে তিনি সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরেন। মহার্ঘ এই খড়ম জোড়া দেখে সন্ন্যাসী পা বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হন। তাকে খড়ম পরানাের ছলে তার দুর্লভ পদধূলি সংগ্রহ করেন জগদীশবাবু।
প্রশ্নঃ।। “অনেকক্ষণ চুপ করে রইলেন।”—কেচুপ করে রইলেন? কে চুপ করে রইলেন?
জব : অনেকক্ষণ চুপ করে রইলেন হরিদা।
শহরের সবচেয়ে সরু গলির মধ্যে ছােট্ট ঘরে থাকা দরিদ্র হরিদা কথকদের মুখে জগদীশবাবুর বাড়িতে অবস্থানকারী সন্ন্যাসীর বৃত্তান্ত শনে চুপ করে রইলেন। সােনার বােল লাগানাে খড়ম আর একশাে টাকার নােট পাওয়া মাত্র সন্ন্যাসী তা গ্রহণ করে চলে যান। সন্ন্যাসীর এই লােভী মানসিকতা ও ধনী ভক্ত জগদীশবাবুর পুণ্য কেনার এই প্রয়াসের কথা ভেবে হরিদা চুপ করে রইলেন।
প্রশ্ন ।। ‘বাঃ এতাে বেশ মজার ব্যাপার।’—কোন্ ঘটনাকে মজার ব্যাপার বলা হয়েছে? ঘটনাটিকে মজার ব্যাপার বলা হয়েছে কেন?
উত্তর : জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে সােনার বােল লাগিয়ে সন্ন্যাসীকে পরিয়ে দেওয়ার সুযােগে তার দুর্লভ পায়ের ধুলাে সংগ্রহ করেছিলেন। এই ঘটনাটিকে মজার ব্যাপার বলেছেন হরিদা।
জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসী বস্তুত জগদীশবাবুর সাধু-সন্ন্যাসীতে অন্ধ ভক্তির সুযােগ নিয়েছেন। সারা বছরে শুধুমাত্র একটি হরীতকী খেয়ে বেঁচে থাকা, হাজার বছরের পরমায়ু সন্ন্যাসীর পদধূলি নিতে তিনি এত ব্যাকুল। ভণ্ড সন্ন্যাসীটি কাউকে এসব কিছুই সত্য নয়। কিন্তু জগদীশবাবু এসব বিশ্বাস করেন, তাই পদধূলি দেন না। অথচ সােনার বােল লাগানাে কাঠের খড়ম দেখে তিনি পা এগিয়ে দেন। তাই হরিদার কাণ্ডে ঘটনাটি বেশ মজার বলে মনে হয়েছে।
প্রশ্ন।। “কিন্তু এই ধরনের কাজ হরিদার জীবনের পছন্দই নয়।”—কোন্ ধরনের কাজ? তেমন কাজ কেন হরিদার ” পছন্দ নয়?
উত্তর : দরিদ্র হরিদা গতানুগতিক ধরাবাঁধা কাজে অভ্যস্ত নন। তাই কোনাে অফিসের কাজ কিংবা কোনাে দোকানের বিক্রিওয়ালার কাজ হরিদার পছন্দ নয়। :
বহুরূপীর খেলা দেখানাে হরিদা খেয়ালি মানুষ। প্রবল দারিদ্রও মানুষটির মনােভঙ্গির কোনাে পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। নিয়ম বেঁধে ঘড়ির কাটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করা হরিদার পক্ষে সম্ভব নয়। মুক্ত জীবনে বিশ্বাসী হরিদা তাই ছকে বাঁধা চাকরির নিয়মনীতিতে নিজেকে যুক্ত রাখতে পারেন না। ।
প্রশ্ন ) “তাতেই তঁার ভাতের হাঁড়ির দাবি মিটিয়ে দিতে চেষ্টা করেন।”—তাতেই’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে? বক্তা কীভাবে ভাতের হাঁড়ির দাবি মেটানাের চেষ্টা করেন?
