তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণি বাংলা
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণি বাংলা
তেলেনাপােতা আবিষ্কার
–প্রেমেন্দ্র মিত্র
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর:
‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার গল্পে কোন্ ঘটনার প্রেক্ষিতে আবিষ্কারকের ধারণা হবে যে জীবন্ত পৃথিবী ছাড়িয়ে অতীতের কোনাে কুজঝটিকাচ্ছন্ন স্মৃতিলােকে এসে পড়েছেন?”
উত্তরঃ
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে বাংলাদেশের এক অনামা গ্রাম তেলেনাপােতা আবিষ্কারের কথা বলা হয়েছে।
এ গল্পের গল্পকথক দুই বন্ধুসহ কলকাতা থেকে বাসে করে কাছের বাসস্টপে নেমে তেলেনাপােতা যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি গােরুর গাড়িতে চেপে বসেছিলেন। কথকদের গােরুর গাড়িটি দুর্ভেদ্য অন্ধকার জঙ্গলের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত ধীরগতিতে সামনের দিকে নিশ্চিন্তে এগিয়ে চলছিল। বেশ কিছুক্ষণ চলার পরে গাড়িটি যখন একটি বিরাট মাঠ পার হচ্ছিল, তখনই কথকরা ‘কৃষ্ণপক্ষের বিলম্বিত ক্ষয়িত চাদের দেখা পান। চাদের সেই আবছা আলােয় কথক দেখেন, চলমান গােরুর গাড়ির দু-পাশে পুরােনাে মন্দির এবং প্রাসাদের বিভিন্ন ভগ্নাংশ, যেমন স্তম্ভ, দেউড়ির খিলান ইত্যাদি মহাকালের সাক্ষী হয়ে যেন দাঁড়িয়ে আছে। পথ চলতে চলতে, এই ভগ্নাবশেষ দেখতে দেখতে কথকের মনে হয়, অস্পষ্ট, নির্বাক, বিশাল পাহারাদারেরা যেন গাড়িটির দুপাশ দিয়ে ক্রমাগত সরে সরে যাচ্ছে। গােরুর গাড়ির সংকীর্ণ ছইয়ের মধ্য থেকেই মাথাটা যথাসম্ভব উঁচু করে কথক উৎসুক দৃষ্টিতে দুপাশের সেই দৃশ্য দেখতে থাকেন এবং রােমাঞ্চিত হয়ে পড়েন। তখনই তার মনে হয় বর্তমান দুনিয়াতে যেন তিনি নেই, পুরাকালের কোনাে এক কুয়াশাঘেরা স্মৃতিচিত্রপট যেন তার চোখের সামনে এসে উপস্থিত হয়েছে।
প্রশ্নঃ ) “মনে হবে বােবা জঙ্গল থেকে কে যেন অমানুষিক এক কান্না নিংড়ে নিংড়ে বার করছে।”—কখন বক্তার এই উপলব্ধি হয়?‘অমানুষিক’ কান্নাটি আসলে কী ছিল? অথবা, “মনে হবে বােবা জঙ্গল থেকে কে যেন অমানুষিক এক কান্না নিংড়ে নিংড়ে বার করছে।”—মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।
উত্তরঃ
প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যটি প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ নামের ছােটোগল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। গল্পকথক, তার এক ঘুমকাতুরে বন্ধু এবং অপর এক বন্ধু মণি—কোনাে একদিন যাত্রা করেছিলেন কলকাতা থেকে তিরিশ মাইল দূরবর্তী এক অনামা গ্রাম তেলেনাপােতার উদ্দেশে। কলকাতা থেকে ভিড়ে ঠাসা এক বাসে প্রায় দুঘণ্টা চলার পর তারা নামেন তেলেনাপােতার কাছাকাছি বাসস্টপে | একটা জল-জমা, নীচু জায়গার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে তারা অপেক্ষা করতে থাকেন তাদের নিতে আসা গােরুর গাড়ির জন্য। কিন্তু মশাদের অত্যাচারে তারা সেই সময় অস্থির হয়ে পড়েন। অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত গল্পকথক যখন চরম অধৈর্য হয়ে ফিরতি বাসে কলকাতায় ফেরার কথা ভাবতে শুরু করেন, ঠিক তখনই সেই জঙ্গলের ভেতরকার সরু রাস্তার শেষপ্রান্ত থেকে অদ্ভুত এবং সুতিবিস্ময়কর একটি শব্দ তিনি শুনতে পান। সেই শব্দ শুনেই কল্পনাপ্রবণ গল্পকথকের মনে হয় “বােবা জঙ্গল থেকে কে যেন অমানুষিক এক কান্না নিংড়ে নিংড়ে বার করছে।”
সেই অদ্ভুত শব্দটি যে তাদের নিতে আসা গােরুর গাড়ির শব্দ, সেকথা বুঝতে হয়ে উঠেছিলেন পেরেছিলেন কথকরা। তাই সেই শব্দ শুনে ‘প্রতীক্ষায় চঞ্চল তঁারা। তাদের সেই প্রতীক্ষা সার্থক হল যখন একটি গােরুর গাড়ি এসে তাদের তেলেনাপােতায় নিয়ে চলল।
প্রশ্নঃ )‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথকদের গােরুর গাড়িতে করে তেলেনাপােতা যাওয়ার বর্ণনা দাও। অথবা, “তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে তেলেনাপােতা গ্রামে যাওয়ার যাত্রাপথের বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে কথক এবং তার দুই বন্ধু কলকাতা থেকে ঘণ্টা-দুই বাসযাত্রা করে একটি নির্দিষ্ট বাসস্টপে নামেন। নালার পাশে দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন তারা। তারপর তারা দেখেন, ধীর গতিতে দুলে দুলে একটি গােরুর গাড়ি তাদেরই উদ্দেশে এগিয়ে আসছে।
