Bengali Class ix

আকাশে সাতটি তারা কবিতার প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা Teacj Sanjib

 আকাশে সাতটি তারা কবিতার প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণী বাংলা Teacj Sanjib

 

আকাশে সাতটি তারা কবিতা

 

আকাশে সাতটি তারা

 

জীবনানন্দ দাশ

 

 আকাশে সাতটি তারা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে।

 

উৎস

 

‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতাটি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের ছয় সংখ্যক কবিতা। রূপসী বাংলা’ কাব্যগ্রন্থটি কবির মৃত্যুর পরে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের ফাল্গুন মাসে প্রকাশিত হয়। রূপসী বাংলা’-র কবিতাগুলি লেখা হয়েছিল প্রকাশের ২৫ বছর আগে ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে। সেই থেকে কবিতাগুলি পাণ্ডুলিপিতে অপ্রকাশিত অবস্থায় ছিল। কবিতাগুলির নাম দেওয়া নেই। পাঠ্যভুক্ত কবিতার নাম ‘আকাশে সাতটি তারা দিয়েছেন সংকলকগণ। আলােচ্য কবিতাটি ‘রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত।

আকাশে-সাতটি-তারা-কবিতার-প্রশ্ন-উত্তর-নবম-শ্রেণী-বাংলা-Teacj-Sanjib

 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার সারাংশ

 

বিষয়-সংক্ষেপ

 

রাতের আকাশে সাতটি তারা যখন ফুটে উঠেছে কবি তখন ঘাসের ওপর বসে। গঙ্গাসাগরে তখন ডুবে গেছে সন্ধ্যার সময়কালের কামরাঙা রঙের লাল মেঘ। বাংলার শান্ত অনুগত নীল সন্ধ্যা কেশবতী কন্যার মতাে এসেছে। আকাশে তার চুল যেন ভাসছে। ভাসছে যেন কবির চোখের ও মুখের ওপর। এই কন্যাকে পৃথিবীর কোনাে পথ দেখেনি। দেখেনি এই কন্যার অজস্র চুলের চুমা, যা হিজলে কাঁঠালে জামে অবিরত ঝরে। রূপসী কেশবতীর চুলের বিন্যাস থেকে পৃথিবীর কোনাে পথে ঝরে স্নিগ্ধ গন্ধ, তা জানা নেই। এই গন্ধ যেন নরম ধানের গন্ধ। অথবা পালক, শর, পুকুরের জল, চাঁদা, সরপুঁটিদের মৃদু ঘ্রাণ। কিংবা কিশােরীর চালধােয়া ভিজে হাত, কিশােরের পায়ে-দলা মুথাঘাস, বটের লাল লাল ফলের ব্যথিত গন্ধের ক্লান্ত নীরবতা। এদের মাঝেই তাে বাংলার প্রাণ নিহিত। আকাশে সাতটি তারা ফুটে উঠলে কবি টের পান।

 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

 

 

প্রশ্ন ) ‘আমি পাই টেৱ’–‘আমি’ কে? বক্তার অনুভবটি বিশ্লেষণ করাে। 

 

উত্তর: ‘আমি’ হলেন ‘রূপসী বাংলা’-র স্রষ্টা ও বাংলার প্রকৃতিপ্রেমিক কবি জীবনানন্দ দাশ।

 

অনুভব বিশ্লেষণ : কবি জীবনানন্দ গ্রামবাংলার প্রকৃতি জগতে ঘনিয়ে আসা সন্ধ্যার অপরূপ দৃশ্য দেখে মােহিত। সন্ধ্যা আসছে শান্ত অনুগত কেশবতী কন্যার মতাে। ধীরে ধীরে সন্ধ্যার অন্ধকার কেশবতী কন্যার এলাে চুলের মতাে দৃশ্যমান সবকিছু ঢেকে ফেলছে। তার চুলের স্পর্শ চুমার মতাে অবিরত ঝরছে গাছ-গাছালির ওপর। তার চুলের বিন্যাস থেকে স্নিগ্ধ গন্ধ ঝরে পড়ছে। সে গন্ধ নরম ধানে ও কলমি লতার ঘ্রাণে। হাঁসের পালক, শর, পুকুরের জল আর চাঁদা-সরপুঁটির মৃদু গন্ধে। সে ঘ্রাণ কিশােরীর চালধােয়া ভিজে হাতে ও কিশােরের পায়ে-দলা মুথাঘাসে, বটের লাল লাল ফলের ব্যথিত গন্ধে। সান্ধ্য শােভার দৃশ্যে, ঘনায়মান অন্ধকারের স্পর্শ ও গন্ধের মাঝে নিহিত বাংলার সজীব প্রাণের অস্তিত্ব কবি অনুভব করেছেন। তিনি টের পেয়েছেন বাংলার প্রকৃতি জগতের রূপ, রস ও গন্ধের সঙ্গে একাত্ম হয়ে থাকা বাংলার মানুষের সজীবতা। এটাই বাঙালি প্রাণের চিরন্তন বৈশিষ্ট্য।