উত্তর : প্রখ্যাত কথাশিল্পী সুবােধ ঘােষের বহুরূপী’ গল্পে ‘তাতেই’ বলতে বহুরূপী সেজে হরিদার রােজগারের কথা বলা হয়েছে।
বহুরুপী হরিদাসকাল কিংবা সন্ধ্যায় বিচিত্র ছদ্মবেশে অপরূপ হয়ে পথে বের হন। কেউ চিনতে পেরে বা এক আনা-দু-আনা বকশিশ দেয়। চিনতে না পেরে বিরক্ত হয়ে কেউ বা দুটো-একটা পয়সা দেয়। একবার চকের বাসস্ট্যান্ডে উন্মত্ত পাগলের নিখুঁত অভিনয় করে যাত্রীদের ভয় পাইয়ে দিয়ে সামান্য উপার্জন করেছিলেন। কখনও বা রূপসি বাইজি সেজে মানুষকে মােহিত করে নিজের রােজগারের পথ করেন। এভাবে ভাতের হাঁড়ির দাবি হরিদা মেটান।
বহুরূপী গল্পের ছোট প্ৰশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ।। হঠাৎ জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাবার জন্য হরিদার উৎসাহ কেন জেগে উঠেছিল?
উত্তর : দরিদ্র হরিদা বহুরুপী সেজে মােটা অর্থ আদায়ের জন্য জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাতে উৎসাহী হন।
প্রশ্নঃ।। সপ্তাহে ক-দিন বহুরুপী সেজে পথে বের হন হরিদা?
উত্তর : সপ্তাহে খুব বেশি হলে একদিন বহুরূপী সেজে পথে বের হন হরিদা।
প্রশ্ন ) “চমকে উঠলেন জগদীশবাবু।”—চমকে উঠে জগদীশবাবু কী করলেন?
উত্তর : বারন্দার সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠা জগদীশবাবুর দুই চোখ বিস্ময়ে অপলক হয়ে যায়।
প্রশ্ন ) জগদীশবাবুর ‘মহারাজ’ সম্বােধনের প্রত্যুত্তরে আগন্তুক কী বলেছিলেন?
উত্তর : জগদীশবাবুর ‘মহারাজ’ সম্বােধনের প্রত্যুত্তরে আগন্তুক বলেছিলেন তিনি মহারাজ নন, বরং সৃষ্টির মধ্যে সামান্য ধূলিকণা।
প্রশ্ন ) অনাদি বিরাগীকে হরিদা বলে ভাবতে পারল কেন?
উত্তর : বিরাগীর মুখে জ্ঞানদীপ্ত ভাষা শুনে অনাদি তাকে হরিদার মতাে সাধারণ মানুষ ভাবতে পারেন না।
প্রশ্ন ) বিরাগী ‘পরম সুখ’ বলতে কী বােঝেন?
উত্তর : সংসারের সমস্ত মায়ার বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়াকেবিরাগী পরম সুখ বলে জানেন।
প্রশ্ন ) ভবতােষ বিরাগীকেহরিদা ভাবেন না কেন?
উত্তর : বিরাগীর অসাধারণ জ্ঞানদীপ্ত কণ্ঠস্বর শুনে ভবতােষ তাকে কখনােই হরিদার মতাে সাধারণ স্তরের মানুষ ভাবেন না।
প্রশ্ন ।। জগদীশবাবু সিঁড়ির ওপর বসে পড়েছিলেন
উত্তর : জ্ঞানদীপ্ত বিরাগীর পদপ করার জন্য আকুল । জগদীশবাবু সিঁড়ির ওপর বসে পড়েছিলেন।
প্রশ্নঃ ।। জগদীশবাবুর কাছে বিরাগীর কিছু চাইবার দরকার হয় না কেন?
উত্তর : বিরাগী ঈশ্বরের পদতলে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জগদীশবাবুর মতাে বিষয়ীর কাছে তার কিছু চাইবার নেই।
প্রশ্ন ।। জগদীশবাবু বিরাগীকে প্রণামী হিসেবে কী দিয়েছিলেন?
উত্তর : জগদীশবাবু তাঁর বাড়িতে আসা বিরাগীকে প্রণামী হিসেবে একশাে এক টাকা দিয়েছিলেন।
প্রশ্ন ।। কে নিজেকে খাটি মানুষ নয় বলে মনে করেন?