গােরুর গাড়িটি সামনে এলে গল্পকথকরা তিনজন সেই ছােটো গােরুর গাড়ির ভিতর কোনােক্রমে গাদাগাদি করে বসলেন। তারপর যে পথে গাড়িটি এসেছিল, সেই জঙ্গলে ঘেরা পথেই সেটি ফিরে চলতে শুরু করলে গল্পকথকরা অবাক হয়ে দেখেন যে, গাড়িটি সেই ঘন অন্ধকার জঙ্গলে সুড়ঙ্গের মতাে অপরিসর পথ একটু একটু করে বের করে ধীরগতিতে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। গাড়ির ঝাকুনিতে গল্পকথকের সঙ্গে তার বন্ধুদের অনিচ্ছাকৃত সংঘর্ষও ঘটতে লাগল মাঝে-মধ্যেই। এরপর কথক ক্রমশ অনুভব করলেন যে, চারপাশের জমাট অন্ধকারে তার স্বাভাবিক চেতনাও বুঝি লােপ পাচ্ছে। শেষে ক্যানেস্তারা পেটানাের শব্দে চেতনা ফিরে পেলে কথক ছইয়ের ভেতর থেকেই আকাশের তারা দেখতে পেলেন। তিনি গাড়ােয়ানের কাছ থেকে জানতে পারলেন যে, ক্যানেস্তারা বাজিয়ে সে আসলে চিতাবাঘ তাড়াচ্ছে।
ছইয়ের মধ্যে বসেই কৃষ্ণপক্ষের চাদের আলােয় গল্পকথক দেখতে পেলেন যে, চলমান গােরুর গাড়ির দুপাশ দিয়ে ক্রমশ সরে যাচ্ছে পুরােনাে মন্দির এবং প্রাসাদের বিভিন্ন ভগ্নাংশ—যেমন স্তম্ভ, দেউড়ির খিলান ইত্যাদি। দু-তিনবার বাঁক ঘুরে গােরুর গাড়িটি অবশেষে একটি জীর্ণ অট্টালিকার সামনে এসে কথকদের নামিয়ে দেয়।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্প বড় প্রশ্ন
প্রশ্নঃ) “আপনার আসল উদ্দেশ্য আপনি নিশ্চয় বিস্মৃত হবেন না।”“আসল উদ্দেশ্য কোনটি? সেই উদ্দেশ্য সাধনে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী করলেন? ১+৪
উত্তরঃ
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ ছােটোগল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিটিতে গল্পকথকের ‘আসল উদ্দেশ্য’-এর কথাই বলা হয়েছে। গল্পকথকের তেলেনাপােতায় বেড়াতে আসার আসল উদ্দেশ্য ছিল মৎস্যশিকার।
। সেই উদ্দেশ্যসাধনে গল্পকথক তেলেনাপােতায় পৌঁছানাের পরদিন সকালে বড়শি-সহ মাছ ধরার সমস্ত উপকরণ নিয়ে হাজির হন পানাপুকুরটিতে। সেখানে বড়শি ফেলে ভাঙাঘাটে তিনি একাকী বসে থাকেন মাছের অপেক্ষায়। ক্ৰমে বেলা বাড়তে থাকলেও মাছের দেখা পাওয়া যায় না। একটি মাছরাঙার ক্রমাগত মাছ শিকার, একটি সাপের সাঁতার এবং দুটি ফড়িং-এর ফাতনাটিতে বসার প্রতিযােগিতামূলক চেষ্টা নীরবে দেখে চলেন কথক। ঘুঘুপাখির উদাসকরা ডাকে তন্দ্রাচ্ছন্ন কথক একসময় হঠাৎ জলের শব্দে চমকে গিয়ে দেখেন, পুকুরের স্থির সবুজ জলে ঢেউ উঠেছে এবং তাঁর ফাতনা ধীরে ধীরে দুলছে। ঘাড় ঘুরিয়ে একটি মেয়েকে কলশিতে জল ভরতে দেখে অবাক হয়ে যান তিনি| কলশিতে জল ভরে ফিরে যাওয়ার সময় মেয়েটি কথককে বড়শিতে টান দিতে বললে ভ্যাবাচাকা খাওয়া কথক বড়শিতে টান দিয়ে দেখেন, তাতে মাছ তাে নেই-ই, টোপও নেই। মৃদু হেসে মেয়েটি চলে গেলে, তার কথা ভাবতে ভাবতে আবার জলে টোপসহ বড়শি ফেলে বসে থাকেন তিনি। দ্বিতীয়বার মাছ আর তার টোপ না খাওয়ায় একসময় হতাশ কথক সবকিছু গুটিয়ে উঠে পড়েন। সুতরাং, মৎস্যশিকারে ব্যর্থ হলেও কথক মাছ ধরার সূত্রে তেলেনাপােতায় এক আশ্চর্যজনক অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন।
প্রশ্নঃ )“খানিক আগের ঘটনাটা আপনার কাছে অবাস্তব বলে মনে হবে।”-কোন্ ঘটনার কথা এখানে বলা হয়েছে? অথবা, ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে মাছ ধরার সময়ে পুকুরঘাটের ঘটনাটির বর্ণনা দাও।
অথবা, ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পটি অবলম্বনে গল্পকথকের সঙ্গে যামিনীর প্রথম সাক্ষাৎ-দৃশ্যটি বর্ণনা করাে।
উত্তরঃ
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে দেখা যায়, মাছ ধরার উদ্দেশ্যে তেলেনাপােতায় পৌঁছে একটি পানাপুকুরে ছিপ ফেলে মাছ ধরার অপেক্ষায় বসে থাকেন গল্পের কথক। সেই সময় ঘুঘু পাখির ডাকে উদাস হয়ে যাওয়া গল্পকথক হঠাৎই জলের শব্দে চমকে গিয়ে দেখেন যে, পুকুরের স্থির, সবুজ জলে ঢেউ উঠেছে এবং তার বড়শির ফাতনা ধীরে ধীরে দুলছে। ঘাড় ঘুরিয়ে তিনি লক্ষ করেন, ঘাটে দাঁড়িয়ে একটি মেয়ে পুকুরের পানা সরিয়ে পিতলের একটি চকচকে কলশিতে জল ভরছে। মেয়েটির দুটি চোখ কৌতূহলী হলেও, তার চালচলনে লজ্জা বা আড়ষ্টতার কোনাে ছাপ ছিল না। এরপর জল ভরে নিয়ে মেয়েটি সরাসরি গল্পকথকের দিকে তাকায়, তার ফাতনার দিকে একবার তাকায় এবং মুখ ফিরিয়ে কলশিটা কঁাখে তুলে নেয়। মেয়েটির মুখশ্রীর শান্ত, করুণ ও গম্ভীর ভাব দেখে কথকের মনে হয় যে, মেয়েটি দীর্ঘকাল ধরে নিষ্ঠুর জীবনপথ পার হয়ে এসেছে। ফিরে যাওয়ার সময় হঠাৎ-ই পেছন ফিরে তাকিয়ে মেয়েটি গল্পকথককে হাত গুটিয়ে বসে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করে এবং তাকে বড়শিতে টান দিতে বলে| অভিভূত গল্পকথক এরপর ফাতনাটি ভেসে ওঠার পরপরই বড়শিতে টান দিয়ে দেখেন যে, তাতে মাছ তাে নেই-ই, এমনকি টোপও নেই। বিব্রত হয়ে মেয়েটির দিকে চেয়ে দেখেন যে, সে দীপ্ত হাসিমুখ ফিরিয়ে নিয়ে ধীর পদে ফিরে চলেছে। এই মেয়েটিই যামিনী এবং এটাই ছিল গল্পকথকের সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ | এর বেশ কিছুক্ষণ পরে পুকুরঘাটের সেই ঘটনাই কথকের কাছে অবাস্তব মনে হয়েছিল।
প্রশ্নঃ) ‘এ তাে বড়াে মুশকিল দেখছি।বক্তা কে? কোন মুশকিলের কথা বােঝানাে হয়েছে? এই মুশকিলের কোনাে সমাধান হয়েছিল কী? ১+৩+ ১