 

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় প্রকাশিত কবি জীবনানন্দের বঙ্গপ্রকৃতি-প্রীতির পরিচয় দাও।

 

উত্তর : বঙ্গপ্রকৃতি-প্রীতির পরিচয় : কবি জীবনানন্দ দাশের বঙ্গপ্রকৃতি-প্রীতির শ্রেষ্ঠ পরিচয় হলাে রূপময়ী বাংলার প্রকৃতি জগতের অপার সৌন্দর্য নিয়ে লেখা কাব্যগ্রন্থ ‘রূপসী বাংলা’। এই বইয়ের প্রতিটি কবিতার মধ্যে বঙ্গপ্রকৃতির নানা শােভা, নানা বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্য যেন হাজারাে ছবি হয়ে ফুটে আছে। আকাশে সাতটি তারা কবিতা সেগুলির মধ্যে একটি। বাংলার বুকে নেমে আসা সন্ধ্যার দৃশ্য কবি কেবল দু-চোখ ভরে দেখেননি। তাঁর দৃষ্টিতে ঘনায়মান সন্ধ্যা যেন কেশবতী কন্যা। সে রূপসীর এলাে চুল কেবল কবির চোখ ও মুখের ওপর ভাসমান নয়, তার চুলের চুমা অবিরত ঝরে হিজলে, কাঁঠালে, জামে।

 

সন্ধ্যার এই দৃশ্য বাংলা ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না বলে কবি মনে করেন। পৃথিবীর কোনাে পথ এ কন্যারে দেখে নি কো—’। হিজল কাঁঠাল জাম নিয়ে বাংলা প্রকৃতির যে গাছ-গাছালি তা বাংলার নিজস্ব প্রকৃতি জগৎ। ওই বঙ্গপ্রকৃতির আরও নিজস্ব অনুষঙ্গ হলাে নরম ধান, কলমি লতা, হাঁস, শর, পুকুরের জল, চাঁদা-সরপুঁটি, বটের লাল লাল ফল। ওইসব অনুষঙ্গের নিজস্ব ঘ্রাণ যেন রূপসী বঙ্গসন্ধ্যা কেশবতী কন্যার = চুলের বিন্যাস থেকে ঝরে পড়া স্নিগ্ধ গন্ধ।

 

কবি জীবনানন্দ তাঁর গভীর ভালােবাসা ও মমত্ব দিয়ে বাংলার সনাগত সন্ধ্যার সৌন্দর্য বর্ণনার অবকাশে তাঁর বঙ্গপ্রকৃতিগ্রাতির পরিচয়কে সার্থক করে রেখেছেন।

 

প্রশ্ন ) ‘এৱই মাঝে বাংলার প্রাণ ;-কাৱ লেখা কোন্ কবিতা থেকে গৃহীত? প্রসঙ্গ নির্দেশ করাে। উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও। 

 

উত্তর:  আলােচ্য উদ্ধৃতিটি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতা থেকে গৃহীত।

 প্রসঙ্গ : প্রকৃতিভক্ত কবি জীবনানন্দ দাশ ঘাসের ওপর বসে বাংলার ঘনায়মান সন্ধ্যার শােভা দেখছেন। আকাশে এক-এক করে সাতটি তারা ফুটে উঠছে। সন্ধ্যা এসেছে ঘনায়মান অন্ধকার নিয়ে। সন্ধ্যার পরিব্যাপ্ত অন্ধকারকে কবি কেশবতী কন্যারূপে কল্পনা করেছেন। তাতে নির্জীব প্রকৃতি সচেতন ও সপ্রাণ মানবীরূপে কল্পিত হয়েছে। সন্ধ্যার অজস্র চুলের স্পর্শ ও ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে বাংলার প্রকৃতিলােকে। ওই আলােচনা প্রসঙ্গে কবি এসে গেছেন বাংলার প্রকৃতি জগতের নিজস্ব ঘ্রাণের কথায় এবং বাংলার প্রাণের সজীবতার কথায়।