উত্তর : বহুরূপীর সাজ পরা হরিদা নিজেকে খাঁটি মানুষ নয় বলে মনে করেন।
প্রশ্ন ।। ‘অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না’। -হরিদার কোন ভুলের কথা এখানে বলা হয়েছে? —
উত্তর : বহুরূপী সাজা হরিদা বিরাগী চরিত্রের পবিত্রতা রক্ষা করতে গিয়ে জগদীশবাবুর প্রদত্ত অর্থ প্রত্যাখ্যান করে যে ভুল করেছিলেন এখানে তার কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন) “হরিদার জীবন এইরকম বহু রূপের খেলা দেখিয়েই একরকম চলে যাছে।”—কী রকম খেলা দেখিয়ে হরিদার জীবন চলে যাচ্ছে?
উত্তর : সুসাহিত্যিক সুবােধ ঘােষের লেখা বহুরূপী’ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদার পেশা হলাে বহু রূপের খেলা দেখানাে। তিনি কখনও বাউল, কাপালিক আবার কোনাে কোনােদিন কাবুলিওয়ালা, কখনওবা ফিরিঙ্গি সাজতেন, কখনও আবার পুলিশ বালকদের ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলেছেন।
প্রশ্ন ।। “সপ্তাহে বড়ােজোর একটা দিন বহুরূপী সেজে পথে বের হন হরিদা”–‘বহুরূপী’ কাকে বলে?
উওর : বহুরুপী’ শব্দটির অর্থ হলাে নানা রুপ বা মূর্তি ধারণকারী। অর্থাৎ নানা ছদ্মবেশ ধারণ করে এরা মানুষের মনােরঞ্জন করে এবং জীবিকা নির্বাহ করে।
বহুরূপী গল্পের প্রশ্ন উত্তর 2022
প্রশ্ন ) ‘ইচ্ছেই হলাে না।’-কার, কী ইচ্ছে হলাে না?
উত্তর
: হরিদা বহুরূপী, বিরাগী ছদ্মবেশে অভিনয় করতে গিয়ে মনে-প্রাণে বিরাগী হয়ে উঠেছিলেন, তাই জগদীশবাবুর দেওয়াটাকা নেওয়ার হচ্ছেই হয়নি তার।
প্রশ্নঃ।।) ‘তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়।’—চং নষ্ট হয়ে যায় কেন?
উত্তর : বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা জগদীশবাবুর দেওয়া টাকা গ্রহণ করেননি। কারণ টাকা নিলে সর্বত্যাগী বিরাগীর চরিত্র ক্ষুন্ন হয়, অর্থাৎ তার সাজের ছন্দ কেটে যায়।
প্রশ্ন ) হরিদা কোন্ ঘটনাকে ‘মজার ব্যাপার বলে উল্লেখ করেছেন?
উত্তর : জগদীশবাবুর দেওয়া সােনার খড়মে সন্ন্যাসীর পা রাখা ও জগদীশবাবুর ভক্তিভরে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলাে নেওয়াকে হরিদা ‘মজার ব্যাপার বলেছেন।
প্রশ্ন ।। কী অদ্ভুত কথা বললেন হরিদা।’-অদ্ভুত কথাটি কী?
উত্তর : অদ্ভূতকথাটিহলােএকজনবিরাগীরসন্ন্যাসীর বেশেতিনি টাকা ফাকা স্পর্শ করতে পারেন না। এতে তার ঢং নষ্ট হয়ে যায়।
প্রশ্ন ।। ‘যাবই তাে।’-বক্তা কেন যাবেন?
উত্তর : বক্তা অর্থাৎ, বহুরূপী’ গল্পের হরিদা জগদীশবাবুকে সাজ দেখিয়ে অবাক করে দিয়েছেন, তাকে প্রকৃতই বিরাগী ভেবেছিলেন তিনি। তাই যাবেন বকশিশ আনতে।
প্রশ্নঃ।। ‘এর বেশি কী আশা করতে পারে?’—কেন আশা করতে পারে না?
উত্তর : ব্যক্তিজীবনেসামান্যবহুরূপী,আর্থিক এবংসামাজিকভাবে খুবই সাধারণ মানুষ তাই সামান্য বকশিশটুকু ছাড়া বেশি কিছু তিনি আশা করতে পারেন না।
প্রশ্ন ।। হরিদার পক্ষে কোন্ ধরনের কাজ করা সম্ভব নয়?