উত্তর
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ ছােটোগল্প থেকে নেওয়া এই উদ্ধৃতিটির বক্তা হলেন গল্পকথকের বন্ধু মণি।
* তেলেনাপােতায় আসার পরের দিন গল্পকথকের পানরসিক বন্ধু মণির জ্ঞাতিবােন যামিনীদের বাড়িতে কথকরা নিমন্ত্রিত হয়ে দুপুরের খাবার খেতে যান। খাওয়া-দাওয়ার পর তিনবন্ধু সে ঘরেই যখন বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তখন দরজার বাইরে থেকে যামিনী কিছুটা ইতস্তত করে মণিকে ডেকে বলে যে, মণিবাবুদের তেলেনাপােতায় আসার খবর পাওয়ার পর থেকেই তার অন্ধ, বৃদ্ধা মা খুব অস্থির হয়ে পড়েছেন| যামিনীর সঙ্গে কথা বলে মণি বুঝতে পারেন যে, যামিনীর মা মনে করেছেন নিরঞ্জন এসেছে। তার মা নিশ্চিত, যামিনীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার দীর্ঘ চার বছরের মধ্যে নিরঞ্জন যেহেতু একবারও আসেনি, তাই লজ্জিত হয়ে নিরঞ্জন আর বৃদ্ধার সামনে যেতে পারছে না| যামিনী জানায় যে, অন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে তার মায়ের ধৈর্যহীনতা এতটাই বেড়ে গেছে যে, কোনাে কথা বােঝালেও তিনি বুঝতে চান না। প্রায়শই রেগে গিয়ে মাথাঠুকে এমন সব কাণ্ড ঘটান যে, তখন তার প্রাণ বাঁচানােই সংকটজনক হয়ে পড়ে। এরপর যামিনী মণিকে ওপরে যেতে অনুরােধ করলে মণিবাবু যামিনীর অসুস্থ ও অসহায় বৃদ্ধা মায়ের অবুঝপনাকেই ‘মুশকিল’ বলে অভিহিত করেছেন।
| হঁা, এই মুশকিলের সমাধান হয়েছিল| মণির সঙ্গে গল্পকথক স্বেচ্ছায় যামিনীর মায়ের ঘরে গেলে অন্ধ বৃদ্ধ ভাবেন যে, নিরঞ্জন এসেছে। সেই সময় আবেগপ্রবণ হয়ে কথক নিরঞ্জনের হয়ে প্রক্সি দেন| যামিনীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিও দেন। এভাবেই মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধাকে শান্তি দেন তিনি।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
প্রশ্নঃ )“এই জনহীন ঘুমের দেশে সত্যি ওরকম মেয়ে কোথাও আছে আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না।”—মেয়েটি কে? মেয়েটির চরিত্র আলােচনা-প্রসঙ্গে সমাজের কোবাস্তবতা ফুটে উঠেছে আলােচনা করাে। ১+৪
উত্তর
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ ছােটোগল্পে উল্লিখিত মেয়েটি হল যামিনী।
| তেলেনাপােতা পৌঁছানাের পরদিন সকালে নিস্তব্ধ পানাপুকুরে ছিপ ফেলে বসে থাকতে থাকতে একসময় ঘুঘুর উদাস করা ডাকে আনমনা হয়ে পড়েছিলেন গল্পকথক। ঠিক এমন সময়েই হঠাৎ জলেরশব্দশুনে চমক ভেঙে তিনি দেখেন যে, স্থির জলে ঢেউ উঠছে। ঘাড় ঘুরিয়ে তখনই কথক দেখতে পান যে, ঘাটে দাঁড়িয়ে পুকুরের পানা সরিয়ে পিতলের একটি চকচকে কলশিতে জল ভরছে একটি মেয়ে। মেয়েটির চোখ দুটিতে কৌতূহলী দৃষ্টি থাকলেও তার চালচলনে সলজ্জ আড়ষ্টতার কোনাে চিহ্নমাত্র ছিল না। মেয়েটির মুখের শান্ত, করুণ, গম্ভীর ভাব দেখে কথকের মনে হয় যে, দীর্ঘকাল ধরে এক নিষ্ঠুর জীবনপথ বুঝি মেয়েটি পার হয়ে এসেছে। কলশি নিয়ে ফেরার সময় হঠাৎই পেছন ফিরে তাকিয়ে সে কথককে হাত গুটিয়ে বসে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করে তাকে বড়শিতে টান দিতে বলে। মেয়েটির গলার স্বর এমন অচল, কমনীয় ও গম্ভীর ছিল যে, কথকের মনেই হচ্ছিল।
সেই গ্রাম্য তরুণীটি অপরিচিত এক পুরুষের সঙ্গে কথা বলছে। সম্পূর্ণ অপরিচিত এক পুরুষের সঙ্গে মেয়েটির ব্যবহারের সাবলীলতায় বিস্মিত ও অভিভূত হয়ে গিয়ে বড়শি টানতে দেরি করে ফেলেন তিনি। পরে বড়শিতে টান দিয়ে মাছ, টোপ কিছু না পেয়ে যখন মেয়েটির দিকে তাকান, তখনই সে। মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ফিরতে থাকে। কিন্তু তার মুখে উজ্জ্বল হাসির একটা ইশারা নজরে পড়ে কথকের দুঃখ-দরিদ্রের বাস্তবতা যে মানুষের স্বাভাবিক স্বভাববৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটিয়ে দেয়, সেই সমাজবাস্তবতা যামিনীর আচারআচরণের মধ্যে ফুটে উঠেছে। সেকারণেই অপরিচিত যুবককথকের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে তাঁর মধ্যে কোনাে লজ্জা বা জড়তার চিহ্ন আমরা দেখি না। এ কারণেই কথক মেয়েটি চলে যাবার পর উদ্ধৃত কথাটি ভেবেছিলেন।
প্রশ্নঃ) যামিনী কে? তার মা তিনজনের আসার খবর পেয়ে অস্থির হয়ে উঠেছিলেন কেন? ১+৪
উত্তরঃ
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ ছছাটোগল্পের প্রধান নারীচরিত্র হল যামিনী। গল্পকথকের বন্ধু মণির তেলেনাপােতা-নিবাসী জ্ঞাতিবােন হল যামিনী।
গল্পকথকরা যেদিন রাত্রে তেলেনাপােতা পৌছেন, তার পরদিন যামিনীদের বাড়িতে তাঁদের দুপুরের নিমন্ত্রণ ছিল। খাওয়া-দাওয়ার পর তিনবন্ধু যখন বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তখন দরজার বাইরে থেকে যামিনী কিছুটা ইতস্তত করে মণিকে ডাকে| মণিকে যামিনী তখন জানায়, তাদের তিনজনের তেলেনাপােতা আসার খবর পেয়ে তার অন্ধ, বৃদ্ধ, বিধবা মা অস্থির হয়ে উঠেছেন।