 

তাৎপর্য : বঙ্গপ্রকৃতির প্রতিটি জিনিসের নিজ নিজ ঘ্রাণ আছে। মাঠের নরম ধান, কলমিলতা, হাঁসের পালক, শর, পুকুরের জল, চাঁদা-সরপুঁটি মাছ, কিশােরীর চালধােয়া ভিজে হাত, শীতের নরম কামড়, কিশােরের পায়ে-দলা মুথাঘাস, বটের লাল লাল ফল—প্রত্যেক বস্তুর আছে নিজ নিজ গন্ধের বৈশিষ্ট্য। কোনােটির ঘ্রাণ কোমল, কোনােটির মৃদু, কোনােটির তীব্র, কোনােটির আবার কেমন যেন ব্যথিত। বাংলার প্রকৃতি জগতের এই যে বৈচিত্র্য, এরই মাঝে আছে বাংলার প্রাণের অস্তিত্ব। তার সজীবতা। এইসব কিছু নিয়েই বাংলার প্রাণময় অস্তিত্বের জগৎ। 

 

 

প্রশ্ন>   প্রকৃতির বর্ণনায় কবি জীবনানন্দ দাশ চিত্রকল্প অঙ্কনে অপূর্ব দক্ষতার পরিচয় ৱেখেছেন-আলােচনা 

 

উত্তর : : চিত্রকল্প : চিত্রকল্প হলাে কল্পনায় আঁকা ছবি বা কথা দিয়ে তৈরি অবয়ব বা চেহারা। যাকে বলা যায় বাকপ্রতিমা। চিত্রকল্প আধুনিক কবিতার একটি বিশেষ কাব্যধর্ম। কবি জীবনানন্দ বাংলা আধুনিক কবিতা-পর্বের সেরা কবি। 

 

চিত্রকল্পের সার্থক প্রয়ােগ : ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির সুন্দর ছবি এঁকেছেন। তাঁর কল্পনায় দিনের আলাে নিভে রাতের অন্ধকার আসার যে সন্ধিক্ষণ, সেই সন্ধ্যাকে নানা অবয়ব বা চেহারার মাধ্যমে ছবি করে এঁকেছেন কাব্যভাষায়। দিনের আলাে নিভে আসার ছবি উঠে এসেছে ‘কামরাঙা-লাল মেঘ যেন মৃত মনিয়ার মতাে/ গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে তার পরেই এসেছে রাত আসার আগের সন্ধিক্ষণ বা সন্ধ্যা। আসিয়াছে শান্ত অনুগত/ বাংলার নীল সন্ধ্যা। সন্ধ্যা কবির কল্পনায় শান্ত অনুগত চেহারায় উপস্থিত। পরক্ষণে তিনি সন্ধ্যাকে কেশবতী কন্যারূপে কল্পনা করে মানুষের সত্তায় যেন মানবী করেছেন। সন্ধ্যার । অনুষঙ্গ ধীরে ধীরে ঘনিয়ে ওঠা অন্ধকার। ওই সর্বব্যাপী অন্ধকারকে কেশবতী কন্যার এলােকেশপে চিত্রিত করা হয়েছে। যার স্পর্শ বা চুমা ‘হিজলে কাঁঠালে জামে ঝরে অবিরত। যার চুলের বিন্যাস থেকে ‘স্নিগ্ধ গন্ধ ঝরে। কাজেই কল্পনায় ও কথায় সন্ধ্যাকে কেশবতী কন্যার চেহারা দিয়ে তার চুলের বিন্যাস আঁকা হয়েছে। তার চুলের স্পর্শ বা চুমা, স্নিগ্ধ গন্ধ ঝরে পড়ার যে বিশেষ ধর্মের কথা তা বলা হয়েছে। এইভাবে সুন্দর চিত্রকল্পে সন্ধ্যার প্রকৃতি ও ধর্মকে কাব্যগুণে ভরিয়ে অপূর্ব দক্ষতার পরিচয় রেখেছেন কবি । 