উত্তর : ঘড়ির কাটার সঙ্গে তাল দিয়ে ও নিয়ম করে প্রতিদিন একই কাজ করা হরিদার পক্ষে সম্ভব নয়।
প্রশ্নঃ।। ‘বিশ্বাস করতে পারছি না’—কে, কী বিশ্বাস রতে পারছিলেন না?
উত্তর : বিরগীরছদ্মবেশেজগদীশবাবুরবাড়িতেউপস্থিতব্যক্তিটি যে স্বয়ং হরিদা, এই বিষয়টি কথক বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
প্রশ্ন ) সন্ন্যাসী চলে যাওয়াতে হরিদা কেন আক্ষেপ
উঃ : সন্ন্যসী চলে যাওয়ায় হরিদা আক্ষেপ করেন কারণ তিনি। পায়ের ধুলাে নেওয়ার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
প্রশ্ন।। হরিদার অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন?
উত্তর : শহরের সরু গলির মধ্যে ছােট্ট ঘরে থাকা হরিদার অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল খুব খারাপ।
প্রশ্নঃ।। হরিদার জীবনের পেশা কী?
উত্তর : হরিদা যে বহুরূপীর কাজ করেন সেটাই তার জীবনের পেশা।
প্রশ্ন ।। বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা মােট কত টাকা রােজগার করেছিলেন?
উত্তর :বহুরূপী হরিদা বাইজি সেজে শহরের পথে বেরিয়ে মােট আট টাকা দশ আনা রােজগার করেছিলেন।
প্রশ্ন ।। হরিদা পুলিশ সেজে কোথায় দাঁড়িয়েছিলেন?
উত্তর : হরিদা পুলিশের ছদ্মবেশে দয়ালবাবুর লিচু বাগানের ভিতর দাঁড়িয়েছিলেন।
প্রশ্ন।। হরিদা পুলিশ সেজে কাদের ধরেছিলেন?
উত্তর : পুলিশ সেজে বহুরূপী হরিদা দয়ালবাবুর লিচু বাগানের ভিতর স্কুলের চারটি ছেলেকে ধরেছিলেন।
প্রশ্ন ।। স্কুলের মাস্টারমশাই স্কুলের ছাত্রদের ছাড়ানাের জন্য কাকে কত ঘুষ দিয়েছিলেন?
উত্তর : মাস্টারমশাই স্কুলের ছাত্রদের ছাড়ানাের জন্য নকল পুলিশ হরিদাকে আট আনা ঘুষ দিয়েছিলেন।
বহুরূপী গল্পের প্রশ্ন উত্তর mcq
প্রশ্ন ) আমার অপরাধ হয়েছে।’-বক্তা কী অপরাধ করেছেন?
উওর : বিরাগীকে দেখে সিড়ি বেয়ে নেমে এসে আহ্বান জানানাের কথা ভুলে গিয়েছিলেন জগদীশবাবু। তিনি দূরে দাঁড়িয়ে আহ্বান জানিয়েছিলেন, এটাই অপরাধ।
প্রশ্ন ) “সেটা পূর্বজন্মের কথা।–পূর্বজন্মের কথাটি কী?
উত্তর : বিরাগীর রাগ নামে কোনাে রিপু নেই। এক সময়, যখন তিনি বিরাগী হয়ে ওঠেননি তখন রাগ ছিল, এটাই পূর্বজন্মের কথা।
প্রশ্ন ।। ‘হতেই পারে না।’—কী হতে পারে না?
উত্তর : বিরাগীর বেশে যে ব্যক্তি জগদীশবাবুর বাড়িতে এসেছেন, তিনি যে ছদ্মবেশী হরিদা, এটা হতেই পারে না বলে মনে হয় ভবতােষের।
প্রশ্নঃ।। ‘এটা আমার প্রাণের অনুরােধ।’—প্রাণের অনুরােধটা কী?
উত্তর : উদ্ধৃতাংশটির বক্তা জগদীশবাবুর প্রাণের অনুরােধটি ২ হলাে, বিরাগী যেন তাঁর গৃহে কয়েকটা দিন থেকে যান।
প্রশ্ন ।। ‘এই যথেষ্ট।”—কী যথেষ্ট?