যামিনীর মা তার দূর সম্পর্কের বােনপাে নিরঞ্জনের সঙ্গে কন্যা যামিনীর বিয়ের সম্বন্ধ স্থির করে রেখেছিলেন নিরঞ্জন যামিনীর ছােটোবেলাতেই। চার বছর আগে নিরঞ্জন তেলেনাপােতায় এসে তাকে জানিয়েও গিয়েছিল যে, বিদেশের চাকরি থেকে ফিরে এসে যামিনীকে বিয়ে করবে সে। সেই সময় থেকেই অন্ধ বৃদ্ধা সেই ঘুমন্তপুরীতে নিরঞ্জনের ফিরে আসার আশায় বসে দিন গুনছেন। প্রকৃতপক্ষে নিরঞ্জন বিদেশে যায়ইনি৷ যামিনীর মা অত্যন্ত নাছােড়বান্দা ছিলেন বলেই সে তাকে ফিরে আসার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই অন্যত্র বিয়ে করে সে ঘর-সংসারও করছে। এসব কথা যামিনী বা মণি জানলেও যামিনীর মাকে তা জানানাে হয়নি। এর কারণ হয় তিনি তা বিশ্বাস করবেন না, নয়তাে বিশ্বাস করলে, শােকে-দুঃখে তখনই মৃত্যু হবে| মণিবাবুরা তিনজন তেলেনাপােতায় এসেছেন শুনে যামিনীর মা ভেবেছেন যে, নিরঞ্জন নিশ্চিতভাবেই এসেছে| লজ্জায় তার সঙ্গে সে দেখা করতে পারছে না| তেলেনাপােতায় এসে নিরঞ্জন তার সঙ্গে দেখা করছে —একথা ভেবেই অস্থির হয়ে উঠেছিলেন যামিনীর মা।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ) মনে হবে তেলেনাপােতা বলে কোথায় কিছু সত্যি নেই।”—এ কথা কার মনে হবে? এই মনে হওয়ার কারণ কি ১+৪
উত্তর
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিটি এ গল্পের গল্পকথকের মনে হবে যে “তেলেনাপােতা বলে কোথায় কিছু সত্যি নেই।”
। গল্পকথক দুই বন্ধুসহ একরাতের জন্য তেলেনাপােতা নামক এক গ্রামে বেড়াতে গিয়ে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সে গ্রামের মেয়ে যামিনীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কলকাতায় ফিরে আসেন। ফিরে এসে বেশ কয়েকদিন পর পারিপার্শ্বিক এবং মানসিক সব বাধা দূর করে আবার তেলেনাপােতা যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন। কিন্তু সে-সময়েই তিনি তেলেনাপােতার মশাবাহিত ম্যালেরিয়ায় প্রচণ্ডভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। বহুদিন পর সেরে উঠে অতি দুর্বল দেহ নিয়ে কঁাপা’পায়ে বাড়ির বাইরের আলােবাতাসে যখন কথক এসে বসলেন, তখন তিনি বুঝতে পারলেন, ইতিমধ্যেই তার দেহমনে নিজের অজান্তেই অনেক ধােয়া-মােছা হয়ে গেছে। কলকাতা-ফেরার দিনটিতে যে তেলেনাপােতা তার কাছে ছিল ঘনিষ্ঠ এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, তাই বর্তমানে পরিণত হয়েছে নিভে আসা এক তারায়। সদ্য-ম্যালেরিয়া-থেকে-সেরে-ওঠা কথক উপলব্ধি করেন যে, তেলেনাপােতা এখন ঝাপসা এক স্বপ্নে পরিণত হয়েছে| আর, যামিনী তার কোনাে এক দুর্বল মুহূর্তের অসম্ভব, কুয়াশাচ্ছন্ন এক কল্পনামাত্র। ভয়ংকর ম্যালেরিয়া কথককে ভেতরে বাইরে নাড়িয়ে দিয়েছিল বলেই এমনটা মনে হয়েছিল তার।
প্রশ্নঃ)“কে, নিরঞ্জন এলি?”—নিরঞ্জন কে? কোন্ পরিস্থিতিতে গল্পকথক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন? ১+৪
উত্তর
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে নিরঞ্জন হল যামিনীর মায়ের দূর সম্পর্কিত বােনপাে, যে যামিনীর মায়ের কথায় যামিনীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
• যামিনীদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় মগির বন্ধু হিসেবে কথকের তেলেনাপােতায় আগমন ঘটে। সেখানেই যামিনীর কাতর স্বর, মপির বিরক্তি ইত্যাদিতে কৌতূহলী হয়ে কথক জানতে পারেন নিরঞ্জনের কথা | নিজের দূর সম্পর্কের এই বােনপাের সঙ্গে যামিনীর মা তার ছেলেবেলাতেই যামিনীর সম্বন্ধ ঠিক করেছিলেন। বছর চারেক আগেও সে প্রতিশ্ৰুতি দিয়ে গিয়েছি। যে বিদেশের চাকরি থেকে ফিরে যামিনীকে বিয়ে করবে। সেই কে যামিনীর বৃদ্ধা মা-এর অপেক্ষার প্রহর গােনা চলছে। নিরঞ্জনের প্রতি অন্ধবিশ্বাস বৃদ্ধাকে অস্থির করে রেখেছে। এই করুণ পরিস্থিতি কথককে দুর্বল করে তােলে এবং যখন মণি আর যামিনীর সঙ্গে তিনি বৃদ্ধার ঘরে যান। অন্ধ বৃদ্ধ তাকেই নিরঞ্জন ভেবে আনন্দে অধীর হয়ে ওঠেন। তিনি নিশ্চিত হয়ে যান যে, নিজের প্রতিশ্রুতি রাখতে নিরঞ্জনই ফিরে এসেছে। আকুলভাবে বলেন—“তুই আসবি বলে প্রাণটা যে আমার কষ্ঠায় এসে আটকে আছে।…এবার তাে আর এমন করে পালাবি না?” এই পরিস্থিতিতে কথক মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধকে নতুন করে কষ্ট দিতে চান না বলেই নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
প্রশ্ন,) তেলেনাপােতা আবিষ্কার গল্প অবলম্বনে যামিনী চরিত্রটি বিশ্লেষণ করাে।
উত্তর
‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের নায়িকা চরিত্র যামিনী ছিল শয্যাশায়ী, অন্ধ, বিধবা মায়ের সহায়-সম্বলহীনা মেয়ে। পানাপুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে জল-নিতে-আসা যামিনীর মুখের শান্ত, করুণ গাম্ভীর্য দেখে কথকের মনে হয়েছিল যে, জীবনের সুদীর্ঘ, নির্মম পথ সে পার হয়ে এসেছে। যামিনী চরিত্রের যে বৈশিষ্ট্যগুলি বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য সেগুলি হল—