 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার প্রশ্ন

 

প্রশ্ন ) গ্রামবাংলার বুকে ঘনিয়ে আসা সন্ধ্যার ছবি আঁকতে গিয়ে কবি সন্ধ্যা ও বাংলার গ্রাম্য প্রকৃতির কী কী অনুষঙ্গেৱ উল্লেখ করেছেন? ঘনায়মান সান্ধ্য প্রকৃতির দৃশ্যময়তায় অনুষঙ্গগুলিৱ ব্যবহার কীভাবে সার্থক হয়েছে আলােচনা করাে। 

 

উত্তর: গ্রাম্য প্রকৃতির অনুষঙ্গ : ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ গ্রামবাংলার বুকে ঘনিয়ে আসা সন্ধ্যার ছবি আঁকতে গিয়ে ঘনায়মান সন্ধ্যা ও বাংলার গ্রাম্য প্রকৃতির বেশ কিছু অনুষঙ্গের উল্লেখ করেছেন। সন্ধ্যার অনুষঙ্গ হলাে অস্তে-যাওয়া সূর্যের অস্তরাগ বা শেষ আলাে, ঘনিয়ে আসা অন্ধকার। প্রকৃতির অনুষঙ্গ হলাে গাছ-গাছালি হিজল, কাঁঠাল, জাম, বট ; কলমীলতা, হাঁস, শর, পুকুরের জল, চাঁদা-সরপুঁটি, , মুথাঘাস, বটের ফল। ;

 

অনুষঙ্গগুলিৱ ব্যবহার : সন্ধ্যা ও গ্রাম্য প্রকৃতির অনুষঙ্গগুলি কবি দৃশ্যচিত্রণে চমৎকার ব্যবহার করেছেন। সূর্যের

বিদায়ী আলােয় মেঘ হয়েছে ‘কামরাঙা-লাল। সন্ধ্যায় ঘনিয়ে

আসা অন্ধকার যেন কেশবতী কন্যার এলাে চুল। হিজল, কাঁঠাল ও জামে অন্ধকার নেমে আসা যেন অবিরত ঝরে পড়া চুলের চুমা। রূপসী কেশবতী কন্যার চুলের বিন্যাস থেকে যে গন্ধ ঝরে তা যেন নরম ধানের গন্ধ’, ‘কলমীর ঘ্রাণ। হাঁসের পালক, শর, পুকুরের জল, চাঁদা-সরপুঁটিদের মৃদু ঘ্রাণ। কিশােরীর চালধােয়া ভিজে হাত কিংবা ‘কিশােরের পায়ে-দলা মুথাঘাস’-এর ঘ্রাণ। বট ও বটের লাল ফলকে ব্যবহার করেছেন—“লাল লাল বটের ফলের ব্যথিত গন্ধের ক্লান্ত নীরবতা |

 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

 

প্রশ্ন ) ‘আসিয়াছে শান্ত অনুগত বাংলার নীল সন্ধ্যা——বাংলাৱ সন্ধ্যাকে শান্ত, অনুগত ও নীল বিশেষণে ভূষিত কৱাৱ কারণ কী? 

 

উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতিটি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতা থেকে গৃহীত। বাংলার পল্লিপ্রকৃতি শহরের কোলাহলমুক্ত সম্পূর্ণ শান্ত। শান্ত স্বভাবের মধ্যে আনুগত্যের ভাব থাকে। বাংলার শান্ত পল্লিপ্রকৃতির মধ্যে আছে সেই আনুগত্যের ভাব। বঙ্গ পল্লিপ্রকৃতি ও তার পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখে বাংলার সন্ধ্যা শান্ত ও অনুগত। সন্ধ্যার ঘনায়মান আঁধার আর গাছপালার সবুজের মিশ্রণে বাংলার সন্ধ্যা যেন কবিদৃষ্টিতে নীল। বাংলার সন্ধ্যাপ্রকৃতির এই রূপবৈচিত্র্য অপূর্ব সুন্দর।

 

প্রশ্ন )‘দেখি নাই অত অজস্র চুলেৱ চুমা হিজলে কাঁঠালে জামে ঝৱে আবিৱত,—উদ্ধৃত পঙক্তিৱ অর্থ বুঝিয়ে দাও ।

 