উত্তর : বিরাগীকে দেখে জগদীশবাবু আবেগাপ্লুত হয়ে সেবা দিতে চাইলে বিরাগী এক গ্লাস ঠান্ডা জল চেয়ে নিয়ে পান করেন। সেবা হিসেবে এটুকুই যথেষ্ট।
প্রশ্ন ।। ‘আপনার এখানে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব নয়। বক্তার পক্ষে থাকা সম্ভব নয় কেন?
উত্তর : বক্তা বিরাগী। তার জন্য বাইরের খােলা আকাশ আর পৃথিবীর মাটি আছে তাই জগদীশবাবুর আশ্রয়ে তার পক্ষে থাকা সম্ভব নয়।
প্রশ্ন।। নইলে আমি শান্তি পাব না।’—কীসে বক্তা শান্তি পাবেন?
উত্তর : জগদীশবাবু বিরাগীর কাছে কিছু উপদেশ শুনতে চান। এই উপদেশ শুনতে পেলে তিনি শান্তি পাবেন।
প্রশ্ন) বিরাগীবেশী হরিদা জগদীশবাবুকে কী উপদেশ দিয়েছিলেন?
– উত্তর : বিরাগীবেশী হরিদা উপদেশ হিসেবে বলেন ধন-জনযৌবন হলাে এক-একটি বঞ্চনা। মন-প্রাণের সব আকাঙ্ক্ষা নিয়ে শুধু একজনের (ঈশ্বরের) আপন হওয়ার চেষ্টা করুন।
প্রশ্ন) বিরাগী পরম সুখ বলতে কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : সুবােধ ঘােষের ‘বহুরূপী’ গল্পে বিরাগী জগদীশবাবুকে পরম সুখ বলতে সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়াকে বুঝিয়েছেন।
প্রশ্ন) ‘এই টাকা আমি দিলাম।’-বক্তা কেন টাকা দিয়েছিলেন?
উত্তর : বিরাগীকে দেখে আবেগাপ্লুত জগদীশবাবু তাকে তীর্থভ্রমণের টাকা দিয়ে পুণ্য অর্জন করতে চেয়েছিলেন।
প্রশ্ন) ‘সেদিকে ভুলেও তাকালেন না। কোন্ দিকে তাকালেন না?
উওর: অর্থ সম্পদের মােহমুক্ত বিরাগীবেশী হরিদাজগদীশবাবুর দেওয়া একশাে একটাকা সিঁড়িতে পড়ে থাকলেও সেদিকে একবারও তাকালেন না।
প্রশ্ন ।। ‘চমকে ওঠে ভবতােষ।’—ভবতােষ কেন চমকে ওঠে?
উত্তর : জগদীশবাবুর বাড়িতে যে বিরাগীকে দেখেছিলেন তিনি আসলে যে তাদের পরিচিত হরিদা, এটা যখন ভবতােষ বুঝতে পারেন বিরাগীর সাজগুলি পড়ে থাকতে দেখে তখন চমকে ওঠেন।
প্রশ্ন ।। ‘আপনিই বিরাগী?’—বক্তা কে?
উত্তর : সুবােধ ঘােষের ‘বহুরূপী’ গল্প থেকে উদ্ধৃত এই অংশ। বক্তা হলেন গল্পকথকের বন্ধু ভবতােষ।
বহুরূপী গল্পের প্রশ্ন উত্তর দশম শ্রেণি বাংলা
প্রশ্নঃ।। ‘আমাদের দেখিয়ে আপনার লাভ কী হরিদা। —লাভ নেই কেন?
উত্তর : বহুরূপীর খেলা দেখিয়েহরিদাসামান্যকিছুহলেও বকশিশ পান কিন্তু গল্পকথক ও তার বন্ধুদের খেলা দেখিয়ে একটা সমাবেশে সিগারেট মাত্র পেতে পারেন, কাজেই বিশেষ কোনাে লাভ নেই।
প্রশ্নঃ।। জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখানাের জন্য হরিদার উৎসাহের কারণ কী?