জড়তামুক্ত ব্যবহার: যামিনীর আচরণে গ্রাম্য যুবতীর মতাে কোনাে দ্বিধা অথবা অহেতুক লজ্জা বা আড়ষ্টতা লক্ষ করা যায় না। তাই আমরা দেখি যে, ঠিক সময়ে বড়শিতে টান দিতে কথক যখন ভুলে যান, তখন যামিনী কলশি কঁখে করে ফেরার সময় ‘চকিত মুহূর্তে একটু যেন দীপ্ত হাসির আভাস’ প্রকাশ করেছিল।
সেবায়ণতা ও দায়িত্ববােধ: যামিনীর মা নিরঞ্জনকে উদ্দেশ করে কথককে যথার্থই বলেছিলেন যে, যামিনীর মতাে মেয়ে হয় না। তেলেনাপােতার মতাে প্রাণহীন, বিচিছন্ন জায়গায় যামিনী একাধারে নারী ও পুরুষ হয়ে পরিবারের সব ঝক্কি ঝামেলা অসীম ধৈর্যে নিজের কঁাধে বহন করে নিয়ে চলেছিল।
বিচারবােধ; যামিনীর মধ্যে বিচারবােধ ছিল বলেই, নিরঞ্জন সংক্রান্ত সত্যি কথা ও তার মনের যন্ত্রণা সে নিজের মধ্যেই চেপে রেখে দেয়। তার একমাত্র সঙ্গিনী মাকেও জানতে দেয় না বাস্তবটা, কেবল তঁাকে শান্তি দিতেই। তবে গল্পকথকের রােমান্টিক দৃষ্টিতে যামিনী ছিল রূপকথার বন্দিনি রাজকন্যা। অতীতের রহস্যমাখা স্বপ্নলােক থেকে সে যেন কথকের জীবনে ক্ষণিকের জন্য ভেসে ওঠা এক ‘স্বপ্নের বুদবুদ’।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি:
প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান ১
কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর
১. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে গােরুর গাড়ি থেকে নেমে কথকরা যে কটু গন্য পেয়েছিলেন তা কীসের ছিল?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে গােরুর গাড়ি থেকে নেমে কথকরা যে কটু গন্ধ পেয়েছিলেন তা ছিল পুকুরের পানা পচার গন্ধ।
২. ঘরের অধিকার নিয়ে ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে কথকদের সঙ্গে কাদের ঝামেলা হতে পারে?
উত্তর: ঘরের অধিকার নিয়ে গল্পের কথকদের সঙ্গে দু-তিনটে চামচিকের ঝামেলা হতে পারে।
৩. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে তেলেনাপােতায় সকালে জেগে উঠে কথক কী দেখার কথা বলেছেন?
উত্তর: তেলেনাপােতায় সকালে জেগে উঠে কথক অবাক হয়ে দেখবেন যে, এই রাত্রির দেশেও সকাল হয় এবং পাখির কলরবে চারিদিক ভরে ওঠে।
৪. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে তেলেনাপােতায় পুকুরঘাটে মেয়েটি কী করতে এসেছিল?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে তেলেনাপােতার পুকুরঘাটে মেয়েটি ঝকঝকে পিতলের ঘড়ায় জল ভরতে এসেছিল।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
৫. আপনাকে নিরস্ত করবার চেষ্টা করবে।”—কোন্ ব্যাপারে নিরস্ত করবার কথা বলা হয়েছে? [মুরলীধর গার্লস স্কুল] উত্তর: সিড়ির ভগ্নদশা ও ইট-টালি খুলে যাওয়ার আশঙ্কা ছাদে ওঠার
ব্যাপারে কথককে নিরস্ত করবার চেষ্টা করবে।
৬. “তার মুখের শান্ত, করুণ, গাম্ভীর্য দেখে মনে হবে…।”—কী মনে হবে কথকের?
উত্তর: তার অর্থাৎ ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের যামিনীর মুখের শান্ত, করুণ, গাম্ভীর্য দেখে মনে হবে জীবনের সুদীর্ঘ নির্মম পথ যেন সে পার হয়ে এসেছে।
৭. “তার ক্ষীণ, দীর্ঘ, অপুষ্ট শরীর দেখলে মনে হবে -কী মনে হবে কথকের?
উত্তর: ‘তার’ বলতে ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে যামিনীর কথা বলা হয়েছে। কৈশাের অতিক্রম করে যৌবনে উত্তীর্ণ হওয়া তার যেন স্থগিত হয়ে গেছে বলে মনে হবে কথকের।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
৮. “একটা কটু গন্ধ অনেক্ষণ ধরেই আপনাদের অভ্যর্থনা করছে।”—কটু গন্ধের কারণ কী?
উত্তর: গােরুর গাড়ি থেকে যেখানে নেমেছিলেন কথকেরা, সেখানকার পুকুরের পচা কচুরিপানা হল প্রশ্নোত্ত কটু গন্ধের কারণ |
৯, যে জীর্ণ প্রাসাদে উঠেছিলেন ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’-এর গল্পকথকরা, তার বর্ণনা দাও।
উত্তর: পানাপুকুরের পাশে থাকা জীর্ণ প্রাসাদটি তার ভাঙা ছাদ, ভেঙে পড়া দেয়াল এবং দৃষ্টিহীনের অক্ষিকোটরের মতাে কপাটহীন জানলা নিয়ে দুর্গের পাঁচিলের মতাে চাদের আলােকে প্রতিহত করে চলেছিল।
১০. গােরুর গাড়ি থেকে নামার পর ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’-এর গল্পকথক ও তঁার বন্ধুরা কেমন গন্ধ পেয়েছিলেন?
উত্তর: গােরুর গাড়ি থেকে নামার পর ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পকথক ও তার বন্ধুরা পুকুরের কচুরিপানাপচে যাওয়ার কটু গন্ধ পেয়েছিলেন।
১১, জীর্ণ অট্টালিকার যে ঘরে লেখকরা রাত্রিবাস করবেন বলে ঠিক করেছিলেন, সেই ঘরটিতে থাকার ব্যাপারে কে কীভাবে ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’-এর গল্পকথকদের সাহায্য করেছিল?