. উত্তর : ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্য বর্ণনা করেছেন। বাংলার শান্ত অনুগত নীল সন্ধ্যা যেন বাংলার আকাশে আগত এক কোশবতী কন্যা। আকাশ পরিব্যাপ্ত করে বাংলার বুকে নেমে-আসা সন্ধ্যার অন্ধকার যেন কেশবতী কন্যার রাশি রাশি কেশসম্ভার। তা যেন অবিরাম ঝরে পড়ছে অজস্র চুলের চুম্বন হয়ে হিজলে কাঁঠালে জামে বাংলার গাছ-গাছালিতে। কবির এই কাব্যিক তাভ অপূর্ব।

 

প্রশ্ন )‘কামরাঙা-লাল মেঘ যেন মৃত মুনিয়ার মতাে/ গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে—’—অস্তরাগে ব্ৰঞ্জিত কবির আঁকা (মঘচ্ছবি বর্ণনা করাে। 

 

উত্তর: কবি জীবনানন্দ দাশ ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতায় সন্ধ্যা সার আগে বাংলার আকাশে সূর্যাস্তের আলােয় রাঙা মেঘের ছবি এঁকেছো। আস্তরাগে আকাশের মেঘখণ্ড লালে লাল।

 

যেন পাকা কামরাঙার লাল। মেঘের এই লাল রং খুবই ক্ষণস্থায়ী। লাল রং মুছে গেলে মেঘকে মনে হয় মৃত মুনিয়ার। মতাে ম্লান, বিবর্ণ। গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে তা অবলুপ্ত হয়। কামরাঙার রঙের সঙ্গে, মৃত মুনিয়ার সঙ্গে মেঘের তুলনা করা হয়েছে।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তাৱা’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ কী কী গাছ, লতা, ঘাস ও প্রাণীৱ নামােল্লেখ কৱেছন? কী কী প্রসঙ্গে নামগুলি এসেছে? 

 

. উত্তর ; ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ হিজল, কাঁঠাল, জাম ও বট গাছ, কলমীলতা, মুথাঘাস এবং প্রাণী হিসেবে মুনিয়া ও হাঁসপাখি, মানুষ হিসেবে কেশবতী কন্যা, চাঁদাসরপুঁটি মাছের নাম উল্লেখ করেছেন।

 

মেঘের কথা প্রসঙ্গে মৃত মুনিয়া পাখি ; সন্ধ্যার স্নিগ্ধ গন্ধ প্রসঙ্গে হাঁস, চাঁদা-সরপুঁটি ; সন্ধ্যার কেশরাশি প্রসঙ্গে কেশবতী কন্যা ; চুলের স্পর্শ বা চুমা প্রসঙ্গে হিজল, জাম ; চুলের ঘ্রাণ প্রসঙ্গে বটের নাম এসেছে। 

 

প্রশ্ন ) কেশবর্তী কন্যা যেন এসেছে আকাশে ;উদ্ধৃতিটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।

 

: উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘আকাশে। সাতটি তারা কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। বাংলার শান্ত অনুগত। নীল সন্ধ্যাকে কবি জীবনানন্দ কেশবতী কন্যারূপে অর্থাৎ, সপ্রাণ মানবীরূপে কল্পনা করেছেন। তাঁর এলােচুল আকাশে ভাসমান। আকাশ তার কেশরাশিতে আচ্ছন্ন। পৃথিবীর বুকেও ভাসছে তার। কেশরাশি। কবির চোখের ওপর, মুখের ওপর ভাসছে অজস্র চুল! কেশসম্ভারে বাংলার নীল সন্ধ্যা যেন কেশবতী কন্যা।

 

প্রশ্ন ) এরই মাঝে বাংলার প্রাণ ;—উদ্ধৃতিটি ব্যাখ্যা করাে।

 

উত্তর ; আলােচ্য উদ্ধৃতি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। বাংলার প্রাণ, বাংলার জীবনীশক্তি নিহিত আছে বাংলার প্রকৃতি জগতের রূপ, রস ও গন্ধের মধ্যে। বাংলার প্রকৃতির সঙ্গে বাংলার মান একাত্ম। বাংলার কলমিলতার ঘ্রাণ, হাঁসের পালক, শর, পুকুরের জল, চাঁদা-সরপুঁটিদের মৃদু ঘ্রাণ, কিশােরীর চালধােয়া হাতের ঘ্রাণ. পায়ে-দলা মুথাঘাসের ঘ্রাণ, বটের লালা লাল ফলের ঘ্রাণ, এরমাঝেই বাংলার প্রাণ নিহিত। এসবই প্রাণবন্ত বাংলার সজীবত লক্ষণ।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তাৱা’ কবিতাৱ মুখবন্ধটি কী? কবিতাৱ শেষে কবি কী অনুভবে পৌছেছেন? 