উত্তর : ধনবান জগদীশবাবুর অন্ধ ভক্তিবশত সাধু-সন্ন্যাসীদের মুক্ত হস্তে দান করেন। তার এই মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে মােটা কিছু কমিয়ে নেওয়ার জন্য হরিদার খেলা দেখানাের উৎসাহ।
প্রশ্ন ।। ‘মােটা মতন কিছু আদায় করে নেব। কীভাবে আদায় করবেন? বক্তা
উত্তর : বক্তা হরিদা সাধু-সন্ন্যাসীতে জগদীশবাবুর অন্ধভক্তির কথা শুনে স্বয়ং সেই ধরনের ছদ্মবেশ ধারণ করে মােটা টাকা আদায় করে নেবেন বলে ভেবেছিলেন।
প্রশ্ন ।। ‘পেট চালাবার মতাে রােজগার হয় না।’—কার, কেন রােজগার হয় না?
উত্তর : সপ্তাহে বড়ােজোর একটা দিন বহুরূপী সেজে হরিদা যে সামান্য টাকা উপার্জন করেন তাতে তাঁর সাতদিনের পেট চালানাের মতাে রােজগার হয় না।
প্রশ্ন ।। ‘সেদিন হরিদার রােজগার মন্দ হয়নি।’ কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : যেদিন সন্ধ্যাবেলা রূপসি বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা শহরের পথে বেরিয়েছিলেন সেদিনের কথা বলা হয়েছে।
প্রঃ) ‘বহুরুপী’ গল্পের হরিদা কী কী ছদ্মবেশ ধারণ করতেন?
উত্তর : সুবােধ ঘােষের ‘বহুরুপী’ গল্পের হরিদা পাগল, বাইজি, পুলিশ, বাউল, কাপালিক, কাবুলিওয়ালা, ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব ইত্যাদি নানান ছদ্মবেশ ধারণ করতেন। :
প্রশ্ন ) এবার মারি তাে হাতি, লুঠি তাে ভাণ্ডার’- বক্তা কেন এ কথা বলেছেন?
উত্তর : জগদীশবাবুর সাধু-সন্ন্যাসীতে অন্ধ-ভক্তির সুযােগ নিয়ে ছদ্দবেশী মোটা টাকা কামিয়ে নেওয়ার ছক কষে ছিলেন হরিদা তাই একথা বলেছেন।
প্রশ্ন ‘চমকে উঠলেন জগদীশবাবু।”—জগদীশবাবু কেন চমকে উঠলেন?
উত্তর : সাজে, শরীরে এবং মনে এমন নিখুঁতভাবে বিরাগীর ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন হরিদা যে তাঁকে মােটেই চেনা যাচ্ছিল না। বারান্দার সিঁড়ির কাছে হঠাৎ তাঁকে দেখে জগদীশবাবু চমকে ওঠেন।
প্রশ্ন> ‘দুই বিস্মিত চোখ অপলক হয়ে গেল।’-কার, কেন এই অবস্থা হলাে?
উত্তর : সাজে, শরীরে এবং মনে এমন নিখুঁতভাবে বিরাগীর ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন হরিদা যে তাকে এই জগৎসীমার বাইরের মানুষ বলে মনে হচ্ছিল, তাই তাঁকে দেখে জগদীশবাবুর এই অবস্থা হয়েছিল।
প্রশ্ন) ‘আমরাও চমকে উঠেছি বই কি।’-কারা, কেন চমকে উঠেছিল?
উত্তর : বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা এমন নিখুঁত ছিলেন যে গল্পকথক ও তার বন্ধুরাও তাদের পরিচিত মানুষটিকে চিনতে পারেন নি। তাকে প্রকৃত বিরাগী ভেবে চমকে উঠেছেন।
প্রশ্ন ) ও চেহারা কী সত্যিই কোনাে বস্তুরূপীর হতে পার?’—এই সংশয়ের কারণ লেখাে।
উত্তর : বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা তার আদুড় গায়ে সাদা ধবধবে উত্তরীয় জড়িয়ে নিয়েছিলেন। পরনে ছিল ছােটো বহরের একটি থান, ধুনাে মাখা হাত-পা, ফুরফুর করে উড়ছে শুকনাে চুল, একেবারে পুরােদস্তুর বিরাগী, কোনাে বহুরূপী নয়।