উত্তর: গােরুর গাড়ির গাড়ােয়ান একটি ভাঙা লণ্ঠন জ্বালিয়ে নিয়ে এসে ঘরে বসিয়ে দিয়েছিল এবং এক কলশি জল এনে দিয়ে গল্পকথকদের সাহায্য করেছিল।
১২, “ঘরের অধিষ্ঠাত্রী আত্মা যে তাতে ক্ষুদ্ধ”—কোন্ ঘরের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: গল্পকথকরা তেলেনাপোতায় এসে জীর্ণ এক অট্টালিকার অপেক্ষাকৃত বাসযােগ্য যে ঘরটিতে থাকার ব্যবস্থা করে নিয়েছিলেন, সেই ঘরের কথা বলা হয়েছে।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
১৩. “ঘরের অধিষ্ঠাত্রী আত্মা যে তাতে ক্ষুদ্ধ”—ক্ষুদ্ধ হওয়ার কারণ কী? উত্তর: গল্পকথকরা প্রবেশ করার আগে তেলেনাপােতার ভগ্নপ্রাসাদের ঘরটির ঝুলকালি, ধুলাে ও আবর্জনা কেউ পরিষ্কার করার ব্যর্থ-চেষ্টা করেছে বলে ঘরের অধিষ্ঠাত্রী আত্মা ক্ষুদ্ধ হয়েছিলেন।
১৪, “ঘরের অধিষ্ঠাত্রী আত্মা যে তাতে ক্ষুব্ধ”—এই ক্ষোভ কীভাবে প্রমাণিত হয়ে ?
উত্তর: একটা অস্পষ্ট ভ্যাপসা গন্ধের দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, সে ঘরের অধিষ্ঠাত্রী আত্মা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
১৫. “একটা অস্পষ্ট ভাপসা গন্ধে তার প্রমাণ পাবেন।”—কীসের প্রমাণ? উত্তর: গল্পকথকরা প্রবেশ করার আগে ঘরটির ঝুলকালি, ধুলাে এবং আবর্জনা কেউ পরিষ্কার করার ব্যর্থ-চেষ্টা করেছিল বলে সে-ঘরের অধিষ্ঠাত্রী আত্মা তাতে ক্ষুদ্ধ হয়েছিলেন, সেই ক্ষোভের প্রমাণের কথাই এখানে বলা হয়েছে।
১৬. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’-এর গল্পকথকদের বাস-করা ঘরটির রুষ্ট আত্মার অভিশাপ’ কীভাবে বর্ষিত হয়েছিল বসবাসকারীদের ওপর?
উত্তর: একটু-আধটু হাঁটাচলা করলেই গল্পকথকদের বাস করা ঘরটির ছাদ ও দেয়াল থেকে ভাঙা প্লাস্টার তাদের দেহের ওপর রুষ্ট আত্মার অভিশাপরূপে বর্ষিত হচ্ছিল।
১৭, কারা, কী নিয়ে আপনাদের সাথে সারারাত বিবাদ করবে?
উত্তর: দু-তিনটি চামচিকা ঘরের অধিকার নিয়ে কথকদের সাথে সমস্ত রাত বিবাদ করবে।
১৮. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথকের ‘নিদ্রাবিলাসী’ বন্ধুটি ঘরে প্রবেশ করে কী করলেন?
উত্তর: গল্পকথকের ‘ নিদ্রাবিলাসী’ বন্ধুটি ঘরে শতরঞ্চি পাতার পরই সেখানে শুয়ে পড়ে নাক ডাকতে শুরু করে দেন।
১৯. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথকের ‘পান-রসিক’ বন্ধুটি ঘরে প্রবেশ করে কী করলেন?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথকের পান রসিক বন্ধুটি ঘরে শতরঞ্চি পাতার পরই সেখানে পানপাত্রে নিজেকে সম্পূর্ণ নিয়ােজিত করে দিয়েছিলেন।
২০. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের রাত্রে কখন মশার দল গল্পকথককে ঘেঁকে ধরে?
উত্তর: বেশি রাতে ভাঙা লণ্ঠনের চিমনি ক্রমে ক্রমে কালাে কালিতে ভরে গিয়ে একসময় যখন তা নিভে যায়, তখনই মশার দল গল্পকথককে হেঁকে ধরে।
২১. অ্যানােফিলিস মশাকে কীভাবে শনাক্ত করেছিলেন ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথক?
উত্তর: তেলেনাপােতার জীর্ণ বাড়িতে বাস করতে গিয়ে দেয়ালে বা গায়ে মশার বসার বিশিষ্ট ভঙ্গি দেখে কথক অ্যানােফিলিস মশাকে শনাক্ত করেছিলেন।
২২. “আপনার দুই বন্ধু তখন দুই কারণে অচেতন।”—কারণ দুটি কী? উত্তর: গল্পকথকের এক বন্ধু তার নিদ্রাকাতর স্বভাবের জন্য এবং অন্য বন্ধু মদ্যপানের কারণে ঘুমে অচেতন ছিল।
২৩. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথক রাত্রে টর্চ হাতে ছাদে উঠেছিলেন কী থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য?
তেলেনাপোতা’ গল্পের গল্পকথক মশার কামড় এবং গুমােট গরম থেকে পরিত্রান পেতে টর্চ হাতে ছাদে উঠে ছিলেন।
২৪. আপনাকে নিরস্ত করবার চেষ্টা করবে।”—কে নিরস্ত করার চেষ্টা করবে?
উত্তর: ছাদে উঠবার সিঁড়ির ভগ্নদশা এবং টালিবাহঁটখসে গিয়ে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রতিমুহূর্তে গল্পকথককে উপরে ওঠার থেকে নিরস্ত করবে।
২৫. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথক মাঝরাত্রে ছাদে গিয়ে তার কী ভগ্নদশা প্রত্যক্ষ করলেন?
উত্তর: গল্পকথক দেখেন, ছাদের আলসে অনেক জায়গাতেই ভাঙা এবং সেই আলসে ও ছাদের মাঝখানের ফাটলগুলিতে গজানাে গাছের শিকড় ভেতরে ভেতরে জীর্ণ প্রাসাদটিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে চলেছে।
২৬ ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের জীর্ণ প্রাসাদের ভাঙা ছাদে রাতের বেলায় একাকী গিয়ে গল্পকথকের সবকিছু অপরূপ-মােহময় মনে হয়েছিল কোন্ আলোয়?