 

উত্তর ; সন্ধ্যা আসার ঠিক আগে কবি জীবনানন্দ গ্রামবাংলায় ঘাসের ওপর বসে আছেন। অস্তে যাওয়া সূর্যের শেষ আলােয় রাঙা কামরাঙা-লাল মেঘ ফ্যাকাসে বিবর্ণ হয়েছে। আকাশে এক এক করে সাতটি তারা ফুটে উঠেছে। সন্ধ্যা আসার এই মুখবন্ধ দিয়ে আকাশে সাতটি তারা কবিতা শুরু।

 

‘আকাশে সাতটি তারা কবিতার শেষে কবি এই অনুভবে পৌছেছেন যে, সন্ধ্যার আকাশে সাতটি তারা ফুটে ওঠার মধ্য দিয়ে গ্রামবাংলায় সমাগত সন্ধ্যার উপস্থিতি তিনি জানতে পেরেছেন। পল্লিবাংলায় সন্ধ্যা আসে যেন কেশবতী কন্যা হয়ে। তার এলাে চুলের ছোঁয়া-ঘ্রাণের মধ্যে পল্লিপ্রকৃতির যে অপরূপ দৃশ্য, তার মাঝে বাংলা-প্রাণের আবহমানকালের অবস্থিতিকে বাংলার প্রকৃতিপ্রেমিক কবি জীবনানন্দ মনেপ্রাণে অনুভব করেছেন।

 

প্রশ্ন ) আকাশে সাতটি তারা কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত? বাংলাৱ সমাগত সন্ধ্যার পটভূমি আলােচনা করাে। 

 

উত্তর ; কবি জীবনানন্দ দাশের লেখা ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতাটি ‘রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।

 

 অস্তগামী সূর্যের অস্তরাগে আকাশের মেঘখণ্ডটি ছিল রক্তাভ। পাকা কামরাঙা ফলের মতাে লাল। তা দ্রুত রং হারিয়ে নির্জীব মুনিয়ার মতাে ডুবে গেছে গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ের মাঝে। কবি সমাগত সন্ধ্যায় ঘাসের ওপরে বসে আছেন। তাঁর দৃষ্টি আকাশের দিকে। আকাশে একটি একটি করে সাতটি তারা ফুটে উঠল। এই হলাে সমাগত সন্ধ্যার পটভূমি।

 

প্রশ্ন ) বাংলাৱ সন্ধ্যা প্রকৃতিগত দিক থেকে কেমন? বাংলাৱ সন্ধ্যাকে কবি কীরূপে কল্পনা করেছেন ও কেন? 

 

তর: বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতিগত দিক থেকে ধীর-স্থির, শান্ত ও অনুগত।

 

বাংলার নীল সন্ধ্যাকে কবি জীবনানন্দ কেশবতী কন্যারূপে অর্থাৎ, সপ্রাণ মানবীরূপে কল্পনা করেছেন। তার এলাে চুল আকাশে ভাসমান। আকাশ যেন চুলে ছেয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর বুকেও ভাসছে চুলের রাশি। কবির চোখের ওপর, মুখের ওপর ভাসছে অজস্র ল। কেশসম্ভারে বাংলার নীল সন্ধ্যা যেন কেশবতী কন্যা। সেজন্যই তো বাংলার সন্ধ্যা কবির চোখে যেন কেশবতী কন্যা।

 

প্রশ্ন) পৃথিবীর কোনাে পথ কাকে দেখেনি? চুলের চুমা ও চুলের স্নিগ্ধ গন্ধ কোথায় কোথায় কীভাবে ঝৱে লেখো।

 

অথবা, পৃথিবীর কোনাে পথ এ কন্যাৱে দেখে নি কো——কবি জীবনানন্দ গ্রামবাংলায় সমাগত নীল সন্ধ্যারূপী কন্যাকে যেভাবে উপলব্ধি করেছেন তা লেখো।

 

উত্তর : পৃথিবীর কোনাে পথ বাংলার নীল সন্ধ্যারূপী কেশবতী কন্যাকে দেখেনি।

 

কেশবতী কন্যার অজস্র চুল। তা থেকে চুমা অবিরত ঝরে হিজল, কাঁঠাল ও জাম গাছের ওপর। রূপসী কেশবতীর চুলের বিন্যাস থেকে ঝরে স্নিগ্ধ গন্ধ। যা এই বাংলা ছাড়া পৃথিবীর আর কোনাে পথে মেলে না।

 

প্রশ্ন ) বাংলার কী কী থেকে কীৱকম গন্ধ মেলে ‘আকাশে সাতটি তাৱা’ কবিতা অবলম্বনে লেখাে। 

 

উত্তর : বাংলার মাঠে নরম ধানের গন্ধ ও কলমির ঘ্রাণ মেলে। বাড়ির কাছাকাছি মেলে হাঁসের পালক, শর, পুকুরের জল, চাঁদাসরপুঁটিদের মৃদু ঘ্রাণ। কিশােরীর চালধােয়া ভেজা ঠান্ডা হাতের গন্ধ, নরম শীতের কামড় ও কিশােরের পায়ে-দলা মুথাঘাসের গন্ধ মেলে। প্রান্তরে দাঁড়ানাে বটগাছের লাল লাল ফলের ব্যথিত গন্ধের ক্লান্ত নীরবতা মেলে।

 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার ছোট প্রশ্ন উত্তর

 

প্রশ্ন )বাংলার নীল সন্ধ্যা কেমন ও কবি তাকে কীরূপে কল্পনা করেছেন?

 

উত্তর : বাংলার নীল সন্ধ্যা শান্ত অনুগত এবং কবি তাকে কেশবতী কন্যারূপে কল্পনা করেছেন।

 

প্রশ্ন ) কেশবতী কন্যার চুল কবির কোথায় কোথায় ভাসে?

 

উত্তর : সন্ধ্যায় ঘনীভূত অন্ধকাররূপী কেশবতী কন্যার চুল কবির মুখ ও চোখের ওপর ভাসে।

 

প্রশ্ন ) অত অজস্র চুলেৱ চুমা কোথায় কোথায় কীভাবে ঝৱে?

 

উত্তর ; সন্ধ্যায় অন্ধকাররূপী কেশবতী কন্যার অত অজস্র চুলের চুমা অবিরাম হিজলে, কাঁঠালে, জামে ঝরে।

 

প্রশ্ন ) রূপসী চুলের বিন্যাস থেকে কী ঝৱে?

 

. উত্তর : রূপসী কেশবতী কন্যার অপূর্ব চুলের বিন্যাস থেকে ঝরে এত স্নিগ্ধ গন্ধ।

 

প্রশ্ন ) ‘আমি পাই টেৱ’-কবি কী টের পান?

 

উত্তর : প্রকৃতিপ্রেমী কবি জীবনানন্দ দাশ টের পান সন্ধ্যায় যখন আকাশে সাতটি তারা ফুটে ওঠে। .

 

প্রশ্ন ) এরই মাঝে বাংলার প্রাণ ;-বাংলার প্রাণ কীসের মধ্যে আছে?

 

উত্তর : বাংলার প্রাণ আছে নরম ধান, কলমি, হাঁসের পালক, পুকুরের জল, মাছ, কিশােরীর চালধােয়া ভিজে হাত, শীতের কামড়, পায়ে-দলা মুথাঘাস ও বটের ফলের গন্ধে।

 

প্রশ্ন ) কবি কী টের পান?

 

উত্তর : কবি জীবনানন্দ দাশ টের পান সমাগত সন্ধ্যায় তাঁর পল্লি প্রকৃতিতে লুকিয়ে থাকা বাংলার প্রাণশক্তি।

 

প্রশ্ন ) কলমি কী ?

 

উত্তর : পুকুরের ধারে বা কোনাে জলাশয়ের ধারে জন্মায় এমন এক ধরনের শাক যা বাঙালির খাদ্যতালিকায় স্থান পায় ।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় কবি কোন মাছ দুটিৱ উল্লেখ করেছেন?