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের কৃয়পক্ষের ক্ষীণ চাদের আলােয় কথকের সবকিছু অপরূপ মােহময় মনে হয়েছিল।
২৭, “তা যেন আপনি টেরপাবেন।”—
কী টের পাওয়ার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: জীর্ণ প্রাসাদের ছাদে গভীর রাতে একা দাঁড়িয়ে গল্পকথক যেন টের পাবেন যে, এই ঘুমন্ত পুরীর কোনাে গােপন কক্ষে কারারুদ্ধ রাজকুমারী সােনার কাঠি ও রুপাের কাঠি পাশে নিয়ে বহুযুগের গভীর ঘুমে অচৈতন্য হয়ে আছেন।
২৮, , একটি আলাের ক্ষীণ রেখা আপনি হয়তাে দেখতে পাবেন। —কোথায়?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে কথকদের বাসকরা জীর্ণ প্রাসাদের পাশের সরু রাস্তার ওপারের ভাঙাচোরা বাড়িটির জানলায় ক্ষীণ আলােকরেখা দেখতে পাওয়া যাবে।
২৯. “খানিকবাদে মনে হবে সবই বুঝি আপনার চোখের ভ্রম।”—কার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: পাশের ভাঙা বাড়ির জানলায় ক্ষীণ আলাের রেখা এবং তা আড়াল করে দাঁড়ানাে এক রহস্যময়ী নারীমূর্তি—সবই জীর্ণ প্রাসাদের ছাদে দাঁড়ানাে কথকের খানিকবাদে ভ্রম বলে মনে হবে।
৩০. “যখন জেগে উঠবেন তখন অবাক হয়ে দেখবেন…”—কী দেখবেন?
উত্তর: : তেলেনাপােতার মতাে রাত্রিপুরীতেও সকাল হয় এবং পাখির কলকাকলিতে চারদিক মুখরিত হয়ে ওঠে—এটাই কথক অবাক হয়ে দেখবেন।
৩১. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথক যখন মাছ ধরছিলেন তখন মাছরাঙা পাখি কী করছিল?
উত্তর: পুকুরটির অন্য পাড়ে নুয়ে-পড়া একটি বাঁশের আগায় বসে থাকা মাছরাঙাটি তার রঙিন দেহ নিয়ে মাঝে মাঝেই পুকুরের জলে ঝাপিয়ে পড়ছিল এবং ঠোঁটে মাছ নিয়ে সার্থকতার আনন্দে আবার বাঁশের মাথায় কিরে যাচ্ছিল।
৩২, “আপনার আসল উদ্দেশ্য আপনি নিশ্চয় বিস্মৃত হবেন না।” -উদ্দেশ্যটা কী?
উত্তর: প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে মাছ ধরা ছিল গল্পকথকের আসল উদ্দেশ্য, যা তার বিস্মৃত হওয়ার কথা নয়।
৩৩, ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথক যখন মাছ ধরছিলেন, তখন সাপটা কী করছিল?
উত্তর: একটি মােটা, লম্বা সাপ গল্পকথককে ভয় পাইয়ে দিয়ে ভাঙা ঘাটের কোনাে ফাটল থেকে বেরিয়ে ধীরস্থিরভাবে সাঁতরে পুকুরের ওপারে গিয়ে উঠেছিল।
৩৪, মাছ ধরার সময় কে ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথককে কীভাবে বিদ্রুপ করছিল?
উত্তর: পুকুরঘাটে মাছ ধরার সময় লেখক অনেকক্ষণ মাছের আশায় বসেছিলেন। কিন্তু উলটো দিকে বাঁশের ডগায় বসে থাকা মাছরাঙা পাখিটি ক্ষণে ক্ষণে ছোঁ মেরে মাছ ধরে যেন লেখককে বিদ্রুপ করছিল।
৩৫. মাছ ধরার সময় কে ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথককে কীভাবে সন্ত্রস্ত করেছিল?
উত্তর: একটা মােটা, লম্বা সাপ গল্পকথককে সন্ত্রস্ত করে দিয়ে ভাঙা ঘাটের কোনাে এক ফাটল থেকে বের হয়ে ধীরস্থিরভাবে সাঁতরে পুকুরের ওপারে গিয়ে উঠেছিল |
৩৬. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথক যখন মাছ ধরছিলেন, তখন দুটো ফড়িং কী করছিল?
উত্তর: দুটো ফড়িং যেন প্রতিযােগিতা করে তাদের পাতলা কাচের মতাে পাখা নেড়ে গল্পকথকের বড়শির ফাতনার ওপর বসার চেষ্টা করছিল।
৩৭. বড়শিতে মাছ ধরতে বসে মাঝে মাঝেই ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার গল্পের গল্পকথক আনমনা হচ্ছিলেন কেন?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথক মাছ ধরতে বসে থেকে থেকে ঘুঘুপাখির বিষন্ন ডাকে আনমনা হচ্ছিলেন।
৩৮, “তারপর হঠাৎ জলের শব্দে আপনার চমক ভাঙবে।”—চমক ভেঙে কী দেখবেন?
উত্তর: : চমক ভেঙে গল্পকথক দেখবেন যে, স্থির জল কেঁপে উঠেছে, বড়শির ফাতনা ধীরে ধীরে দুলছে এবং একটি মেয়ে পিতলের কলশিতে জল ভরছে।
৩৯, “ঘাড় ফিরিয়ে দেখবেন…”—কী দেখবেন?
উত্তর: ঘাড় ফিরিয়ে কথক দেখবেন যে, ঘাটে দাঁড়িয়ে একটি মেয়ে পুকুরের পানা সরিয়ে পিতলের একটি চকচকে কলশিতে জল ভরছে।
৪০, কলশিতে জল নিয়ে ফিরে যাবার সময় ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের যামিনী গল্পকথককে কী বলেছিল?
উত্তর: কলশিতে জল নিয়ে ফিরে যাবার সময় যামিনী গল্পকথককে হাত গুটিয়ে বসে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করে এবং তাকে বড়শিতে টান দিতে বলে।
৪১. “আপনি বিচক্ষণ হলে…” –বিচক্ষণ হলে কী বােঝা যাবে? উত্তর: বিচক্ষণ হলে বােঝা যাবে যে, তেলেনাপােতার ভগ্ন অট্টালিকার দেয়ালে বিশেষ ভঙ্গিতে বসে থাকা মশাগুলি হল অ্যানােফিলিস।
তেলেনাপোতা গল্প ছোট প্রশ্ন উত্তর:
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও।
১. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে যামিনীকে নিরঞ্জন কেন বিয়ে করে উদ্ধার করেনি বলে মণিবাবুর অভিমত?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে যামিনী খুঁটেকুড়ুনির মেয়ে অর্থাৎ অত্যন্ত দরিদ্র ঘরের মেয়ে বলে নিরঞ্জন তাকে বিয়ে করে উদ্ধার করেনি বলে মণিবাবুর অভিমত।
২ ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে তেলেনাপােতায় বন্ধুদের কী কর্ণগােচর হয়েছিল?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে গল্পকথকের নিষ্ফল মাছ ধরার বৃত্তান্ত তার বন্ধুদের কর্ণগােচর হয়েছিল।
৩. “কেন তুই আমার কাছে লুকোচ্ছিস?”—কী সম্বন্ধে এ কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: যামিনীকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিল যে নিরঞ্জন, সে এসেছে ভেবে যামিনীর মা একথা বলেছেন।
৪, নিরঞ্জন যামিনীর মাকে কী বলে গিয়েছিল?
উত্তর: নিরঞ্জন যামিনীর মাকে বলেছিল বিদেশের চাকরি থেকে ফিরে এসেই সে যামিনীকে বিয়ে করবে।
৫. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে কত বছর আগে বিয়ে করবে বলে কথা দিয়েছিল?
উত্তর: চার বছর আগে নিরঞ্জন যামিনীর মাকে বলেছিল, বিদেশের চাকরি থেকে দেশে ফিরে এসেই সে যামিনীকে বিয়ে করবে৷
৬. “কিন্তু সে কথা ওঁকে বলে কে?” সে কথা বলতে কোন্ কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশে ‘সে কথা বলতে বিদেশে না গিয়ে নিরঞ্জনের ইতিমধ্যে অন্যত্র বিয়ে করার কথা বলা হয়েছে।
৭. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে যামিনীর মায়ের অস্থির হয়ে ওঠার কারণ কী ছিল?
উত্তর: কথকদের আগমনে যামিনীর মা ভেবেছেন চার বছর আগের কথা দিয়ে যাওয়া নিরঞ্জন এসেছে, যে তার মেয়েকে এই প্রেতপুরী থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে।
৮, যামিনীর মা কার সঙ্গে যামিনীর বিয়ের সম্বন্ধ ঠিক করেছিলেন?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে যামিনীর মা নিরঞ্জনের সঙ্গে যামিনীর বিয়ের সম্বন্ধ ঠিক করেছিলেন।
৯, ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথকের মাছ-ধরার ব্যর্থতার কাহিনি তার দুই বন্ধু কার কাছ থেকে শুনেছিলেন?
উত্তর: প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথকের মাছ ধরার ব্যর্থতার কাহিনি তার দুই বন্ধু প্রত্যক্ষদশী যামিনীর কাছ থেকে শুনেছিলেন।
১০, ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথকের পান-রসিক বন্ধুর নাম কী ছিল?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথকের পান রসিক বন্ধুর নাম ছিল মণি।
১১. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের যামিনী লেখকের পান-রসিক বন্ধু মণিদার কে হন?
উত্তর: [: প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে যামিনী সম্পর্কে মণির জ্ঞাতিবােন হয়।
১২. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের যামিনীদের বাড়িতে দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার পর গল্পকথকরা কী করছিলেন?
উত্তর: : প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ যামিনীদের বাড়িতে দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পর গল্পকথকরা বিশ্রাম করছিলেন।
১৩, “সে নিশ্চয় এসেছে।”—সে বলতে বক্তা কাকে নির্দেশ করেছে?
উত্তর: : প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে যামিনীর মা ‘সে’ বলতে তার এক দূর সম্পর্কের বােনপাে নিরঞ্জনকে নির্দেশ করেছেন।
১৪. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের যামিনীর-মা অন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কেমন হয়ে গেছিলেন?
উত্তর: যামিনীর মা অন্ধ হয়ে এমন ধৈর্যহীন হয়ে গেছিলেন যে, কোনাে কথা বুঝতে চাইতেন না, মাঝে মাঝেই রেগে গিয়ে মাথা খুঁড়ে নিজের জীবন বিপন্ন করে তুলতেন।
১৫. ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের নিরঞ্জন কে ছিল?
উত্তর: প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে যামিনীর মায়ের দূর সম্পর্কের এক বােনপাে ছিল নিরসন, যার সঙ্গে যামিনীর বিয়ের সম্বন্ধ করছিলেন যামিনীর মা।
১৬. ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে কতদিন আগে শেষবার যামিনীদের বাড়ি এসেছিল নিরঞ্জন?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে চার বছর আগে যামিনীর মায়ের দূর সম্পর্কের বােনপাে নিরঞ্জন যামিনীদের বাড়ি শেষবার এসেছিল।
১৭, “বছর চারেক আগেও সে-ছােকরা এসে ওঁকে বলে গেছল…।”—সেছােকরা’ কে? কাকে বলেছিল?
উত্তর: প্রশ্নোস্তৃত অংশে উল্লিখিত ‘সে-ছােকরা’ হল নিরঞ্জন।
সে যামিনীর বাড়ি এসে যামিনীকে বিয়ে করার কথা যামিনীর মাকে বলে গিয়েছিল।
১৮, “বছর চারেক আগেও সে-ছােকরা এসে ওঁকে বলে গেছল…।”—কী বলে গিয়েছিল?
উত্তর: চার বছর আগে যামিনীদের বাড়ি এসে নিরঞ্জন যামিনীর মাকে বলে গিয়েছিল যে, বিদেশের চাকরি থেকে ফিরে সে তার মেয়ে যামিনীকে বিয়ে করবে।
১৯, “সেই থেকে বুড়ি এই অজগর পুরীর ভেতর বসে সেই আশায় দিন গুনছে।”-বুড়ি কে?
উত্তর: প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে থেকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে উল্লিখিত ‘বুড়ি’ হলেন যামিনীর মা।
২০. “সেই থেকে…দিন গুনছে।”—কবে থেকে?
উত্তর: চার বছর আগে নিরঞ্জন যামিনীদের বাড়ি এসে তার মাকে বলে গিয়েছিল যে, বিদেশের চাকরি থেকে ফিরে এসে সে যামিনীকে বিয়ে করবে৷ তখন থেকেই বৃদ্ধ আশায় দিন গুনছিলেন।
২১. “কিন্তু সে-কথা কে বলে কে?”—কেন সে-কথা বলে না কেউ ‘কে’?
উত্তরঃ যামিনীর বাত্তা নিরঞ্জনের অন্যত্র বিয়ের কথা তার মা বিশ্বাসই করবেন না। আর তা করলে তিনি শােকে-দুঃখে তখনই দম আটকে মারা যাবেন। তাই কেউ তাকে সে কথা বলে না।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্প একাদশ শ্রেণী
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
২২. “খানিক আগের ঘটনাটা আপনার কাছে অবাস্তব বলে মনে হবে।” কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?
: প্রেমেন্দ্র মিত্রর ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে পুকুরঘাটে অপরিচিত একটি মেয়ের আসা, তার কথা বলে চলে যাওয়া ইত্যাদিকে কথকের তাবাস্তব বলে মনে হয়।
২৩, “ওঃ, সেই খেয়াল এখনাে।”—কীসের কথা বলা হয়েছে? ২৪, “না আপত্তি কিসের!”—কোন্ আপত্তির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: যামিনীর বাগদত্ত নিরঞ্জনের আসার অপেক্ষায় দিন গুগছেন যামিনীর মা | এই বৃথা আশাকেই মগি খেয়াল বলে উল্লেখ করেছেন।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর:
২৪. “না আপত্তি কিসের”! কোন আপত্তির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের কথক তার বন্ধু মণির সঙ্গে যামিনীর মার কাছে যেতে চাইলে সে বিষয়ে মণির আপত্তি আছে কি না জানতে চেয়েছিলেন কথক।