 

উত্তর ; কবি জীবনানন্দ দাশ ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিত চাঁদা ও সরপুঁটি এই দুটি মাছের কথা উল্লেখ করেছেন।

 

প্রশ্ন )আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় করি । সন্ধ্যাকে কী কী বিশেষণ দিয়েছেন?

 

উত্তর : বাংলার বুকে নেমে আসা সন্ধ্যাকে শান্ত, অনুগত ও নীল বিশেষণে বিশেষায়িত করেছেন।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতায় কবি বাংলদেশেৱ কী কী ফল, মাছ ও গাছের উল্লেখ কৱেছেন?

 

উত্তর ; ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতায় কবি কামরাঙা ও বটফল, চাঁদা ও সরপুঁটি মাছ এবং হিজল, কাঁঠাল ও জাম গাছের উল্লেখ করেছেন।

 

প্রশ্ন ) পৃথিবীর কোনাে পথে আৱ কী দেখা যাবে না?

 

উত্তর : বাংলার সান্ধ্যপ্রকৃতির নিজস্ব বিন্যাস পৃথিবীর আর কোনাে পথে দেখা যাবে না।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তাৱা কবিতায় বটফল ব্যথিত কেন?

 

উত্তর : লাল লাল বটফল গাছের তলায় পড়ে থাকে, নিতান্ত অবহেলায়—এই ফল কেউ আদর করে তুলে নেয় না। তাই সে ব্যথিত।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় কাদেৱ মৃদু ঘ্রাণের কথা বলা হয়েছে ?

 

উত্তর ; : পুকুরের জল থেকে ভেসে আসছে চাঁদা ও সরপুঁটি মাছের মৃদু ঘ্রাণ।

 

প্রশ্ন ) কিশােৱীৱ হাত শীত কেন?

 

উত্তর : কিশােরী জলে চাল ধুয়েছে বলে তার হাত ভিজে ও শীত।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তাৱা’ কবিতাটি ভারত দিক দিয়ে কী জাতীয় কবিতা?

 

উত্তর : ‘আকাশে সাতটি তারা কবিতাটি জীবনানন্দ দাশে প্রকৃতি চেতনামূলক কবিতা।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তাৱা’ কবিতাটির আঙ্গিকগত বৈশিষ্ট্য কী?

 

উত্তর : অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা এই কবিতাটি সনেটজাতীয় ধীর লয়ের কবিতা।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় ক্রিয়াপদ প্রয়ােগেৱ কী বৈশিষ্ট্য ধৱা পড়ে?

 

উত্তর : ক্রিয়াপদ প্রয়ােগের ক্ষেত্রে কবিতাটিতে সাধু ও চলিতের

 

মিশ্রণ ঘটেছে। যেমন—চলিত ক্রিয়া—উঠেছে, বসে থাকি,  গেছে, এসেছে। সাধু ক্রিয়াপদ—আসিয়াছে।

আকাশের সাতটি তারা প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় কবি ঘ্রাণেন্দ্রিয় দ্বারা কী কী অনুভব করেছেন?

 

উত্তর: কবি ঘ্রাণেন্দ্রিয় দ্বারা নরম ধানের গন্ধ, কলমিশাকের গন্ধ, চাঁদা ও সরপুঁটি মাছের গন্ধ, বটফলের ব্যথিত গন্ধ এবং কেশবতী কন্যার চুলের গন্ধ অনুভব করেছেন।

 

২) নীচের প্রশ্নগুলির প্রতিটির উত্তর কমবেশি পনেরােটি শব্দের মধ্যে লেখাে ।

 

প্রশ্ন ) ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবি জীবনানন্দ দাশেৱ কোন্ কাব্যগ্রন্থের কত সংখ্যক কবিতা?

 

উত্তর: ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবি জীবনানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের ষষ্ঠ সংখ্যক কবিতা।

 

প্রশ্ন ) কবি ঘাসে বসে থেকে আকাশে কী দেখেন?

 

উত্তর: কবি ঘাসে বসে থেকে আসন্ন সন্ধ্যার দৃশ্যপটে আকাশে সাতটি তারা ফুটে উঠতে দেখেন।

 

প্রশ্ন ) কবি কামরাঙা-লাল মেঘকে গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে যাওয়ার ঘটনাকে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?

 

উত্তর : লাল মেঘকে গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে যাওয়ার ঘটনাকে কবি মৃত মুনিয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *